*******
ক্বূরআন শরিফ থেকে সূরার নাম এবং আয়াত নম্বরসহ অনুবাদ না-দিলে, কিম্বা দেখাতে না-পারলেও কোরঅনের দোহাই দিয়ে কেউ কিছু বললে, তা’ হবে পবিত্র ক্বূরআনের অবমাননা এবং পাঠক সমাবেশে তা’ অতিধার্মিকদের ফাজলামো বা ধর্ম নিয়ে চাপাবাজি হিসেবেই গণ্য হবে। ‘ধর্মগ্রন্থে আছে’ বলে বিশালাকৃতির কোনো ধর্মগ্রন্থকে দেখিয়ে দিলে, খুঁজতে খুঁজতেই সাধারণ পাঠকবৃন্দরা কাহিল হয়ে পড়েন, ফলে সত্যমিথ্যা যাচাই করে দেখা ধার্মিকদের পক্ষে সম্ভব হয় না, আর এই সুযোগটা প্রতারকেরা সহজেই নিতে পারে; স্বঘোষিত জ্ঞানী সেজে কেউ কেউ ঐ সুযোগটাই ব্যবহার করতে পারে এবং সাধারণ ধার্মিকেরা সরল বিশ্বাসে ‘উনি যখন বলছেন, নিশ্চয়ই ধর্মগ্রন্থে আছে’ ভেবে নিজেদের অজান্তেই তাদের খপ্পরে পড়ে। সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে কেউ ধর্মের নামে মনগড়া কিছু প্রকাশ করলে, যদি তা’ সত্যের মোড়কে মিথ্যা রটনা হয়, সমাজে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, যার পরিণতি কখনোই ভালো নয়। জানা না-থাকলে ‘জানি না’ বলাটাই উত্তম; আর যদি জানা থাকে তো, দেখিয়ে দিলে অজ্ঞরা উপকৃত হতে পারি। যিনি দেখাবেন, নিজের স্বার্থেই দেখাতে তিনি এজন্যে বাধ্য যে, দেখানোটা জ্ঞানীদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
যদি কারো কোনো নিদর্শন পড়া থাকে তো এভাবেও দেখাতে পারেন, --যেমন, >>>
সূরা মায়িদা # ৫/ ৪,৫ : লোকে তোমাকে প্রশ্ন করে, কী তাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে? বলো, ‘সমস্ত ভালো জিনিস তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে, আর শিকারি পশুপাখির যেগুলোকে তোমরা শিক্ষা দিয়েছো, যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, তারা যা তোমাদের জন্য ধরে আনে তা খেতে পারবে। ’ আর এতে তোমরা আল্লাহর নাম নেবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে; আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।
আজ তোমাদের জন্য সব ভালো জিনিস হালাল করা হলো। যারা গ্রন্থপ্রাপ্ত তাদের খাদ্যদ্রব্য তোমাদের জন্য হালাল, আর তোমাদের খাদ্যদ্রব্য তাদের জন্য হালাল; আর বিশ্বাসী সচ্চরিত্রা নারী এবং তোমাদের আগেই যাদেরকে গ্রন্থ দেওয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য হালাল করা হলো, যদি তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান করো বিবাহের জন্য, তবে প্রকাশ্য ব্যভিচার বা উপপত্নীরূপে গ্রহণের জন্য নয়; যে-কেউ বিশ্বাস করতে অস্বীকার করবে তার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং সে হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাভুক্ত। >>>
সূরা নিসা # ৪/৫৯ : ওহে যারা বিশ্বাস রাখো, যদি তোমরা আল্লাহতে এবং পরকালে বিশ্বাস করো তবে তোমরা আল্লাহর অনুগত হও; রসুল এবং তোমাদের শাসকদের অনুগত হও; আর যদি কোনো বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে সে-বিষয়ে আল্লাহ্ এবং রসুলের দিকে স্মরণ ফিরাও, যদি তুমি বিশ্বাস করো আল্লাহ্ এবং শেষ দিবসে, এই ভালো, এবং এটাই উৎকৃষ্ট বিশ্লেষণ।
>>>
সূরা নিসা # ৪/১২৩-১২৬ : তোমাদের খেয়ালখুশি এবং গ্রন্থধারীদের খেয়ালখুশি অনুসারে কিছু হবে না; যে-কেউ মন্দ কাজ করবে সে তার প্রতিফল পাবে আর আল্লাহ্ ছাড়া সে তার জন্য কোনো আভিভাবক এবং সাহায্যকারী পাবে না। আর পুরুষ হোক বা নারী হোক, যারাই বিশ্বাসী হয়ে ভালো কাজ করবে তারাই বাগানে থাকবে এবং তাদের প্রতি বিন্দুপরিমাণেও অত্যাচার করা হবে না।
আর তার চেয়ে ধর্মে কে ভালো, যে-জন সৎকর্মপরায়ণ হয়ে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহিমের সমাজ অনুসরণ করে? আর আল্লাহ্ তো ইব্রাহিমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। আর আকাশ এবং পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সব আল্লাহর-ই এবং স্বয়ম্ভূ সবকিছুকে ঘিরে অবস্থিত।
সূরা নিসা # ৪/১৪৮-১৫২ : মন্দ কথার প্রচারণা আল্লাহ্ ভালোবাসেন না, তবে যার উপর অত্যাচার করা হয়েছে, তার কথা আলাদা।
আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ।
যদি তোমরা সৎকর্ম প্রকাশ্যে করো অথবা গোপনে করো, তবে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই ক্ষমাশীল, সর্বশক্তি।
এবং যারা আল্লাহ্ ও তার রসুলগণকে অবিশ্বাস করে এবং চায় যে, আল্লাহ্ থেকে রসুলগণকে পৃথক করে নেবে, আর বলে,‘আমরা কতেকের উপর বিশ্বাস রাখি এবং কতেককে অবিশ্বাস করি, আর চায় যে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের মাঝখানে একটা পথ ধরবে, এরাই হচ্ছে প্রকৃত অর্থে কাফের (অবিশ্বাসী) এবং আমি কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনার শাস্তি প্রস্তুত রেখেছি।
আর যারা আল্লাহ্ ও রসুলদেরকে বিশ্বাস করে এবং তাদের একের সাথে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকেই তিনি পুরস্কার দেবেন, আর আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরা মায়িদাহ্ # ৫/১০৫ : ওহে, আমার বিশ্বাসীরা, তোমাদের আত্মরক্ষাই কর্তব্য।
যদি তোমরা সৎপথে চলো, পথভ্রষ্টরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ্র দিকেই তোমাদের সকলের ফিরে যাওয়া, আর তখন তিনি তা তোমাদেরকে জানাবেন যা তোমরা করতে। >>>>...
###
##********
যারা অনুবাদ করতে গিয়ে বাংলায় পাণ্ডিত্য খাটান, কিম্বা যারা সমার্থক প্রচলিত বাংলা শব্দ থাকার পরও সেগুলোকে বাদ দিয়ে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় বিদেশি শব্দ ব্যবহার করেন, তাদের অনুবাদগুলো সাধারণ পাঠকদের জন্য সরল হয় না। ‘জান্নাত’-এর অর্থ কেউ লিখেছেন বাগান, কেউ লিখেছেন উদ্যান, কেউ লিখছেন বেহেস্ত বা স্বর্গ, কেউ লিখছেন বাগিচা, --কোন্টা যে কার কাছে জটিল, এখানে কে যে কাদেরকে পাঠক হিসেবে পেতে চাচ্ছেন, --সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে দেখা যাচ্ছে, পুরোপুরি ভিন্নার্থবোধক শব্দ কেউ-ই ব্যবহার করছেন না।
যার কাছে যার অনুবাদ গ্রন্থটি সহজবোধ্য, তার জন্য সেটাই ভালো, কোনোটাকেই আমি, কেবল আমার কাছে সহজবোধ্য নয় জন্যেই মন্দ বলতে পারি না। আমার জন্যে সহজবোধ্যটি খুঁজতে গিয়ে বইয়ের দোকানেই দু’এক পৃষ্ঠা পড়ে নিতে হয়েছে, আর এভাবে খুঁজে নিতে গিয়ে আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহে বিভিন্নজনের অনুবাদ মিলিয়ে পাঁচ ছ’ খানা রয়েছে। আমি ঠকিনি।
বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শাশ্বত ধর্মগ্রন্থগুলো দৃষ্টিতে, কোনো অত্যাচারী তো কখনো গাছে ধরে না, কিম্বা কোনো অশান্তিধর্মী ফ্যাসাদকর্মী এখানে ভূগর্ভস্ত খনি থেকেও উঠে আসে না, বরং মানব সমাজে সচেতন আমি-ই হতে পারি ঘৃণ্য স্বভাবধারী অসামাজিক কোনো মানবসন্তান, যদি আমি কখনো আমার মনগড়া বা পছন্দের কোনো ব্যাখ্যা অসমমনাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে পিড়াপিড়ি করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।