মনে রবে দীর্ঘশ্বাসে, আর ১মিনিট নীরবতায়....! আগের পর্ব
আমি ওর ঐ কথা শুনে খুব অবাক হয়ে পড়েছিলাম, কল করে যে ওকে জিজ্ঞেস করবো সেই অবস্থাও ছিলোনা কারণ কুম্ভকর্ণ সেইসময়ে গ্রামে । আমরা তখন নিম্বাজে চ্যাটিং করতাম, তারিখটা ২২জুন আমার প্রচণ্ড জোরাজুরিতে কুম্ভকর্ণ আমাকে যা বললো তার সারাংশ হলো, নিশা (ছদ্মনাম) যাকে সবাই ওর গার্লফ্রেণ্ড বলে মনে করতো মেয়েটা আসলেই ওর গার্লফ্রেণ্ড ছিলো । মেয়েটা ওকে ছেড়ে আরেক ছেলের কাছে চলে যায় দেখে ওরা ২জনেই বলতো ওদের মাঝে কোন প্রেম ছিলো না । নিশা যখন জানতে পারে আমার আর কুম্ভকর্ণের সম্পর্কের কথা সে আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ।
আমি প্রচণ্ড ধাক্কা খেলাম , কারণ নিশাপু আমারো পরিচিত আমাদের সব একই গ্রুপের ।
আমি একদম চুপ হয়ে গেলাম কিছুদিনের জন্য....কারণ কুম্ভকর্ণকে আমি সবই বলতাম সেখানে এমন একটা ব্যাপার আমি জানিনা ব্যাপারটা আমাকে কষ্ট দিয়েছিলো ।
এর মাঝে আমার জন্মদিন এসে পড়লো, দেখা করলাম আমরা ৪বন্ধু । কুম্ভকর্ণ বার্থডে গিফট হিসেবে ২টা বই দিলো, সেদিন ছিলো প্রথম দিন আমরা পাশাপাশি বসে ছিলাম (তবুও হাত ধরিনি) ।
আমি বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা ঘটতে চলছে, ব্যাপারগুলো বদলে গিয়েছে কতটুকু যখন 'Love You' লেখা একটা মেসেজের রিপ্লাই আসলো 'খালি কলসি বাজে বেশি' ।
আমি প্রথমে হতভম্ব এবং তারপর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো ।
এভাবে কাটছিলো আমাদের, মায়াবতীর প্রতি মায়া কমছিলো ধীরে ধীরে । আমি জানতে পারি নিশাপু কুম্ভকর্ণের সাথে যোগাযোগ করা শুরু করেছে, অতটা ভাবিনি কারণ আমি ওকে ভীষন বিশ্বাস করতাম । কারণ আমার একজনের প্রতি মোহ ছিল যার নাম ধ্রুব সেই কথাটাও ওকে আমি জানিয়েছি,সেখানে ও. . . .
সব বদলাতে লাগলো আমিও বুঝলাম কোনকিছু আর আগের মত নেই । কুম্ভকর্ণের সাথে রিলেশন থাকাকালীন অবস্থায় এবং ২০১০ এ শেষ দেখা হয় ২৭আগস্ট । ৪জন মিলে আড্ডা দিয়ে ভালো একটা সময় কাটিয়েছিলাম...
কুম্ভকর্ণ আর জড়াতে চাইছিলো না, তার কাছে কোন একটা অজানা কারণে আমি বিশ্বাসের অযোগ্য ছিলাম এমনকি সে সরাসরি বললো তোমার মত মেয়ে আমার পছন্দ না ।
সে শুরু করলো আমাকে কষ্ট দেয়া, আমি তখন অবুঝ হয়ে পড়েছিলাম । আমার হয়তো কোন দোষ ছিলো কিন্তু সেটা এমন কিছু না যার কারণে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে । আমি এতটাই ভালোবাসতাম আমি যে ওর সাথে বেহায়ার মত আচরণ করছি সেটা আমার মনে হয়নি ।
আমি জানতাম ও খুব নির্লিপ্তভাবেই আমাকে কষ্টগুলো দিচ্ছে এবং এর জন্য ওর কোন অপরাধবোধ কাজ করছেনা ।
কে জানি বলেছিলো কারো জন্য জীবন থেমে থাকেনা, কিন্তু আমার জীবন সত্যিই থেমে গিয়েছিলো ।
আমি প্রতিটা সময় কাঁদতাম, ক্লাসে স্টাডিতে আমি পিছিয়ে পড়তে লাগলাম,রেজাল্ট খারাপ হতে লাগলো দিন দিন । আমি ডায়রিতে সব লিখে রাখতাম, একসময় এই কষ্ট অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেলো । আমি রাতে হাউমাউ করে চিত্কার করে কাঁদতাম, আম্মু জানতো সবই কিন্তু কতবার সে রাতে উঠে এসে আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখবে?
আমার তখন মরে যেতে ইচ্ছে করতো । অনেকে ভাববে, একটা ছেলেকে না পেয়ে মরে যেতে চাও? ছিঃ! আমি কুম্ভকর্ণের জন্য না নিজের জন্য মরে যেতে চাইতাম, এতটা যন্ত্রণা সহ্য করতে পারার মত শক্তি আমার কখনোই ছিলো না ।
আমি ওকে জানালাম, আমার ওকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হচ্ছে সবকিছু থেমে আছে ।
ওর রিপ্লাইটা ছিলো এমন, থেমে থাকতে চাইলে থেমে থাকো কিন্তু অন্যের চলার পথে বাঁধা সৃষ্টি করো না ।
আমার সবচে কাছের বান্ধবী নওশীন ওর কলেজের ক্লাস মিস্ দিয়ে এসে আমাকে ধরে বসে থাকতো । আমি এতটা কষ্ট পেয়ে শুধু এটা বুঝছিলাম আমি যতটা খারাপ আছি আমার আশেপাশের মানুষগুলো আমাকে কষ্টে দেখে ঠিক একই পরিমাণ কষ্টে আছে ।
ঐদিকে নিশাপু তার বয়ফ্রেণ্ডের সাথে ভালো ছিলো, আমি আর কুম্ভকর্ণ যেমন তেমন অবস্থায় ছিলাম । নিশাপুকে রিকোয়েস্ট করেছিলাম ফিরে আসতে কুম্ভকর্ণের কাছে কিন্তু কিছুতেই কিছু হলোনা...
কুম্ভকর্ণ বিশাল এক এসএমএস পাঠালো আমাকে,মেসেজটা ছিলো এমন,
"তুমি তো জানোই নিশাকে আমি কতটা ভালোবাসতাম,প্রথম ভালোবাসা ছিলো ।
কিন্তু নিশা আমাকে ছেড়ে চলে যায়, ও যদি আমি ওকে কতটা ভালোবাসি এটা বুঝতে পারতো ও কখনো ছেড়ে যেতোনা আমাকে । আমি তখন অনেক কষ্টে পড়ে যাই, সারাক্ষণ চোখ দিয়ে পানি পড়তো ওর জন্য শুধু ক্যাম্পাসের সময়টুকুতে ভালো থাকতাম । এত কাঁদার ফলে আমার স্থায়ী মাথাব্যাথা শুরু হয়,মানসিক কষ্টের সাথে শারীরিক কষ্ট । ঠিক এমনসময়ে তোমার সাথে পরিচয় । তোমাকে ভালো লাগতো অন্য সবার মত কিন্তু সেই ভালোলাগা কিভাবে যে ভালবাসায় রূপান্তর হলো তা বুঝতে পারিনি ।
আমি খুব হ্যাপি ছিলাম, তোমাকে অবশ্য এতটা বলা হয়নি । তুমি আমাকে অনেক হ্যাপি করেছো,তোমার মন খারাপ থাকলে আমি কষ্ট পেতাম তুমি আনন্দে থাকলে আমার ভালো লাগতো । তুমি আমাকে অসম্ভব ভালো রেখেছিলে । আমি নিশার দেয়া কষ্টের কথা ভুলে গিয়েছিলাম কিন্তু ঠিক সেই সময় নিশা ফিরে আসলো । আমি নিশার কষ্টের কথা ভুলে গেলেও নিশাকে তো ভুলে যাইনি ।
নিশা আমাকে আবার সেই কষ্টের মাঝে ফেলে দিয়েছে আর সেটাই আমাদের দূরত্বের কারণ । আমি একা থাকতে চাই"
মেসেজটা পড়ে আমি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছিলাম কিন্তু আমি ওর প্রতি ভালোবাসা বিন্দুমাত্র কমাতে পারিনি । ও আমাকে এতটা গার্লি টাইপ বানিয়ে ফেলেছিলো যে ভায়োলেন্স আমি সহ্য করতে পারতাম না, শুধু অশ্রু বিসর্জন দেয়ার মত ন্যাকামি করতে পেরেছিলাম ।
এবং আমি অপরিমেয় কষ্টের মাঝে তলিয়ে যেতে লাগলাম...এবং ওর জন্য আমার কাছে একটা গান ছিলো,
If you ever leave me, baby
Leave some morphine at my door
Coz it would take a whole lot of medication
To realize what we used to have we don't have it anymore
There's no religion that could save me
No matter how long my knees are on the floor, oh
So keep in mind all the sacrifices I'm making
Will keep you by my side, will keep you from walking out the door
Coz there'll be no sunlight if I lose you, baby
There'll be no clear skies if I lose you, baby
Just like the clouds my eyes will do the same
If you walk away every day it will rain, rain, rain ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।