আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মতিঝিল অভিযানঃ মিথ্যা গুজবকে সত্যে পরিণত করার সম্ভাবনা ও ষড়যন্ত্র

আমি কেবলই আমার মতো সাধারন মানুষের প্রত্যাশানুযায়ী পরিচালিত অভিযানের সময়কালে দু'টি টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ধর্মকে অবমাননার এবং ধর্মীয় উস্কানি দেয়ার। সেসব আইনী বিষয়, আমার বলার কিছু নাই। সেই অভিযান আমি দেখেছি অন্যান্য চ্যানেলে। আমার নিজের টিভি না থাকায় নিয়মিত দেখতে পারিনা।

ইচ্ছেও করেনা। তাই কোন বন্ধুর বাসায় রাত যাপন করে টিভি চাক্ষুষের প্রয়োজনীয়তা মেটাই বরাবরই। তো সে রাতেও দেখলাম মুটামুটি ভোর নাগাদ পর্যন্ত লাইভ। আমার মতো অনেকেই দেখেছে হয়ত। সেই অভিযানের বিষয়ে শুরুতেই আমার মাথা ঘুরে গিয়েছিল।

ভাবতেই পারছিলাম না যে, কত রক্ত ঝরবে! কেননা, সারাদিন হেফাজতের নেতারা যে জঙ্গী ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন এতে এমন-ই আশংকার জন্ম দিয়েছিল সকলের মতো আমারও ভিতরে। শেষ নাগাদ সকল আশংকাকে মিথ্যা প্রমানিত করল আইন প্রয়োগকারী বাহিনী। শুধু রক্তপাত নয় গ্রেফতারের সংখ্যা দেখেও আমি বিস্মিত। ধন্যবাদ দিতেই হয়। এরকম পরিস্থিতি অবলোকনের অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকটা বিমর্ষ যে ছিলাম না তা নয়।

কিন্তু আশান্বিত হয়েছি বারবার। আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর চৌকশ অভিযানে উনাদের প্রতি শ্রদ্ধাও বেড়েছে নিঃসন্দেহে। সে যাই হোক। আসল কথায় আসি। পরদিন থেকেই বিরোধীদল সহ জামাত ও হেফাজত প্রত্যেকেই দাবী করছে যে, অভিযানে নাকি 'সহস্রাধিক' ব্যক্তি নিহত হয়েছে।

ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ত্রাক ভরে নাকি লাশ পিলখানা বিজিবি এর গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে ইত্যাদি। অথচ আমরা যারা টিভিতে লাইভ দেখেছি তারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবো যে, এটা ডাহা মিথ্যা, মতলববাজি এবং অপরাজনৈতিক প্রপাগান্ডা। উনাদের সমর্থিত কিছু পত্রিকাও একই সুরে কথা বলছে ও লিখছে। কিন্তু যেসব মিডিয়া সেখানে উপস্থিত ছিল এবং লাইভ দেখিয়েছে এখন তারাও সত্যের পক্ষে বলতে গিয়ে উনাদের রোষানলে পড়ছেন। এখন যেহেতু 'সহস্রাধিক' কথাটি উনারা বলে ফেলেছেন এটার কী হবে? নিশ্চয়ই কিছু একটা হবে।

যে দু'টি টিভি চ্যানেল বন্ধ আছে সেগুলো একদিন নিশ্চয়ই চালু হবে। তখন দেখা যাবে, সত্য ঘটনার সঙ্গে দেশ-বিদেশের আরো অনেক হতাহতের ছবি জুড়ে দিয়ে 'সহস্রাধিক' কথাটাকে সত্যে পরিনত করার হীন চেষ্টা করা হবে। এরমধ্যে উনারা মাঠে-ময়দানে টকশোতে 'সহস্রাধিক' কথাটিকে ব্যবক প্রচারনা চালিয়ে সত্যের বিপরীতে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবেন। আর যখনই সেই দু'টি চ্যানেল সাজানো ভিডিও মাঠে ছাড়বে তখন মানুষও বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। এটাই উনাদের লাভ।

এটাই উনারা করবেন। ইতোমধ্যে দেখলাম ফেসবুকে সিরিয়ার একজন বয়স্ক ব্যক্তির মরদেহের ছবিকে হেফাজতের বলে অপপ্রচার চালানো শুরু হয়েছে। আর সত্যি সত্যি যদি এরকম কিছু হতো নিশ্চয়ই দু'দিনে ধারনকরা ভিডিও মাঠে ছেড়ে দিতেন যেকোন কৌশলে। ওই দু'টি চ্যানেলের লোকেরা কিন্তু মতিঝিলে ছিল এবং ভিডিও ধারনও করেছে। ফেসবুক বা ব্লগে না ছেড়ে এতক্ষন চুপ থাকছে এটা অবিশ্বাস্য! আসলে ফটোশপের কাজে একটু সময় লাগছে আর কি!! সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল যেমন ফেসবুকের কাটছাট করা ছবিকে সত্য বলে চালাতে গিয়ে তোফায়েল আহমেদসহ অনেকের কাছে অপমানিত হয়েছিলেন, খোকা সাহেবরাও আগামি দিনে সম্ভাব্য প্রচারিত হওয়া 'সহস্রাধিক' হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এরকম অপমানের মুখোমুখি হবেন বলে ধারনা করা যায়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.