আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সবুজ কালারের ফন্টে কিছু ছাপালেই গ্রীণ অফিস হয়না! প্রয়োজন খাছলতের পরিবর্তন!!

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!! দেশের কর্পোরেট অঙ্গনে নতুন ব্যারাম দেখা দিয়েছে। ইকো ফ্রেন্ডলি, গ্রীণ, এনভায়রনমেন্ট কনসাস ইত্যাদি শব্দের বাহুল্য প্রয়োগ। নামীদামী দেশীয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্রতিস্টান নানান অঙ্গভঙ্গিমায় বুঝানোর চেস্টা করছে যে- তারা পরিবেশ সচেতন, তারা সবুজ ইত্যাদি ইত্যাদি। সবুজায়নের প্রমান হিসেবে সবাই দলবেঁধে প্রথমেই যে কাজটি করছে তা হল- খবরের কাগজের সিকি বা আধ-পাতা জুড়ে নিজেদের বিজ্ঞাপন ও নিচের দিকে গাছের চারা বা এরকম কিছু জুড়ে দেয়া! বাঙ্গালকে হাইকোর্ট না হলেও জজকোর্ট দেখানো আর কি! কে তাদের বোঝাবে ফন্ট কালার সবুজ হোক আর লাল হোক তা এক ধরনের কেমিক্যাল বৈ কিছুই না! আর পুরাপুরি ডিজিটাল ফর্মে তো তা বিমূর্তই!! সবুজায়নের ২য় জোড় পদক্ষেপ পেপারলেস অফিস। অর্থাৎ, চিঠি চালাচালি বা হার্ড কোন ফাইল/ডকুমেন্ট মেনটেইন করা হবেনা।

গ্রাহকদেরকেও ই-মেইলে স্টেটমেন্ট পাঠানো হবে। শুনে মনে হতে পারে, আহা কি রসগোল্লা! আসলে রসগোল্লা না ছাই। পেপারলেস অফিস মানে এক্সট্রিমলি কম্পিউটার নির্ভর অফিস! অর্থাৎ কাজ থাকুক বা না থাকুক নিম্নশ্রেনীর কেরানী থেকে শুরু করে সিইও পর্যন্ত সবাইকে কম্পিউটার দিতে হবে, কাউকে কাউকে ল্যাপটপ, কয়েক হালি সার্ভার, রাউটার, সুইচ, ল্যান পুষতে হবে। এবং কাজ থাকুক বা না থাকুক দিনে অন্তত: ১০ ঘন্টা সব গুলো পিসি চলতে থাকবে। এসব পিসিতে পাওয়ার জোগাতে হবে! খেয়াল করলে দেখা যাবে আধুনিক ধাঁচের বেসরকারী অফিস গুলো পুরাপুরিই এয়ারটাইট, অর্থাৎ এতে কোন জানালা থাকেনা! তাই বাতাসের জোগান কেবলমাত্র এসির মাধ্যমেই হয়।

জৈস্ঠ্যের তাপদাহের মধ্যেও সাহেবরা ফুলহাতা শার্ট, মোজা, সু এমনকি স্যুট পরে অফিসে আসেন! এয়ারটাইট রুমে ঢুকে কুড়ি ডিগ্রিরও নীচে এসি চালিয়ে তথাকথিত গ্রীন অফিসে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে থাকেন! লাইন পাওয়ার না থাকলে জাম্বো সাইজের জেনারেটর চালিয়ে দেন! আরেকটি মজার বিষয় হল দিনের বেলায় লাইট। বেশীরভাগ আলোচ্য ঘরানার অফিসে নানান কারুকাজ করে লাইটিং সিস্টেম বসানো হয়। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে দিনের বেলা কাজ করার মহান প্রাকৃতিক সুবিধাকে পুরাপুরি পায়ে দলা হয়। কেন- এটা রহস্যের? তবে এক অফিসের দেখাদেখি আরেকটা এমনই মনে হয়। অথচ আমাদের মত প্রচুর সূর্যালোকের দেশে দিনের বেলায় কাঁচ ঘেরা অফিসে এমনি এমনিই কাজ করতে পারার কথা।

তা না করে লাইট। হালে বেরিয়েছে এনার্জি সেভিং লাইট। এভাবেই শুরু হয়েছে তথাকথিত সবুজায়ন। সবুজায়ন, গ্রীন ইত্যাদি যদি কেউ করতেই চায় তা ভাল উদ্যোগ। তবে শুরু হতে হবে খাছলত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে।

যেমন- ১/ ওয়াল থেকে ব্লাইন্ড/রেক সরিয়ে সূর্যের আলো ঢুকতে দিন ২/ দেয়ালের পরিবর্তে ডাবল লেয়ার কাঁচ লাগান ৩/ পর্যাপ্ত জানালা খুলে দিন। বাতাস ঢুকতে দিন। এসি বন্ধ করুন। ৪/ সবার সব সময় কম্পিউটার দরকার নেই। লিমিটেড করে ফেলুন।

প্রিন্টার সরিয়ে ফেলা মানেই সবুজ হওয়া নয়। আপনি বেশি ফসিল পুড়ছেন!! ৫/ সাধারন পোষাক, ঢিলে ঢালা হাফশার্ট পড়ে অফিসে আসুন। এ ব্যাপারে এমডি/সিইও/চেয়ারম্যান/ইডি ধরনের লোকদেরই দায়িত্ব বেশী। আপনাদের সুনির্দিস্ট আদেশ ছাড়া কেউ অফিসের ডেকোরাম ভাঙতে চাইবেনা। আসুন সত্যিকার গ্রীন অফিস হই! ভন্ডামী ছেড়ে দিই।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।