সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা।
এই পবিত্র রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের মাস। আল্লাহ্ভীতি অর্জনের মাস। যেকোন কাজ করার পূর্বে আমাদেরকে একথা স্মরণ করতে হবে যে, আল্লাহ্ আমাকে দেখছেন। কাজটি খারাপ হলে আল্লাহ্ আমাকে অবশ্যই শাস্তি দিবেন।
আর সকল ভাল কাজ করার পূর্বে মনের মধ্যে এই উদ্দেশ্য রাখতে হবে যে এই কাজ দ্বারা আমি আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করব অন্য কাউকে নয়। অর্থাৎ লোক দেখানো নয়। তাই এই মাসে বেশি বেশি করে আল্লাহ্কে ভয় করতে হবে। আল্লাহ্ এবং রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারিত কাজ সমূহ করে আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করতে হবে।
সাধারণত রমযান মাস ছাড়া অন্যান্য মাসেও যেসব কাজ করা জায়েয রমযান মাসেও সেসব কাজ করা জায়েয।
কেবল যেসব কাজে রোযা ভঙ্গ হয় সেসব কাজ ব্যতীত। কিন্তু রসূল (সা) রমযান মাসে বিশেষ কিছু কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং উৎসাহিত করেছেন। এ কাজগুলো করতে বা আমল করতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এমন অনেকগুলো হলো-
১। সাহরি খাওয়া, সাহরি খাওয়া অবশ্যই ত্যাগ করা যাবে না।
রাসুল (সাঃ) বলেন ইহুদের রোজা ও আমাদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সাহরি।
২। পারতপক্ষে সাহরি দেরি করে খাওয়া, এটা সুবহে সাদিকের পূর্ব মুহূর্তে হওয়াই উত্তম।
৩। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইফতার করা, সূর্যাস্তের পরপরই ইফতার করতে হবে।
৪। ইফতারিতে খেজুর ও পানি খাওয়া অর্থাৎ খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করা উত্তম।
৫। ইফতারের পর রসূল (সা) নির্দেশিত দু’আ পড়া।
৬।
ইফতারির সময় অন্য রোযাদারদের সাথে রাখা বিশেষকরে গরিব লোকদেরকে ইফতারিতে রাখা।
৭। রোযার মাসে যথাসম্ভব নেক আমল করা।
৮। রমযান মাসে আমাদেরকে যত বেশি সম্ভব উদার ও মহ্ৎ হতে হবে।
বেশি বেশি সদকা করতে হবে।
৯। কেউ যদি আপনাকে রাগানোর চেষ্টা করে বা খারাপ আচরণ করে তাহলে সেক্ষেত্রে রোযাদারের উচিত উত্তেজিত না হওয়া বরং তখন বলতে হবে, আমি রোযাদার, আমি রোযাদার।
১০। মিসওয়াক ব্যবহার করা।
১১। যদি সম্ভব হয় তাহলে রমযান মাসে ওমরা পালন করা।
১২। রোযাদার সর্বদা হাসিখুশি থাকবে মনমরা হয়ে থাকা যাবে না।
১৩।
অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করা।
১৪। পরিবারকে বেশি সময় দেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ভালো ব্যবহার করা।
১৫। আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে বেশি বেশি চিন্তা করা।
১৬। অন্যের দোষ, ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেয়া, অন্যের দোষত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে বিবেচনা করা।
এছাড়া আরো কতগুলো কাজ রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে রসূল (সা) বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন তাহলো-
১। ফরজ নামাজগুলো মসজিদে জামায়াতের সাথে আদায় করা।
২।
যত বেশি সম্ভব সুন্নত ও নফল নামাজ পড়া।
৩। যতবেশি সম্ভব আল্লাহর কাছে দু‘আ করা।
৪। যতবেশি সম্ভব আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
কেননা রমযান মাস হলো ক্ষমার মাস।
৫। যতবেশি সম্ভব বুঝে কুরআন তিলাওয়াত করা।
৬। তারাবীহ’র নামাজ আদায় করা।
৭। বেশি বেশি নামাজ পড়া, বিশেষ করে রাতের শেষে ভাগে (তাহাজ্জুদ) নামাজ আদায় করা।
৮। ইতিকাফ করা।
৯।
যাকাত দেওয়া।
১০। আত্ম উন্নয়ন এবং সংশোধন করা।
১১। লায়লাতুল কদর তালাশ করা।
১২। অন্যান্য মুসলমানদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ করা এবং তাদের সাথে সংশোধন করা।
১৩। অমুসলিমদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ করা।
আমাদেরকে এই সমস্ত কাজ করে আল্লাহ্ সন্তুষ্ট করতে হবে।
হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ আদম সন্তান সকল কাজ তার নিজের জন্য করে। কিন্তু রোজা ব্যাতিত। এই রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেন- যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল অথচ তার গোনাহ সমুহ আল্লাহ্র কাছ থেকে মাফ নিতে পারল না তার মত হতভাগা আর কেউ নেই।
তাই আমাদেরকে এই মাসের গুরুত্ব বুঝতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।