এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনল যারা আমরা তোমাদের ভুলবা না মুহাম্মদ মুরসি, মিশরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রথম প্রেসিডেন্ট। ডক্টর মুরসি মিশরের রাজনৈতিক দল "ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস" পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এর আগে মিশরের ইসলামিক আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুডের জেনারেল গাইডেন্স ব্যুরোর একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ব্রাদারহুডের সমস্ত নেতাদের মাঝে সবচাইতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং প্রভিভাবান যিনি বিগত কয়েক দশক ধরে স্বৈরাচার হোসনি মোবারক সরকারের শোষণ, অন্যায়, নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তার পুরো নাম মোহাম্মদ মুরসি ইসা আয়াত।
তিনি ১৯৫১ সালের আগস্টে মিশরের শারকিয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে কায়রো ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি সম্পন্ন করেন, এরপর একই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ইন মেটালারজি ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৭৮ সালে। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ডক্টরেট অর্জন করেন।
তিনি কায়রো ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াতে লেকচারার এবং টিচার অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে ড মুরসি ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ রিজে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
১৯৮৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রফেসর ড মোহাম্মদ মুরসি মিশরের জাগাজিগ ইউনিভার্সিটির ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের প্রধান হিসেবে কাজ করেন।
মোবারক সরকারের একটানা শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তার দৃপ্ত অবস্থানের জন্য ড মুরসিকে অনেকবার কারাবরন করতে হয়েছিলো। ২০০৬ সালের ১৮ মে মুরসিকে আরো ৫০০ জন ব্রাদারহুড সদস্যসহ আটক করা হয় কায়রোতে। তিনি সাত মাস কারাগারে ছিলেন। ২৫ জানুয়ারির পর থেকে হোসনি মোবারক সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লব চলাকালীন সময়ে ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারিতে "ফ্রাইডে অফ অ্যাঙ্গার" এর দিন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিপ্লবে যখন অনেক কারাগার ধ্বংস করে দেয়া হয়, তখনো মুরসি কারাগার ছাড়েননি বরং স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এবং নিউজ এজেন্সিগুলোতে আহবান জানিয়েছিলেন যাতে আদৌ কোন আইনগত যৌক্তিক কারণে তাদের কারগারে প্রেরণ করা হয়েছিলো কিনা সেটা আইনজীবীদের মাধ্যমে ভালো করে খতিয়ে দেখা হয়।
মুহাম্মদ মুরসিকে শুধু নয়, তার পরিবারকেও অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিলো। ২০০০ সালে মুরসিকে পার্লামেন্টের নমিনেশনের জন্য ঘোষনা করা হলে তার ছেলে ডক্টর আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পিতা মুহাম্মদ মুরসি যখন সংসদের এমপি ছিলেন, তখনো তাকে ৩ বার গ্রেপ্তার করা হয়।
৫ বছর পার্লামেন্টের সদস্যকালীন সময়ে রাজনৈতিক কাজে তার সুদক্ষ আর অসাধারণ নৈপুণ্যের কারণে মুহম্মদ মুরসিকে মুসলিম ব্রাদারহুডের শুরা কাউন্সিলের "গাইডেন্স ব্যুরো" -এর একজন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
২৫ জানুয়ারির গণআন্দোলনের পর মুরসিকে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক দল "ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টি" (এফজেপি) এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করে মুসলিম ব্রাদারহুডের শুরা কাউন্সিল।
মিশরের ২০০০ সালের পার্লামেন্টের পার্লামেন্টারি ব্লকের লিডার হিসেবে মুরসি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেন। তিনি সবচাইতে কর্মোদ্যমী এবং সফল সংসদ সদস্য ছিলেন। বেশ কিছু জাতীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে তিনি সুদক্ষ ভূমিকা রাখেন। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তাকে ২০০০-২০০৫ সালের কাজের জন্য সেরা পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।