আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেধা বনাম অভিশপ্ত কোটা

আমি পরিবর্তন চাই...............! মুক্তিযোদ্ধারা কি বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল বাংলাদেশকে বৈষম্য মুক্ত করার জন্য নাকি বৈষম্য সৃষ্টি করার জন্য??? একদিকে মুক্তিযোদ্ধার অযোগ্য সন্তানরা বি,সি,এস, (অবশ্য সরকারি সকল চাকরির ক্ষেত্রে) এর মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় মাত্র ৬৪ নম্বর পেয়ে পাস করে ফেলে যেখানে সাধারন শিক্ষার্থীরা ৭৯ নম্বর পেয়েও ফেল করে। আজ এই বৈষম্যের ফলে কত মেধাবী মাঝ পথে হুচট খেল হয়তবা ঝরেও গেল, কারণ নির্দিষ্ট বয়স সীমার পর তো আর এই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেই। সেখানেও বৈষম্য! এই মুক্তিযোদ্ধার অযোগ্য সন্তানদের দুই বছর বেশি অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যোগ্যতার মুখোশ পরার সুযোগ আছে। কথা হল, মুক্তিযোদ্ধে কি শুধু সনদ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরই অবদান ছিল??? যারা মুক্তিযোদ্ধের সময় নানা রকম নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, যারা আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা করে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জিবিত করেছিল, তাদের কি কোন অবদান নেই??? তখনকার সময়ের সাত কোটি(রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ব্যতিত) আপামর বাংলাদেশিদের কি কোন অবদান নেই মুক্তিযোদ্ধে??? তারা কি মুক্তিযোদ্ধের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে নি??? কিন্তু তাদের দুর্ভাগ্য হল, তাদের নামে বেনামে মুক্তিযোদ্ধার কোন সনদ নেই আর নেই বলেই সরকারি বিভিন্ন সুবিধার ক্ষেত্রে জাতি আজ দুই ভাগে বিভক্ত!!! মুক্তিযোদ্ধার অযোগ্য সন্তান বনাম সাধারন জনগনের যোগ্য কিন্তু বঞ্চিত সন্তান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কি এই বৈষম্যমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন??? পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাংলার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতেন।

বঙ্গবন্ধু ওই বৈষম্য থেকে মুক্তি দিয়ে নতুন এই বৈষম্য সৃষ্টি করার জন্য বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন নি নিশ্চয়ই। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান তা প্রতিটি বাংলাদেশি (রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ব্যতিত) বিশ্বাস করে। কিন্তু তাদের সন্তানরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান না, যদি তাদের সন্তানরাও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হয় তাহলে কি রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস দের সন্তানরা জাতির ঘৃণ্যতম সন্তান না?? মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের সরকারি চাকুরিতে কোটা দিলে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস দের সন্তানদের সরকারি চাকুরিতে নিষিদ্ধ করা উচিৎ নয় কি? কিন্তু রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস দের সন্তানদের সরকারি চাকুরিতে নিষিদ্ধ করা যেমন অনুচিৎ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সরকারি চাকুরিতে কোটা দেয়াও সেরকম অনুচি বলে শুধু আমি নই আমার মত লাখ সাধারণ চাকুরি প্রত্যাশীই মনে করে। আজ এমন হয়েছে অনেক মুক্তিযোদ্ধার মেধাবী সন্তানরা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে!!! বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের পুণঃবাসনসহ সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেয়া হউক তাতে বাংলাদেশের একটি মানুষেরও আপত্তি থাকবেনা। কিন্তু তাদের সন্তানদের এবং সন্তানের সন্তানদের কোটা নামক অভিশপ্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারন চাকুরি প্রত্যাশীদের ভাগ্য কেড়ে নেয়ার অধিকার কারও নেই।

সরকারের প্রতি আকুল আবেদন লাখ লাখ সাধারন শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর দিন, আমরা অসহায়। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্তেও অযোগ্যরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে যাচ্ছে, প্রশাসন মেধাশুণ্য হচ্ছে, জাতি বিভক্ত হচ্ছে সর্বপরি তরুণ চাকুরি প্রত্যাশীদের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সাধারন শিক্ষার্থীদের বৈষম্য দূর করতে, সরকারি চাকুরি লাভে সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, মেধাবী প্রশাসন গড়তে ঘৃণ্যিত কোটা বাবস্থার বিলোপ্তির কোন বিকল্প নেই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।