আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রান্না বান্না আর খাওয়া দাওয়া

প্রথমেই আসসালামু আলাইকুম এবং এক গাল হেসে শুরু করছি । মাঝে মাঝে এমন দিন আসে রাজ্যের আলসেমি এসে ভর করে শরীরে, রান্না-বান্না এমনকি খাওয়া-দাওয়াটাও খুবই কষ্টের কাজ মনে হয়। আলসেমি ঝেড়ে রান্না ঘরের দিকে যাত্রা করুন। মাছ, মাংস বা ডিমের ঝোলে অনেক সময় লবণ বেশি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ঐ তরকারীতে কয়েকটি সেদ্ধ আলু ভেঙ্গে দিন।

লবণ কমে যাবে। মুরগির মাংস বা কলিজা রান্না করার সময় ১ টেবিল চামচ সিরকা দিন। এতে গন্ধও থাকবে না, তাড়াতাড়ি সেদ্ধও হবে । বাজারে পাওয়া যাচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা রকম সবজি। সবজির সঙ্গে মাছ, মাংস মিশিয়ে একটু ভিন্ন ধাঁচে রান্না করতে পারেন।

খাদ্য তালিকায় শাকসবজি অনেকের পছন্দের শীর্ষে। স্বাস্থ্য নয়তো ত্বকসচেতনতায় সবজি সবারই প্রিয়। ভিটামিন ও খনিজ লবণের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও সহজলভ্য উৎস হচ্ছে শাকসবজি। রান্না বান্না একটি সুক্ষ এবং নিপুণ শিল্প। যে কোন এক জন তৃপ্তির সাথে খেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে যে পরিমান সন্তষ্ট হয় অন্য কোন উপায়ে তা সম্ভব নয়।

আপনার স্বামী, সন্তান এবং অন্য যে কোন প্রিয় জন যদি সুস্বাদু খাবার খেয়ে তৃপ্তি পায় তাতেই আপনার পরম শান্তি। অত্যন্ত ধৈর্য্য এবং যথেষ্ট সময় নিয়ে উপযুক্ত কৌশল জেনে রান্না করুন, আপনার রান্না সুস্বাদু হবেই। আবার ওদিকে তাড়াহুড়ো করে যেমন তেমন ভাবে রান্না করলে তা সুস্বাদু হবার কোন উপায় নেই। পাকিস্তানের করাচিতে স্বামীকে খুন করার পর রান্না করেছেন তাঁর স্ত্রী। প্রথমে তিনি তাঁর স্বামীকে অচেতন করেন এবং কেটে টুকরো টুকরো করেন।

এতেই ফেঁসে যান ওই নারী। কেননা, ওই রান্না থেকে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এক প্রতিবেশী পুলিশকে খবর দেয়। আপনারা কখন রাগ করে মনটি করবেন না । ( আল্লাহ !!!) রান্নাটা আমার কাছে মনে হয় এক ধরনের শিল্প। শিল্পীর তুলিতে যেমন ক্যানভাস রঙিন হয়ে ওঠে, তেমনি একজন রাধুনি তার বুদ্ধিমত্তা, মনোসংযোগ ও অনুভব করার ক্ষমতা দিয়ে রান্নাকে করতে পারেন আতি সুস্বাদু।

সন্তানের কাছে তার মা হলো শ্রেষ্ঠ রাধুনী। প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ১৪শ’ বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছিলেন, ‘কালোজিরা রোগ নিরাময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তোমরা কালোজিরা ব্যবহার কর, নিশ্চয়ই প্রায় সব রোগের নিরাময় ক্ষমতা এর মধ্যে নিহিত রয়েছে। ’ সে জন্য যুগ যুগ ধরে পয়গম্বরীয় ওষুধ হিসেবে সুনাম অর্জন করে আসছে।

নিয়মিত কালোজিরা সেবনে চুলের গোড়ায় পুষ্টি ঠিকমতো পায়, ফলে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। নিয়মিত অল্প পরিমাণ কালোজিরা খেলে মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রক্ত সঞ্চালন ও বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। নুন, ঝাল, জ্বাল ও ঝোলের সমন্ব্বয়ে রান্নার স্বাদ নির্ভর করে। কলিজা রান্নার সময় বেশিক্ষণ জ্বাল দিবেন না তাতে কলিজা শক্ত হয়ে যায়। কলিজা রান্না হতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।

অতিরিক্ত তেল ও চর্বির কারণে শরীরে মেদ জমে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ দেখা দেয়। তাই সপ্তাহের কয়েক দিন তেলছাড়া রান্না খেতে পারেন। স্যু শেফরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, খাদ্যগুণ ও স্বাদ নির্ভর করে তেলে নয়, মসলায়। তেল আলাদা কোনো স্বাদ যুক্ত করে না। তেলের নিজস্ব কোনো স্বাদ নেই।

শাকসবজি খুব ছোট ছোট টুকরা না করে যতটা সম্ভব বড় করে কাটতে হবে কারণ তাতে বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিনের অপচয় কম হয়। যে কোন তারকারী অল্প তাপে রান্না করলেই সু্স্বাদু হয়। রান্নার আগে চাল খুব বেশি সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা উচিৎ নয় কিংবা বারবার ধোয়া উচিৎ নয়। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন ভিটামিন ‘বি১’ বা ‘থায়ামিন’ এর অপচয় হয়। মাইক্রোওয়েভ এবং প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের পুষ্টি উপাদান অনেকটাই বজায় থাকে কারণ এতে যেমন খুব তাড়াতাড়ি রান্না হয় আবার তেমন খুব বেশি পানিও দিতে হয় না ।

মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ডুবোতেলে কোনো খাবার রান্না করবেন না। এতে তেল ফুটে ও ছিটে খাবার পুড়িয়ে দেবে। কাঁচকলা কাটবার সময় হাতে দাগ লাগে। হাতে তেল মেখে নিয়ে কাঁচকলা জলে ডুবিয়ে কাটলে দাগ পড়ে না। খুব ভালবেসে দুইজন প্রেমিক প্রেমিকা বিয়ে করল এবং আলাদা বাসা ভাড়া করে এই ভালবাসা দিবসে উঠে পড়ল কিন্তু দুইজনের কেহ রান্না জানে না! বুঝুন অবস্থা! আর যদি মেয়েটা বা ছেলেটা ভাল রান্না করতে জানে কিংবা দুইজনেই ভাল রান্না করতে জানে।

সব্জি খিচুড়ী বানাতে চাইলে পছন্দসই সব্জিগুলো ওর মধ্যে ছেড়ে দিন। লবন এবং পানির পরিমান এক্ষেত্রে একটু বেশি লাগবে। কিছু সব্জি সিদ্ধ হতে অতিরিক্ত সময় লাগে - সেগুলো আগে পানিতে লবন সহ কিছুটা সিদ্ধ করে রাখতে পারেন। লবঙ্গ সাধারণত রান্নার সময় অনেকে ফোড়নে ব্যবহার করেন। গরম মসলার মধ্যেও লবঙ্গ থাকে।

তা রান্নার স্বাদ বাড়ায়। এছাড়া লবঙ্গের আরও বিশেষ কিছু গুণ আছে, যা আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে ভীষণ ফলদায়ী। লবঙ্গ কফ-কাশি দূর করে। পানির পিপাসা পেলে বা বুকে অস্বস্তি হলে লবঙ্গ খাওয়া দরকার। তাতে পিপাসা মেটে।

শরীরে ফুর্তি নিয়ে আসে। হজমে লবঙ্গ সহায়তা করে। খিদে বাড়ায়। পেটের কৃমি নাশ করে দেয়। লবঙ্গ পিষে মিশ্রি বা মধুর সঙ্গে খাওয়া ভীষণ ভালো।

এতে রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এটা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কাজ করে। হাঁপানির মাত্রা কম করে। চন্দনের গুঁড়োর সঙ্গে লবঙ্গ পিষে লাগালে ত্বকের যে কোনো সমস্যা দূর হয়ে যায়। দাঁতের ক্ষেত্রে লবঙ্গ ভীষণ ভালো ওষুধ।

দাঁতে ব্যথা হলে লবঙ্গ মুখে রাখুন কমে যাবে। মুখে দুর্গন্ধ দূর করে লবঙ্গ। — মুখে ছালা হলে পানের মতো পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খান, ছালা কমে যাবে। মজাদার কিছু খাবার - ইলিশ খিচুড়ি, সরিষা ইলিশ, ভেটকি মাছের শিককাবাব, তেলাপিয়ার ঝুরি কাবাব, মলা মাছের আম ঝোল, করলার ঝোলে পাঁচমিশালি মাছ, পাঁচমিশালি মাছের দোপেঁয়াজা, মচমচে ইলিশ ভাজা, চিকেন চিলি উইথ টমেটো, গরুর মাংস ভুনা, গরুর মাংসের চন্দ্র কাবাব, সবজি পোলাও, তন্দুরি কারি । এইবার একটা আসল কথা বলি- খাদ্যের তৃপ্তি খুদাতে সুতরাং যতই খারাপ রান্না হোক, তৃপ্তি আপনার হবেই ।

নন-স্টিক ফ্রাইপ্যান ব্যবহার করুন । ভোজন রসিক জাতি হিসেবে বাঙালীর জুড়ি নেই। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার প্রিয় খাবার- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালের বড়া, বাঘাবাড়ির ঘি, কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোণার বালিশ মিষ্টি, চট্টগ্রামের শুটকি, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পানিতোয়া, পুরান ঢাকার বাকেরখনি, মুন্সিগঞ্জের আলু ইত্যাদি । কোনো বিশেষ খাবার খেলে মানুষ মোটা হয়, এমন কথা মানা যায় না। আপনি তখনই মোটা হবেন, যখন যে পরিমাণ ক্যালরি নিচ্ছেন, সে পরিমাণ ক্যালরি ব্যায়াম করে পুড়িয়ে ফেলতে পারছেন না।

সঠিক পরিমাণে খেলে কোনো খাবারই শরীরকে স্থূল করতে পারে না। সংগীতশিল্পীরা পারফর্ম করার আগে কলা খেয়ে নিলে নার্ভাসনেস ও টেনশন নাকি কমে। কলার এই গুপ্ত কৌশল কারও কি জানা আছে? সত্যি কি ! বাচ্চাদের প্রিয় খাবার নুডলস। ভর্তার রাজা হলো- আলু ভরতা । ডিমের ভর্তাও অনেক স্বাদ ।

টমোটো ভর্তা- মন্দ নয় । কাউকে যদি তার প্রিয় কোনো খাবারের নাম বলতে বলা হয় তাহলে হয়তো সে লোভনীয় অনেক খাবারেরই নাম বলবে। কিন্তু কেউ যদি বলে তার প্রিয় খাবার সোফার কুশন! অবাক হওয়ার কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ব্রাডেনটন অঞ্চলের ৩০ বছর বয়সী অ্যাডেলের পছন্দের খাবার এটাই। গরমের দিনে খাবার ভালো রাখাটা বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের জন্য রেফ্রিজারেটরও ভালোমতো কাজ করতে পারেনা। রান্না করা খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখার আগে বাতাসে রেখে ঠান্ডা করে নিতে হবে। কাঁচা সবজি, কাঁচামরিচ ঠেসে না রেখে বাজার থেকে আনার পর এগুলোকে ছড়িয়ে রেখে বাতাসে পানি শুকিয়ে গেলে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। কাঁচামরিচের বোঁটা ফেলে রাখতে হবে কারণ এগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ধনপতি পাল, তিনি জমিদার মস্ত; সূর্য রাজ্যে তাঁর যায় নাকো অস্ত তার ওপর ফুলে উঠে কারখানা-ব্যাঙ্কে আয়তনে হারালেন মোটা কোলা ব্যাঙকে।

সবার "হুজুর" তিনি, সকলের কর্তা, হাজার সেলাম পান দিনে গড়পড়তা। সদাই পাহারা দেয় বাইরে সেপাই তাঁর, কাজ নেই, তাই শুধু 'খাই-খাই' বাই তাঁর। এটা খান, সেটা খান, সব লাগে বিদ্ঘুটে, টান মেরে ফেলে দেন একটু খাবার খুঁটে; খাদ্যে অরুচি তাঁর, সব লাগে তিক্ত, খাওয়া ফেলে ধমকান শেষে অতিরিক্ত। দিনরাত চিৎকারঃ আরো বেশি টাকা চাই, আরো কিছু তহবিলে জমা হয়ে থাকা চাই। সব ভয়ে জড়োসড়ো, রোগ বড় প্যাঁচানো, খাওয়া ফেলে দিনরাত টাকা ব'লে চেঁচানো।

ডাক্তার কবিরাজ ফিরে গেল বাড়িতে; চিন্তা পাকালো জট নায়েবের দাড়িতে। নায়েব অনেক ভেবে বলে হুজুরের প্রতিঃ কী খাদ্য চাই? কী সে খেতে উত্তম অতি? নায়েবের অনুরোধে ধনপতি চারিদিক দেখে নিয়ে বার কয় হাসলেন ফিক-ফিক্; তারপর বললেনঃ বলা ভারি শক্ত সবচেয়ে ভালো খেতে গরীবের রক্ত। । ( সুকান্ত ) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।