আমি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলতে চাই আগামী মাসের ১৮ মে দেশে আসছেন ডা. জোবায়দা রহমান। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্তিতির প্রেক্ষাপটে ডা. জোবায়দা রহমান দেশে এলেই দলের দায়িত্ব তার উপর গিয়ে বর্তাতে পারে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডা. জোবায়দাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কারণ তার ছুটি শেষ হয়ে গেছে। তার দেশে আসার ডেটলাইন ১৮ মে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধানবিরোধী দল বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের প্রায় সকল নেতা কারাগারে এবং তাদের ওপর ঝুলছে বিভিন্ন মামলা-হামলার খড়গ। এমতাবস্থায় সংবাদ সম্মেলন করার মতো নেতাও দলে অবশিষ্ট নেই। যাকেই ফ্রন্টলাইনে এনে উপস্থাপন করা হচ্ছে তাকেই বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। দলের এমন অবস্থায় প্রয়োজন ক্লিন ইমেজের কাউকে। সেক্ষেত্রে ডা. জোবায়দা বিএনপির অন্যতম 'পছন্দ'।
কাজেই দেশে ফিরলে বিএনপির হাল ধরতে পারেন তিনি-ই।
পরিবর্তন ডটকমে প্রকাশিত ‘বিএনপির হাল ধরতে আসছেন জোবায়দা রহমান!’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার বিএনপির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, দেশে বিএনপির রাজনীতি সচল করতে একজন দিক নির্দেশকের প্রয়োজন আছে। সেক্ষেত্রে জোবায়দা রহমান বেগম জিয়ার পাশাপাশি দলের রাজনীতির হাল ধরলে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটবে। নতুন উৎসাহ উদ্দীপনায় মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হবে দলটি। তবে জোবায়দা রহমান রাজনীতিতে আসবেন কি না সেটা নির্ভর করছে দলীর উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর।
প্রসঙ্গত, জোবায়দা রহমান জিয়া পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ। তারেক রহমানের স্ত্রী। পেশায় তিনি চিকিৎসক। নিজের 'ক্লিন ইমেজের' পাশাপাশি তার বাবারও রয়েছে সুনাম। জোবায়দা রহমানের বাবা নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার এডমিরাল (অব.) প্রয়াত মাহবুব আলী খান।
যোগাযোগ ও কৃষি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। মন্ত্রী থাকাকালে সিলেট বিভাগে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে মাহবুব আলী খানেরও রয়েছে আলাদা ইমেজ। সবকিছু মিলিয়ে একজন আদর্শ রাজনীতিবীদ হিসেবে অভিষেক হতে পারে জোবায়দার।
বাড়ির ছোট মেয়ে ডা. জোবায়দা বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ না হলেও ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো ও বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গেলে এই পরিবারের দেখভাল করতে গিয়ে প্রকাশ্যে আসেন তিনি। সে সময় স্বল্পভাষী এ নারী সবার নজর কাড়েন।
চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান লন্ডনে গেলে পরবর্তী সময়ে তিনিও সেখানে যান। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি।
সর্বশেষ তারেক রহমান চিকিৎসাধীন থাকাকালিন সস্ত্রীক প্রথমবারের মতো ব্রিটেনের বাইরে সৌদি আরবে যান পবিত্র ওমরাহ পালনে। সাথে ছিল কন্যা জায়মা রহমান। পরে বাংলাদেশ থেকে তাদের সাথে যোগ দেন ডা. জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানু, বড় বোন শাহিনা আক্তার খান বিন্দু, বিন্দুর স্বামী এয়ার কমোডর (অবঃ) সৈয়দ শফিউজ্জামান।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সক্রিয় রাজনীতিতে ডা. জোবায়দা রহমানের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহী দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা। কিন্তু তারেক রহমান এ ব্যাপারে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তবে দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় হাল ধরতে তারেক রহমানের উপস্থিতি জরুরি ছিল। কিন্তু শনিবার জেদ্দায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বলেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য। তার সুস্থ্যতার ওপরই নির্ভর করছে দেশে আসার ব্যাপারটি।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, জোবায়দা রহমানের ছুটি শেষ হয়ে গেছে। দলটির উচ্চ পর্যায়ের নেতার মনে করছেন, দেশে ফেরার পর বর্তমান পরিস্থিতিই জোবায়দা রহমানকে রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসবে।
দলের একাধিক সূত্র জানায়, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াও বেশ নিঃসঙ্গতা অনুভব করছেন। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। বিশেষত দুহিতা জায়মা রহমানের অভাব প্রায়ই অনুভব করেন তিনি।
ডা. জোবায়দা রহমানের দেশের রাজনীতিতে অংশ গ্রহণের ব্যাপারে যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফরহাদ হোসেন আজাদ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, “দলের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে জোবায়দা রহমান যদি রাজনীতিতে যোগদেন তবে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আছে। তার উপস্থিতি নতুন উদ্যোমে কাজ করতে উৎসাহিত করবে। বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের দিক নির্দেশনায় বিএনপির জনগণকে সাথে নিয়ে মাঠে নামবে। সেক্ষেত্রে জোবায়দা রহমানের উপস্থিতি আমাদের সকলকে উৎসাহিত করবে। আমাদের সাংগঠনিক শক্তিকে আরো শক্তিশালী করবে।
”
আরেকটি সূত্রে জানায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনটি যেমন স্মরণীয় করে রাখা হবে তেমনি জোবায়দার দেশে আগমনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিমানবন্দরে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাগম করা হবে। বেগম জিয়া বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে পুত্রবধূকে অভ্যর্থনা জানাবেন। এমন তথ্যও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ৭ মার্চ ১/১১ এর প্রেক্ষাপটে গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। এরপর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান।
তারেক রহমানের সার্বক্ষণিক দেখাশোনায় পাশে রয়েছেন স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান।
সংবাদের লিংক
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।