এখন প্রশ্ন হল, পীর সাহেবের দরবার শরীফে কি উদ্দেশ্যে যেতে হয়? আর সেগুলো কি খুব জরুরী?
- জি হক্কানী ওলী-আল্লাহ, পীর সাহেবের দরবার শরীফে বিনা উদ্দেশ্যে যাওয়া হয় না। অবশ্যই এমন কিছু উদ্দেশ্য পূরণে যাওয়া হয়, যা পীর সাহেবের দরবার শরীফ ব্যতীত অন্য কোথাও হাছিল করা দুষ্কর ও অসম্ভব।
প্রথমতঃ আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি, মুহব্বত, মা’রিফত হাছিলের উদ্দেশ্যে। আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ পাককে ভয় করো এবং আল্লাহ পাক-এর নৈকট্য লাভ করার জন্য উসীলা তালাশ (গ্রহণ) করো। ” (সূরা মায়িদা/৩৫)।
এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে বা ব্যাখ্যায় “তাফ্সীরে রুহুল বয়ানে” উল্লেখ আছে যে, “উসীলা ব্যতীত আল্লাহ পাক-এর নৈকট্য লাভ করা যায়না। আর উক্ত উসীলা হচ্ছেন, হাক্বীক্বত ও তরীক্বতপন্থী আলিম বা মাশায়েখগণ অর্থাৎ কামিল মুর্শিদগণ।
দ্বিতীয়তঃ মুর্শিদ ক্বিবলার নেক ছোহবতের উদ্দেশ্যে, যা সূরা তওবা : আয়াত শরীফ ১১৯ তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয়তঃ রহমত, ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিলের উদ্দেশ্যে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার রহমত উনার ওলীগণের নিকটে।
” (সূরা আ’রাফ-৫৬)
চতুর্থতঃ ক্বলবে যিকির জারী করার উদ্দেশ্যে, সূরা যুখরূফ-৩৬,৩৭ ও সূরা কাহাফ-২৮ তে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
পঞ্চমতঃ ইখলাছ হাছিল করা ফরয। ইখলাছ ব্যতীত কোন ইবাদতই আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল হয় না। আখিরী নবী, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ঐ আমল কবুল করবেন না যে আমল খালিছভাবে উনার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করা না হয়। ’ (নাসাঈ শরীফ)।
ক্বলবী জিকির, নেক ছোহবত, তালিম, খিদমতের মাধ্যম দিয়ে ইখলাছ হাছিল হয়। পীর সাহেবের দরবার শরীফে উপস্থিত হতে হয় ইখলাছ হাছিল করার উদ্দেশ্যে। যে ব্যক্তি ইখলাছের সাথে পীর সাহেবের দরবারে উপস্থিত থাকতে পারে, তার ইবাদত বন্দেগীতেও ইখলাছ হাছিল হয়ে যায়।
ষষ্ঠতঃ অন্তরের বদ খাছলত যেমনঃ পৃথিবীর মায়া, কামনা-বাসনা, লোভ, নৈরাশ্য, ধৈর্যচ্যুতি, অহংবোধ, হিংসা প্রভৃতি দূর করার উদ্দেশ্যে।
সপ্তমতঃ অন্তরে নেক খাছলত যেমনঃ তওবা, বিনয়, তাওয়াক্কুল প্রভৃতি হাছিল করার উদ্দেশ্যে।
অষ্টমতঃ হক্কানী ওলী-আল্লাহ মুর্শিদ উনার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার উদ্দেশ্যে। কেননা, হাদিছ শরীফে রয়েছে, “যে ব্যক্তি যাকে মুহব্বত করে, তার হাশর-নশর তার সাথেই হবে। ” সুবহানাল্লাহ
নবমতঃ ইলম ও তাক্বওয়া বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে।
দশমতঃ আক্বীদা ও হুসনে যন বিশুদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে। হাদিছ শরীফে রয়েছে, “উত্তম ধারণা উত্তম ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
”
এগারতঃ আদব শিক্ষার উদ্দেশ্যে। হযরত মাওলানা রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, "বেয়াদব আল্লাহ পাক এর রহমত থেকে বঞ্চিত। "(মসনবী শরীফ)। আর তাছাউফ সম্পর্কে বলা হয়েছে, “তরীক্বত বা তাছাউফের সবটুকুই আদব। ” (মাকতুবাত শরীফ, মাদারিজুস সালিকীন) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।