স্মৃতির খেরোখাতা খুলে দেখো, হয়তো পাবে আমায়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চঃ
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক তিনটি টিভি চ্যানেলের সন্ধ্যার খবরের সংকলন এই ফুটেজটি।
এবিসি, সিবিএস এবং এনবিসি- তিনটি চ্যানেলই তাদের ব্রেকিং নিউজে বলে পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন,পূর্ব পাকিস্তান এখন থেকে বাংলাদেশ।
শুরুতেই এবিসি নিউজের সংবাদ পাঠক জানাচ্ছেনঃ
পূর্ব পাকিস্তানে দারিদ্রতা ও বঞ্চনাজনিত ঘৃণা অবশেষে গৃহযুদ্ধের রূপ নিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রদেশটির স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এবং এখন থেকে তা বাংলাদেশ বলে অভিহিত হবে।
এরপর ঢাকা থেকে টেড কপেলের বরাতে এই স্বাধীনতার ঘোষনার নেপথ্য বর্ণনা।
সিবিএস নিউজে বলা হয়েছেঃ
পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে, ঢাকা চট্টগ্রামসহ পূর্বপাকিস্তানের বড় শহরগুলোয় সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র এমনকি লাঠি ও পাথর নিয়ে লড়ছে জনগন। এক রেডিও ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্ব ফেরাতে সেনাবাহিনীকে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে একটি গোপন রেডিও স্টেশন থেকে প্রচার করা হচ্ছে যে রহমান (শেখ মুজিব)বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। …
এরপর বিদেশী সাংবাদিকদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ কিছু কথাবার্তা রয়েছে।
পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন কেউ ঠেকাতে পারবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় জানান মুজিব।
স্বায়ত্বশাসন!-এক সাংবাদিকের অবিশ্বাসী উচ্চারণে মুজিবের জবাব- "অবশ্যই। কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমি আমার অধিকার চাই। আমার পেছনে সাত কোটি মানুষ, এমনকি সেনাবাহিনীও সেটা ঠেকাতে পারবে না।
আমরা ওদের পরোয়া করি না। আমার জনগনের সবাইকে কি ওরা বুলেট দিয়ে নিকেশ করতে পারবে? বাংলার নির্বাচিত প্রতিনিধি আমি, আইনত এবং ন্যায়সঙ্গত। এই দেশ শাসন করার অধিকার আমার আছে। " এনবিসি নিউজও ফরাসি টিভির ধারণ করা ওই অংশটি সহকারে গৃহযুদ্ধের খবর প্রচার করেছে।
আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছেন তা ইতিমধ্যেই সংবিধান ও উচ্চ আদালতের রায়ে নির্ধারিত ও মিমাংসিত।
তারপরও হাওয়া ভবন ও মগবাজারে যৌথ প্রযোজনার সেই হাউকাউ বন্ধ নেই।
মিথ্যাচার এবং ষড়যন্ত্র যাদের ভরসা, যারা নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করে মনগড়া গল্প বানায়, তাদের মুখ চাইলেও তো বন্ধ করা যাবে না। তবে শুদ্ধ ইতিহাসের স্বার্থে প্রমাণগুলো রইলো। অন্তত দেখানো তো যাবে!
(সৌজন্যে : জন্মযুদ্ধ ’৭১)
http://www.youtube.com/watch?v=_CfluI9r_E8 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।