তখন সন্ধ্যে ৬:২৫। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের মাঠে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলার শেষ দিন। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎ করে দমকা হাওয়ায় মেলার পূর্ব পার্শ্বের স্টলগুলোর ছাউনী বাঁশ সহ আকাশে উঠে গেলো এবং দীর্ঘক্ষন আকাশে ভেসে রইলো। ১০/১২ টা স্টলের লোকজন এবং ভেতরে আশ্রয় নেয়া দর্শক সবাই আতংকে বেরিয়ে বৃষ্টিতে দৌঁড়াতে লাগলো নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।
এই হুড়াহুড়ির মধ্যেই একসময় স্টলগুলোর ওপর বাঁশ এবং ছাউনী যা বাতাসে ভেসে ছিলো তা ভেঙে পরলো। এবং এর পরে এক অদ্ভুত দৃশ্য। বৃষ্টিতে ছুটতে থাকা মানুষের একাংশ ভেঙে পরা স্টলগুলোর দিকে ছুটে গেলো। সাথে যোগ দিলো অন্যান্য স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের একটা অংশ। অবাক বিস্ময়ে দেখলাম মানুষগুলো ক্ষুধার্তের মতো লুট করতে থাকলো স্টলের মালামাল।
তার মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানী ইউনিলিভারের মালামালই বেশী। কার্টুন কার্টুন মাল লুট হতে লাগলো প্রায় ১৫/২০ মিনিট ধরে। কার্টুন নিয়ে আবার লুটকারীদের কাদাপানিতে মারামারি করতেও দেখলাম। লু্টের মাল নিয়ে চললো ভাগাভাগি ছোঁড়াছুড়ি।
এই ঘটনার সবচেয়ে অবাক করা ও বিস্ময়কর বিষয় ছিলো পুলিশের সীমানার ভিতরে পুরো সময়টাতে পুলিশের অনুপস্থিতি।
একবারে শেষে দেখলাম একজন পুলিশ লাঠি নিয়ে মাঠে দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে। প্রথমে কৌতুক অনুভব করলেও পরে বিষাদ ও হতাশায় আক্রান্ত হলাম। আমাদের ভেতরের অন্ধকার অংশ সুযোগে কিভাবে বিভৎসরূপে প্রকাশিত হয় তা দেখলাম। আর পুলিশ লাইনসের ভিতরে লু্টপাট ঠেকাতে পারে না যে পুলিশ তাদের দিয়ে কি আশা করবো? পুলিশের ভেতরটা কিরকম শূন্য হয়ে গেছে তা সহজেই বোঝা গেলো।
এই পুলিশের কাছেই আমরা গুম খুনের কিনারা চাচ্ছি কি ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।