আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চোরের আরেক নাম বাংলালায়ন ওয়াইম্যাক্স

একজন সাধারন বাংলাদেশীর ব্লগ বাংলালায়ন এর নাম শুনলে আপনার কি মনে পরে? আমার তো মনে পরে খালি নেটওয়ার্ক এর নিভু নিভু বাতির কথা, স্পীড এর দুরাবস্থা আর বাজে কাস্টমার কেয়ার। অনেকে বলতে পারেন আমার এলাকায় কাভারেজ নেই। আমার এলাকায় ভালই কাভারেজ আছে, এক্সটারনাল মডেম এর ৩টা সিগন্যাল বারই ফুল থাকত দু বছর আগে। এখনো থাকে তবে বার বার ডিস্কানেক্টেড হয়। আর একেকবার ডিস্কানেক্ট হলে ৫মিনিটের আগে আবার কানেকশন পাবার আশা, দুরাশা।

তাও এতদিন চালাচ্ছি কারন এলাকায় ভালো কোন নেট নাই। তবে এবার এক কাহিনি হইল যার কারনে যারপর নাই ত্যাক্ত-বিরক্ত আমি। বাংলালায়ন এর ১৪০০ টাকার প্যাকেজ ব্যবহার করি। স্পীড পাই ৬৪ কিলো বাইট (কাগজে কলমে)। এ মাসের বিল দেওয়ার সময় করে উঠতে পারিনি তাই ভাবলাম ওদের দোকানে না যেয়ে, ওরা নাকি এখন কার্ড এও বিল নেয় ওটাই করি।

কিনলাম দুইটা ৭০০ টাকার কার্ড। প্রথমটা ঘষলাম, নাম্বার ইনপুট করলাম ৭০০ টাকা রিচারজ হল। বিপত্তি আসল সেকেন্ড কার্ড টার বেলায়। স্ক্র্যাচ কার্ড ঘসার পর দেখা গেল নিচের লেখা পরিষ্কার না। এমন না যে আমি জোরে ঘসার কারনে লেখা উঠে গেছে, স্ক্র্যাচ কার্ড ঘসতে তো আমরা সবাই জানি।

কার্ড টার পিন নাম্বার এর দুটো ডিজিট আসলে প্রিন্ট ই হয়নি ঠিকমত যার কারনে ওটা অস্পষ্ট। তো গেলাম অকেজো কার্ড নিয়ে সেই দোকানে যেখান থেকে কিনেছি। তারা ফোন দিল বাংলালায়ন এর অফিসে। ওনারা বলল "দেখবেন", কার্ড রেখে যেতে। এখন আমি কি করব? আমার নেট লাইন ডিস্কানেক্টেড হয়ে যাবে দুপুরে।

দোকানদার বলল কালকে আসেন কার্ড পাবেন। অগত্যা ভাবলাম থাকি একদিন নেট ইউজ না করে, কি আর হবে। পরের দিন গেলাম। দোকানদার বলে বাংলালায়ন কার্ড ফেরত দেয় নাই এখনো, "একটু টাইম লাগবে"। ভালো কথা টাইম লাগবে, কিন্তু এতদিন কি আমি নেট ইউজ না করে থাকব? তোমরা শত কোটি টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিতে পারো আর একটা সামান্য স্ক্র্যাচ কার্ড প্রিন্ট করতে পারনা নির্ভুল ভাবে? দোকানদারের কাছে থেকে শুনলাম আরও কয়েকটা সেইম কেস হয়েছে তারই দোকানে।

এখন ওইসব বাল-ছাল কার্ডের খেসারত আমার মত সাধারণ ব্যাবহারকারিদের দিতে হচ্ছে। আমি তখন বাধ্য হয়ে অন্য দোকান থেকে আরেকটা ৭০০ টাকার কার্ড কিনেছি, কারন নেট দরকার বাসায়। অন্যান্য চুরি আজকে যখন লিখছিই তখন আরও একটা জচ্চুরির কথা লিখি এই দেশী কোম্পানিটার। আমি বাংলালায়ন নেই দুই বছর আগে। তখন ১০০০ টাকায় ৩২ কিলবাইট পেতাম, স্পিডও কন্সটান্ট; আমি বেশ খুশী।

নেটওয়ার্কও ছিল ভালো, কোন ঝামেলা করত না। ৬মাস পরেই শুরু হল নেটওয়ার্ক প্রব্লেম। খালি নেট চলে যেত, স্পীড কমে যেত ইত্যাদি। তাও মেনে নিলাম কারন ঐ যে, আইএসপি এর অভাব। এরপরে হঠাত বাংলালায়ন যেন দাতা হাতেম তাই হয়ে গেল, স্পীড ডাবল করে দিল! একদম মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি মার্কা অবস্থা।

আগের এক হাজার টাকায়ই এখন আমি পেতাম ৬৪ কিলো বাইট, আমার খুশী দেখে কে। এতদিনের সব নেটওয়ার্ক বিভ্রাটের দুঃখ ঘুচে গেল, আমিও বাংলা বিলাই কে সাধারন ক্ষমা ঘোষণা করে দিলাম। কিন্তু বিধি বাম, সুখ বেশী দিন সইল না এই পোড়া কপালে। কিছুদিন পরেই তারা আবার আগের স্পীডে নামিয়ে আনল আমাদের। কিন্তু একবার যদি ৬৪ কেবি তে ব্রাউজ করার মজা কেউ পায় ওই নেশা কি ছাড়া যায়? তাই চিন্তা করে দেখলাম ৬৪ কেবি এর প্যাকেজ টায় আপগ্রেড করব নাকি? খোঁজ নিয়ে দেখলাম এখন তারা ৬৪ কেবির প্যাকেজের দামও বারিয়ে দিয়েছে আগে যা ছিল তার চেয়ে! শালাদের চালাকিটা দেখলেন? ব্রিটিশরা বাঙ্গালিদের ফ্রি ফ্রি চা পান করিয়ে এর নেশায় অভ্যস্ত করে, এরপর যখন বাঙ্গালি চা এর জন্য মোটামুটি পাগল তখন ফ্রি চা বন্ধ।

তখন ব্রিটিশরা বলে লিপ্টন চা কিন্না খা। বাংলালায়ন কি একই কাজ করল না? শেষ কথা আজ ১ সপ্তাহ হল আমি ডেইলি ফোন দেই দোকানদারকে কিন্তু বাংলালায়ন এর কোন খবর নাই। ওই কার্ড আমি নিয়েই ছাড়ব, নেক্সট মাস টা ওই কার্ড দিয়েই চালাব। তবে এটাই শেষ মাস হবে, এর পরেই আমি ডিঅ্যাক্টিভেট করতেসি এই ফাউল নেট। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.