গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী বর্তমান কোটা ব্যবস্থায় ‘শতভাগ নিখুঁতভাবে’ উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করে সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি। আর এ কারণে ‘সরল’ একটি কোটা পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। রোববার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১১ এ বলা হয়েছে, বর্তমানে কোটা সংক্রান্ত যে নীতিমালা চালু আছে তার প্রয়োগ ‘অত্যন্ত জটিল, দুরূহ ও সময় সাপেক্ষ’।
“প্রচলিত কোটা পদ্ধতির জটিলতার কারণে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন শতভাগ নিখুঁতভাবে সম্পাদন করা প্রায় অসম্ভব। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বর্তমানে প্রচলিত কোটা পদ্ধতির সরলীকরণ অপরিহার্য।
অন্যথায় কোটা প্রয়োগ জটিলতা থেকে উত্তোলন সম্ভব নয়। ”
এ ক্ষেত্রে পিএসসির সুপারিশ- মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও উপজাতি প্রাধিকার কোটায় নিয়োগ হবে জাতীয় পর্যায়ে প্রার্থী বণ্টনের ভিত্তিতে। এর ভেতরে আবার জেলা বা বিভাগভিত্তিক কোটা বা জনসংখ্যার ভিত্তিতে নিয়োগের হিসাব আনলেই জটিলতা বেড়ে যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এ ধরনের পদসমূহ জাতীয়ভিত্তিক নিজস্ব মেধানুক্রম অনুযায়ী উক্ত কোটায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে বণ্টন করা যেতে পারে। ”
পিএসসির চেয়ারম্যান এটি আহমেদুল হক চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা কোটায় যাই থাকুক, তা যেন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে।
অনেক ক্ষেত্রে প্রাধিকারের ভিত্তিতে এ কোটায় নিয়োগ দিতে গিয়ে অন্য কোটায় কম পড়ে। ফলে কোটার শর্ত পূরণ করতে গিয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সমস্যায় পড়ি। ”
আর এতে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচনও কঠিন হয়ে পড়ে বলে মন্তব করেন তিনি।
বর্তমান ব্যবস্থায় বিশেষ বিসিএস ছাড়া অন্য সব বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনি কোটায় ৩০ শতাংশ, মহিলা কোটায় ১০ শতাংশ, উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ এবং জেলা কোটায় ১০ শতাংশ নিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সরকারি কলেজে সহাকারী অধ্যাপক, সহযোগী অ্যধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরিরত প্রার্থীদের বয়সসীমাও তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে পিএসসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এ পদসমূহে সরকারি কলেজে চাকরিরত প্রার্থীদের বয়সসীমা যেভাবে উল্লেখ আছে তাতে অনেক সময় অধিকাংশ যোগ্য চাকরিরত প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারেন না। এজন্য কমিশন চারকিরত প্রার্থীদের বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে। ”
নারী-পুরুষ খতিয়ান
পিএসসির ২০১১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিগত পাঁচটি বিসিএস পরীক্ষায় (২৬ থেকে ২৯তম বিসিএস) মোট ১০ হাজার ৫৮১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭০ দশমিক ০৫ শতাংশ পুরুষ; ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ নারী।
অর্থাৎ, গত পাঁচটি বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যতো নারী নিয়োগ পেয়েছেন, পুরুষ নিয়োগ পেয়েছেন তার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
২৬তম বিসিএসে ৭০৩ জন পুরুষ (৬৬.১৩%) ও ৩৬০ জন নারী (৩৩.৮৭%) নিয়োগ পান।
২৭তম বিসিএসে নিয়োগ পান দুই হাজার ৪১৭ জন পুরুষ (৭৪.৬২%) ও ৮২২ জন নারী (২৫.৩৮%)।
এছাড়া ২৮তম বিসিএসে এক হাজার ৫২০ জন পুরুষ (৬৯.৪১%) ও ৬৭০ জন নারী (৩০.৫৯%); ২৯তমতে এক হাজার ২৩২ জন পুরুষ (৭১.৫৪%) ও ৪৯০ জন নারী (২৮.৪৬%) এবং ৩০তম বিসিএসে এক হাজার ৬২৩ জন পুরুষ (৬৮.৫৭%) ও ৭৪৪ জন নারী প্রার্থী (৩১.৪৩%) নিয়োগ পেয়েছেন।
২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০তম বিসিএসে মেধাতালিকা থেকে মোট ছয় হাজার ৪৫৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছে পিএসসি। এই চারটি বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় এক হাজার ১৪৫ জন, মহিলা কোটায় ৮৯৭ জন, উপজাতি কোটায় ৬১ জন এবং জেলা কোটায় ৯৬০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।