আমার পাশের বাসার একটি সত্তিকার ঘটনা শুনুন ভাই । একমাত্র ছেলেকে বহু কষ্টে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করালেন আঙ্কেল – আনটি । তারপর পাঠালেন জার্মানি এমএ করার জন্য । মাজখানে আসলেন বিয়ে করার জন্য । বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে গেলেন আবার ।
এক বছর হল তারপর থেকে । এখন আঙ্কেল আনটির বয়স হয়েছে ,তার চেয়ে বর সমস্যা হল উনারা একা । বারবার বলছেন হয় তুমি চলে আসো না হয় আমাদেরকে নিয়ে যাও । ছেলে একটিও করছেনা ,বলছে তার পক্ষে এখন আসা সম্ভব না এবং ভিসাও নাকি এখন হচ্ছে না ।
যাই হোক আঙ্কেলের অবস্থা ভাল অর্থনৈতিক ।
এখানে ফ্ল্যাট আর চাকুরী এখন বেশ কিছু বছর আছে । সুতরাং তাদেরকে হয়ত দৈন্য দশায় পরতে হচ্ছে না আমাদের দেশের অন্য সব নিরুপায় পিতা-মাতার মত , যারা তাদের রক্ত পানি করে ছেলে মেয়েদের পরাশুনা করিয়েছেন ,বড় করেছেন , মানুষ বানিয়েছেন কিন্তু আজ তারা তাদের সাথেই অমানুষের মত আচরন করছে ।
আমরা পিতা মাতাকে বৃদ্ধ বয়সে এক অমানবিক অত্ত্যাচারের মাঝে রাখছি যদিও কিছু ব্যাতিক্রম আছে । কিন্তু কেন ?
আমার কোন অভিযোগ নেই যদি সন্তানের আর্থিক সঙ্গতি না থাকে যদি সে আসলেই ভরন পোষণে বেরথ হয়ে থাকে । আমার অভিযোগ সেখানেই যেখানে উপরে বর্ণিত ঘটনা ঘটে ।
এটি কিন্তু আজ ঘরে ঘরে হচ্ছে ,মধ্যবিত্ত থেকে উচ্ছবিত্ত বরং নিন্মবিত্তের মানুষ এখনো তার পিতা মাতার জন্য তার শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত উৎসর্গ করে কেননা তার ভিতরের যেই মানুষ সেটি এখনো মারা যায় নি ।
উদাহরন দিলে হয়ত আরেকটু পরিস্কার হবে । আমার কাছেই উদাহরন আছে । আমার এক পরিচিতজনের হসপিতাল বিলের জন্য তার ছেলেদের ভিতর প্রতিযোগিতা হত । কে বেশী দিবে তার জন্য নয় বরং কে কম দিবে ।
আশ্চর্য হচ্ছেন ? না প্লিয এত তারাতারি না । তারা কি করেন আগে শুনুন , তারা একজন আজকে দীর্ঘ সময় ধরে আইন ব্যাবসা করছেন আরেকজন একটি বেসরকারি ব্যাংকেড় ব্রাঞ্চ ম্যানেজার । এই বার বলুন । দুরভাজ্ঞজনকভাবে তারা আমার খুব কাছের মানুষ ।
এবার আসুন দুরের এক মানুষের কথা বলি , আমার মা যেই স্কুলে চাকুরী করেন সেই স্কুলের মহিলা কেরানি যাকে শিক্ষক্রা বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেন স্কুলের বেতনের পরও ।
তার জামাই সহ সে এক রুমে দুই ছেলেসহ থাকে । তার জামাই বিভিন্ন রকম কায করে দোকানের পাশাপাশি ,এককথায় মেহনত দিনভর । কিন্তু তারা খাক বা না খাক তাদেরকে তিন ,চারহাজার টাকা বাড়ি পাঠাতে হয় তার মায়ের জন্য । “ তারপর যখন ব্রিদ্ধা মহিলা ইলিশ কিংবা আম খেতে বায়না করেন তখন ওই লোকের চোখে জল চলে আসে কিন্তু মুখে না শব্দটি আসেনা “।
আমার প্রশ্ন হল আমার সেই সব ভাইদের কাছে যারা আমাদের মত পরাশুনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন নামি দামি চাকুরী করছেন , মাসে লাখো কামাচ্ছেন আপনারা একোন সংস্কৃতির দিকে এগুচ্ছেন ? একোন অসভ্য আচরন নিজের পিতা মাতার প্রতি ? আমরা কি আজ অন্ধ হয়ে গেছি আমাদের দায়িত্বগুলির প্রতি ?
আসুন একটু আলোচনা করি আমাদের এই সমাজ কিভাবে এই চরম অনৈতিক , অসভ্য আচরণটিকে সামাজিক রুপ ধারন করার সুযোগ দিয়েছে ?
এই চরম অনৈতিক কাজতিকে নীতিগত করা হয় বৃদ্ধ আস্রমে যেখানে আমরা আমাদের পিতা মাতাকে রেখে আসি এবং মাসে মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ পরিশোধ করি ।
ভেবে দেখুন ব্যাপারটি ঠিক আমাদেরকে শিশু বয়সে বোর্ডিং স্কুলে পাঠানর মতই । আপনি তো আপনার শিশুকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠাবেন না ঠিক যেমন আপনার পিতা মাতাও
পাঁঠায় নি তাহলে আজকে কেন ওই বয়স্ক শিশুটিকে পাঠাচ্ছেন বনবাসে । শুধু কি এটাই কারন যে আপনি আপনার শিশুর কাছ থেকে অনেক কিছু পাবেন আর ওই মানুষটার আর দেয়ার মত কিছুই নেই ?
লজ্জা লজ্জা লজ্জা । এই বোঝা ওই বৃদ্ধ মানুষটার মাথায় না দিয়ে তাকে বিষ দিয়ে হত্ত্য করুন কেননা ওই আস্রমের একাকিত্তের বিষে ধিরে ধিরে মরার চেয়ে তার জন্য একবারই মরে যাওয়া সহজ হবে ।
আসুন আমরা সবাই আল্লাহর(সৃষ্টিকর্তা) কাছে এই দুয়া করি যাতে তিনি আমাদেরকে সামর্থ্য এবং সৌভাগ্য দেন যে আমরা আমাদের পিতা মাতার সেবা করতে পারি ।
আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।