আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিলেটে দুদু মিয়ার 'পাখি বাড়ি'

চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই ! নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণে সুরমার পশ্চিম শ্রীরামপুর গ্রাম। গ্রামের দুদু মিয়ার বাড়ির কাছে যেতেই ভেসে আসে পাখির কলকাকলি। কিচিরমিচির শব্দে পা আটকে যায় পথিকের। চলার পথে পাখির খেলা দেখতে অনেকেই ঘুরে যান বাড়ির ভেতর। প্রায় ৪০ বছর ধরে পাখিরা দুদু মিয়ার বাড়িকে নিজেদের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

দুদু মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরাও পরম মমতায় আগলে রেখেছেন পাখিদের। গাছে গাছে পাখির মেলার জন্য এলাকায় দুদু মিয়ার বাড়ির পরিচিতি হয়েছে 'পাখি বাড়ি' হিসেবে। পশ্চিম শ্রীরামপুরের 'পাখি বাড়ি' ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির এগাছ থেকে ওগাছে উড়ে বেড়াচ্ছে নানা জাতের পাখি। বাঁশঝাড়ে বাঁধা বাসায় ডিমে তা দিচ্ছে সাদা বক। লাল বক ও শালিক ব্যস্ত নতুন ছানাদের মুখে খাবার তুলে দিতে।

পানকৌড়ি ধ্যান ধরে বসে আছে গাছের মগডালে। এ ছাড়া বাড়ি ভর্তি গাছ থেকে ভেসে আসছে ঝাটিয়া বক, মনিহার বক, শালিক, মাছরাঙা, দোয়েলের কিচিরমিচির শব্দ। বাড়ির পাশের ঝোপঝাড় ও জলাশয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরালি, বালিহাঁস ও পাতিহাঁসসহ নানান প্রজাতির পাখি। বাড়ির মালিক দুদু মিয়া জানান, দেশ স্বাধীনের তিন বছর পর বর্ষা মৌসুমে একদিন হঠাৎ করে কয়েকশ পাখি আশ্রয় নেয় তাদের বাড়ির গাছে। এরপর প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুরুতেই নানা জাতের পাখিদের আগমন ঘটতে থাকে বাড়িতে।

দিন দিন পাখির সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। শীত পড়তে শুরু করলে বক ও হাঁস প্রজাতির পাখিরা চলে যায় হাওরে। দুদু মিয়া জানান, তার বাবা হাবীবুর রহমান পাখিগুলোকে পরম মমতায় আগলে রাখতেন। তার মৃত্যুর পর তিনি ও তার ভাইয়েরা তাদের বাড়িকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছেন। পাখির বিষ্ঠায় বাড়িতে দুর্গন্ধ ছড়ালেও বিরক্ত হন না পরিবারের কেউই।

বরং এ থেকে যাতে পাখিদের মধ্যে কোনো রোগ-বালাই না ছড়ায় সেজন্য নিয়মিত বাড়ি পরিষ্কারের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে জীবাণুনাশক ওষুধও ছিটানো হয়। দুদু মিয়া আরও জানান, ঝড় বা শিলাবৃষ্টি হলে পাখিগুলো বিপদে পড়ে। তখন খুলে দেওয়া হয় বাড়ির সবকটি ঘরের দরজা। পাখিরা আশ্রয় নেয় ঘরের ভেতর। ঝড় থামলে আবার তারা নিজেদের বাসায় ফিরে যায়।

ঝড়ে বাসা ভেঙে কোনো পাখির ছানা নিচে পড়ে গেলে বাসা তৈরি করে ছানাগুলো যথাস্থানে রেখে দেন দুদু মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা। [খবরটি ভালো লাগায় হুবহু ব্লগে তুলে দিলাম ] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।