আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাম্প্রতিক সময়ে আমার কিছু ফেসবুক স্টাটাস

পাখি এক্সপ্রেস ১. মৃত্যুর সময় মানুষ খুব স্মার্ট ও প্রবল আত্মমর্যাদা সম্পন্ন হয়ে যায়। হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে না কিংবা সুইসাইডাল কিছু করে না। বরং নিখুঁতভাবে মৃত্যুর ভয়ংকর রেখাগুলো স্পষ্ট করে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠে। আমরা প্রিয়জনের সে রেখাগুলো দেখে হাউ মাউ করে কান্নাকাটি করি, দেয়ালে মাথা ঠুকি। ঠিক ওই সময়ে অন্তত একবারের জন্য মরে যেতে চাই।

আসলে মৃত্যুর যন্ত্রনা মৃত্যুপথযাত্রীর চেয়ে উপস্থিত স্বজনরা বেশি ভোগ করেন। অথবা উপভোগ করেন। (৫ জুন) ২. যারা যারা কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের সমালোচনা করে, তারা সবাই দেশদ্রোহী। যারা দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে, তারাও দেশদ্রোহী। যারা যারা চুরুট টানে, ওরাও দেশদ্রোহী।

প্রেমিকাকে চুমু খান? যদি খান, তাহলে আপনিও দেশদ্রোহী। আপনি চিৎ হয়ে ঘুমান কেন? আপনিও দেশদ্রোহী। আর যদি সরকার দলীয় এমপি, মন্ত্রী কিংবা সরকারের কোন দালালের পশ্চাৎদেশ দেখে বলেন, "আহ! কী সুন্দর নারিকেল জিঞ্জিরা!!" তাহলে আপনি দেশপ্রেমিক। এ বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবেন। নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্বের শেষ নেই।

(৫ জুন) ৩. জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, "সরকারের অনেক মন্ত্রী ডিজিটাল প্রতিবন্ধী!" তাজ্জব হয়ে গেলাম এমন কথা শুনে!! তিনি ১৬ কোটি মানুষকে অপমান করেছেন। আমরা ভীষণ... ভীষণভাবে অপমানিত হয়েছি। উনাকে সংসদে ডেকে নিয়ে হাতজোড় করে পূর্ণ অধিবেশন দাঁড় করিয়ে রাখা হোক। কুটি কুটি মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রায়শ্চিত করতে বাধ্য করা হোক। কোন ভাবেই আমাদের নির্বাচিত ব্যক্তিদেরকে "ডিজিটাল প্রতিবন্ধী" বলতে পারেন না।

বলছেন বলছেন শুধু "প্রতিবন্ধী বলতেন। তার আগে আবার "ডিজিটাল" শব্দটা লাগাইলেন ক্যান? আমরা এর একটা বিহিত চাই। (৪ জুন) ৪. প্রতিদিন যতজন মানুষ সাংসদদের চোর বলে সম্মান করে, সবাই একসাথে সংসদ ভবনের ভেতরে ঢুকে একসাথে "চোর" শব্দটি উচ্চারণ করলে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে যাবে। (৩ জুন) ৫. বাংলাদেশের সেরা জ্ঞানীর তালিকা করবেন? আগে সংসদ সদস্যের সবার নাম বসিয়ে তারপর তালিকাটা আগায়া নেন। সেরা গর্দভের তালিকা করবেন? তাহলেও আগে উনাদের নাম বসিয়ে বাকি গর্দভদের নাম বসান।

এভাবে করে সেরা নয়নের মনি, সেরা চ্যাটের বাল যে তালিকাই করেন না কেন, একই তরিকা অনুসরণ করবেন। যেহেতু উনারা সংসদ সদস্য, সেহেতু উনারাই সেরা বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, মাওলানা, পুরোহিত ইত্যাদি ইত্যাদি। এ দেশের গণতন্ত্র কী পরিমান ক্ষমতাচর্চার উপর প্রতিষ্ঠিত তা এসব দেখলেই বুঝা যায়। এরা মানতেই নারাজ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন সংসদ সদস্য থেকে অধিক জ্ঞানী, সজ্জন, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। বরং মনে প্রাণে আশা করে কালা মিয়া থেকে শুরু করে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ পর্যন্ত সবাই উনাদের ক্ষমতার কাছে বিক্রি হয়ে যাবেন।

(৩ জুন) ৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক। এ নামটা বছর দেড়েক আগে একবার শুনেছিলাম। দীর্ঘ বিরতির পর একটি নিউজে আজ আবার উনাকে খুঁজে পেলাম। না জানি আবার কবে পাবো! প্রতিমন্ত্রীর চেহারার সাথে বিদ্যুতের চেহারার অবিকল মিল। (৩ জুন) ৭. সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু:খ" প্রকাশিত হয়েছে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে দু:খের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোড়কের ভেতর থেকে দু:খকে হাতে নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখাতে থাকেন। এ সময় সাংবাদিকরা লাইন ধরে একজন একজন করে মন্ত্রীর দু:খ দেখেন। কয়েকজন সাংবাদিক দু:খ ধরে দেখলে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাল দিয়া গীত গেয়ে উঠেন- "ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, বলা যাবে না কথা। চুপচাপ করে যাও মহান সাংবাদিকতা।

" (১ জুন) ৮. সমকালের একটি নিউজে পড়লাম সরকার লবন ও ডিম আমদানি করছে। ডিমের কাহিনীটা বুঝলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কারণে ঘটছে। কিন্তু লবনের বিষয়টা একটা আচানক দুর্যোগ! প্রধানমন্ত্রী কি মিঠাপানির সমুদ্র জিতছে নাকি? (১ জুন) ৯. এতদ্বারা প্রত্যেক সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহের সময় সাহারা খাতুন কস্টিউম ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হলো। পুলিশ দেখবে চারিদিকে সাহারা। ভাববে এরা আবার কাহারা! (১ জুন) ১০. ১৯৭১ সালে এ দেশের জনগণ বাংলাদেশের মানচিত্র আর পতাকা অর্জন করেছে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য।

তাই আমরা এ ভূ-খন্ডে বসবাস করি। কারণ আমরা সেই বীর যোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্ম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একক প্রচেষ্টায় (তাঁর মতে) সমুদ্র অর্জন করেছেন। তিনি তাঁর জনগণ নিয়ে অর্জিত সমুদ্রে চলে যান। যাবার আগে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড সিনেমাটা দেখে নিতে পারেন।

খালেদা জিয়া কি পাকিস্তান যাবেন, নাকি সৌদি আরব যাবেন সে সিদ্ধান্ত তাঁর। জামায়াতীরা সরাসরি পাকিস্তান এয়ারলাইন্সে করে নিজের দেশে চলে যাবে। বামরা ভাগাভাগি করে চীন, রাশিয়া, কিউবাতে চলে যাক। মুফতি আমিনী টাইপের গুলা যাবে আফগানিস্তান। বাকি সবগুলারে হাত পা বেঁধে প্যাকেট করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিতে হবে।

আর যারা এ স্টাটাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইবে, পরবর্তী ঘোষনা না দেয়া পর্যন্ত তারা আপাতত ফেসবুকেই থাকুন। আর স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়ার জন্য আমি একটি রেডিও স্টেশন ও একজন আরজে খোঁজ দ্যা সার্চ করতেছি। (১ জুন) ১১. পুলিশ আগের চাইতে অনেক ভালো হয়েছে। আগে নাভীর ৪ ইঞ্চি উপরে প্যান্ট পরতো। এখন নাভী বরাবর পরে।

বিনয়ী হয়েছে। জনগণের সামনে প্যান্টু উঁচা করে রাখে না। (৩১ মে) ১২. নিরব কবি, মৃত কবি, নষ্ট কবি, মহা কবি, নিস্তেজ কবি, পথভ্রষ্ট কবি, দিগন্তের কবি, বিষন্ন কবি...। ফেসবুকে কবি'র শেষ নাই। এই যে এখন নিরব কবির একটি কবিতা পড়তেছি- "বহু কষ্টে পার করা মোর রাত জাগা ভোর দেখা হবে তোমার সাথে চৌরাস্তা মোড়; বিয়ের দিনক্ষণ তোমার ঠিক করা পাকা পালানো ছাড়া যে আর পথ নেই ফাঁকা!" না, আমি কবিতার সমালোচনা করছি না।

প্রশ্ন হচ্ছে ফেসবুক কবি'রা সব সময় দু:খী হয় কেন? তাদের নামের সাথে নিরব, মৃত, নষ্ট, পথভ্রষ্ট, বিষন্ন, দিগন্তের একাকীত্ব থাকে কেন? আচ্ছা এসব করে কি প্রেমিকা ম্যানেজ করা যায়? প্রেমিকারাতো দু:খ, কষ্ট, একাকীত্ব দেখলে দৌড়ে পালায়। আমার মনে হয় সতেজ কবি, মখমল কবি, কোমল কবি, স্নিগ্ধ কবি, মুগ্ধ কবি, ফ্রিল্যান্স কবি, চঞ্চল কবি, দুরন্ত কবি, সুখী কবি... এ ধরনের নাম দিয়ে প্রেমিকা খুঁজে দেখা যেতে পারে। নাকি আগে সবার নাম এরকমই ছিলো, ছ্যাকা খেয়ে এখন নাম বদলায়া গেছে!! (২৯ মে) ১৩. নীল নবঘনে সাহারা খাতুনে তিল পরিমান ভরসা নাইরে ওরে, আর তোরা যাসনে গৃহের বাইরে শয়নোঘরে কাঁপি থরথর কাঁপনের তোড়ে হাঁটু নড়বড় ভাবিয়া কূল নাহি পাই, কই যাইরে ওরে, গৃহে বাইরে কোথাও সাহারা নাইরে! (২৯ মে) ১৪. (ট্রান্সলেশন) পুলিশ আসিবার পূর্বে সন্ত্রাসীরা এসে কাজ সেরে চলে যায়। Sahara Khatun is a lazy donkey. (২৯ মে) ১৫. : ম্যাডাম বিডিনিউজ২৪.কম এর অফিসে ব্যাপক রক্তারক্তি হয়েছে। সন্ত্রাসীরা হামলা চালাইছে।

চার জন হাসপাতালে। : ব্যাপক মানে কী? রক্ত তরল পদার্থ। তরল পদার্থ পরিমাপের একক হইতাছে লিটার। কুন ইসকুলে লিখাপড়া করছো! কত লিটার রক্তারক্তি হইছে তাই কও। : দেড় দুই লিটারতো হবেই! : বিডিনিউজ কি সাংবাদিকদের বেতন দেয় না? রক্ত এতো কম ক্যা? যাইহোক, দেড় লিটার হইলেও অনেক দামী জিনিস।

তোমার ফেসবুক একাউন্ট থাকলে সবাইর রক্তের গ্রুপের জাইনা "রক্ত জরুরী" এসটাটাস দিয়া দাও। : সেটা অনেকেই দিয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকরা আপনার বক্তব্য জানতে চায়। আমি বলেছি মিনিস্টার নিন্দা জানিয়েছেন। দু:খ প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু ওরা জানতে চাচ্ছে আসামী গ্রেফতারের কী বিহিত করবেন? : বইলা দাও কেউই আইনের উর্দ্ধে নয়। পুলিশের কয়েকটা টীম নাইমা যাইবো। র‌্যাব নাইমা যাইবো। : কিন্তু ম্যাডাম ওরা জানতে চাচ্ছে কতক্ষণের মধ্যে গ্রেফতার হবে? কত ঘন্টা বলবো? : তোমার স্টকে কী কী প্যাকেজ আছে? : আমার কাছে ম্যাডাম ১২ ঘন্টা, ২৪ ঘন্টা, ৩৬ ঘন্টা, ৪৮ ঘন্টা আর ৭২ ঘন্টার প্যাকেজ আছে। : ৪৮ ঘন্টার কথা বইলা দাও।

: ৪৮ ঘন্টার প্যাকেজটা পেন্ডিং দেখাচ্ছে। কোন একটা প্রজেক্টে প্যাকেজটা আটকায়া আছে। : সবগুলা প্যাকেজের মধ্যে জনপ্রিয় কোনটা? : জ্বি ম্যাডাম, ৪৮ ঘন্টা। : তাহলে এতো কথা কইতাছো ক্যান? পাবলিক ডিমান্ড বুঝো? নীলক্ষেতের ফুটপাত থেকে কখনো পাবলিক ডিমান্ডের ভিডিও কেনোনি? এখন থেকে নিয়মিত দৈনিক প্রথম আলো পড়বা। আজও পুনম পান্ডেরে নিয়া একটা নিউজ করেছে।

এসব দেখে কিছু শিখো। যাও, ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে। ৪৮ ঘন্টার প্যাকেজটাই সাংবাদিকদের দিয়ে দাও। : জ্বি ম্যাডাম, বলে দিচ্ছি। (২৯ মে) ১৬. খবর : দাবি পুরণ হচ্ছে নিবন্ধিত প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কেবল দরিদ্র বলে; নইলে সব শিক্ষক এ সংবাদ প্রত্যাখ্যান করতেন।

শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষকদের প্রতি যে নির্যাতন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বাহিনী চালিয়েছিলো, তারপর সব শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে দেয়ার কথা ছিলো। আপনার পুলিশরা, দলীয় নেতারা গিয়ে স্কুল চালাতো। আপনি হতেন বাংলাদেশ সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক। গরম পানি ঢেলেছেন, লাঠি পেটা করেছেন, একজন শিক্ষক মেরেছেন। এরপর তাদের দাবি মানলেন।

মনে হচ্ছে কোন এক হিংস্র প্রাণীর রাগ কমার পর তার কাছ থেকে কিছু দয়া পাওয়া গেলো। এ সংবাদটি পড়ে কেন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়া গেলো না, এর সব জবাব আপনার কাছে। আমরা কিছু জানি না। (২৭ মে) ১৭. সাংবাদিক নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যকে সামহোয়ার ইন ব্লগে ব্লগিং করার নির্দেশ দেয়া হোক। ফেসবুকে একাউন্ট খুলে আমাদের সামনে ছেড়ে দেয়া হোক।

আমরা একটু ছিনিমিনি খেলবো। (২৭ মে) ১৮. বেগম জিয়ার হাতে তসবীহ। ধীরলয়ে তার তর্জনী এগুচ্ছে...। এগুচ্ছে... এগুচ্ছে... এগুচ্ছে...। খপ করে একটি গুটি টেনে নিলেন।

দাঁত মুখ খিঁচে উচ্চারণ করলেন "দি ইকোনমিস্ট"। এবার তিনি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছেন। বিশ্রাম শেষে আবার তাঁর তর্জনী এগুচ্ছে...। এগুচ্ছে... এগুচ্ছে... এগুচ্ছে...। খপ করে আরো একটি গুটি টেনে নিলেন।

আগের চাইতে অনেক বেশি দাঁত মুখ খিঁচে এবার উচ্চারণ করলেন "হেলো দিল্লী!" [to be continued] (২৬ মে) ১৯. ভেবেছিলাম মায়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা মামলায় জেতার পর প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত হয়ে পড়বেন নৌ বাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে, সমুদ্রে তেল গ্যাস ব্লকগুলোর পাহারা নিশ্চিত করতে আধুনিক জাহাজ ক্রয়ে, নৌ বাহিনীর আকাশ উইং শক্তিশালী করতে। উঠে পড়ে লাগবেন সমুদ্রের তলদেশে সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য কারিগরি দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হতে। ভেবেছি বাপেক্সের আধুনিকায়নে বিশেষ ঘোষনা আসবে। কিন্তু এর কিছুই হলো না। উনি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সংবর্ধনা নিতে।

অথচ কোন রকম পূর্ব হৈ চৈ ছাড়া প্রায় সুনামির গতিতে "নতুন ঢাকা" প্রকল্পে বিদেশী বিনিয়োগের সমস্ত ব্যবস্থা করে ফেললেন। সাহারা গ্রুপ এর কর্তা ব্যক্তি বাংলাদেশে এলেন, ২ দিনের মধ্যে একটি কম্পানি গড়ে ফেললেন, সে কম্পানির দায়িত্ব পেলেন শেখ হাসিনার আত্মীয়! বুঝাই যাচ্ছে তলে তলে আগে সব ঠিকঠাক করা ছিলো। এখন জাস্ট ঘোষনা আসতেছে আর কাজ চলতেছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিলো সমুদ্র নিয়ে। ভারত জানবে না, মায়ানমার জানবে না, এমনকি আমেরিকাও জানবে না; আমরা হঠাৎ করে কয়েকটা জাহাজ বানিয়ে ফেললাম, বাপেক্সের জন্য যন্ত্রপাতি কিনে ফেললাম, নৌ বাহিনীতে বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষ করে ফেললাম! এমনই হওয়ার কথা ছিলো।

(২৬ মে) ২০. কথা ছিলো তথ্য অধিকার। কথা ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ। কথা ছিলো রাজউকের ওয়েব সাইটে ঢুকলেই সাহারা গ্রুপের সাথে সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত পেয়ে যাবো; অত খোঁজাখুঁজি করা লাগবে না। কিন্তু খোঁজাখুঁজি করেও পেলাম না। কথা থাকে না।

কেন থাকে না? আমাদেরকে দেয়া এসব কথা কোথায় যায়? কোন দূর অজানায়? (২৫ মে) ২১. 3G মানে হচ্ছে তিন গাধা। জনগণ, সরকার ও মিডিয়া। কয় বছর ধরে এ তিন গাধার গল্প শুনেই যাচ্ছি। কখন গাধারা জলের সামনে আসবে, কখন ঘোলা করবে, আর কখনইবা খাবে! অনেক প্রতীক্ষার পর শুনলাম এখন জল ঘোলা করার পর্ব চলছে। খাবেন জুলাইতে।

এখন শুনতেছি গাধারা খালি ঢাকার জল খাবেন। দেশের বাকি অঞ্চল চেয়ে চেয়ে দেখবে। (২৫ মে) ২২. নিজাম নামে আমার এক বাল্যবন্ধু ছিলো। প্রায়ই মারাত্মক মারাত্মক কিছু শব্দের জন্ম দিতো। প্রতিদিন ভোরে আমরা হাঁটতে বেরুতাম।

যে রাস্তায় হাঁটতে যেতাম, আমার আরেক বন্ধুর চাচাতো বোন সে রাস্তা দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যেতো। মেয়েটি অনেক দ্রুত হাঁটতো। নিজামকে বললাম ওর সাথে হেঁটে প্রতিযোগিতায় টিকতে হবে। নইলে পুকুরে ফেলে দিবো। এরপর কইলাম, আচ্ছা মনে কর তুই মেয়েটির পেছনে পেছনে হাঁটতাছস।

ও যদি ঘাড় ঘুরিয়ে বলে 'কে তুমি যুবক?' তখন তুই কী বলবি? নিজাম জবাব দিলো, "আমি বলবো, হ্যাঁ যুবিকা...!" নিজামের রচিত যুবকের স্ত্রী লিংগ যুবিকা আমাদের বন্ধু মহলে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলো। (২৪ মে) ২৩. বাংলা সিনেমা যখন কাটপিস যুগে প্রবেশ করে, দুয়েকটি সিনেমায় ১/২ মিনিটের দৃশ্য দেখেছিলাম। সেগুলো ছিলো বিদেশী কাটপিস। তারও অনেক পরে একদিন এক বন্ধু এসে কইলো 'রৌশনবাণীতে একটা সিনেমা লাগাইছে। পয়সা উসুল হয়ে যাবে।

' আমি ভাবলাম বুঝি খুব ভালো সিনেমা এসেছে-গিয়ে দেখি। পোস্টার দেখে মন্দ ভালো বুঝার উপায় ছিলো না। মানে কাটপিসের ব্যাপারটার কথা বলছি। ছবির নাম 'রুখে দাড়াও'! শুরুর দশ বারো মিনিটের মধ্যেই প্রথম পিস পেলাম। এভাবে মোট ১০/১২ পিস।

সবগুলা দেশি। এর মধ্যে ৫/৬টা গান পুরা পিস। কোন কাটিং না। কী যে একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। সপ্তাহখানেক আমার এ ঘোর কাটে নাই।

ওই সময় সিরিয়াস বিদেশী পর্ন দেখতাম। কিন্তু বাংলাদেশী বিগ্রেড নায়িকাদের ন্যুড দেখে পুরা মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। গ্রামে ছিলামতো, যৌনতা নিয়ে তখনো ফ্যান্টাসিতে ভুগতাম। আগ্রহের শেষ ছিলো না। সিনেমা দেখে বের হয়ে পুরা মাতাল অবস্থা! একটু আগে গুগলে 'মাস্টার পিস' লিখে সার্চ দিয়ে খুঁজতে খুঁজতে কাটপিস এর রেজাল্টও পেলাম।

অনেকদিন পর মনে পড়ে গেলো সেসব যৌনগন্ধা মৌসুমের কথা। (২৪ মে) ২৪. 'মাইনাস টু' নামে এখনো কোন বাংলা সিনেমা হয়নি। এ ফর্মূলার প্রবক্তাকে আন্তর্জাতিক গণিত অলম্পিয়াডে লেকচারের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়নি। এমনকি এসব কথা মনে করিয়ে দেয়ার মতো কেউও দেশে নেই। আমাকেই মনে করিয়ে দেয়া লাগলো।

ওফ! জাতি বসে বসে ঠান্ডা পানিতে মেশানো ট্যাং খাচ্ছে। কী অদ্ভুত! (২৩ মে) ২৫. একজন ভিক্ষুক থেকে শুরু করে দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই দুর্নীতি করে। আমার বাড়িওয়ালা দুর্নীতি করে। লন্ড্রী দোকানদার দুর্নীতি করে আমার একটা জামা মেরে দিয়েছে। রিকশায় দরদাম করে উঠিনি বলে রিকশাওয়ালা ৫ টাকা দৃর্নীতি করে নিয়ে গেছে গতকাল।

আমাদের অফিসে খাবারের ম্যানেজার দুর্নীতি করে সয়াবিন তেল দিয়ে আলুর ভর্তা বানিয়েছিলো। সে আবার টিএন্ডটি অফিসে দুর্নীতির শিকার হয়ে বেশ চিল্লাপাল্লা করেছে। দেশ নাকি দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। আমি দুর্নীতি করে গতকাল অফিসে তেমন কোন কাজই করিনি। বৌ দুর্নীতি করে আমার হাত খরচের বরাদ্ধের টাকা কেটে নিয়ে গেছে।

এখনো আমার ছেলে দুর্নীতি করা শেখেনি। সে শিশু। একদিন সেও দুর্নীতি করবে। ওই ভিক্ষুক, লন্ড্রী দোকানী, রিকশাওয়ালা, খাবারের ম্যানেজার, আমি, আমার বৌ, ছেলে- আমরা জনগণ। এখান থেকেই অফিসার, এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হবে।

আমাদের অল্প কিছু শিক্ষা আছে, নৈতিক শিক্ষা নেই। তাই ভরপেট দুর্নীতি আছে। (২১ মে) ২৬. বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দলকে মোকাবেলার কিছু নেই। ষড়যন্ত্র ব্যতীত রাজনীতিতে এ দলের আর কোন মূলধন আছে বলে মনে করি না। সরকার যদি প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে শুরু থেকে দেশের সার্বিক উন্নয়নে আরো দরদ দেখাতো, তাহলে এখন এ বিশ্রী বিরোধী দল শাসনের নমুনা সৃষ্টির কোন প্রয়োজন হতো না।

ভোট কাকে দিবে, এ চিন্তা পরে। তার আগে সরকারের এমন প্রতিহিংসার আগুন দেখে জনগণ মনে কষ্ট পায়। ভীষণ কষ্ট পায়। কারণ দেশের মানুষ বিরোধী দল মোকাবেলায় দক্ষতা দেখে ভোট দেবে না। উন্নয়নের চিহ্ন দেখে ভোট দেবে।

সরকার অনেক অপচয় করেছে। এমন আত্মঘাতী সরকার আমাদেরকে দু:খী বানিয়ে রাখে। আমরা আর সরকারের সফলতা ব্যর্থতা পরিমাপের শক্তিও পাই না। (১৯ মে) ২৭. নিশাত মজুমদার এটা কী করলো!! এখন হয় নিশাত মজুমদারকে সমুদ্র জয় করতে হবে, না হয় শেখ হাসিনাকে পাহাড় জয় করতে হবে। ওফ! নি:সন্দেহে এটা প্রধানমন্ত্রীর জন্য বাড়তি মানসিক চাপ।

(১৯ মে) ২৮. দৈনিক কালের কন্ঠে পড়লাম সৌদি আরবের একটি পত্রিকায় বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদেরকে 'মুসলিম নেতা' আখ্যায়িত করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে 'মুসলিম বিরোধী' হিসেবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সৌদি আরব কি মনে করে বাংলাদেশে মুসলমানের সংখ্যা এক থেকে দেড় পার্সেন্ট? গোলাম আজমরা যে মুসলিম নেতা নয়, তা এ দেশের মুসলমানরা প্রমাণ করে যাচ্ছে বারবার। সৌদি আরবের সার্টিফিকেট এর কোন প্রয়োজন নেই। অনেক আগেই সৌদি মুসলমানদের মুসলিম পরিচয় মুছে 'আমেরিকার দালাল' পরিচয় উজ্জ্বল হয়ে গেছে। ওদের উচিত নিজেদের হারানো পরিচয় পুনরুদ্ধারে মনযোগ দেয়া।

(১৭ মে) ২৯. ১৮ দলীয় জোটের ১৪টি দলের কোন নেতাকে গ্রেফতার করার জন্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিএনপি নেতারা বাকি দলগুলোর প্রক্সি দিতাছে। এটা সরকারের সাথে ডিজিটাল বিটলামি। পারলে আইপি ট্র্যাক করুক সরকার। (১৬ মে) ৩০. আজ যদি খালেদা জিয়ার সরকার শিক্ষকদের উপর জলকামান নিয়ে হামলে পড়তো ও লাঠিপেটা করতো, তাহলে আওয়ামী নেতারা কইতো "খালেদাতো এইট পাশ, শিক্ষকদের মর্যাদা কী বুঝবে!!" এখন হয়তো সাহারা খাতুন বলবেন "আমি পুলিশকে এমন কোন নির্দেশ দিইনি।

কেন এরকম হয়েছে, তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়া হবে!" একইদিনে শেখ হাসিনা সরকারি শিক্ষকদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন এবং বেসরকারি শিক্ষকদের জলকামানের শক্তি দেখালেন। কষে লাত্থি মারি সে মুখে, যে মুখ দিয়ে শিক্ষকদের উপর নির্যাতনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। (১৫ মে) ৩১. এমনওতো হতে পারে হুমায়ুন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর নামে মামলা করে দিবেন! আর কত সহ্য করবেন? একজন জনপ্রিয় ঔপন্যাসিকের ইচ্ছেমতো উপন্যাস লেখায় বাধা সৃষ্টির জন্য বঙ্গবন্ধুর নামে মরনোত্তর মামলা দায়ের করা যেতে পারে। এ দেশে প্রতি পদে পদে মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়। সৈয়দ আবুল হোসেনের মতো মানুষ শান্তিতে দুর্নীতি করতে পারেন না।

ড. মাহফুজুর রহমান শান্তিতে গান করতে পারেন না। একজন পাপিয়া নির্বিঘ্নে পুলিশের গায়ে গড়াগড়ি খেতে পারে না। একজন হুমায়ুন আহমেদ একটু নিরবে নিভৃতে শুয়ে বসে রাজনৈতিক উপন্যাস লিখতে পারেন না। এ কোন দেশে বসবাস করছি আমরা! উনিতো কারো উঠোনে বসে উপন্যাস লিখেননি, এমনকি কারো বাসার ছাদেও না, চলার পথে বসেও না। উনি বিদেশ বিভুঁইয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে লিখতে চেয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু সেখানে গিয়েও বাধা সৃষ্টি করলেন! অদ্ভুত এক দেয়ালের উপর বসে মুড়ি খাচ্ছে স্বদেশ! (১৫ মে) ৩২. মাঝে মাঝে মনে হয় আরো শতবছর পর জন্ম নিলে ভালো হতো। এই বলাটা কেবলমাত্র সামাজিক অস্থিরতায় অতিষ্ট হয়ে কিছুটা আক্ষেপ করা। অবশ্য এ আক্ষেপ বেশিক্ষণ টিকে না। ওইদিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ৩০০ মিনিটের একটা ডকুমেন্টারির ৪০ মিনিট দেখেছিলাম। দেখলাম হিটলারের নির্দেশে রাশিয়ার লাখ লাখ সৈন্যকে মেরে ফেলার দৃশ্য।

৩০ হাজার ইহুদী নারী, পুরুষ, শিশুকে গ্যাস চেম্বারে নিয়ে নগ্ন করে মারার দৃশ্য। যাকে মারবে তাকে দিয়ে গর্ত খুঁড়ে সে গর্তে তাকে নামিয়ে গুলি করে মারার দৃশ্য। মারার আগে ফটোসেশনের দৃশ্য। দেখেছি ফুটফুটে শিশুদের আতংকিত মুখ। দেখেছি মায়ের বুকে ভয়ে ক্রন্দনরত শিশুর চোখ।

এরকম আরো ভয়াবহ অমানবিক দৃশ্য দেখে জমাট বেঁধে যাচ্ছিলাম। বাকি অংশে নিশ্চয় হিটলার বাহিনীকে মারার ভয়াবহ দৃশ্যও আছে। সবগুলো ফুটেজ একেবারে অরজিনাল। যুদ্ধরত দেশগুলোর সেনাবাহিনী থেকে এসব ফুটেজ নিয়ে ডকুমেন্টারিটি বানানো হয়েছে। তখন মনে হলো ওই বর্বর সময়ে জন্ম না নিয়ে এখন জন্ম নিয়ে অনেক ভালো হয়েছে।

পৃথিবীতে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এ যুদ্ধ চর্চা সবখানে চলে। পাবলিক টয়টেল থেকে শুরু করে নিজের বেডরুম, সবখানেই চলে দখলের জন্য যুদ্ধচর্চা। ইচ্ছার ব্যপ্তির উপর নির্ভর করে যুদ্ধের ভয়াবহতা। আমরা এখন অপেক্ষাকৃত কম ভয়াবহ। ধীরে ধীরে যেন আরো কম ভয়াবহ হয়ে উঠি।

এ প্রত্যাশা করি। (১৫ মে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.