আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"কবির আঙ্গুলে কবিতার জাগর ভগ্নাংশগুলো"

শামসুর রাহমান কায়সুল হককে ১৯৫২ সালের ২৭শে ডিসেম্বর একটা চিঠিতে লিখেছিলেন “পৃথিবী একটা অতিকায় প্রাগৈতিহাসিক জন্তুর মতো রোদ পোহাচ্ছে, আমার দরজার পেছনে রয়েছে যে বেলগাছ, তার মগডালে বসে আছে একটা ধূসর পাখি, সে অত্যন্ত একঘেয়ে সুরে তার অস্তিত্ব ঘোষণা করছে, আর বারবার এ কথাই স্মরন করিয়ে দিচ্ছে যে পৃথিবীতে কবিতার মৃত্যু নেই। “ কবিতা কবির রসঋদ্ধ সৃষ্টি। কবি শিমুল সালাহ্উদ্দিনের সতীনের মোচড় কাব্যগ্রন্থটিও তেমনি। ইতিহাসের হালখাতায় অজস্র নাম মৃত্যুর খতিয়ানে শামিল হয়েছে। কিন্তু কবিতা, কবিতার কি মৃত্যু আছে নাকি।

তামাম দুনিয়ার পর্বতসমান ক্রূরতা, বর্বরতা, সহিংসতাও ব্যাভিচার হতে বহুক্রোশ দূরদূরান্তে কবিতার অবিচ্ছিন্ন বসতি। কবি কবিতার মধ্য দিয়ে ভেঙ্গে যেতে চান সকল কলুষতা, রওয়ানা হন কল্যাণীয়া সপ্নসঙ্গমে। নিজেকে নিজের মতো করে দেখার চমৎকার এক জলজ দর্পণ হল কবিতা। আমি কবিতার একজন নির্ভেজাল পাঠক। জীবনে বোধকরি পাঠ্যবই পাঠের সময়টাতে বেশিসই কম নয় কবিতার বই’ই পরেছি।

অভ্যাসটা যদিও এখনো বহাল আছে। আশা করি যারপরনাই পরিবর্তন না হলে শরীর এবং মন বহাল তবিয়তে থাকলে এহেন চর্চার অন্যথা হবেনা। প্রতিবারের মতো এবারেও বইমেলায় গেছি। ধুলো উড়িয়ে ঘণ্টা দুয়েক সবান্ধব হাঁটাহাঁটি করে সতীনের মোচড় নিয়ে ঘরে ফিরেছি। নতুন বসনের প্রতি রমণী নারীর যে অতৃপ্ত বাসনা তেমন বাসনা আমার নতুন কোন বইকে এক বৈঠকে খতম করার।

যদিও এই খতম সমাপ্তি কখনোই নয়। এটা অনেকটা সঙ্গমকালীন নির্মল আনন্দের মতো। শেষ না করে উঠলে যেন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। প্রত্যেকটা কবিতার কিছু দাবী আছে পাঠক দরবারে। সেই দাবিপূরণে পাঠককে বিনা প্রগলভতায় কবিতার কূলে পুনঃপুনঃ তরী ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আসতে হয়।

এ যেন তেষ্টা পেলেই আঁজলা ভরে জল পান করার মতো। তৃষ্ণা যেমন ফুরোবার নয়, নদী কিংবা জলরাশিও হারিয়ে যাবার নয়। কাব্যগ্রন্থটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। শৃঙ্গার ও সঙ্গম। শৃঙ্গারে কবি বলতে চেয়েছেন কবিতা কি, কেমন এর নির্যাস, কি এর সারবত্তা, কাদের জন্য-কার এ কবিতা, কি এর অবয়ব প্রভৃতি।

তিনি অবশেষে অনুভব করেন এরূপ- তবুও তো যা দেখি, অনুভব করি, মস্তিষ্কে যে কম্পনরণিত হয় তাকে ফোঁটাতে পারি কই? এই তো গেলো ভণিতা। দ্বিতীয় ভাগটির নাম কবি দিয়েছেন সঙ্গম। একভাবে বললে কাব্যসঙ্গম। আটচল্লিশটি কবিতা নিয়ে কবি’র এবারের কাব্যসঙ্গম। এ অংশটিতে কবি তার পটুতা অনেক যত্ন আত্তিতে ফুটিয়ে তুলেছেন যাকিনা একাধারে গল্প, ছন্দকবিতা, গদ্যকবিতা কিংবা কখনো সারাৎসার চুম্বক উপন্যাস।

এ পর্যায়ে এসে বলে নেয়া ভালো যে, তিনি বর্ণনার কোনো একক বৃত্তে ঘুরপাক না খেয়ে বহুকে ছোঁয়ার লিপ্সা লেহন করেছেন। যেমন তার মুহূর্ত, বৃষ্টিধারাপাত, কালস্নান, ডাইরেকট কবিতা শীর্ষক কবিতাগুলো অন্ত্যমিল ধরনের; তোমার পায়রাদের পেখমজীবন, মা’র কথা শুনে, নিরবতাড়িত, ঘোড়ারোগ, চড়ুইকথন, অন্ধকলা প্রভৃতি কবিতাগুলো টানাগদ্যে এবং অন্যান্য কবিতাগুলো ভিন্ন ভিন্ন গদ্যশৈলীতে রচিত। তবে মিলের জায়গা হল গদ্যকবিতাগুলো সব অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা। পরবর্তীতে কিছু কবিতা নিয়ে স্বতন্ত্র ভাবনা বিশ্লেষণধর্মী দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা ও বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কবি পাঠককে ভগবানের গদিতে সমাসীন করেছেন।

তাই পাঠকেরও তো কিছু দায়িত্ব থেকে যায় একজন কাব্যদার্শনিকের সন্তান সন্ততিদের প্রতি অভগবানদর্শী অসঙ্গত আচরণ না করা। যুবক স্বাপ্নিক দ্বিধান্বিত ভঙ্গীতে জানতে চেয়েছেন- কেন লিখব? ঈশ্বরের পৃথিবীর এত অজস্রতা, উপভোগ না করে কাগজ কলম নিয়ে মেরুদণ্ড বাঁকা করার কোনও মানে হয়?কে দেবে উত্তর? এই স্বল্প পরিসরের লেখাটি কবি’র প্রাগুক্ত প্রশ্নগুলোর ওপর হতে পারে খণ্ডিত পায়রা বচন। সতীনের মোচড় নামখানা পাঠকের কাছে নেহায়েৎ কলহপূর্ণ ব্যাথার প্রকরণগাঁথা মনে হতে পারে। আসলে এটি কবি’র বহুরাতের, বহুদুক্ষের, বহুকান্নার- প্রবঞ্চনার অব্যাবহিত পরে জীবনরস জাগানিয়া অনুভবের স্মারকলিপি। এ যেন অনেকটা নিজের বুকে নিজে কুড়াল বসিয়ে রক্তকষ্ট লাঘবের দিগম্বর প্রয়াস।

কাব্যগ্রন্থের নামখানার কথা বলছি, রসময় শ্রুতিকামী পাঠকদের কাছে তেমন যুতসই শিরোনাম এটি না হলেও অর্থবোধকতা কিন্তু ঈষৎও খর্বিত হয়নি। বরং জানালা না খুলে চাঁদচুম্বনের মতো আরও অনায়াসবোধ্য হয়েছে। বলতেই হবে এক্ষেত্রে কবি প্রশ্নহীন সফল। কবিতার বোদ্ধা বরাবরই অল্প। অল্প তাতে কি।

এখানে সেই অল্পের গল্পই হচ্ছে। কাব্যগ্রন্থটিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কবি’র কিংবা আমার কিংবা তোমার কিংবা আপনার কিংবা তোর জীবনের অজস্র সেলুলয়েড। পরিপক্কতা ও ভাবনার পুঙ্খানুপুঙ্খতা ভীষণভাবে দৃশ্যমান কবিতাগুলোতে। যেমন কবি বলছেন ছায়ার আঙ্গুলে নেই ন্যূনতম ছোঁয়া। এর মাধ্যমে মূলত তিনি ছায়ার ছায়াহীনতাকে নজরআন্দাজ করেছেন এবং ছায়ার অবয়ব যেন খুঁজে পেতে চেয়েছেন।

বর্তমান সমাজের অবাষ্পীয় দুঃসময়ও কবির কবিতায় ভাস্বর হয়ে উঠে যখন তিনি বলেন না,আজ সুস্ময় সু-সময় নয়/ভাঙ্গন এখন/বৃদ্ধ বনস্পতি/পিতৃভূম/পোড়ো বাড়ী/মুখও আয়না/সুখ/প্রিয় ফারজানার ফারনিচার/বুকের বারুদ/মুঠো করা হাত/ভাঙ্গার ভাঙ্গন এখন। কবি লিখেছেন কবিতা আমার মেয়েমানুষ। কবিতা আমার আশ্রয়। কবিতা আমার আরোগ্যালয়। না লিখে পারিনা তাই লিখতেই হয়।

কবিতার সাথে কামনার এ যেন এক অদ্ভুত মিল। আর কামনার কথা এলে নারীকে কি আর নির্বিকার ঈশারাহীন রাখা যায়। অভ্যাস কবিতায় যেন কবি তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, লিখেছেন নারীরা দুঃখ পেলে ঘাসের বিস্বাদ লাগে/ মোমের শরীর ভোরের শরীর/ এভাবেই তুমি ব্যাথা পেলে টের পাই আমি। পঙক্তিগুলো পড়লে মনে হয় আরে এ যেন আমারই কবিতা, আমারই মতো ঘাত-প্রতিঘাতে জলজ্যান্ত জীবন্ত। কামনার প্রাকারতা আরও বেশি প্রতীয়মান হয় তার তোমার পায়রাদের পেখমজীবন কবিতায়।

মনে হয় একটা ঘোরের শাওনে বিহ্বল ঘুরে এলাম। নিয়ম কানুন, গতানুগতিক প্রবনতাও কবি শব্দ বাক্য অক্ষরসমেত দ্যুতি দাওয়ায় নিয়ে এসেছেন। কাঁচের মতো স্পষ্ট হয় যখন ঈশ্বর কবিতায় তিনি বলেন একলা ডোবা একলা ভাসা/ একলা বলেই ফিরে আসা/ নিজের ভিতর একাকিত্বের মূর্তিখানি আঁকা/একেক্কে এক বলেই দেখো/ কেউ শেখেনি থাকা। কবি বিষময়, হর্ষময়, বিষাদময় স্মৃতিজীবাশ্মকে সমসাময়িক হাজির করেছেন। সতীনের মোচড় কবিতার শেষাংশে এ বিষয়টা আরও মোটা দাগে ধরা পড়ে যখন কবি বলেন দীপ্ত মোম যেভাবে শিউরে উঠে আনমনে,সেভাবে শাড়ির খসখসে তুললে হাওয়া-সেই হাওয়া মুচড়ে মুচড়ে ঢুকে পড়ছে/ঢুকে পড়ছে/অলিন্দে/অলিন্দে আমার।

নিজের নির্বান্ধব জীবনযাপনকে মুদ্রার দ্বিবক্ষের একটি ধরে নিয়ে সময়কে ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষমতার চেয়ে ভূয়সী শক্তিশালী করেছেন। ধ্বংসের মাঝেও যেন কবির সত্যবদ্ধ বদলের ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায় যখন তিনি বলেন এই মরা শহরেও গজায় নতুন পাতা, ফুল ফোটে, প্রজাপতি উড়ে/ খুব খুব আকাশ উঁচুতে দুএকটা মিষ্টিফল সোনালিরোদে উঠে ভরে। আবার কবি’র আক্ষেপ ও যেন ধরা পরে পরম মমতায় যখন তিনি বলেন কবিরা তোমরা কালপ্রিট সব; সত্যশুভের ধারধারনাই/ দেশহীনতায় দেশই চেয়েছো/ কবিরা তোমরা ভুল স্বপ্নের বীজ বুনেছো/ কবিরা তোমরা কালপ্রিট সব। একই কবিতার শেষে এসে কবি বলেন মা বোঝেনা তত্ত্বকথা/ আমার নিজের কবিতা তাই আমার মায়ের ভাল্লাগেনা/ ও কবিগন; তোমরা আমায় ভুল ভেবেছো......। কবির বিলাপ বুঝতে এখানে এতটুকু অসুবিধা হয়না।

কবি’র কবিতা যেন মাঝে মাঝে দৃশ্যমান হয় প্রেমময় পদাবলী হিসেবে। কিন্তু যখন তিনি ভালোবাসার কালান্তিক নীচতাগুলো উপলব্ধি করেন তখন যেন কবি প্রেমিক থেকে ঢের বেশি সংস্কারক হয়ে উঠতে চান। প্রেম বিষয়ক আলোচনায় যখন আমরা মানবীর প্রেমের প্রসঙ্গে আসি তখন দেখি কবি’র লেশমাত্র কার্পণ্য নেই। কবি লিখেছেন ভালোবাসার মুখ ফেরাও, আবার সব হবে/ হয়। কবি প্রেমিকার জন্য কখনো হতে চান ডিলডো, কখনো মিশিন, কখনো অমল ভাইব্রেটার, আবার কখনো সিনথেসাইজার।

এ যেন কবির ডাইরে‍কট দাবী। আবার সত্যমিথ্যাচুমু কবিতায় যেন কবি খণ্ডে খণ্ডে এঁকেছেন প্রেম-সঙ্গম-ভালোবাসার ক্রিস্টালোগ্রাফ। কবি অন্ধ বিশ্বাসে লিখেন ভালোবাসা ছাড়া কেউ জানেনা সঠিক চুমুর নিয়ম। কবি লালন করেন প্রেমময় আগ্রাসী স্বপ্ন যখন তিনি বলেন একদিন/ ঘুমের ভেতর আমি/ পৌঁছে যাবো তোমার শোবার ঘরে/ লুব্ধ দৃষ্টি মেলে শিয়রে দাঁড়িয়ে/ দেখে নেবো তোমার ঘুমন্ত মুখ/ দেখে নেবো/ হিম অপেক্ষার উতলানহর পেরিয়ে/ সব ভুলে কেমন ঘুমাচ্ছো তুমি/ একা। আহা বেভুলে যেন কবি একাকিত্তের জয়গান গাইছেন আর খুঁজে নিতে চাইছেন কারো একজীবনে সব পাওয়ার হাহাকার।

কবিতাকে ভালো মন্দের মাপকাঠিতে মাপা বোকামি বৈকি। একজন কবির সব কবিতা ভালো হয়না। কবিতা ভালো মন্দে মিশে থাকে হয়তো। একক ভালোও তেমনি হয়না। এজন্যই বলা হয় Art abhors superlatives. কবি লিখেছেন, প্রকাশিত করেছেন, কেউ উপযুক্তভাবে নিয়েছেন আবার কারো কাছে তা অনর্থ।

তবে সময়ে সময়ে যেন একটিকে ছাড়িয়ে আরেকটি দিগন্তের মতো জীবন্ত হয়ে উঠে। এমনই একটা কবিতা হল চড়ুইকথন। কবি লিখেছেন এই এতটুকুন পাখি; অথচ কি প্রানবন্ত, চলমান, ছটফটে। মুহুর্মুহু চারিদিকে তাকায় ইতিউতি/ একদণ্ড চুপ থাকেনা/ চড়ুইমালিক হবার আনন্দে মায়ের সাথে স্কুলে গেলাম না/ চড়ুই পাখিটা বুকের মধ্যে ধরে সারাসকাল সন্ধ্যা ঘুরে বেড়ালাম/ খাবার দাবাড়ের কথা যেন ভুলেই গেলাম/ স্কুল থেকে ফিরে মা বারবার বললো, ওটাকে ছেড়ে দে, মরে যাবে তো/ এত্ত আদর করে ধরে রেখেছি,মরে যাবে কেনো, বুঝতে না পেরে মা’র কথা শোনা হলো না/ কখন যে চড়ুইটাকে বুকে চেপে ঘুমিয়ে পরেছি মনে নেই/ ঘুম ভেঙ্গে দেখি, আমার বুকের উপর চড়ুইটা মরে পড়ে আছে। পঠনকালীন সময়ে মনে হচ্ছিল যেন আমিই বোধয় চড়ুইটা হাতের তালুতে বসিয়ে ইতিউতি দৌড়াচ্ছি।

আবার কখনো মনে হয়েছে না না এতো চড়ুই না, এতো স্বপ্ন, বাসনা, নিজস্ব নারী। বারবার পড়ার ইচ্ছেটা যেন পরম আরাধ্য হয়ে উঠে। কবিতার শুরু, দাড়ি, কমা, হাইফেন, সেমিকোলন, শেষ কবি’র একান্ত নিজের। এক্ষেত্রে কবি স্বেচ্ছাচারী হতে পারেন। তবে পাঠক হিসেবে আমার মনে হয়েছে ঈশ আরও কিছু কথা যদি যোগ করা যেত।

নতুনত্ব দেখার অজস্র চোখ কবি ধারণ করেন এবং আঙ্গুলের যাদুতে ছুঁতে চান অনন্ত কুয়োর জলে অকম্পমান চাঁদকে। তেমনই একটা হীরকখণ্ড হলো অভিধান কবিতাটি। তিনি লিখেছেন বহুদিন,তিন লাইনের বেশি লিখতে পারিনা/ তোর কথা মনে পড়ে যায়/ আর তুই আমার লেখার খাতা দখল করে বসে থাকিস/ লিখতে চাই জলে-ঝড়ে ঘর ভাঙে,পুড়ে ছাই হয় যাবতীয় স্মৃতি,সৌধ/ শুধু, দগ্ধ অনুষঙ্গে থরথর করে রাত,ভারী,পোড়া গন্ধ/ অথচ লেখা হয়না তাই বলে,বেলা শেষে,নাকালই বা হবে কেন,রিক্তহাত বিষণ্ণ বালক?/কেন এই খুঁজে ফেরা,ভ্রষ্টলগ্নে নীলকণ্ঠ পক্ষিপালক। এই কবিতাটি ধরে আছে কবি’র জীবনযাপনের ইতিহাস, কবিপ্রিয়েতার শেরপা মুখশ্রী এবং রোমন্থনের উত্তমাশা স্বরলিপি যাকিনা অবশেষে প্রবাসী বাতাস হয়ে কবি’র প্রশান্ত হৃদয় আকাশ ছেড়ে উড়ে যায়। কবি’র ভুল বানানে লেখা কবিতা দ্বিধান্বিত চেয়ে থাকে কবি’র চোখে।

কবি শেষমেশ বলেই বসেন ভগবান পাঠক আমার অভিধান হারিয়ে গেছে। কিন্তু কবি’র মতো আমিও তো এক ভাস্বতীর প্রতীতি দেখতে পাচ্ছি। কবি’র স্পর্ধা কবির আজন্ম অধিকার। কবি কবিতাকে মুক্তি দিতে চান কবিতা নামের বন্ধন থেকে। শব্দের ভিতরে জন্ম দিতে চান নৈঃশব্দ্যকে।

কবিতাগুলো পড়ার সময় যেন সেই নৈঃশব্দ্যের ভাসা ভাসা স্বরই আমরা শুনতে পাই। কিন্তু প্রশ্ন হল তাহলে তিনি নিজেকে কি বলবেন? শিল্পী। যদি শিল্পীই হন তবে কিসের? নৈঃশব্দ্যের নাকি অন্য কোনো কিছুর। এ প্রশ্নের ভার শিল্পীর স্কন্ধে সমর্পণ করে শেষ করার আগে শুধু বলব- সতীনের মোচড় কবি’র/ শিল্পীর/ ঈশ্বরের/ মানুষের/ শিমুলের পাঁজর মোচড়ানো কথকতা। বিঃদ্রঃ স্বকাল স্বীকৃতির ক্ষেত্রে অকুণ্ঠ হয়না।

স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের সময়ও হয়নি। কবি’র জন্য শুভকামনা থাকলো। রচনাঃ সুকান্ত পাল মার্চ ২, ২০১২ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.