আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে ১৪ জুন \ ১৫তম মাগুরছড়া দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান

আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। ১৪ জুন মাগুরছড়া ব্লো-আউটের ১৫তম দিবস পালিত হয়েছে। একটি অদৃশ্য কারণে দীর্ঘ দেড় দশকের আন্দোলনেও মাগুরছড়ার অর্পূরনীয় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি। অক্সিডেন্টাল ও ডয়টেক কোম্পানী ব্লো-আউটের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ রিগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য যাবতীয় যন্ত্রপাতির ক্ষয়ক্ষতি বাবদ প্রায় ৩ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে ঠিকই আদায় করে নিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের বিরাট প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে কোন অগ্রগতি নেই।

মাগুরছড়ায় গ্যাসক্ষেত্র বিস্পোরণের ১৫ বছর পর আজও বলতে হচ্ছে, এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। গত ১৪ জুন বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংশের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি’র নেতৃবৃন্দরা এমন মন্তব্য করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংশের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি’র সভাপতি মো. জাহেদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আমিরুজ্জামান কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রেরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্র মাগুরছড়ায় মার্কিন বহুজাতিক তেল-গ্যাস উত্তলনকারী কোম্পানী অক্সিডেন্টালের দায়িত্বহীনতা, অবহেলা ও ত্র“টির কারণেই এই বিস্পোরণ ঘটে। ঘটনার পরপরই এর রহস্য উৎঘাটনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

ওই বছরের ৩০ জুলাই দুইটি বলিউমে মোট ৫০০ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত রিপোর্টে মাগুরছড়ার বিস্তৃত এলাকায় বন ও পরিবেশসহ স্থানীয় প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ জমা দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রের উত্তোলনযোগ্য ২৪৫ দশমিক ৮৬ বিসিএফ গ্যাস ধ্বংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এতে আরো বলা হয় উক্ত বণাঞ্চলের বন ও পরিবেশের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিসাধিত হয়। তাছাড়া পানি সম্পদেরও বিপুল ক্ষতিসাধন হয়। এবছর মাগুরছড়া ব্লো-আউটের দেড় দশক পূর্ণ হয়েছে।

বিগত ১৫ বছর ধরে মাগুরছড়া গ্যাসকূপের ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে লংমার্চ, মানববন্ধন, পদযাত্রা, আলোচনা, জনসমাবেশ, গণসংযোগসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন অব্যাহত থাকলেও অদ্যাবধি এর ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হয়নি। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে অক্সিডেন্টাল ও ডয়টেক কোম্পানী ব্লো-আউটে ক্ষতিগ্রস্থ রিগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য যাবতীয় যন্ত্রপাতির ক্ষয়ক্ষতি বাবদ প্রায় ৩ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে আদায় করে নিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ব্যবহার করে অক্সিডেন্টাল ক্ষতিপূরণ আদায় করে নিলেও বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও গ্যাসসম্পদ ধ্বংশের ক্ষতিপূরণ আদায় করতে না পারার বিষয়টি এদেশের জনগণকে বিস্মিত করে তুলেছে। বর্তমানে মাগুরছড়া ব্লো-আউটের ফলে দেশের ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এজন্য অক্সিডেন্টাল-ইউনোকলের বর্তমান উত্তরসূরী শেভরণ বাংলাদেশকে নোটিশ দিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সহজেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব বলে ধারণা করছেন মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংশের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি’র নেতৃবৃন্দরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.