আসছে পঁচিশে বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কবির স্মৃতি বিজড়িত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে থাকে উৎসবমুখর পরিবেশ। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শাহজাদপুরে ২৫ বৈশাখ থেকে তিনদিনব্যাপী নাটক, গীতিআলেখ্য, সঙ্গীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, আলোচনা, প্রবন্ধ পাঠ ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অঢেল মানুষ এই মেলায় অংশ নেয়। আপনিও আমন্ত্রিত।
আমি নিশ্চিত আপনার ভ্রমনের ক্কস্ট বৃথা যাবেনা। শাহজাদপুরে কবি সৃষ্টি করেছেন দুর্লভ কিছু সাহিত্য। পোস্ট মাস্টার গল্পের 'রতন' চরিত্র তার শাহজাদপুরে বসেই লেখা। এখানে বসেই তিনি লিখেছেন সোনারতরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, ভরাভাদুরে, প্রত্যাখ্যান ও লজ্জা, পোস্ট মাস্টারের মতো অসংখ্য বিখ্যাত রচনা। চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের মতো অমর নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন।
আসুন আমরা কবিগুরুর কাচারিবাড়ির কিছু ছবি দেখি এবং সেইসাথে এর ইতিহাস জানার চেস্টা করি-
এটি কাচারি বাড়ির প্রবেশপথ। এখানে টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। টিকিটের দাম মাত্র ৫-১০ টাকার মধ্যে।
কাচারিবাড়ির মূল বিল্ডিং। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দারকানাথ ঠাকুর ১৩ টাকা ১০ আনায় এ জমিদারি কিনে নেন।
জমিদারির সঙ্গে এখানকার কাচারি বাড়িও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়। এর আগে কাচারি বাড়ির মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা।
মূল বিল্ডিং-এর প্রবেশ পথ। এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে কাচারিবাড়ির ইতিহাস দেখতে পাবেন। ১৮৯০-১৮৯৬ পর্যন্ত কবি কয়েকবার জমিদারি দেখাশোনার জন্য শাহজাদপুরে এসেছেন।
১৮৯০ সালে প্রথম কবিগুরু শাহজাদপুরে আসেন জমিদারি দেখাশোনা করতে। তখনো সিরাজগঞ্জ-ঈশ্বরদী রেলপথ স্থাপিত হয়নি। তিনি আসতেন কোলকাতা থেকে ট্রেনে সাড়াঘাট অর্থাৎ পাকশী স্টেশনে। সেখান থেকে শাহজাদপুর আসতেন তার বোট 'পদ্মা' কিংবা 'চিত্রায়' চড়ে। অবশ্য ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপনের পর উল্লাপাড়া স্টেশন থেকে পালকিতে চড়ে যাতায়াত করতেন।
তার সেই পালকিটি এখনো এখানে সংরক্ষিত আছে। আপনারা আসলে দেখতে পাবেন।
কাচারিবাড়ির মূল বিল্ডিঙ্গে প্রবেশ করার পর দেখতে পাবেন- কবগুরুর একদম শিশুকাল থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন দুর্লভ ছবি। এছাড়া আরও পাবেন আলবার্ট আইনস্টাইন, মহাত্মাগান্ধী সহ বিভিন্ন গুনী ব্যক্তিত্তের সাথে তোলা তার কিছু দুর্লভ ছবি।
তার নিজের হাতে লেখা অনেক চিঠি/কবিতার খসড়া তো থাকছেই-
আরও দেখতে পাবেন কবিগুরুর নিজের হাতে আঁকা দুর্লভ অনেক ছবি-
দোতলায় উঠলে দেখতে পাবেন কবিগুরুর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র।
এর মধ্যে থাকছে কবিগুরুর ব্যবহৃত সোফা-
কবিগুরুর শোবার জন্য ব্যবহৃত খাট-
কবিগুরুর খাবার জন্য ব্যবহৃত থালাবাসন-
কবিগুরুর ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র-
কাচারিবাড়ির বারান্দা-
কাচারিবাড়ির পাশে অবস্থিত নীলকুঠিবাড়ি-
কাচারিবাড়ির পাশে অবস্থিত অডিটোরিয়াম। এখানেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়-
কাচারিবাড়ির মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য-
আমি কাচারিবাড়ির অসংখ্য নিদর্শনের অতি সামান্য কিছু আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনারা আসলে এর চাইতে অনেক বেশিকিছু দেখতে পারবেন। ঢাকা থেকে বাসে করে কাচারিবাড়িতে পৌছতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা লাগতে পারে। যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল।
কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। আপনারা সবাই আমন্ত্রিত।
তথ্যসূত্র-
(ছবিগুলো আমার নিজের সংগ্রহ করা। ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।