আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয়তু বাঙালি সত্যেন বোস! আজকের দিনটি এ শতকে বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ দিন। আমরা সম্ভবত ঈশ্বর কণা(হিগস বোসন কণা)'র অস্তিত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য উদঘাটন করতে পারব

মানুষে মানুষে সমানাধিকারে বিশ্বাস করি সত্যেন বোস পিটার হিগস নতুন একটি ‘অতিপারমাণবিক’ কণার সন্ধান পেয়েছে ইউরোপীয় সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চের (সার্ন) বিজ্ঞানীরা। আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.২০ এর দিকে বিবিসি ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে সার্নের বিজ্ঞানীদের সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। একই সাথে বিবিসি বিজ্ঞানী হিগসের একটি প্রতিক্রিয়াও প্রচার করেছে যেখানে তিনি তার জীবদ্দশায় এটি ঘটায় আনন্দ প্রকাশ করেন। আমাদের বাঙালির নামও বিজ্ঞানীর এই অসামান্য অগ্রযাত্রায় অলংকৃত হলো। মনে রাখতে হবে এই হিগস-বোসন নামটির সাথে আমাদের সত্যেন বোসের নাম জড়িয়ে আছে।

বোসনিক মডেল থেকে বোসন শব্দটি এসেছে আর বোসন হলো পূর্ণসংখ্যক স্পিনবিশিষ্ট একটি মৌলিক কণিকা। এই কণিকা বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান মেনে চলে । প্রখ্যাত বাঙালি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন বোসের (বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানের বোস) নামানুসারে এই কণিকার নামকরণ করা হয়েছে। এক শক্তিস্তরে অনেকগুলি বোসন একসঙ্গে থাকতে পারে, যা পলির নীতি মেনে চলা ফার্মিয়নদের পক্ষে সম্ভব নয়। ইউটিউব লিংক এলএইসসি এই কণাকে নিশ্চিতভাবে বহুল আলোচিত ‘হিগস বোসন কণা’ হিসাবে দাবি না করলেও সংস্থাটি বলছে, এর কাঠামো ও আচরণ হিগস বোসন কণার সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’।

বুধবার লন্ডনে সার্নের এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটেন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফ্যাসিলিটিজ কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী জন উমার্সলি বলেন, “একটি নতুন কণার আবিষ্কারের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত, যা হিগস বোসন তত্ত্বে উল্লেখিত কণার সঙ্গে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ। ” ‘বিগ ব্যাং’ নামের মহা বিস্ফোরণের পর মহাবিশ্বের সূচনালগ্নে যে কণাটি প্রধান ভূমিকা রেখেছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেই হিগস বোসনের নাম রাখা হয়েছে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী পিটার হিগস এর নামের শেষাংশ এবং বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম মিলিয়ে। ‘ঈশ্বর কণা’ নামেও পরিচিত এই কণার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গেলে ‘মহাবিস্ফোরণের’ পর কীভাবে সূর্য ও গ্রহ তৈরি হয়েছিল, এমনকি জীবনের রহস্যও বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করেও এর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো প্রমাণ বিজ্ঞানীরা এখানো পাননি। জেনেভার কাছাকাছি ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডের সীমান্তবর্তী ইউরোপীয় পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র সার্নে মাটির নিচে সুড়ঙ্গে বিগ ব্যাংয়ের ‘মিনি সংস্করণ’ সৃষ্টির চেষ্টায় বিজ্ঞানীরা আলোর গতির কাছাকাছি অতি উচ্চ মাত্রায় কণিকাগুলোর সংঘর্ষ ঘটান।

দুই দফা চলে তাদের পরীক্ষা। সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কলাইডারের (এলএইচসি) ২৭ কিলোমিটার ডিম্বাকৃতির সুড়ঙ্গপথে আলোর গতির কাছাকাছি এক ন্যানো সেকেন্ডে রেকর্ড ৭ বিলিয়ন বিলিয়ন ইলেক্ট্রন ভোল্ট ক্ষমতায় এই পরীক্ষা চালানো হয়। দুই দফা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো গবেষক দলের মুখপাত্র জো ইনকানডেলা জেনেভায় সার্নে বুধবার নতুন কণা আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, “এটি প্রাথমিক ফলাফল। তবে আমরা মনে করি এই ফল যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য। ” এই কণা আসলেই ‘হিগস-বোসন’, নাকি সম্পূর্ণ নতুন একটি কণা- সে সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত নন সার্নের বিজ্ঞানীরা।

যদি দ্বিতীয়টি সঠিক হয়, তাহলে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তাদের আবার নতুন করে ভাবতে হবে। বিঃদ্রঃ ব্লগটি লিখতে সায়েন্স টুডে এবং বিডিনিউজ২৪-এর সাহায্য নেয়া হয়েছে। হাফিজুর রহমান মাসুম, অধ্যক্ষ, এলিকজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাতক্ষীরা  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।