আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসরাইল এর সংক্ষিপ্ত ইতিকথা.................

ইসরায়েল (হিব্রু ভাষায়: מְדִינַת יִשְׂרָאֵל (সাহায্য·তথ্য); মেদিনাত্‌ য়িস্‌রা'এল্‌; আরবি ভাষায় دَوْلَةْ إِسْرَائِيل দাউলাত্‌ ইস্‌রা'ঈল্‌) মধ্যপ্রাচ্যের একটি সংসদীয় গণতন্ত্র। ভূমধ্য সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই রাষ্ট্রের রাজধানী জেরুসালেম । বিশ্বের ৫০টা মুসলিম রাষ্ট্রের ৩০টা দেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। বর্তমানে এই অঞ্চলের গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর ও গোলান মালভূমি ইসরায়েল-এর দখলে থাকা বিতর্কিত স্থান হিসেবে পরিগণিত হয়। ইতিহাস প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিন সহ বেশিরভাগ আরব এলাকা চলে যায় ইংল্যান্ড- ফ্রান্সের ম্যান্ডেটে।

১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বালফোর ইহুদীবাদীদেরকে লেখা এক পত্রে ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন। বেলফোর ঘোষণার মাধমে ফিলিস্তিন এলাকায় ইহুদিদের আলাদা রাষ্ট্রের সম্ভাবনা উজ্জল হয় এবং বিপুলসংখ্যক ইহুদি ইউরোপ থেকে ফিলিস্তিনে এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে। ১৯০৫ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক হাজার। কিন্তু ১৯১৪ সাল থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত বৃটিশদের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ২০ হাজারে উন্নীত হয়। এরপর প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনে ইহুদী অভিবাসীদের ধরে এনে জড়ো করা শুরু হলে ১৯১৯ থেকে ১৯২৩ সাল নাগাদ ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ৩৫ হাজারে পৌঁছে যায়।

১৯৩১ সালে ইহুদীদের এই সংখ্যা প্রায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৮০ হাজারে পৌঁছায়। এভাবে ফিলিস্তিনে ইহুদী অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে থাকে এবং ১৯৪৮ সালে সেখানে ইহুদীদের সংখ্যা ৬ লাখে উন্নীত হয়। ১৯১৮ সালে বৃটেনের সহযোগিতায় গুপ্ত ইহুদী বাহিনী "হাগানাহ" গঠিত হয়। এ বাহিনী ইহুদীবাদীদের অবৈধ রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রথমে ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদীদের সহায়তা করা হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব হলেও পরবর্তীকালে তারা সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়।

ফিলিস্তিনী জনগণের বাড়িঘর ও ক্ষেতখামার দখল করে তাদেরকে ফিলিস্তিন থেকে বিতাড়িত করা এবং বাজার ও রাস্তাঘাটসহ জনসমাবেশ স্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফিলিস্তিনীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের বিতাড়নের কাজ ত্বরান্বিত করা ছিল হাগানাহ বাহিনীর কাজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনী ভূখন্ডকে দ্বিখন্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দ্বিখন্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে নিজেদের মাতৃভূমির মাত্র ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা করে। অর্থনীতি ইসরায়েলের অর্থনীতি আধুনিক পশ্চিমা অর্থনীতির সমপর্যায়ের।

ইসারায়েলের নিজস্ব সম্পদের পরিমাণ খুব কম। দেশটি ১৯৭০-এর দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অনুদান পেয়ে আসছে, তবে ১৯৯৮-এর পর এই অনুদানের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া হয়। ইসরায়েলের হীরা কাটার শিল্প, পর্যটন শিল্প ও সফটওয়্যার শিল্প বিখ্যাত। ভাষা ইসরায়েল ভাষাগত ও সংস্কৃতিগতভাবে বিচিত্র। এথনোলগের ১৫শ সংস্করণ অনুসারে ইসরায়েলে ৩৩টির মত ছোট-বড় ভাষা ও উপভাষা প্রচলিত।

ইসরায়েলি নাগরিকেরা নিজেদের মধ্যে ভাব আদান প্রদানের জন্য মূলত আধুনিক হিব্রু ভাষা ব্যবহার করেন। আধুনিক হিব্রু ভাষাটি ১৯শ শতকের শেষ দিকে প্রাচীন হিব্রু ভাষার বিভিন্ন উপভাষার উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছিল এবং এতে স্লাভীয় ও জার্মানীয় ভাষাসমূহের কিছু প্রভাব আছে। ভাষার সরকারী মর্যাদা ও ভাষা সংক্রান্ত নীতিমালার উপর ইসরায়েলে বেশ কিছু আইন আছে। বর্তমানে হিব্রু ও আরবি ইসরায়েলের সরকারী ভাষা। পর্যটন ইসরায়েলের পর্যটন মূলত ইহুদী ধর্মের পবিত্র ও ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।

দেশটির সর্বত্র ইহুদী ধর্মের ও সভ্যতার স্মৃতিবিজড়িত নানা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ইহুদীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় শহর এবং মুসলিম ও খ্রিস্টানদেরও গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান হল জেরুজালেম শহর। জেরুজালেমের ইহুদী মন্দির ও পশ্চিম দেওয়াল বিখ্যাত। এছাড়া আছে যিশুখ্রিস্টের জন্মস্থান বেথেলহেম, বাসস্থান নাজারেথ। ভূমধ্যসাগরের তীর জুড়ে রয়েছে অনেক অবকাশ যাপন কেন্দ্র।

আরও আছে লবণাক্ত মৃত সাগর, যার পানিতে ভেসে থাকা যায়। লোহিত সাগরের উপকূল এবং গ্যালিলির সাগরের উপকূলেও অনেক অবকাশ কেন্দ্র আছে। তবে ইদানীংকার বছরগুলিতে আত্মহত্যামূলক বোমাবিস্ফোরণের ঘটনা ইসরায়েলের পর্যটন শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। (তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.