হারতে শিখিনি কোনদিন । হারবও না ।
বিকেলে আমার ভাইকে নিয়ে মাঠে খেলছি । যেভাবে হোক ম্যাচটা উইন করব এমন সময় কোথা থেকে বন্ধু সজল উড়ে আসল । এসেই হতদন্ত ।
হাপাচ্ছে । আমি বলি -কি ব্যাপার । ভাব দেখে মনে হচ্ছে কেউ তোকে তাড়া করতে করতে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে । চেহারা তো তাই বলে !
সে দম ছেড়ে বলল- আর বলিস না । টিভিতে খবর দেখিসনি ।
দুইজন নারী এভারেষ্ট জয় করে ফেলেছে । আমাদের বাংলাদেশী ।
আমার হাতে ব্যাট । আমি ব্যাট করছিলাম । এদিকে ফিল্ডারদের চেচামেচি - ভাইয়া , সময় নষ্ট করতাসো কেন ? আমরা ব্যাটিং করব কখন ।
রাত তো হয়ে গেল । খেলতে না চাইলে আমাদের খেলা জিতিয়ে দাও ।
তার গিয়ে কথা বলো। আমরা কতক্ষন দাড়িয়ে আছি।
আমি মনে মনে বলি -নাহ , খেলা তাদের জেতাবো না ।
যদিও সবসময় তারাই জেতে আমার ব্যাটিং ব্যার্থতার কারনে । কিন্ত এই ম্যাচ জেতানোর কোন ইচ্ছা আদৌ আমার নেই ।
তাই বললাম-সজল,একটু পরে কথা বলব । দেখছিস না ক্রিকেট খেলছি ।
সে চোখ বড় বড় করে বলে -বলছিস কী তুই ! এমন একটা কান্ড ঘটল ।
আর তুই পরে এটা নিয়ে কথা বলতে বলছিস । বলিস কী!
বললাম-তা তুই কি করতে বলিস এখন ?
“তুই আগে খেলা ছেড়ে চলে আয় তারপর বলছি । খেলা আর তেমন কি !”
বিরক্ত হয়ে খেলা ছেড়ে আসতে হল । আর তারা জয়োৎসব শুরু করল । তারা মানে আমার বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা ।
যাহোক সজল আমাকে ডেকে নিয়ে বলল -দোস্ত, ভয়াবহ সংবাদ । নারী হয়ে এভারেষ্ট জয় করে ফেলেছে । আর আমরা পারলাম না । প্রেষ্টিজের ব্যাপার । মান ইজ্জত বলে কিছু তো আর রইল না ।
তার মতি-গতি এতক্ষনে পরিস্কার হল- তা তুইও এভারেষ্ট জয় করতে চাস তাই তো ?
“অবশ্যই । কেন না ?” সে আত্নবিশ্বাসের সাথে বলে ।
বুঝতে পারলাম কয়েকদিন পরে পত্রিকায় ‘পাত্রী চাই ’ শিরোনামে লেখা আসবে - অমুক ছেলের জন্য পাত্রী চাই । পাত্রীকে লম্বা এবং ফর্সা হতে হবে । এবং অবশ্যই এভারেষ্ট বিজয়ী হতে হবে ।
কিংবা অমুক ভাবী তমুক ভাবীকে ডেকে বলবে -ভাবী শুনলাম আপনি নাকি দুবাচ্চার মা হয়েছেন -অথচ এখনো এভারেষ্ট জয় করেননি । কথাটা কি সত্যি ?
যত হোক এভারেষ্ট জয় করাপ্রেষ্টিজের ব্যাপার -স্যাপার । যেভাবে গণহারে এভারেষ্ট জয় কার শুরু হয়েছে তাতে কি আর কিছু বুঝতে বাকী থাকে ? থাকে না ।
সবাই নিজেদের মান ইজ্জত নিয়ে ভাবে । তাই সবাই এভারেষ্ট জয় করতে চায় ।
কিন্ত কোন দিন গণহারে পদদলিত হওয়া এভারেষ্টের কথা ভাবে না ! এভারেষ্টেরও তো প্রেষ্টিজ আছে ।
এই ভাবে সবাই তাকে পায়ের নিচে ফেললে তারও একটা প্রেষ্টিজের ব্যাপার । কেউই ব্যাপারটা ভাবল না । উল্টো যারা যারা তাকে পদদলিত করছে তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হচ্ছে । দুঃখের কথা কোথায় বলি !
(পুরো গল্প বানোয়াট এবং কাল্পনিক।
BUT বিষয়টা বাস্তব । )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।