কিছুদিন আগে অস্থির ছিল পোশাক খাত। এখন কিছুটা সুস্থির। কিন্তু ঈদের আগে আবারো অস্থির হয়ে উঠতে পারে পোশাক খাত। ব্যস্ততম এই সময়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি চক্র তৎপর রয়েছে। এ সময় আরেক দফা বেতন-বোনাস বাড়ানোর দাবিতে এই চক্রের সদস্যরা পোশাক কর্মীদের রাজপথে নামানোর চেষ্টা করছে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে সরকারকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। ঈদের আগে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দ্রুত পরিশোধ করার জন্য বিজেএমইএ এবং বিকেএমইএ নেতাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিসের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, রোজার মাসে পোশাক খাতে যেন কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছে শিল্প পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
জানা গেছে, গত মাসে তৈরি পোশাক খাতে ব্যাপক অস্থিরতার পর সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি শুরু করে। তারা ঢাকা ও সাভার এলাকার বিভিন্ন পোশাক কারখানায় খবর নিয়ে জানতে পারে, সরকারবিরোধী একটি চক্র এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা এই খাত অশান্ত করার জন্য ঈদের আগেও চেষ্টা চালাবে। তারা পোশাক শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, ঈদের আগে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামলে মালিকরা সহজেই দাবি মানতে বাধ্য হবে। সরকারও মালিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে শ্রমিকদের দাবি মানতে বাধ্য করবে।
কিন্তু অন্য কোনো সময়ে এই দাবি মালিক পক্ষ মানতে চায় না। রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর, পল্লবী, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মহাখালী, বনানী, কুড়িল, যাত্রাবাড়ী এবং সাভারের আশুলিয়া, বাংলাবাজার, বাইপাইল এলাকার বেশ কিছু পোশাক কারখানায় গোপনে খোঁজ নিয়ে গোয়েন্দারা এসব তথ্য জানতে পারেন। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৫ রোজা থেকে এ ধরনের আন্দোলনে নামতে পারে পোশাক শ্রমিকরা। তখন তারা রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। একটি কারখানায় আন্দোলন শুরু করতে পারলে উস্কানি দিয়ে অন্যান্য কারখানায়ও ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে।
শ্রমিকরা সবসময়ই গুজবে এবং হুজুগে আতঙ্কিত ও আন্দোলিত হয়। এ খাতে সৃষ্ট বেশকিছু বড় ধরনের অসন্তোষ গুজব এবং হুজুগের কারণেই ঘটেছিল। গত মাসে আশুলিয়ার হা-মীম গ্রুপের কারখানায় ঘটনাটিও ঘটে সালমান নামের এক শ্রমিককে হত্যার পরে লাশ গুম করার গুজবকে কেন্দ্র করে। এ ক্ষেত্রে মিরপুর ও আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলোর ওপর বেশি নজর রাখতে হবে। রাস্তা অবরোধ করা হলে ঈদ সামনে রেখে কেনাকাটা করতে বের হওয়া সাধারণ মানুষ এবং ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকবে না।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা জটিল হতে পারে। কারণ শ্রমিকদের পুলিশ রাস্তা থেকে সরাতে গেলেই রক্তক্ষয়ী সংষর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটতে পারে। এ মুহূর্তে এ ধরনের পরিস্থিতি ঘটলে তা সরকারের জন্য হবে বিব্রতকর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগে বিভিন্ন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা শ্রমিকদের দাবি আদায়ের নাম করে পোশাক শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন চালু করার দাবি জানাতে পারে।
কিছু এনজিও এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।