মতিঝিল এলাকা গড়ে উঠেছিলো মুঘল আমলে। এলাকাটি ছিল মির্জা মোহাম্মদের মহল। মহলের ভিতর ছিল একটি বড় পুকুর, যার নাম ছিল সুকাকু মহলের পুকুর-যার অস্তিত্ব এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের দক্ষিন পূর্ব দিকে এখনও বিদ্যমান। পুকুর মানে একটি মনোরম ঝিল-সেই ঝিল থেকেই পরবর্তীকালে এর নাম হয় মতিঝিল। মতিঝিলে ছিল ঢাকার একটি প্রাচীন মাজার-শাহ জালালের মাজার।
এই শাহ জালাল মোঘলদের একজন পদস্থ্য কর্ম কর্তা এবং ধর্মানুরাগী ব্যাক্তিত্ব ছিলেন। এই এলাকায় মোঘল আমলে বিভিন্ন উতসবে বারোয়ারী মেলা বসতো। ডি আইটি(বর্তমান রাজউক ভবন)-র পাশে যে প্রাচীন মসজিদটি আছে সেটিও শাহ জালালের (সিলেটের হযরত শাহ জালাল নয়) সময় নির্মিত।
পুরনো মতিঝিলের একটি বর্ণনা পাওয়া যায় হাকিম হাবিবুর রহমানের লেখায়-'মতিঝিল এবং দিলখুশা গার্ডেন’ উভয়টি এলাকা এককালে এক এলাকায় অবস্থিত ছিল কিন্তু দুই অংশের দুটি নাম করন করা হয়েছিল বাগানের বৈশিস্টের কারনে। মাঝামাঝি যে রাস্তাটি দুই অংশকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলো, তা ইংরেজ আমলে তৈরি হয়েছে।
বাগানের পূর্বদিকে যে খালটি প্রবাহিত হচ্ছে, তাও পূর্বে এ মাজারের এলাকার সাথে সংযুক্ত ছিল। খাল হতে বের হয়ে মাজারের নিকট এসেছিল আরেকটি খাল। যার নিদর্শন গভর্নমেন্ট হাউস অর্থাৎ বর্তমান বংগভবনের দক্ষিণ দিকের সড়কের ওপর নির্মিত সেতুটি বহন করে চলেছে। নালাটির ওপর পুল নির্মাণ করার কারণে নৌকা চলাচলের অসুবিধা হওয়াতে মেলাটিও একসময় বন্ধ হয়ে যায়। তখন লোকজন মীরপুর শাহ আলীর মাজারে যাওয়া শুরু করে।
আগে সেখানে তেমন ভিড় হতো না।
নওয়াব আবদুল গনি একসময় এই এলাকার মালিক হন। তখন তিনি মতিঝিলে বাগানের পত্তন করেন, দিলখুশাতেও গড়ে তোলেন বিশাল এক বাগান। দিলখুশা মানে-দিল খুশী। এই নামটি সম্ভবত নওয়াব আবদুল গনিরই দেওয়া।
সেখানে তাঁর বাগানবাড়িও ছিল। হাকিম হাবিবুর লিখেছেন, ১৯০৫ সালের পর সম্পূর্ণ এলাকাটি সরকার অধিগ্রহণ করে গভর্নমেন্ট হাউজ তৈরির জন্য-যা এখন বংগভবন।
তথ্য সূত্রঃ ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী: মুনতাসীর মামুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।