স্বপ্ন দেখি,স্বপ্ন দেখাই। স্বপ্নে বাঁচি,স্বপ্নই বাঁচায়… জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কো ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউল গানকে বিশ্ব মানবতার ধারক বলে স্বীকৃতি দেয়। ইউনেস্কো সেবার ৪৩ টি বাক ও বিমূর্ত ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা বাউল গানকে বিশ্ব মানবতার ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ঘোষণা দিয়ে এর ভূয়সী প্রশংসা করে। এ ঘোষণার পর পৃথিবীর নানা দেশে বাউল গানের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
বাউলদের নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আগ্রহই এ লেখার প্রেরণা যুগিয়েছে।
‘বাউল’ শব্দের নানা রকম অর্থের কথা গবেষকেরা বলে থাকেন। সাধারণত বাউল শব্দের অর্থ এলোমেলো, বিশৃঙ্খল, ক্ষ্যাপা ইত্যাদি। বাউলগণ সাধারণ মানুষের চেয়ে ভিন্ন-ধারার জীবন যাপন করতেন বলেই হয়ত তাদের এই নাম। অনেক বাউল নিজেকে পাগল বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তাঁদের অনেক গানেই বাউল, পাগল, পাগলা ইত্যাদি শব্দ খুঁজে পাওয়া যায়। তবে বাউল শব্দের উৎপত্তি নিয়ে গবেষকদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি আছে। কেউ বলেন ‘বাতুল’ থেকে ‘বাউল’ হয়েছে, কারো মতে ‘বজ্রী’ থেকে কিংবা ‘বজ্রকুল’ থেকে বাউল শব্দটি এসেছে। কেউ কেউ বলেন ‘আউল’ শব্দ থেকে ‘বাউল হয়েছে। অনেকে আবার বলেন, 'বাউল' নামটা এসেছে প্যালেস্টাইনের বা’আল নামের এক দেবতার নাম থেকে ।
এই দেবতার নামকরণে হয় বা’আল সম্প্রদায় ।
ইতিহাসবিদদের মতে, সতেরো শতকে বাংলাদেশে বাউল মতের উদ্ভব হয়। যদিও বাউল শব্দটি ভারতবর্ষে অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। কিন্তু চৈতন্যের জন্মের পরই নির্দিষ্ট কিছু মতবাদ বহনকারী গোষ্ঠী অর্থে বাউল শব্দটি ব্যবহার শুরু হয়। চৈতন্যের উদ্ভবের পর বৈষ্ণব ও ইসলামী সূফী মতবাদের প্রভাবে গড়ে ওঠা আলাদা বেশ কিছু গোষ্ঠীর উদ্ভব সপ্তদশ শতকে ঘটে যারা একেবারেই সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল, গ্রামে গ্রামে ঘুরে একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে জীবনধারণ করত আর প্রচলিত ধর্মমতে যাদের ছিল অনাস্থা।
এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু দল বড়ো একটা গোষ্ঠীতে পরিণত হলে তাদেরকে মানুষ বাউল আখ্যা দেয়। তবে আরেক ধারার গবেষকদের মতে, চৈতন্যের পূর্বেই বাউল ধারার জন্ম হয়েছে। তাঁদের মতে, ষোড়শ শতকেই নাথ, বৈষ্ণব ও সূফী মতের প্রভাবে বাউল মতের উদ্ভব হয়েছে। তবে বাংলাদেশে প্রচলিত বাউল গানে ভাষা এবং বাউলদের জীবনকাল পর্যালোচনা করে দেখলে মনে হয় চৈতন্যের পরই এ মতের উদ্ভব ঘটেছে। এর সপক্ষে কিছু যুক্তি আছে।
যেমন- মতবাদ বা গোষ্ঠী অর্থে বাউল শব্দের প্রয়োগ যেমন চৈতন্যের আগে পাওয়া যায় না, তেমনি সূফী ও বৈষ্ণব প্রভাবিত অঞ্চলেই উৎকৃষ্ট বাউল সংগীতের উদ্ভব এটাই ইংগিত করে যে চৈতন্যের পরই বাউল মতের উদ্ভব ঘটেছে। কুষ্টিয়া ও সিলেট অঞ্চলে সংখ্যা ও মানে দিক থেকে উৎকৃষ্ট বাউল সংগীত জন্ম নিয়েছে কারণ এখানেই সূফী ও বৈষ্ণব মতের প্রভাব ছিল বেশি।
বাউলদের প্রথম ও প্রধান বিদ্রোহ ছিল বিভিন্ন শাস্ত্রের বিরুদ্ধে। যেহেতু বিভিন্ন শাস্ত্র মানুষকে বিভিন্নভাবে মানুষকে স্রষ্টার আরাধনা করার পরামর্শ দিয়েছে আর এ নিয়েই মানুষের মধ্যে রয়েছে নানান বিভেদ, হানাহানি। তাই তাঁরা এসব শাস্ত্র ও আচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন এবং দেহতত্ত্ব বিষয়ে সাধনা করেছেন।
নিজ দেহের মধ্যে ঈশ্বরকে পাওয়ার তীব্র ব্যাকুলতা থেকে বাউল ধারার সৃষ্টি। বাউল-সাধকদের সাধনার মাধ্যম হচ্ছে গান। সাধকের কাছে সাধন-ভজনের গূঢ়তত্ত্ব প্রকাশ পায় গানের মাধ্যমেই। প্রত্যেক মানুষের অন্তরে যে পরম সুন্দর ঈশ্বরের উপস্থিতি, সেই অদেখাকে দেখা আর অধরাকে ধরাই বাউল সাধন-ভজনের উদ্দেশ্য। ইহ-জাগতিক কিংবা পারলৌকিক কোনো প্রাপ্তির জন্য বাউল সাধন-ভজন করে না।
একান্ত মানবিক ও আধ্যাত্মিক চেতনার বশবর্তী হয়ে তাঁরা ধর্মাচার করেন। পুঁজিবাদী বা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন তাঁদের নেই। অন্যের জমি দখল করে মসজিদ, মন্দির নির্মাণের প্রয়োজনও তাঁদের নেই। লালন শাহ বলেন,
“আমার নাই মন্দির কি মসজিদ
পূজা কি বকরিদ
ওরে তিলে তিলে মোর মক্কা কাশী
পথে পথে মদিনা। ”
অনেকে বাউলদের সাথে বৈষ্ণবদের মিলিয়ে ফেলেন।
যদিও তাদের মধ্যে তফাত অনেক। এ প্রসঙ্গে দুদ্দু শাহ বলেন,
“বাউল বৈষ্ণব ধর্ম এক নহে ভাই
বাউল ধর্মের সাথে বৈষ্ণবদের যোগ নাই।
বিশেষ সম্প্রদায় বৈষ্ণব
পঞ্চ তত্ত্বে করে জপ তপ
তুলসী মাল অনুষ্ঠান সদাই।
বাউল মানুষ ভজে,
যেখানে নিত্য বিরাজে,
বস্তুর অমৃত মজে
নারী সঙ্গী তাই। ”
বাউলদের কোনো নির্দিষ্ট উপাসনালয় নেই, নেই বিধিবদ্ধ কোনো আচার-আচরণ।
তারা ঈশ্বরকে আল্লাহ, খোদা, ঈশ্বর, ভগবান, কৃষ্ণ, সাঁই ইত্যাদি নামে ডেকে থাকেন। বাউলদের ধর্মচিন্তা প্রচলিত ধর্মগুলো থেকে ভিন্ন। তাদের মতে, এ বিশ্বব্রম্ভাণ্ডের পরিপূর্ণ জীব হলো মানুষ এবং তা জন্যই এ বিশ্বচরাচরের সব কিছুর উদ্ভব। যে মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তা এতো কিছু সৃষ্টি করেছেন তাহলে বলা যায় মানুষই তাঁর সবচেয়ে পছন্দের সৃষ্টি। তাদের মতে, নিশ্চয়ই তিনি মানুষকে তৈরি করেছেন নিজের আদলে, মানুষের মাধ্যমেই নিজেকে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশিত করেছেন।
তাহলে স্রষ্টাকে খুঁজতে কেন অরণ্যে যাওয়া? কেন স্রষ্টার খোঁজে মন্দিরে-মসজিদের দৌড়াদৌড়ি? তাঁরা বলেন, আরশে নয়, বরং মানুষের মাঝেই স্রষ্টার উপস্থিতি। ঈশ্বরকে খুঁজতে হলে মানুষের মাঝেই খুঁজতে হবে। ঈশরই মানুষ, মানুষই ঈশ্বর। তাই বাউল জালাল উদ্দিন বলেন,
“দরবেশ তুমি আল্লাহ খোঁজ
ঋষি খোঁজ ভগবান
হয় না দেখছি কারো সাধ্য
করিতে তার অনুসন্ধান
ছিঁড়া ক্যাথা লেংটি ঝাঁটা
অষ্ট অঙ্গে দীর্ঘ ফোঁটা।
মিছে সব ফন্দি আটা
সার করিল বন শ্মশান।
ভগবান সে নয় জানোয়ার
কি দেখা পাবে গো তার
পাইলে পাইবে স্বরূপ সাকার
যে রূপ আছে বর্তমান। ”
বাউল সাধকেরা শুধু কবি বা গায়কই ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন দার্শনিক। সাধারণত অশিক্ষিত হলেও বাউলরা জীবনদর্শন সম্পর্কে অনেক গভীর কথা বলেছেন। তাঁদের ধর্ম হলো মানব ধর্ম। তাঁরা তাঁদের পূর্ববর্তী মতবাদ গুলো থেকে শুধু সেগুলোই গ্রহণ করেন যা মানুষের উৎকর্ষতা প্রকাশ করে, যা সর্বজনীন।
আর বর্জন করেছেন সমস্ত সাম্প্রদায়িক মতামত, ধর্মগুলোর সংকীর্ণ দিকসমূহ। সকল ধর্মমত, সকল গ্রন্থ, সকল দর্শন পর্যবেক্ষণ করে তৈরি করেছেন নতুন দর্শন। এ দর্শনে মানুষের স্থান আর বাকি সবকিছুর উপরে।
“সত্য বলে জেন নাও, এই মানুষ লীলা।
ছেড়ে দাও নেংটি পরে হরি হরি বলা
মানুষের লীলা সব ঠাঁই
এ জগতের তুলনা নাই।
প্রমাণ আছে সর্বদাই।
যে করে সে খেলা
শাস্ত্র তীর্থ ধর্ম আদি
সকলের মূল মানুষ নিধি
তার উপরে নাইরে বিধি।
ভজন-পূজন জপমালা।
মানুষ ভজনের উপায়
দীনের অধীন দুদ্দু গায়
দিয়ে দরবেশ লালন সাঁইর দায়
সাঙ্গ করিয়ে পাল। ”
বাউলদের নিয়ে সাম্প্রতিককালে যে আলোচনা বেশ গেড়ে বসেছে তা হলো তাঁদের যৌন-জীবন।
বৈষ্ণবদের মতোই বাউলদের কেও কেও ছিলেন নারী-সঙ্গ বিরোধী। তাঁরা ছিলেন গৃহত্যাগী। নারীকে তাঁরা ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণের অন্তরায় বলে মনে করতেন। এ বিষয়ক বেশ কিছু গানও তারা রচনা করেছেন। যদিও বাউলদের মধ্যেই অন্য এক অংশ মনে করতেন, ইন্দ্রিয় ভোগের মধ্য দিয়েই তাঁদের দেহ সাধনা পূর্ণতা লাভ করবে।
তাঁরা যদিও কোনো পরিবার বা সমাজে আবদ্ধ হতেন না, তথাপি তাঁরা বিবাহিতের মতোই জীবন যাপন করতেন। তাঁদের সঙ্গিনী একাধিক হলেও নির্দিষ্ট আখড়ায় নির্দিষ্ট একজন সঙ্গীকেই সুনির্দিষ্ট মাস বা বছরের জন্য সঙ্গী হিসেবে রাখতেন। তাঁদের ঔ-রসে জন্ম নেয়া সন্তানকে তাঁরা বলতেন ঈশ্বরের সন্তান, আর সবাই মিলেই সন্তানদের লালন-পালন, ভরন-পোষণ করতেন। তবে বাউলরা যেখানে সেখানে সন্তান জন্ম দিয়ে যেতেন এমনটা নয়। সন্তান জন্মদানের চেয়ে বরং জন্ম শাসন করাকেই বেশি উৎসাহ দেয়া হতো।
বাউলরা দেহকে কেন্দ্র করে নান গান সৃষ্টি করেছেন। তবে এসব গানে নানা বস্তু দেহের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন- পিঞ্জর, গাড়ি নৌকা, কলকারখানা ইত্যাদি। বাউল আব্দুল করিমের গানে-
“গাড়ি চলেনা চলেনা চলেনা রে
গাড়ি চলেনা।
বানাইয়া মানব গাড়ি
যাইতেছিলাম বন্ধুর বাড়ি
মধ্যখানে ঠেকল গাড়ি
উপায় বুঝি মেলেনা।
”
কিংবা লালন শাহের গানে-
“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি
কেমনে আসে যায়।
তারে ধরতে পারলে মন বেড়ি
দিতাম পাখির পায়। ”
এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মঞ্জরুল ইসলামের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য-
“সিলেটের মরমী সাধনায় স্রষ্টার সঙ্গে ভক্তের সম্পর্ককে দেহজ প্রেমের সম্পর্কে প্রকাশের একটি ব্যাপক আয়োজন দেখা যায়। এ বিষয়টি ব্যাখ্যার দাবীদার। যেহেতু মার্গীয় সাধনায় অনন্তের পথে যাত্রার প্রস্তুতিপর্বটি হচ্ছে সান্ত-কে বা সীমিত দেহজ জীবনকে অতিক্রম করা, এজন্য দেহকে এবং দেহের সমস্ত প্রয়োজনকে অস্বীকার করার শক্তি ভক্তকে অর্জন করতে হয়।
কিন্তু প্রেম সাধনায় এই অস্বীকৃতির রূপটি ভিন্ন। এখানে দেহজ প্রেমের নানা প্রকাশকে – কামনা, বাসনা, বিরহ, জ্বালা, ও যন্ত্রণা- আত্মস্থ করেই শুধু এ থেকে উত্তরণ সম্ভব, এমনটি ভাবা হয়ে থাকে। যদি শারীরিক প্রেমের সবগুলো প্রকাশ ভক্তের না জানা হলো, তার পক্ষে এসব থেকে উচ্চতর মার্গে যে নিষ্কাম, অন্তহীন, আকার আকৃতিহীন প্রেম আছে, তা জানা সম্ভব হবে না। যদি সৃষ্টিকর্তার প্রেমকে কেও অনুধাবন করতে চায়, তাকে পার্থিব প্রেমের প্রকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ হলে চলবে না। কেননা স্রষ্টার প্রেমকে সীমাবদ্ধ স্বরূপেই দেখতে পাবে।
আর যদি শারীরিক প্রেমের প্রকাশগুলো আত্মস্থ করে সে শরীরহীন প্রেমে, অর্থাৎ প্রকৃত বিমূর্ত প্রেমে অভিষিক্ত হতে পারে, স্রষ্টার প্রেম-রূপ সে সহজেই সনাক্ত করতে পারবে, এবং তার প্রেমভক্তি পুরস্কৃত হবে। এই চিন্তাটি মরমী অনেক সাধকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। আশিক-মাশুকের বিবরণে যখন স্রষ্টার প্রতি ভক্তের প্রচণ্ড প্রেমের প্রকাশ ঘটে, তখন তার অনুসন্ধানের একটি স্তর সে অতিক্রম করতে থাকে, যার সর্বশেষ প্রান্তে আছে নিষ্কাম, কায়াহীন অনন্তের প্রেম। ” ( সূত্র- সিলেটের মরমী সাধনা, কবি আবদুল গাফফার দত্ত চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা ২০০৭)
বাউল গানের অসম্ভব জনপ্রিয়তার পেছনে আছে এর সর্বজনীনতা, গভীর মানবিকতা। ইউনেস্কো যে স্বীকৃতি বাউল গানকে দিয়েছে তা বাউল গানের প্রাপ্য।
এর অধিকাংশ কৃতিত্বই লালন সাঁইয়ের। মানুষ লালনের গান শুনেই বাউল গান নিয়ে আগ্রহী হয়েছে। লালনের কারণেই মানুষ হিন্দু-মুসলিম সব ভেদাভেদ ভুলে সাধনায় মিলিত হন। তাঁর ভক্তরা তাঁর গানের প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন। লালন সাঁই ছাড়াও অনেক বাউল আমাদের গানের জগত সমৃদ্ধ করেছেন।
উইকিপিডিয়ায় বাউলদের একটি তালিকা আছে সেটা হুবহু তুলে দিচ্ছি- জালাল খাঁ, রশিদ উদ্দিন, হাসন রাজা, রাধারমণ, সিরাজ সাঁই, পাঞ্জু সাঁই, পাগলা কানাই, শীতলং সাঁই, দ্বিজদাস, হরিচরণ আচার্য, মনোমহোন দত্ত, লাল মাসুদ, সুলা গাইন, বিজয় নারায়ণ আচার্য, দীন শরৎ (শরৎচন্দ্র নাথ), রামু মালি, রামগতি শীল, মুকুন্দ দাস, আরকুন শাহ্, সিতালং ফকির, সৈয়দ শাহ্ নূর, শাহ আব্দুল করিম, উকিল মুন্সি, চান খাঁ পাঠান, তৈয়ব আলী, মিরাজ আলী, দুলু খাঁ, আবেদ আলী, উমেদ আলী, আবদুল মজিদ তালুকদার, আবদুস সাত্তার, খেলু মিয়া, ইদ্রিস মিয়া, আলী হোসেন সরকার, চান মিয়া, জামসেদ উদ্দিন, গুল মাহমুদ, প্রভাত সূত্রধর, আবদুল হেকিম সরকার, ক্বারি আমির উদ্দিন, শেখ মদন, দুদ্দু সাঁই, পূর্ণদাস বাউল, খোরশেদ মিয়া, মিরাজ উদ্দিন পাঠান, আব্দুল হাকিম, মহিলা কবি আনোয়ারা বেগম ইত্যাদি।
বাউল গান ও বাউল শিল্পীদের চাই পৃষ্ঠপোষকতা। বাউল গান অনুবাদ করে ছড়িয়ে দিতে হবে সারা পৃথিবীতে। তা না হলে পৃথিবীর মানুষ আমাদের এই ঐতিহ্যের ব্যাপারে অন্ধকারেই থাকবে।
সবশেষে আমাদের অনেকেরই প্রিয় একটি বাউল গান-
“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়
(তারে) ধরতে পারলে মন বেড়ী দিতাম পাখীর পায়।
আট কুঠুরি নয় দরজা আটা
মধ্যে মধ্যে ঝরকা কাটা
তার উপরে সদর কোঠা
আয়না মহল তারা।
কপালে মোর নইলে কি আর
পাখিটির এমন ব্যবহার।
খাঁচা খুলে পাখি আমার
কোন বনে পালায়।
মন, তুই রইলি খাঁচার পাশে
খাঁচা যে তোর তৈরি কাঁচা বাঁশে
কোনদিন খাঁচা পড়বে খসে
লালন কেঁদে কয়।
লালন কয় খাঁচা খুঁড়ে
সে পাখি কোনখানে পালায়।
”
তথ্যসূত্র:
১/ বাউল বৈষ্ণব সূফী, শরদিন্দু ভট্টাচার্য,রোদেলা প্রকাশনী
২/ বাউল গান ও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি, স্বপন কুমার দাশ
৩/ বাউল গানের ধারা কতিপয় বাউল কবি, তপন বাগচী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।