আমাদের ভয় দেখিয়ে করছ শাসন, জয় দেখিয়ে নয় কোটার পক্ষে এবং বিপক্ষে দু’দিকেই যুক্তি আছে। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে যারা উপরে উঠে আসে তাদের কৃতিত্ব অনেক বেশি সন্দেহ নেই। কিন্তু কোটা কতটা থাকতে পারে?
অর্ধেকেরও বেশি কোটা থাকতে পারে নাকি? কোটা কি অনন্তকাল ধরে চলতে পারে? বাংলাদেশের সংবিধানেও সমঅধিকারের কথা বলা হয়েছে।
পরিবারের কম বয়সী সদস্যকে নানা সুবিধা দেয়া হয় তার বেড়ে ওঠার স্বার্থে। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে কিন্তু সক্ষম সদস্যরাই মূল ভূমিকা নেন।
তৈরি হওয়ার জন্য কম বয়সী সদস্যরাও কিছু কাজ করার সুযোগ পায় তবে সেটা সীমিত আকারে। আগে তাদের তৈরি হতে হয়।
বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী হিসেবে উপজাতীয় এবং নারী কোটার পক্ষে যে যুক্তি দেয়া হয় সেটা খুব বেশি জোরালো মনে হয় না।
আগে তাদের তৈরি হতে হবে। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজটা দ্রুত এগিয়ে নেয়া দরকার।
আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ কম হলেও একেবারে শূন্য কিন্তু নয়। ধীরে ধীরে এ অবস্থার উত্তরণ ঘটবে। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের ফলাফল ছেলেদের চেয়ে ভালো। প্রতিযোগিতায় ভয় কিসে? পুরুষ সহকর্মীদের মুখে ‘দেখো মেয়ে হওয়ার কত সুবিধা’-এটা আত্নসম্মানবোধ আছে এমন কোন মেয়ের শুনতে ভালো লাগার কথা নয়।
সবচেয়ে বড় কথা এই কোটার পরিমাণ কি মেধা কোটাকেও অতিক্রম করতে পারে?
মুক্তিযোদ্ধা কোটা
মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত সম্মানিত নাগরিক।
বিশেষ করে যুদ্ধের পর জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য অনেক কিছুই করা প্রয়োজন ছিল। তাঁদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার স্বার্থেও অনেক কিছু করা দরকার ছিল। সেটা করেনি।
কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটা কতদিন চলবে? নাতি-নাতনীদের জন্যও যে কোটার ব্যবস্থা করা হল এটা কোন যুক্তিতে? পরের প্রজন্মকেও কি কোটার আওতায় আনা হবে? শুধু তাই নয় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বয়স সীমাও বেশি রাখা হয়েছে।
আরেকটি কথা থেকে যায়।
ন্যূনতম যোগ্যতাসম্পন্ন লোক মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য না পাওয়া গেলে কেন সেখানে মেধা কোটা থেকে লোক নেয়া হবে না?
বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ দু’দলই একে অপরের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরির অভিযোগ এনেছে। দু’দলই ক্ষমতায় গিয়ে তালিকা কাঁটাছেঁড়া করেছে। রাজনৈতিক পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকার প্রণয়নের অভিযোগ কিন্তু দু’দলই করেছে।
মানে আমি ক্ষমতাসীনদের দলের লোক হলে আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হয়ে যেতে পারি।
মুক্তিযোদ্ধারা নিশ্চয় কারো করুণা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধে যান নি।
তাঁরা নিশ্চয় এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেননি যেখানে বৈষম্য থাকবে।
মেধার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ না করে বরং বালাদেশের সরকারী কাঠামোকেই দূর্বল করে দেয়া হচ্ছে। এটাতো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানেরা যাতে তৈরি হতে পারে সে ব্যবস্থা করা দরকার।
সাংসদ কোটা
কোটা নিয়ে আরেকটি কথা উল্লেখ করা যায়।
এ বছর প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে সাংসদের জন্যও ২% কোটা রাখতে চেয়েছিল সরকার। দেখুন সাংসদগণ নিজেদের সন্তানদের জন্য নয়, কোটা চেয়েছিলেন নিজেদের ইচ্ছেমত ভর্তি করার জন্য। কাজেই এদেশে কোটা কোন ভালো জিনিস নয়। এর পেছনে মতলব থাকে। আমরা দেখেছি রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তিকারী ছাত্র সংগঠনগুলো সব সময় কোটার পক্ষে থাকে।
কারণটা বুঝতে কি কারো কষ্ট হয়?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।