সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল খুব স্বাভাবিকভাবেই রোহিঙ্গা নিয়ে আলাপ আলোচনা তুঙ্গে। পক্ষ্যী বিপক্ষ্যে নানা মত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া না দেয়া নিয়ে উপসংহার এ না টেনেই আগের লেখাটি লিখেছিলাম। যারা পড়েননি পড়ে নিতে পারেন।
যাহা বলিবো সত্য বলিবো ১২- রোহিঙ্গা রক্তে রাঙ্গানো পাশার ছক, আমরা কেবল নিরব দর্শক
যারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার পক্ষ্যে, মানবাধিকার তাদের কাছে মুখ্য।
আবার তারা এর বিপক্ষ্যে, তাদের যুক্তিগুলিও বেশ শক্ত।
রোহিঙ্গাদের পক্ষ্য বিপক্ষ্যে যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ ধরা। এই ইস্যুটি শয়তানের বাশের মধ্যে গুড় লাগানোর মতই। যেই দিকেই যান, পাতানো জালে আমদের ধরা পড়তেই হবে।
প্রথমে দেখা যাক, ওদের আশ্রয় দিলে কি হবে?
চরম সত্য কথা হলো, শরনার্থি পালনের মত্ত সামর্থ আমাদের নেই।
তাছাড়া সেই ৮২ সাল থেকেই তো দুই থেকে চার লাখ শরণার্থি আমরা পালন করে আসছি।
লাভ কি হয়েছে? স্থানীয় প্রভাবশালিদের হাতেরর পুতুল হয়ে রোহিঙ্গারা আইন শৃঙ্খল পরিস্থিতির আরো ১২টা বাজিয়েছে। জাতিগতভাবে আমরা তো এমনিতেই দাঙ্গা হাঙ্গামাবাজ। । রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে ওই এলাকায় বরং অপরাধ প্রবনতা আরো বেড়ে গিয়েছে।
ওদিকে তিনারা তো বলেই খালাস। (জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাস্ট্র) ।
টাকা পয়সা ছাড়ো । এই গরিব দেশের তো আর জাহাজ চলে না যে বসিয়ে বসিয়ে দেড় দুই লাখ মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব।
তাছাড়া সমস্যা তো আর বাংলাদেশ তৈরি করেনি।
বার্মার বিরোধী দলিয় নেত্রিকে নোবেল ফোবেল দিয়ে, ইদানিং বার্মা কত্ত ভালো বলে সার্টিফিকেট দিয়ে মাথায় নৃত্য করে এখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বন্ধ করার জন্য চাপ দিতে এত অনিহা কেন পশ্চিমাদের?
দিপুমনি আরো জানিয়েছেন যে, বার্মার সরকার সেখানকার বাংলাদেশের রাস্ট্রদুতকে বলেছেন যে, জামাতের ইশারায় বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে দাঙ্গায় উস্কানি দিচ্ছে।
গতকাল সংসদের দেয়া দিপুমনির বক্তব্যের সাথে আমি পুর্ণ সহমত পোষন করছি।
এমনই হওয়ার কথা। পশ্চিমা হাতের পুতুল সুচির ক্ষমতায়নকে দ্রুত করার লক্ষ্যে লাঠি না ভেঙ্গে সাপ মারার কাজটি শুরু হয়েছে। আর শ্যাম চাচার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জামাতের চেয়ে বিশস্ত আর কে আছে?
কিছু রোহিঙ্গা উস্কানি দেবে, নিরপরাধ রোহিঙ্গাদের খুন করবে সুচির দল।
মাঝখানে ফাপড়ে পড়বে বার্মার সামরিক জান্তা। আর ঘর পোড়ার মধ্যে মজা করে আলু পোড়া খাবে শ্যাম চাচার দল। বাহ ! বুদ্ধি খারাপ না।
এবার আসুন দেখা যাক, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলে কি হবে।
দুঃশাসন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা, হামলা মামলা গুম ইত্যাদি প্রতিটা ইস্যুতে যদি আওয়ামি লিগকে পিঠের চামড়া বাচাতে হয়, তাহলে পশ্চিমারাই প্রধান খুটি।
তাদের পরিকল্পনা মত না চললে, বহুমুখি আক্রমনের শিকার হবে সরকার।
প্রথমেই বিরোধী দলের সরকার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠবে। রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে কয়েক গুণ। পদ্মা সসেতু ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংক নাড়াচাড়া করা শুরু করে দিয়েছে। যতই মালয়শিয়া বা কাতারের সাথে চুক্তি করা হোক না কেন, বিশ্ব
ব্যাংকের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স না পেলে, সেটা কাগজ পত্রেই সীমিত থাকবে।
তাছাড়া কোন এক শ্রমিক নেতার হত্যাকে কেন্দ্র করে খোদ মার্কিন মুল্লুকের গারমেন্টস আমদানিকারক সমিতি নাকি বেশ নাখোশ। আমেরিকায় গার্মেন্টসের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়াটাও তাই এখন প্রশ্নের সম্মুখিন।
খেয়াল করে দেখুন। রোহিঙ্গাদের প্রথম থেকেই আশ্রয় দেবার বিপক্ষ্যে অবস্থানের জন্য বলা নেই কুওয়া নেই আশুলিয়া আর সাভার শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এগুলি কোন কাকতলিয় বিষয় নয়।
সুলতানা কামাল গং আন্তর্জাতিক পার্বত্য কমিশনের আড়ালে ইস্রাফিলের শিঙ্গা মুখে নিয়ে বসেই আছে। হুকুম হলেই সেই বাশিতে ফু পড়বে। আর সন্ত লারমারাও চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভয়াবহ রকমের চাপ প্রয়োগ করবে। চাই কি আবারো সন্ত্রাসের দিকে ফেরত যাওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু না।
আওয়ামি লীগ রাজপথের দল।
তাদের রাজপথেই মানায়। তাই ক্ষমতায় গিয়ে সবকিছু লেজে গোবরে করে ফেলে, পশ্চিমাদের সুচিন্তিত খেলায় পাল্লা দিয়ে খেলার মত মেধা তাদের নেই। ফলে হয় ক্ষমতা হারাতে হবে, নয়তো কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করতে বাধ্য হবে।
আমার নিজস্ব মত হলো, এই শরণার্থি নিয়ে খেলা বন্ধের এখনই সময়। আপাতত নো ম্যানস ল্যান্ডে সেনাবাহিনীর কঠোর প্রহরায় আশ্রয়প্রার্থিদের রাখা যেতে পারে।
সমন্তরালে বার্মার সরকারের সাথে পুর্ণ সহযোগিতা করে এই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধে পুর্ণ সহযোগিতা করা। বার্মার সরকারকে এই খেলা সমন্ধে সচেতন করা। প্রয়োজনে চীনকে অন্তর্ভুক্ত করা।
নইলে দেখা যাবে, রোহিঙ্গাদের রক্তে পাড়া দিয়ে সুচির মাধ্যমে পশ্চিমা সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন এক দিকে বার্মা আর আরেকদিকে ইন্ডিয়ার সাহায্যে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম হাতছাড়া হয়ে যাবে।
আমার এই রাজনৈতিক বিশ্লেষন অলিক বলে আমি নিজেই মেনে নিতাম, যদি দেখতাম বিরোধী দল বা সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবিরা এ নিয়ে কিছু বলছে। আমার মত সামান্য মানুষের কাছে যে বিষয়টা স্পস্ট হয়েছে, তাদের মত বড় মাথা ওয়ালারা সেটা প্রথম থেকেই ধরতে পেরেছে।
একজন সামান্য ব্লগার ধীবরের কথায় কিছুই যায় আসে না। কিন্ত উনারা মুখ খুললেই অনেক কিছু ! এই জন্যই তাদের এমন নিরবতা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।