Nothing to put forward - nothing at all. ০১.
দীর্ঘ বিষাদের পর রোদ উঠে গেলে খুব ভালো লাগে।
মনে হয় এক হাতে বেদনা বর্তন লুকিয়ে লুকিয়ে
রেখে আর হাতে অদ্ভুত জোনাকীর দেদীপ্য
ফরফরাস জ্বালিয়ে দিয়েছে কেউ। মিটি মিটি আলো।
ভেজা ঘাসে পা রাখছে সুবোধ বালক
বিমূর্ত পালক তার বাতাসে উড্ডীন।
যেন সেও ডানা ভাঙা প্রজাপতি
হাওয়ায় উড়িয়ে তাকে
কোনো নীল বেদুইন
জাদুর ঘুড়ি ওড়াতে চেয়েছিলো;
নিজের অদক্ষতায় ভেঙে গেছে পাখা
ছিঁড়ে গেছে অদৃশ্য বাঁধন;
তাই তাকে মাঠের দোহাই
বিষাদের ছাই দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো
সুবোধ বালক।
০২.
বিষাদ আকৃতিহীন।
বেদনার মত অত স্বল্পগ্রাসী নয়।
যন্ত্রণার মত নয় কারণকেন্দ্রীক।
এক এক বার জোনাকীর আলোতে ডুবিয়ে
ভরাদিন রোদ পবনের দিকেও নিয়ে যাওয়া যায়
লীন হিমাংশুর দিকে।
০৩.
তাড়া তাড়া লাল খতিয়ান
আঙিনায় বিছিয়ে যখন
আঙুল নাড়াতে থাকে মহাজন
প্রতিটি পাতায় যত আঁক
হীন অংক লেখা আছে দাগে
হাত রেখে খতিয়ানে দুঃখ মাপা যায়।
বেদনাও যায়।
লোলুপ আয়াস ঘিরে তাতে কী রচিত হয়?
কোন্ পার্বণের দিকে রোজ একা হাঁটে নির্জন মিস্তিরি?
শেষ কথা তাহলে কি দু’জনেই Ñ
নির্জন মিস্তিরি আর মহাজন, বধির মহাজন,
খতিয়ান খুলে খোঁজে লাল পথ
একটাই আরাধ্য সুগোল
যার মাঝে আমরণ বসে বসে
স্বপ্ন দেখা যায়।
০৪.
নিশ্চিত নিদ্রায়
কে শোনে বাবুই
পাখির প্রলাপ,
ঠোঁটে একরাশ
সাধনার খড়
কুটো সংগ্রাম;
এখানে এপাশে
আমি Ñ আমরাও
ছদ্ম মিতালীর
ভান করে করে
আসলে ক্রন্দন
গোপনে জমাই,
ঢেলে দেই মুখে
তোমার ঠোঁটেও
বেদনা বিহ্বল
একমাত্র রাত
ঘুমিয়ে কাটাবো
বলে।
এখানে কি শান্তিলতা নেই?
পাথরের গবাক্ষে তবে যে সন্ধ্যায়
মেয়েদের হাতে চুড়ি দুলে ওঠে,
পায়ের স্মারক জ্বলে জ্বলে,
ফ্যানের ঘুর্ণনে শোনা যায়
সূর্যাস্ত গোধূলি গান, মায়াবী সংগীত?
ওটা বুঝি গান নয়। ধ্বনি।
বাবুই পাখির অপলাপ
যেই রাতে চুরি গিয়েছিলো
ত্রস্ত বিভাবরী গিঁথে গিয়েছিলো
অলস গ-ারের শিঙে,
তারপর থেকে শোনা যায় এই ধ্বনি।
ন¤্র চুড়িধ্বনি। মেয়েদের টুংটাং
পায়ের স্মারক থেকে আলো ফোটে
মৃত জোনাকীর ফসিল ফসফরাস।
ওগুলো আসল নয়। মায়ামতি খেল।
তোমাদের আটকে রাখার
কৌশলী প্রয়াস।
সন্ধ্যাসন্নিকটে
যখনি দেখতে পাবে তুমি
আকাশে উড়ছে কুটো, পাখিদের ছায়া
ভেবে নিও এও এক জাদুর জাতক
শহররক্ষা বাঁধের ওইপাড় থেকে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে যেতে এসেছিলো।
রাতে যে শোণিত ঝরে
তাহাও প্রকৃতপক্ষে নয়
দুর্দন্ত নূপুরজল
একে ধরে নিও অশ্বের তা-ব দেখা
অনভিজ্ঞ জুয়ারীর তীব্র বিবমিষা
বেদনা উদ্গার;
দিনের অন্তিমে যেই ভয়াল শূন্যতা
ফ্যানের পাখায় ঝুলে থাকে,
ক্রমাগত ডাকে,
এসো আমার কিংবদন্তীর
সেরা পালোয়ান। রাজকুমারীকে
উড়াল বাহন দিয়ে তুলে নিয়ে যাও।
নিশ্চিত নিদ্রায়
কে শোনে বাবুই
পাখির প্রলাপ।
পাখা ঝুলে থাকে
থেমে থাকে ফ্যান;
আর দীর্ঘশ্বাস
ক্রমাগত ঘনিয়ে উঠতে থাকে প্রাসাদের বুকে।
০৫.
আমাকে বাঁচাও তুমি বিষাদ নর্তক
কোনো যাত্রাপুরী নেই, পালাগান নেই
কামিজের ছোপ থেকে খসে পড়া কোনো
অনিন্দ্য বাগান নেই। এইখানে আছে
শুধু বেদনা বর্তন। রেশ। মৃতপাতা।
পাতলুন ভরে থাকা লোহার পেরেক।
আমাকে শোনাও তুমি বিষাদ জর্জর
বিলুপ্ত ডাহুক, প্রতিবেশী ডাহুকীর মধ্যরাত্রিগান
চামড়ার আবরণ থেকে
ধীরে ধীরে খসে যাক কাঠ, পলেস্তরা
আমি মগ্ন হই
বৃক্ষকুলদেব
হংসশালুকের
স্বপ্নলব্ধ চোখে।
###
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।