আমি ঝঞ্ঝা,আমি ঘূর্ণি আমি পথ সমুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি গতকাল রাতে আমার স্বপ্নে হঠাৎ রবি ঠাকুর এসে হাজির হলেন। এত বড় একজন লোক কে দেখার পর আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারলাম না। উনি বললেন, “তোমাদের যুগে নাকি ব্লগ না কি যেন লেখা হইতেছে যাহার মাধ্যমে অতি সত্ত্বর জনপ্রিয় হওয়া যায়তেছে?” আমি বললাম, “জি গুরুজি, আপনি ঠিক শুনেছেন। ”উনি প্রতিউত্তরে বললেন, “যাক ভালো, আমাদের যুগে জনপ্রিয় হইতে গেলে বহু ঘাম ঝরানো লাগিত। ” আমি দ্রুত তাকে কদমবুছি করতে গেলাম উনি বললেন,“ক্ষান্ত দাও বাপু, চরণ ধরা লাগিবে না।
” আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম “কেন”? জবাবে বললেন,“তোমাদের যুগের মানুষদের বিশ্বাস নায়, তারা প্রথমে চরণ ধরিতে আসে, পরে ধুতি ধরিয়া টান দেয়। ”আমি তাঁর এহেন দর্শন বুঝতে পারলাম না। তিনি বললেন, “প্রথমে তোমরা আসিলে, কহিলে আমার সাহিত্য চর্চা করিবে, তারপর কহিলে আমার সাহিত্য কে আধুনিক করিবে, পরবর্তীতে যাহা করিলে তাহা কি করিলে তোমরাই জানো। প্রথমে বাপু চরণ ধরিতে চাইলা কিছু কহিলাম না, ধুতি ধরিয়া উহাও খুলিলা তাও আমি নির্বাক, কিন্তু জনসম্মুখে লিঙ্গ লইয়া খেলা শুরু করিলে তো আর নির্বাক থাকা যাই না। তাই চরণ ধরিতে নিষেধ করিলাম।
” আমি বললাম “আপনার সাহিত্য বড় সেকেলে এখন আপনার সাহিত্য কে আধুনিক করা হচ্ছে যুগের প্রয়োজনে,আপনার গান শুনে আগে মানুষ ঘুমাতে যেত,আর এখন আপনার গান শুনে লোকজনের ঘুম ভাঙ্গে। এখনকার সাহিত্য মানে হই হই কাণ্ড রই রই ব্যাপার। ” তিনি বললেন “ যথারতই বলিয়াছো, হুনুমান সাহিত্যের আমলে এর চাইতে আর বেশি কি আশা করা যাই, উহার জোয়ারে আমার সাহিত্যের ভরাডুবি ঘটিতেছে। ”আমি তাঁর আমার স্বপ্নে আগমনের কারন জিজ্ঞাসা করলাম। উনি জানালেন, “স্বর্গে থাকিতে থাকিতে বাপু হাঁপাইয়া উঠিয়াছি, ঢেঁকি যেমন স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে আমিও তেমন স্বর্গে গিয়েও লেখালেখি ছাড়িতে পারিনাই,ওখানে বসিয়া বসিয়াই কিছু কবিতা রচনা করিয়াছি, ভাবিলাম মর্ত্যে আসিয়া কোন প্রকাশক কে বলিয়া ওইগুলা ছাপাইয়া নি।
গতকাল এক প্রকাশক এর স্বপ্নে গিয়েছিলাম, উনি আমাকে প্রথমে চিনিতে পারেন নাই, অনেক কষ্টে তাহাকে আমার পরিচয় বোঝাইতে সক্ষম হইয়াছি। আমি বলিলাম আমি রবি ঠাকুর বাঙলা সাহিত্যে প্রথম নোবেল বিজয়ী। উনি ‘নোবেল’ কি তাহা বুঝিতে পারিলেন না। কহিলেন উহা পাইয়া কি ছিঁড়িয়া লইয়াছেন? উহা প্রাপ্তদের আমরা গুনিয়াও দেখিনা। পরে ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতার লেখক হিসাবে তিনি আমাকে চিনিলেন, বই প্রকাশে রাজি হইলেও আমাকে ৭০% প্রকাশনা মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে বলিয়া তিনি জানাইলেন।
আরও কিছু প্রকাশক এর কাছে গিয়েছিলাম, তারা তো কেউ আমাকে মারিতে আসিয়াছেন, কেউ উপদেশ দিয়াছেন আপনার থেকে তো রসময় গুপ্ত ভালো বই লিখিয়ছেন। ব্যথিত হৃদয় লইয়া তাই সাধারন মানুষের স্বপ্নে যাইতেছি। শুনিলাম তোমরা কোন সাহিত্যিক কে হত্যা করিয়াছ বাহ সাহিত্যে তো তোমাদের অসীম উন্নতি হইয়াছে। ” আমি কিছু বলিতে চাচ্ছিলাম কিন্তু ঠাকুর সাহেবের চোখ তখন লাল হয়ে আছে। তিনি বললেন “ঘাট হইয়াছে আমার সাহিত্য লিখিয়া আগে জানিলে মুদির দোকানে মুদিগিরি করিতাম, নৌকাডুবি না ঘটাইয়া মাঝিগিরি করিতাম, হৈমন্তী লইয়া চটি লিখিতাম।
” আরও কিছু উনি বলতে চাচ্ছিলেন কিন্তু পাশের বাড়ির থেকে জোরে জোরে গান বাজার কারনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল, কে যেন সকাল বেলা গান ছেড়েছে, উলালা উলালা উলালা রে পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে পাগল আমার মন নেচে ওঠে উলালা উলালা উলালা রে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।