পৃথিবীতে এসেছি, চিহ্ন রেখে যেতে চাই ...... কোটা!! কোটা!! কোটা!!! সরাসরি কিছু কথা বলতে চাই---> আমি জানি এনং মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যেসব মহান মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা কখনোই "দেশ স্বাধীন হলে অনেক সুবিধা পাবো" এই আশায় যুদ্ধ করেননি। দেশ মাতাকা কে ভালোবেসেই তাঁরা এটা করেছেন। তাদের ঋণ শোধ করার ক্ষমতা কোন মানুষের নেই। তারপরেও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখাতে গিয়ে তাদের কিছু টাকা ভাতা দেয়া হয়, যেটার পরিমান হাস্যকর। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেসব নেতা কিংবা নেতাদের ছেলেমেয়ে, নাতি নাতনী, সবাই আরামসে সরকারী টাকার ঘর বাড়িতে থেকে গাড়িতে ঘুরে আর দুর্নীতি করে যত লক্ষ কোটি টাকা কামিয়েছেন এবং এখনও কামাচ্ছেন সে তুলনায় মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০০০ টাকা (সর্বনিম্ন) !!- প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়েদের বেলায় কোটা ব্যাপারটা সমর্থনযোগ্য, কারণ যেসব যোদ্ধা যুদ্ধে মারা গেছেন কিংবা আহত হয়েছেন তাঁর বা তাঁদের ছেলেমেয়রা আর দশটা ছেলেমেয়ের মত বাবার আদর কিংবা বেড়ে ওঠার বয়সে বাবার তত্তাবধায়ন পায় নি । ওই ছেলেমেয়েরা এটা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কারণ তাদের বাবা দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছিলেন। এই দিকটা বিবেচনা করে ছেলেমেয়েদের সুযোগ সুবিধা দেওয়াটা চোখে লাগে না কিন্তু নাতি নাতিনিদের বেলায় একই সুবিধা কখনোই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। আর যদি এই ধারা চলতে থাকে তাহলে সবাই আফসোস করবে যুদ্ধের সময় কেন তাদের জন্ম হয় নি কিংবা দেশে আরেকবার যুদ্ধ লাগছে না কেন!!
শাহবাগের নেতাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি? এরকম একটা বিষয় নিয়ে যারা আন্দোলন করছে স্বশিক্ষিত সব মানুষেরই উচিত তাদের সমর্থন দেওয়া। অথচ গণ জাগরণ মঞ্চ থেকে বলা হচ্ছে এটা হতে দেওয়া যাবে না কারণ এতে নাকি রাজাকারদের সন্তানেরা সরকারী জায়গা দখল করে বসবে!!- আমি আমার জীবনে এমন হাস্যকর এবং অযৌক্তিক কথা এর আগে শুনিনি।
রাজাকারের ছেলেমেয়ে যদি প্রকৃত মেধাবী হয় তাহলে তারা তাদের মেধার উপযুক্ত মুল্যায়ন পাবে এই আশা করাটা নিশ্চয় দোষের না। আর তাছাড়া বাবার পাপের ভার সন্তান বইবে- এটা কেমন কথা? মুক্ত মনের মানুষ হিসাবে এটা হতে দেওয়া যায় না।
যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির আন্দলনের সময় আমি নিজে ৪ দিন দুপুরের তীব্র রোদে শাহবাগে বসে স্লোগান দিয়েছিলাম। এছাড়া বই মেলা উপলক্ষে প্রতিদিন মেলায় যেতে হতো তাই ফেব্রুয়ারির পুরো মাস শাহবাগে কাটিয়েছি- এটা বলাই যায় এবং এটা নিয়ে গর্বও করা যায়। কিন্তু আজ যখন শাহবাগিদের এরকম উদ্ভট এবং অযৌক্তিক কথা শুনি তখন গণ জাগরণ মঞ্চের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সন্দেহ জাগছে।
সবাইকে বলতে চাই মুক্তিযোদ্ধারা মহান মানুষ,ভালোবাসার ঋণ শোধ হওয়ার নয়। তাঁদের দেশকে ভালোবাসার ঋণ শোধ দেওয়ার চেষ্টা করা বৃথা। আর সরকার যদি মনে করেন যে মাসে মাসে ২০০০ টাকা আর সরকারী চাকুরীতে কোটা দিলেই ঋণ শোধ সম্ভব তাহলে আমার আরেকটা প্রস্তাব আছে। মন্ত্রী পরিষদ থেকে আবাল গুলারে বাদ দিয়ে যারা সত্যিকার অর্থেই দেশকে ভালবেসেছেন সেইসব মুক্তিযোদ্ধাদের যারা এখনও বেঁচে আছেন তাঁদের দিয়ে মন্ত্রীপরিষদ এর জায়গাটা পূরণ করা হোক। ঋণ শোধ নিয়ে তখন আর মনে সন্দেহ জাগবে না।
এটা ছাড়াও তাঁদের সবাইকে সপরিবারে বঙ্গ ভবনের মত জায়গায় বাসা দেয়া+শুল্কমুক্ত গাড়িতে ঘুরতে দেওয়ার সুযোগ করে দেয়া যেতে পারে। মনে হয়- আমার প্রস্তাবে সাধারণ মানুষের আপত্তি থাকার কথা নয়। চাওয়াটা কি অযৌক্তিক হয়ে গেলো? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।