আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গার্লফ্রেন্ড

আমার ভিতরে আমি স্বতন্ত্র জীবন যাপন করি। ভুমিকা : বর্তমান বাংলাদেশে গার্লফ্রেন্ড একটি জনপ্রিয় শব্দ। বর্তমানে দু ধরেনের ছেলে বাংলাদেশে দেখা যায়। একধরনের যারা গার্লফ্রেন্ডে নাই বলে হাহাকার করে, আরেকদল যারা গার্লফ্রেন্ড আছে বলে বলে হাহাকার করে। গার্লফ্রেন্ড একটি দু পা বিশিষ্ট বয়ফ্রেন্ডের রেষ্টুরেন্ট পালিত প্রাণী।

প্রত্যেক গার্লফ্রেন্ডের একটি করে আবশ্যিক বয়ফ্রেন্ড থাকে,একাধিকও থাকে। বয়ফ্রেন্ডদেরকে তারা “ছাগল” অথবা “গাধা” বলে ডাকতে পছন্দ করে। খুউব রোমান্টিক হলে “আমার ও” বলেও ডাকে। গার্লফ্রেন্ড শব্দে আভিধানিক অর্থ যদিও মেয়ে বন্ধু তবুও ইংরেজি থেকে আসা এই শব্দের ভাবার্থ ভিন্ন রকম। এর সরাসরি অর্থ প্রেমিকা।

জানা যায় বাংলাদেশ ক্রমশই ডিজিটাল হবার কারনে প্রেমিকা শব্দটি হারিয়ে “গার্লফ্রেন্ডের” আবির্ভাব ঘটেছে। বর্ণনা : প্রত্যেক বয়ফ্রেন্ড মাত্রই তাদের গার্লফ্রেন্ডকে ক্যাটরিনার মত স্লিম ফিগার এবং বিপাশা বসুর মত সেক্সি চায়। কিন্তু গার্লফ্রেন্ডরা সাধারণত বয়ফ্রেন্ডের সাথে চায়নিজ খেয়ে নিজেদের ওজন বাড়ানোর তালে থাকে। এতে করে যত ডেটিং তত সাস্থের নিয়মে পড়ে যায়। ফলে বেশীরভাগ সময় বয়ফ্রেন্ডদের আশা পূরণ হয় না।

গার্লফ্রেন্ড হলেও এরা দেখতে আট দশজন সাধারণ নারীর মত। তবে খুব খেয়াল করলে দেখা যায় এদের মধ্যে আলাদা কিছু ব্যাপার রয়েছে। এরা মোবাইল পছন্দ করে। মোবাইল বিহীন একটি ক্ষন তারা ভাবতে পারে না। এদের প্রধান কাজ হলো অবসরে তাদের বয়ফ্রেন্ডকে পেইন দেয়া।

নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী একজন গার্লফ্রেন্ডের বয়ফ্রেন্ডের সংখ্যা নির্ভর করে। স্বভাব : গার্লফ্রেন্ডদের স্বভাব প্রত্যেকের আলাদা আলাদা হতে পারে। তবে কিছু স্বভাব সব গার্লফ্রেন্ডের কিছু কমন স্বভাব রয়েছে। এরা মনে করে “চাহিবা মাত্র তাহার বয়ফ্রেন্ড তাহার কাছে হাজির থাকিবে”। প্রত্যেক গার্লফ্রেন্ড স্বাধীনচেতা।

তারা তাদের ছেলে বন্ধুকে বয়ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য উৎসাহি হয়ে থাকে। এজন্য তারা মুক্তমনা বয়ফ্রেন্ড চায়। তবে এই ইস্যুতে বেশীরভাগ সময় বিরাট ক্যাচাল হয়ে অনেক গার্লফ্রেন্ড আবার অন্যের গার্লফ্রেন্ড হয়ে যায়। এছাড়া তারা সবসময় তার বয়ফ্রেন্ড কখন কোন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলছে অথবা ফেসবুকে চ্যাট করছে তার উপর সদয় দৃষ্টি রাখে। এছাড়া তারা চায় তার বয়ফ্রেন্ড হবে সুন্দর,স্মার্ট এবং রুষ্টপুষ্ট।

কারন একজন গার্লফ্রেন্ড তার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে তার বান্ধবীদের সাথে আলোচনা করবে। এবং সে আলোচনায় তাকে জিততে হবে। এসব আলোচনায় সাধারণত গার্লফ্রেন্ডরা অন্যের বয়ফ্রেন্ডের কথা শুনে নিজের মুখকে ডানদিকে মোড় নিয়ে হালকা বাঁকিয়ে উপহাস করে। উপহাস করার পর তারা প্রথমে তার বয়ফ্রেন্ডকে ফোন দেয় এবং ওর বয়ফ্রেন্ড এরকম,ওরকম, তুমি কেন এমন না টাইপ কথা বলে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয়। এছাড়া বয়ফ্রেন্ডের সাথে সকল প্রকার ঝগড়া রাগ অভিমানের সমাধান গার্লফ্রেন্ডরা এক নিমেষেই করে ফেলে।

এরকম অসাধরণ ক্ষমতা বিধাতা তাদের দিয়েছেন। এক তথ্যে জানা যায় গার্লফ্রেন্ডের চোখের পানি চোখের ঢগায় জমা থাকে। প্রয়োজনমত কেবল কল ছেড়ে দিলেই বের হয় টপটপ করে। এছাড়া প্রত্যেক গার্লফ্রেন্ড চায় তার বয়ফ্রেন্ড পড়ালেখা,অফিস,চাকুরী বাদ দিয়ে কেবল তার কথা ভাবুক। মাঝরাতে তার বাসার সামনে গিয়ে তাকে চমকে দিক।

সে একদিকে চমক চায় আবার তার বাসার সামনে যাওয়া বয়ফ্রেন্ডকে গালি দিতেও ছাড়ে না। গার্লফ্রেন্ডরা তাদের বয়ফ্রেন্ডকে জান্টুস, জান, বাবা, বাবু, সোনা বলে ডাকতে পছন্দ করে। প্রিয় স্থান : বাংলাদেশের গার্লফ্রেন্ডের প্রিয় স্থান চায়নিজ রেষ্টুরেন্ট,কেএফসি, পিজ্জাহাট ইত্যাদি। আগের দিনে গার্লফ্রেন্ডরা স্বপ্ন দেখতো তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে পার্কের সবুজ ঘাসে বসে একজন আরেকজনকে বাদাম খাইয়ে দিচ্ছে ,এখনকার গার্লফ্রেন্ডরা স্বপ্ন দেখে পিজ্জাহাটে বসে হিজহুজভাবে পিজ্জা খাচ্ছে। তবে বিল কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের।

এছাড়া মাঝে মাঝে তারা পার্কেও যায় বটে, তবে সেটা নিতান্তই বেকায়দায় পড়ে। উপকারিতা :গার্লফ্রেন্ড গরুর মত উপকারী প্রাণী। এরা অলস বয়ফ্রেন্ডের সকালে এলার্মের কাজ করে দেয়। কেবল গার্লফ্রেন্ড আছে বলেই আলাল দুলালদের জন্য পৃথিবীটা একেবারে অনর্থক হয়ে যায়নি। কোন কাজ নেই বলে আলাল দুলালদের পেটে চর্বি যা কম আছে তার এক মাত্র কার হলো গার্লফ্রেন্ড।

এছাড়া গার্লফ্রেন্ডের সাথে ছ্যাকা শব্দটি অবধারিতভাবে জড়িত বলে অনেক কবির উৎপাদনও গার্লফ্রেন্ডের কোল থেকেই হয়। এছাড়া কেবল গার্লফ্রেন্ডের জন্যই জীবনটা অনেকের গতিময়। আরও অনেক কিছু দেয়, সব উল্লেখ করলে রচনার শিল্পগুণ ক্ষুন্ন হবে বলে দেয়া গেল না। অপকারিতা: গার্লফ্রেন্ডের উপকারিতা যেমন আছে,তেমন অপকারিতাও আছে। গার্লফ্রেন্ডের জন্যই ছাত্রদের বছরে তিনবার বই কিনতে হয়, চারবার ফরম ফিলআপ করতে হয়।

তাছাড়া অনেকের কাছে সকালে ঘুম থেকে উঠা পর্যন্ত রাতে ঘুমানো পর্যন্ত পৃথিবীটা জাহান্নাম মনে হবার একমাত্র কারন গার্লফ্রেন্ড। কবি বলেছেন “সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য ওয়েট করে না”। গার্লফ্রেন্ডের কাছে বয়ফ্রেন্ডরা সময়কে নদীর স্রোতের মত বিলিয়ে দিচ্ছে। এর প্রভাব সূদুরপ্রসারী। পরীক্ষা ফেইল,অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি,পাড়ায় মারামারি,দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মারামারিতেও গার্লফ্রেন্ডের বিরাট ভুমিকা লক্ষ করা যায়।

মাঝে মাঝে গার্লফ্রেন্ড ব্যাপক জানমালের ক্ষতি করে। তাই বর্তমান বাংলাদেশে একটি সমস্যার নামও “গার্লফ্রেন্ড” সমস্যা। উপসংহার : অনেক অপকারিতা থাকলেও শেষ পর্যন্ত গার্লফ্রেন্ড উপকারি জন্তু! প্রমাণ স্বরুপ তরুন প্রজন্মের গার্লফ্রেন্ডের জন্য হাহাকার এবং কান্নাকে দেখানো যায়। গার্লফ্রেন্ডের প্রয়োজনীয়তা বুঝা যায় এক তরুন মনীষির বাণীতে। মনীষি বলেছেন “গার্লফ্রেন্ড বিহীন তরুনের পৃথিবীতে বেঁচে থাকা, ঘাসবিহীন মাঠে গরুর পায়চারির মত”।

গার্লফ্রেন্ডকে কন্ট্রোল করা পাল্লায় তুলে দেয়া দশটি ব্যঙ কন্ট্রোল করা সমান কঠিন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।