‘আরব আইডল’ প্রতিযোগিতায় শিরোপা জিতে ফিলিস্তিনিদের আনন্দে ভাসিয়েছেন তরুণ গায়ক মোহাম্মদ আসাফ। এ সুবাদে ফিলিস্তিনিরা উদযাপনের একটি উপলক্ষও খুঁজে পেয়েছেন। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানায়, গাজায় জন্ম নেওয়া আসাফ শিরোপা জিতেছেন, এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল শনিবার রাতে পশ্চিম তীর ও গাজায় হাজার হাজার আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়। বাঁশি বাজিয়ে, স্লোগান দিয়ে, নেচে-গেয়ে আনন্দাশ্রু ফেলে ফিলিস্তিনিরা এ জয়কে উদযাপন করে।
লেবাননের বৈরুতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার মঞ্চে গতকাল শনিবার ফিলিস্তিনের প্রথম মহা তারকা হিসেবে আবির্ভূত হন মোহাম্মদ আসাফ।
মঞ্চে তাঁর পরিবেশন থেকে সবাই বুঝতে পারেন, আসাফ কেবল একজন কবি নন, একজন অসাধারণ গায়কও বটে।
শিরোপা জয়ের পর আসাফ বলেন, ‘কোনো একজনের বন্দুক দিয়ে বিপ্লব হয় না, এর জন্য একজন শিল্পীর তুলি, ডাক্তারের ছুরি, কৃষকের কোদালেরও প্রয়োজন হয়। ...প্রত্যেকেই নিজ নিজ পথে নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে। আজ আমি ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করছি এবং আজ আমি হূদয় দিয়ে একটি লড়াই করছি আর আমার বার্তাকে ছড়িয়ে দিতে চাইছি। ’
আসাফ যখন এমন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন তাঁর মা ইন্তিজার আবু সামালে স্টুডিওতে বসে সে বক্তব্য শুনছিলেন।
ইন্তিজার গাজা উপত্যকার একটি স্কুলের গণিতের শিক্ষক। অনুষ্ঠানে তিনি এসেছিলেন ফিলিস্তিনের একটি পতাকা হাতে। তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি, কী যে করার ইচ্ছে হচ্ছে, বলে বোঝাতে পারব না। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমার গর্ব হচ্ছে। এ গর্ব ফিলিস্তিনের জনগণের, যারা আজ প্রমাণ করেছে যে তারা বেঁচে আছে।
’
আরব বিশ্বের দেশগুলোর প্রতিযোগীদের নিয়ে বৈরুতে আয়োজিত হয় গায়কদের প্রতিযোগিতা। যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয় শনিবার রাতে। আরব বিশ্বজুড়ে টিভিতে তা দেখানো হয়।
গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ দাহমান বলেন, ‘এ মুহূর্তটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সবাই আনন্দে মেতেছে।
আমাদের সবার জন্য আনন্দের এমন একটি মুহূর্ত এনে দেওয়ার জন্য আসাফ তোমাকে ধন্যবাদ। ’
স্বাধীন সার্বভৌম একটি আবাসভূমির জন্য দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় ধরে লড়ছে ফিলিস্তিনের মানুষ। নিরাপত্তার যুক্তি দিয়ে ইসরায়েল গাজা উপত্যকা অবরোধ করে রেখেছে ২০০৬ সাল থেকে। এ অবরোধ তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
আসাফকে ফিলিস্তিনের জাতীয় শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
আর জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) তাঁকে ঘোষণা দিয়েছে সংস্থার যুবদূত হিসেবে। এই সংস্থার পরিচালিত গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরেই বড় হয়েছেন আসাফ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।