রামকানাই পন্ডিত
কবি কখনও ভাবেনি যে তার মাঝে এক নতুন সত্ত্বার জন্ম নিবে।
কিংবা কখন ভাবেনি-
কবিতার ছন্দ এত গভীর ভাবে তার হৃদয় নাড়া দিবে।
তার ধমনীতে শুরু হবে শব্দের উদ্দাম নিত্য
কিংবা, তার শিরায় শিরায় বাজবে ছন্দের মেলা ।
অন্য সব মানুষের মতই কবি ছিল খুব সাধারণ কেউ একজন।
কবি আগে কখনও
বৃষ্টিকে এত গভীর ভাবে দেখে নি।
জোৎস্নার আলোয় স্নান করেনি কিংবা
জোনাকির মিটমিট আলো-
তাকে কখনও এতটা উছৃসিত করেনি।
অন্ধকার রাতে একা হাটতেও তার ছিল ভীষণ ভয়।
কবি কখনও হাত দু’টো দিয়ে জোৎস্না স্পর্শ করতে চায়নি-
লেখার হাত দুটো ছিল খুব সাধারণ।
ছন্দের ঢেউ সেখানে কখনো খেলত না ।
চাহনির মাঝেও কোনো কবিত্ব ছিল না -
নারীর বক্রদেহ কবিকে কখনও আবেগ প্লুত করেনি ।
কবির হৃদয়ে ঝড় বয়ে গেল একদিন ।
ঝড়ের তান্ডবে তার ভিতরের পৃথিবীটা,
দুমড়ে মুচড়ে একাকার হয়ে গেল ।
খরতাপে দগ্ধ হয়ে তার মাঝে সৃষ্টি হলো হু হু শূন্যতার-
ঝড়ের ঝাপটায় কবি হৃদয়ে পড়ে রইল -
মৃত গাছের অসংখ্য ভাঙ্গা ডালপালা ।
দগ্ধ কবি এক ফোটা বৃষ্টির জন্য হা হা চিৎকার করতে থাকে ।
কষ্ট হয়ে জমে থাকা মেঘ গুলো গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতে লাগল-
উন্মাদ,অস্থির আর অসহায় আর্তনাদে চারদিকে,
হূ হূ কান্নার রোল পড়ল।
থর থর হাতে কলম টাকে কাছে নেয় কবি-
বলপেন কলমের ঠোঁট বেয়ে নেমে পরে ফোটা ফোটা রক্তস্রোত ।
যেন বহু দিনের জমাট বাধা কষ্ট গুলো বের হয়ে আঁচড় কাটছে -
অক্ষর রূপে সাদা খাতায় ।
ক্লান্ত পরিশ্রান্ত কবি শব্দের মিলে জন্ম দেয় নতুন কবিতা,
নতুন সৃষ্টি। যেন প্রসব বেদনার মধ্যে জন্ম নেওয়া তার সন্তান ।
আজ যে নতুনের সৃষ্টি হল, তা শুধু কয়েকটি শব্দের গাথুনি নয়,
বরং তার ভিতরে গভীরভাবে জমে থাকা কষ্টগুলোর
বহমান খরস্রোতা নদী।
কবির ভিতরে না দেখা ব্যথার যে স্রোত বয়ে চলে,
তাদের খাতায় শব্দহীন অক্ষরে পরিণত করে কবি আজ-
এক আজানা সান্ত্বনা খুঁজে বেড়ায় ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।