আমি জানিনা......তবে শূন্য। শূন্যতার ব্লগে স্বাগতম......। জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদূদীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
হিজরী সন ১৩২১ সালের ৩রা রজব ১৯০৩ ইং জনাব আবুলআলা মওদূদী (পাকিস্তানের) আওরঙ্গাবাদ শহরের আইন ব্যবসায়ী জনাব আহমদ হাসানমওদূদীর গৃহে জন্ম লাভ করেন। মওদূদী সাহেব নিজের ভাষায় বলেছিলেন, তার শিক্ষাগত যোগ্যতাহচ্ছে আলেম বা ইন্টারমিডিয়েট যাকে তৎকালিন মৌলভী পাশ বলা হতো। অর্থাৎ তিনি আলেম পর্যন্তলেখা-পড়া করেছিলেন ।
স্বীয় পিতারআর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করতে ব্যর্থহন তিনি । তবে বাল্যকালথেকে লেখা-লেখি ও সাহিত্য চর্চা ছিল তার অন্যতম ভাল অভ্যাস। কিন্তুধীরে ধীরে এ অভ্যাসকে সে নিজের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম ও ছোটকালে লালিতবিতর্কিত ভ্রান্ত মতবাদ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে ঊনিশ শ’ আঠারো সালে বিজনৌরথেকে প্রকাশিত মদীনা নামক পত্রিকায় সংবাদিকতা শুরু করেন। দীর্ঘ চৌদ্দবৎসর পর্যন্ত বিভিন্ন লেখা-লেখি, সাংবাদিকতা, আন্দোলন, সংগ্রামের পর১৯৩২ সালে নিজের ভ্রান্ত মতবাদকে সর্বস্তরের মুসলমানদের মাঝেছড়িয়ে দেওয়ারলক্ষ্যে তারজুমানুল কুরআন নামক নিয়মিত মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা শুরুকরেন। এরপর ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরে তার এ ভ্রান্ত মতবাদকে রাষ্ট্রীয়রূপদেওয়ার দৃঢ় পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিষ্ঠা হলো ‘জামাতে ইসলাম’ নামক একটি ধর্মীয় সংগঠন।
যে সংগঠন আজ উপমহাদেশে তার ভ্রান্তমতবাদকে প্রচার-প্রসারকরে অগণিত সরল প্রাণ মুসলমানদের ঈমান আকীদাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাই জনাব মওদূদীসাহেবের ভ্রান্ত মতবাদ সম্পর্কে এখানেসংক্ষিপ্ত আলোকপাত করছি। যাতে সরলপ্রাণ মুসলিম মিল্লাতকে তারভ্রান্ত মতবাদ থেকেনিজের ঈমান আকীদা হেফাজত করতে পারেন। -তথ্যসূত্রঃ মওদূদী একটি জীবন একটিইতিহাস-
যে সব বিষয়ে মাওলানা মওদূদীর সাথে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতেরমতপার্থক্য রয়েছে, তাহলো কুরআন, হাদীস, প্রিয় নবী, ইসলাম, ফেরেশতা, সাহাবায়ে কেরাম, মুজতাহিদ, ইমাম মাহদী, ওলামায়ে কেরাম, আওলিয়ায়ে এজাম, উসূলে হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, তাসাউফ, তাকলীদ, মাজহাব থেকে শুরুকরে আরো অসংখ্য বিষয়ে। এখানে মাত্র উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপস্থাপন করছি।
মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদা নবীগণ নিষ্পাপ নন!
عصمت انبياءعليهم السلام كے لوازم ذات سے نہيى اورايكلطيف نكتہ يہ ہے کہ اللہ تعا لے نے بالاراده ہر نبى سے كسى نہ كسى وقتحفاظت اٹھا كر ايك دولغز شيى ہو جانےدى ہے
নিষ্পাপ হওয়া আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের জন্যআবশ্যকীয় নয়, এতেএমন একটি সূক্ষ্ণ রহস্য বিদ্যমান আছে যে,আল্লাহতাআলা ইচ্ছাপূর্বক প্রত্যেক নবী থেকে কোন না কোন মূহুর্তেস্বীয় হেফাজত উঠিয়েনিয়ে তাদের থেকে দু’একটিপদস্খলন পদচ্যুতি (গুনাহ) হতে দেন। নবীহওয়ার পূর্বে তো হযরত মূসা আলাইহিস সালাম কর্তৃকও একটি বিরাট গুনাহেরকাজ সংঘটিতহয়ে গিয়েছিল। (রসায়েল ও মাসায়েল,পৃষ্ঠা ২৪, ১ম খন্ড। তাফহীমাত,আবুল আলা মওদূদী। ২য় খন্ড,৬ষ্ঠ মুদ্রণ, পৃষ্ঠা: ৫৭, পাকিস্তান।
)
প্রসিদ্ধ নবী দাউদ (আ.) সম্পর্কে:
“হযরত দাউদ (আ.) এর কাজের মধ্যে নফস ও আভ্যন্তরীন কুপ্রবৃত্তিরকিছুটা দখল ছিল। অনুরুপভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথেও তার কিছুটা সম্পর্ক ছিল। আর তা ছিল এমন ধরনের কাজ, যাহক পন্থায় শাসনকারী কোন মানুষের পক্ষেইশোভা পায়না। ” [তাফহিমুল কোরআন(উর্দু):৪র্থ খন্ড, সুরা সাদ, ৩২৭পৃ. ১ম সংস্করণ, অক্টোবর ১৯৬৬ইং]
“হযরত দাউদ (আ.)ত-কালীন যুগে ইসরাঈলী সোসাইটির দ্বারাপ্রভাবান্বিত হয়ে এক বিবাহিতা যুবতীর উপর আসক্ত হয়ে তাকে বিবাহ করার জন্য তারস্বামীর নিকট তালাকদেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন” [তাফহিমাত ২য় খন্ড: ৪২পৃ. ২য় সংস্করণ ; নির্বাচিত রচনাবলী(বাংলা)২য় খন্ড, ৭৩পৃ, আধুনিকপ্রকাশনী, ১মপ্রকাশ ১৯৯১ইং]
হযরত নূহ (আ.) সম্পর্কে:
“হযরত নূহ (আ.) চিন্তাধারার দিক থেকে দ্বীনের চাহিদা হতে দূরেসরে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে জাহিলিয়াতের জযবা স্থান পেয়েছিল।
”[তাফহিমুল কোরআন:২য়খন্ড, ৩৪৪পৃ.৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ইং]
হযরত ইউনুস (আ.) সম্পর্কে:
“হযরত ইউনুস (আ.) থেকে রিসালাতের দায়িত্ব আদায় করার ব্যাপারেকিছু দুর্বলতা হয়েগিয়েছিল। সম্ভবত তিনি ধৈর্যহারা হয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপন স্থান ত্যাগকরে চলে গিয়েছিলেন। ” [তাফহিমুলকোরআন: ২য়খন্ড, সূরাইউনুস (টিকা দ্রষ্টব্য)৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ইং]
হযরহ আদম (আ.) সম্পর্কে:
“হযরহ আদম (আ.) মানবিক দূর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি শয়তানীপ্রলোভন হতে সৃষ্টতরি- জযবায় আত্মভোলা হয়ে নিজ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। ফলে আনুগত্যের উচ্চশিখর হতে নাফারমানীর অতল গহ্বরে গিয়ে পড়েন।
”[তাফহিমুল কোরআন(উর্দু): ৩য়খন্ড,১২৩ পৃ.]
হযরত মুহাম্মাদ (স.) সম্পর্কে:
“আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন, যে কাজের দায়িত্বআপনাকে দেওয়াহয়েছিল, তাসম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিম্বা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তাযেন তিনি ক্ষমা করে দেন। ” [তাফহিমুলকোরআন (বাংলা) ১৯শ খন্ড, ২৮০পৃ.মুদ্রনে ওরিয়েন্টাল প্রেস, ঢাকা ১৯৮০ইং; কোরআনেরচারটি মৌলিক পরিভাষা(বাংলা) ১১২পৃ. ৮ম প্রকাশ,আধুনিকপ্রকাশনী:জুন ২০০২]
“মহানবী (স.) মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনিমানবিক দূর্বলতারবশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন। ” [তরজমানুল কোরআন ৮৫ তম সংখ্যা,২৩০পৃ.]
“মহানবী (স.) নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেইসন্দেহ পোষন করেছেন। ” [তরজমানুলকোরআন, রবিউলআউয়াল সংখ্যা, ১৩৬৫হিজরী]
মাওলানা মওদুদী বাতিলপন্থী নাকিহকপন্থী? তাআপনি তার লিখা বইয়ের উদ্ধৃতি দিলেই বুঝতে পারবেন।
মওদুদীর কলম বলাযায় হাজ্জাজী কলম। নবী রাসূল থেকে নিয়ে হকপন্থীদের উপর যেমন তার কলম ছিল খরগ স্বরূপ, তেমনি কিছু বাতিলের বিরুদ্ধেও তার কলমছিল সিদ্ধহস্ত। সে এতটাই বেপরোয়া এবং বেয়াদব ছিল যে, নবীদের সমালোচনা করতেও দ্বিধাকরেনি। সাহাবায়ে কিরামতো তার কাছে কিছুই না। আর আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেস্তাদেরসম্পর্কেও পোষণ করতো ভ্রান্ত আক্বিদা।
প্রমাণ স্বরূপকয়েকটি ভ্রান্ত আক্বিদার নজীর নিচে উপস্থাপিত হল
আল্লাহ পাকসম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
“যে ক্ষেত্রেনর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করানিঃসন্দেহে জুলুম। ” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত,২য় খণ্ড,২৮১ পৃষ্ঠা)
ফেরেশতাসম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
“ফেরেশতা প্রায়ঐ জিনিস যাকে গ্রীক, ভারতইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে। ” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাজদীদ ওইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০পৃষ্ঠা)
নবীদের ক্ষেত্রেমওদূদী সাহেবের বেয়াদবীমূলক মন্তব্য
হাদীসের বিশালভান্ডার আমাদের সামনে রয়েছে। কোন একটি হাদীস কোথাও নেই, যাতে নবীদের সমালোচনা করা হয়েছে। কোননবীর ব্যাপারে তির্যক মন্তব্য বা খাট করা হয়েছে।
কিন্তু মওদুদী সাহেব চরমঐদ্ধতার সাথে বিভিন্ন নবীদের তার বেয়াদবী কলমে করেছেন নোংরাঘাত। নবীদেরব্যাপারে তার বেয়াদবীমূলক বক্তব্যের কয়েকটি উদাহরণ পেশ করছি।
১- আম্বিয়াআলাইহিমুছ ছালাত ওয়াস সালাম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যেক নবী গুনাহ করেছেন। ”(নাঊযুবিল্লাহ)(তাফহীমাত, ২য় খণ্ড,৪৩ পৃষ্ঠা)
২-মুসা আঃ এরউদাহরণ ঐ তাড়াহুরাকারী বিজেতার মত, যে নিজের অধীনতদের নির্দেশ দেয়া ছাড়াই মার্চ করতে করতেচলে যায়, আরপিছনে জংলার অগ্নির মত বিজিত এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে যায়।
[নাউজুবিল্লাহ] {রেসালায়েতরজুমানুল কুরআন-২৯/৪-৫}
৩-হযরত দাউদ আঃতার এলাকার ইসরাইলীদের সাধারণ রেওয়াজের বশবর্তী হয়ে উরিয়ার কাছ থেকে তালাকের আবেদন করেন। [নাউজুবিল্লাহ] {তাফহীমাত-২/৪২,দ্বিতীয় প্রকাশ,(তাফহিমুল কোরআন(উর্দু):৪র্থখণ্ড, সুরা সাদ,৩২৭ পৃ. ১ম সংস্করণ,অক্টোবর ১৯৬৬ইং)}
৪-হযরত দাউদ আঃযে কাজটি করেছিলেন তাতে প্রবৃত্তির কামনার কিছু দখল ছিল, শাসন ক্ষমতার অসংগত ব্যবহারের সাথেওতার কিছু সম্পর্ক ছিল, এবং তা এমন কোন কাজ ছিল যা কোন ন্যায়নিষ্ঠ শাসকেরজন্য শোভনীয় ছিল না। [তাফহীমুল কুরআন-১৩/৯৫, আধুনিক প্রকাশনী, ১১শ প্রকাশ}
৫- “হযরহ আদম আলাইহিস সালাম মানবিকদূর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি শয়তানী প্রলোভন হতে সৃষ্ট তরিৎ জযবায়আত্মভোলা হয়ে নিজ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। ফলে আনুগত্যের উচ্চশিখর হতে নাফারমানীর অতল গহ্বরে গিয়ে পড়েন।
” (তাফহিমুল কোরআন (উর্দু): ৩য় খণ্ড,১২৩ পৃ.)
৬- “হযরত নূহ আলাইহিস সালাম চিন্তাধারারদিক থেকে দ্বীনের চাহিদা হতে দূরে সরে গিয়েছিলেন। তার মধ্যেজাহিলিয়াতের জযবা স্থান পেয়েছিল। ” (তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, ৩৪৪ পৃ. ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)
৭- হযরতইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ “এখানে আর একটি প্রশ্নের উদ্রেক হয় যে, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম যখননক্ষত্র দেখে বলেছিলেন, এটা আমার প্রতিপালক এবং চন্দ্র-সূর্য দেখেএগুলোকেও নিজের প্রতিপালক হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন, তখন সাময়িকভাবে হলেও কি তিনি শিরকেনিপতিত হননি?” (তাফহিমুল কোরআন১মখণ্ড, ৫৫৮পৃ.)
৮- “নবী হওয়ার পূর্বে মুসা আলাইহিস সালামদ্বারা একটি বড় গুনাহ হয়েছিল। তিনি এক ব্যাক্তিকে কতল করেছিলেন। ”
(রাসায়েল ওমাসায়েল, ১মখণ্ড, ৩১ পৃ.)
৯-“হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ ‘আমাকে মিসরের রাজকোষের পরিচালক নিয়োগকরুন’- এ কথাটি বলেশুধু অর্থমন্ত্রী হওয়ার জন্যই প্রার্থনা করেননি।
কারো কারো ধারনা,বরং তিনি এ বলে ডিকটিটরীই চেয়েছিলেনমৌলিকভাবে। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমান ইতালীর মুসোলিনির যে মর্যাদা তিনিও এরকাছাকাছি মর্যাদার অধিকারী হয়েছিলেন। ”
(তাফহীমাত: ২য়খণ্ড, ১২২ পৃ. ৫মসংস্করন এবং নির্বাচিত রচনাবলী(বাংলা) ২য় খণ্ড, ১৫১ পৃ, আধুনিক প্রকাশনী, ১ম সংস্করন ১৯৯১ইং)
১০- “হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম এর দ্বারারিসালাতের দায়িত্ব আদায় করার ব্যাপারে কিছু ত্রুটি হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত তিনি ধৈর্যহারা হয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপন স্থান ত্যাগ করেচলে গিয়েছিলেন। ”
(তাফহিমুল কোরআন:২য়খণ্ড, সূরাইউনুস (টিকা দ্রষ্টব্য) ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)
১১- “হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম মারা গেছেনএকথাও বলা যাবেনা, বরংবুঝতে হবে ব্যাপারটি অস্পষ্ট।
”
(তাফহিমুল কোরআন১মখণ্ড (সুরা নিসা), ৪২১পৃ.)
১২- হযরতমুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কেঃ
“আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন,যে কাজেরদায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটিহয়েছে কিংবা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন। ”
(তাফহিমুল কোরআন(বাংলা) ১৯শ খণ্ড, ২৮০পৃ.মুদ্রনেঃ ওরিয়েন্টাল প্রেস, ঢাকা ১৯৮০ ইং এবং কোরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা (বাংলা) ১১২পৃ. ৮মপ্রকাশ, আধুনিকপ্রকাশনী: জুন ২০০২)
১৩- “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিকদূর্বলতার বশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন। ”
(তরজমানুল কোরআন৮৫ তম সংখ্যা, ২৩০পৃ.ও তরজমানুস্ সুন্নাহ, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)
১৪- “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেই সন্দেহ পোষণ করেছেন। ”
(তরজমানুল কোরআন,রবিউল আউয়ালসংখ্যা, ১৩৬৫হিজরী)
১৫- হযরতমুহাম্মদ (সা.) রিসালাতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন, তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
(তাফহীমুল কুরআন,সুরায়ে নসর এরতাফসীর)
সাহাবা কিরামরদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
আহলে সুন্নাতওয়াল জামাআতের আক্বিদা হল-সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার উর্দ্ধে। তাদেরদোষ বর্ণনা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ”। (শরহুল আকায়েদপৃষ্ঠা ৩৫২)
মহান রাব্বুলআলামীন ইরশাদ করেছেন-আমি [সাহাবাদের] তাদের প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও আমার অনুগত। {সূরা তাওবা-১০০}
রাসূল সাঃসাহাবাদের সম্পর্কে বলেন-আমার সাহাবীরা তারকাতুল্য। তোমরা যারই অনুসরণকরবে হেদায়েত পেয়ে যাবে।
{কানুযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০০২, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২৪৩৫৫}
অথচ দেখুনমওদুদী সাহেব কিভাবে সাহাবায়ে কিরামকে আক্রমণ করেছেন নোংরা উক্তিতে-
১) “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহাজরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার(মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এরলক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন৩৫শ’ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)
২) “সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদিসবর্ণনা করেছেন।
”
(তরজমানুল কোরআন৩৫ সংখ্যা) ঙ/৩)
৩) “সাহাবাদের মধ্যে জাহেলিয়াতেরবদ-স্বভাবের পুনরাবৃত্তি ঘটে। ”
(তাফহীমাত ২য়খণ্ড, ১৫৫ পৃষ্ঠা)
৪) “হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুখিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ণ অযোগ্য ছিলেন”।
(তাজদীদ ওইয়াহইয়ায়ে দীন: পৃষ্ঠা ২২,)
৫) “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের সময় ব্যাক্তিসম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ)কে পরাভূতকরেছিল।
(তরজুমানুল কুরআন,রবিউস সানি ৩৫৭হিজরী)।
৬) “হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর মাঝেসজন-প্রীতির বদগুণ বিদ্যমান ছিল।
(খেলাফত ওমুলকিয়াত, পৃষ্ঠা৯৯)
৭) “হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বীয়খেলাফতকালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নেই। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৪৬/১৪৩)
৮) “হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহুস্বার্থবাদী, গনিমতেরমাল আত্মসাৎকারী, মিথ্যাসাক্ষ্যগ্রহকারী ও অত্যাচারী ছিলেন”।
(খেলাফত ওমুলকিয়াত, পৃষ্ঠা১৭৩)
পবিত্র কুরআনশরীফ সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য
কোরআন করিমহেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়। ” (তাফহিমাত, ১ম খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)
আল্লাহ তাআলাবলেন, আমি কুরআনঅবতীর্ণ করেছি যেন আপনি (নবী) মানবজাতিকে অন্ধকারের অতল গহবর থেকে উদ্ধার করেআলোর পথ দেখাতে পারেন। সূরা ইবরাহীম, আয়াতঃ ১।
মুফাসসিরীনেকেরামের ব্যাখ্যানুযায়ী আলোর পথই হচ্ছে মুক্তির পথ। কে সত্যবাদী? মহান মালিক নাকি মাওদূদী সাহেব?
নবীজী সাঃ এরহাদীস সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য
“হাদীস কিছু লোকথেকে কিছু লোক পর্যন্ত অর্থাৎ মানুষের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছে। এসবকে বড়জোর সঠিক বলেধারণা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নেই। আর একথাস্পষ্ট যে, আল্লাহরদীনের যে সকল বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর দ্বারা ঈমান ও কাফেরের মাঝেপার্থক্য নির্ণীত হয় সেগুলো গুটিকয়েক লোকের বর্ণনার উপর নির্ভর করে মানুষকে বিপদগ্রস্তকরা আল্লাহ তায়ালা কখনো পছন্দ করতে পারেন না। ”
(রাসায়েল ওমাসায়েল, ৬৭পৃষ্ঠা) কী কুখ্যাত মন্তব্য!!! একটু বিবেচনা করুন।
ইসলামী আকীদা
ইসলামী শরীয়তের আলোকে عصمت বা নিষ্পাপ হওয়া নবীদের জন্য অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ, বরং عصمت এর ক্ষেত্রেনবীগণ ফেরেশতাথেকেও অধিক হকদার। যেমন নিবরায কিতাবে عصمت সম্পর্কে ইমামমাতুরিদী রাহমাতুল্লাহি তাআলা আলাইহি বলেন,
اَلْأَنْبِيَاءُأَحَقُّ بِالْعِصْمَةِ مِنَ الْمَلئِكَةِ
“নবীগণ ফিরিশতাদের তুলনায় ইসমতের অধিক হকদার। ” (নিবরায। পৃষ্টা ২৮৪। )
কেননা, শয়তাননবীদের থেকে অনেক দূরে থাকে।
عصمت সম্পর্কে নকলীদলীলঃ
পবিত্র কুরআন পাকেও আল্লাহ পাক শয়তানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
اِنَّعِبَادِىْ لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ
“হে ইবলিস! আমার বিশিষ্ট বান্দাদের উপর তোমার কর্তৃত্ব নেই। ” (সূরা আল হিজার, আয়াত : ৪১ )
আর শয়তানও স্বয়ং স্বীকার করেছিল,
وَلَأُغِوَينهُمْ أَجْمعيْنَ – اِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُم الْمُخْلِصِيْنَ
“হে আল্লাহ! তোমার বিশিষ্ট বান্দাগণব্যতীত বাকী সবাইকে বিপথগামী করবো। ”(সূরা আল হিজার,আয়াত ৪১)
উল্লিখিত আয়াতে নবীগণ যে নিষ্পাপ তা সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হলো। কারণ গুনাহ হয়শয়তানের وسوسه দ্বারা । আরনবী-রাসূল তথা বিশিষ্ট বান্দাগণ وسوسه থেকে পূতঃপবিত্র।
মিশকাত শরীফে اَلْوَسْوَسَةُ অধ্যায়ে বর্ণিতআছে প্রত্যেকমানুষের সাথে একজন শয়তান অবস্থান করে যার নাম কারীণ। প্রিয় নবী বলেন, আমার কারীন মুসলমানহয়ে গেছে। মিশকাতের অপর হাদীসে মনাকেবে ওমর অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, হযরত ওমররাদিয়াল্লাহু তা’আলাআনহু যে রাস্তা দিয়ে গমন করেন তথা হতে শয়তান পালিয়ে যায়। তাহলে বুঝা গেল, যার উপর নবীর সুদৃষ্টিরয়েছে সেও শয়তান থেকে নিরাপদ থাকেন। অতএব,বর্ণিত কুরআন হাদীসথেকে প্রমাণিত হল নবী-রাসূলগণ নিষ্পাপ।
তাঁদের কোন গুনাহ থাকতেপারে না।
সে জন্যই ইমাম মোল্লা আলী কারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি স্বীয়কিতাব মিরকাত শরহেমিশকাতে নবীগণ যে নবুয়াতের আগে ও পরে সর্বদা যাবতীয় ছোট-বড় ভুলত্রুটিগুনাহ থেকে পবিত্র নিষ্পাপ থাকেন। তা এভাবে র্ব্ণনা করেছেন,
اَلْأَنْبِيَاءُمَعْصُوْمُوْنَ قَبْلَ النَّبُوَّةِوَبَعْدَهَا عَنْ كَبَائِرِ الذُّنُوْبِ وَصَغَائِرِهَا وَ لَو سَهْوًاعَلى مَاهُوَ الْحَقُّ عِنْدَ الْمحقِّقين
“নবীগণ নবুয়াতের পূর্বে ও পরে কবীরা-সগীরাউভয় প্রকার গুনাহ থেকে নিষ্পাপ পবিত্র এমনকি অনিচ্ছাকৃতভাবেও । এটাইমুহাক্কিক ওলামাদের নিকট হক কথা। ”(মিরকাত)
কারণ নবীদের উপর থেকে যদি আল্লাহর হেফাযত উঠে গিয়ে عصمت নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে তাদের নির্দেশিত শরীয়তের বিধানাবলীতে সন্দেহের অবকাশথেকে যায়।
আর যৌক্তিক দিক দিয়েওযতক্ষণ নবীগণকে নিষ্পাপ (মাসূম) মেনে নেয়া না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত নবী, সাধারণ দার্শনিক ওসংস্কারের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ইসলাম এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। অথচমওদূদী নবীদের থেকে হেফাযত উঠিয়েনিয়ে আল্লাহ কর্তৃক তাঁদের থেকে ভূলত্রুটি গুনাহ সংঘটিত করারযে মারাত্নক কুফরীআকীদা প্রকাশ করেছে তা কখনও ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং এটা অল্লাহর শানেওচরম বিয়াদবী বৈ কিছুই নয়।
আর হযরত মূসা আলাইহিস সালাম এক মিশরীকে শাসনের উদ্দেশ্যেই শাস্তিদিয়েছিলেন।
এতে ওই মিশরীর মৃত্যু ঘটে। এটা কখনও গুনাহ নয় বরং ন্যায় বিচার। অথচ মওদূদী এটিকে বড়গুনাহ বলে নবীদেরশানে চরম আবমাননাকর উক্তি করলেন।
দলীলসমূহ : কানযুল ঈমান, রুহুল ইরফান, নিবরায, ফিকহ আকবর, শরহে আকায়েদে নসফী, শরহে মাওয়াকিফ, মিরকাত শরহে মিশকাত।
আবুল আলা মওদুদী (১৯০৩-১৯৭৯) পাকিস্তান ভিত্তিক দল জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা যা বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশেই তাদের ধর্ম ব্যবসা খুলেবসেছে।
প্রথম দিকে মওদুদী পাকিস্তান রাস্ট্রপ্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করলেও ১৯৪০ এর দশকে এসে নিজেরভোল পাল্টায় এবং তখন থেকেই সে পাকিস্তানে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠারদীর্ঘ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। সে ইসলামকে একটি জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে প্রচার করতে শুরু করে। ইসলামের মৌলিক নীতি ও ভিত্তি সমূহ, যেমন: তাওহীদ,একআল্লাহর ওপর বিশ্বাস, সালাত, সাওম, যাকাত, হ্জ্জ ইত্যাদিকেউপেক্ষা করে মওদুদী শাসন ব্যবস্থার ওপর বেশি জোর দেয়। রাস্ট্রের কর্তৃত্ব আকাংক্ষার ব্যাপারে তার মতামত:
“তাইকর্তৃত্বের আকাংক্ষা ছাড়া কোন দর্শণে আস্থাজ্ঞাপন করার কোন অর্থ নেই, এবং কোনটি আইনসম্মত বা কোনটি নিষিদ্ধ অথবা নির্দেশিত আইন, কোনটিরই কোন মানে নেই। "
- তাজদীদউদ দ্বীন, পৃষ্ঠা ৩২ - ৩৩
অথচহযরত মুহাম্মদ (স) পরিস্কার ভাবে কর্তৃত্বের লালসাকে পুরোপুরি নিষেধ করে দিয়েছেন; ওনার মতে কর্তৃত্ব ও শাসন করার লোভ মানুষকেপুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।
তিনিবলেন:
“নেতৃত্বেরআকাংক্ষা করোনা। কেননা তোমরা যদি নেতৃত্বের আকাংক্ষা করে তা পাও তবে সে দায়িত্ব তোমাদের একাই পালন করতে হবে। কিন্তু আকাংক্ষা না করেইযদি তোমরা নেতৃত্ব পাও তবে তোমরা সাহায্য পাবে(আল্লাহর কাছ থেকে)। ”
- মুসলিম,৪৬৯২
এখানেমওদুদীর কিছু ইসলাম বিকৃতির নমুনা তুলে ধরছি। এখানে পবিত্র কুরআন, হাদীস এবংমওদুদীর বিভিন্ন লেখা ও ভাষন থেকে উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে; এখানে পরিষ্কার যে মওদুদী জেনেশুনে ইসলামের বিকৃতি ঘটানোর অপচেষ্টা করেছে।
তাতেও যদি গন্ডমূর্খ জামাত-শিবিরের সমর্থকদের কিছুটাবোধ হয়।
“শাসনও কর্তৃত্ব করার নামই হচ্ছে ধর্ম, শাসন ব্যবস্থার আইন হল শরিয়া এবং উপাসনা হচ্ছে শাসন ব্যবস্থার ঐতিহ্যকে অনুসরন করা’’ - খুতবা, পৃষ্ঠা ২১৭।
“লোকেসাধারণত বলে ইসলামের পাচটি স্তম্ভ: এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, নামাজ, যাকাত, রোযা এবং হজ্জ। এবং এ গুলোই ইসলাম এই ভুল ধারণার মধ্যে তারা অনেকদিন ধরে আছে। এসলেএটা একটা বড় বিভ্রান্তি যা মুসলমানদের পথ এবং কর্মকে ধ্বংস করেছে।
“
(কাউসার,৯ফেব্রুয়ারি ১৯৫১- মওদুদীর ভাষণ থেকে উদ্ধৃত)
অথচসহীহ বুখারী এবং মুসলিম শরীফে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে ইসলামের মূল স্তম্ভ পাচটি: ১. শাহাদাহ ২. সালাত ৩. বাধ্যতামূলক যাকাত প্রদান ৪.সাওম এবং ৫. হজ্জ।
শুধুতাই নয়, মওদুদী হাদীস শরিফের ও সমালোচনা করতে ছাড়েনি। মওদুদী এ সম্পর্কেবলেছে:
“কোনসত্যবাদী মানুষই এই দাবী করতে পারবেনা যে ৬ - ৭ হাজার হাদীসের (সহীহ বুখারী শরিফ)সবগুলোই পুরোপুরি ঠিক। “
(১৯৫৫সালের ১৫ মে বরকত হলে মওদুদীর দেয়া ভাষণ থেকে; যা পরেআল-ইতেশাম পত্রিকায় ২৭ মে ১৯৫৫ এবং ৩ জুন ১৯৫৫ তারিখে প্রকাশিত হয়। )
শুধুএই নয়, হযরতমুহাম্মদ (স) চুক্তি ভিত্তিক অস্থায়ী বিয়ে (মুতাহ) হারাম ঘোষনা করেছেন।
কিন্তু মওদুদী হাস্যকর উদাহরণ টেনে তা হালাল করতে চেয়েছে:
“ধরেনসমুদ্রের মাঝে একটি নৌকা ডুবে গেল। একজন পুরুষ ও একজন মহিলা বেচে গিয়ে এক নির্জন দ্বীপে গিয়ে ওঠে। এ অবস্থায় তাদের একসাথে থাকতেই হবে। কিন্তু ইসলামী আইন মতে তারা নিকাহ করতে পারবে না। তাই তাদের কাছে যে একমাত্র রাস্তাটা খোলা আছে তা হল নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে অস্থায়ীবিয়ে করা ততদিনের জন্য যতদিন না তারা লোকালয়ে পৌছাতেপারে বা লোকেরা তাদের খুজে পায়।
অস্থায়ীবিয়ে (মুতাহ) এ ক্ষেত্রে বা এর মত পরিস্থিতিতে জায়েজ। “
-তারজুমামুলকুরআন, ১৯৫৫,পৃষ্ঠা:৩৭৯
যুদ্ধবন্দীমহিলাদের ব্যাপারে মওদুদীর মতামত দেখুন:
“এমনকিবর্তমান যুগেও যুদ্ধবন্দী মহিলাদের সৈনিকদের মধে বন্টন করে দেয়া উচিৎ এবং সৈন্যদেরকে তাদের (মহিলাদের) ভোগ করার অনুমতি দেয়া উচিৎ। “
অথচপবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া আছে। আল্লাহ বলেন:
“অবশেষেযখন তাদেরকে (কাফিরদের) পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদেরনিকট হতে মুক্তিপণ লও (এবং মুক্তিদাও) ।
”
- সূরামুহাম্মদ, আয়াত ৪
বাল্যবিবাহ নিয়ে মওদুদী বলেছে:
“নাবালিকামেয়েদের (বয়:প্রাপ্তির আগে) বিয়ে করা যায়। স্বামীরাও তাদের সাথে সহবাস করতে পারে। “
-তাহফীমুলকুরআন, পঞ্চমখন্ড, পৃষ্ঠা:৫৭১
বিভিন্ননবী-রাসূলদের নিয়ে মওদুদীর সমালোচনার বিস্তর উদাহারণ আছে। যেমন নিচের মন্তব্যে সে হযরত ইউসুফ (আ) কে মানুষ হত্যাকারী জঘন্যমুসোলিনীর সাথে তুলনা করেছে -
“কিছুমানুষ যে ধারনা পোষণ করে যে তিনি [হযরত ইউসুফ (আ)] মিশরেরতত্ত্বাবধায়কেরদায়িত্ব চেয়েছিলেন শুধু সেখানকার অর্থ মন্ত্রী হবার জন্য তা আদপে ঠিক নয়; প্রকৃত পক্ষে তিনি একজন সৈরশাসক হতে চেয়েছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত ইউসুফ (আ) যে পদ পান তাবর্তমানকালের ইতালির মুসোলিনীর অবস্থার সমতুল্য।
“
- তাহফিমাত,খন্ড২, পৃষ্ঠা১২২, ৫মসংস্করণ
মওদুদীহযরত সুলাইমান (আ) এর ১০০ স্ত্রী থাকার ব্যাপারে মন্তব্য করেছে:
“হয়আবু হুরাইরা (রা) নবীর কথা শুনতে ভুল করেছেন অথবা তিনি পুরো ব্যাখ্যা শোনেননি। “
-রাসাইল-ও-মাসাইল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা: ২৭
নবী-রাসুলগণ সকলেই মাসুম, তারা সকলেইনিষ্পাপ-এই হলো ইসলামী আকীদা। তবেজনাব আবুল আলা মওদুদী ইসলামের বদ্ধমূল এ আকীদার উপর কুঠারাঘাতকরে এবং কুরআনও সুন্নাহর চিরন্তন শিক্ষাকে পদদলিত করে আম্বিয়ায়ে কেরামের এ পূত পবিত্রজামাতের প্রতি কলংক লেপন করার উদ্দেশ্যে এমন ধৃষ্টতাপূর্ন কথা বলেছেন, যা কোন মুসলমানেরপক্ষে বরদাশত করা সম্ভব নয়।
মওদূদী সাহেবের আরো কিছুভ্রান্ত মতবাদ
ইসলামীরীতিনীতি
“পোশাকপরিচ্ছদ, চাল-চলন, আকৃতি-প্রকৃতি চুল কার্টিং ইত্যাদির ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করতে কোন দোষ নেই”। (তরজুমানুল কুরআন, ছফর সংখ্যা, ১৩৬৯ হিজরী)
ইসলামবলে, ইসলামীপোশাক-পরিচ্ছদ-প্রকৃতি চাল-চলন ইত্যাদি গ্রহণ করবে।
এসব ব্যাপারেবিধর্মীদের অনুকরণ করবে না। (এমদাদুল মুফতিয়ীন, ২য় খণ্ড,১৫৪ পৃষ্ঠা)
প্রসঙ্গঃদাড়ি কাটা ও রাখা
ইবনেওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-তোমরা গোফ খাট কর আর দাড়ি লম্বা কর। (তিররমিযী শরীফ, হাদিস নং-২৭৬৩)
এছাড়াঅন্য হাদিসে এসেছে-পুরুষদের স্বাভাবিক প্রকৃতি হল সে তার দাড়ি লম্বা রাখবে। (আবুদাউদ শরীফ, হাদিস নং-৫৩)
দাড়িলম্বা করার কথা হয়েছে হাদিসে।
কাটার কথা কোথাও নেই। তাই সাহাবায়ে কিরামের আমলই আমাদের একমাত্র ভরসা এই ক্ষেত্রে যে, দাড়ি কতটুকুবড় রাখতে হবে? মুসান্নাফে ইবনেশাইবাতে এসেছে-হযরত ইবনে ওমর রা. এর আমল ছিল-তিনি দাড়ি এক মুষ্টিপরিমাণ রাখতেন। সুতরাং দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখা ওয়াজিব। এর চে’কমদাড়ি রাখা আর চেছে ফেলার মাঝে কোন পার্থক্য নাই। যেমন জোহরের ফরজনামায চার রাকাত।
দুই রাকাত সারা জীবন পড়লেও যেমন জোহর কোনদিনও আদায় হবেনা। তেমনি এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখলে তা কোনদিনও দাড়ি রাখাবলে সাব্যস্ত হবেনা।
অথচমওদুদী সাহেবের আক্বিদা দেখুন কী বলে?
“দাড়িকাটা ছাঁটা জায়িয। কেটে ছেঁটে এক মুষ্টির কম হলেও ক্ষতি নেই। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পরিমাণ দাড়ি রেখেছেন সেপরিমাণ দাড়ি রাখাকে সুন্নত বলা এবং এর অনুসরণে জোরদেয়া আমার মতে মারাত্মক অন্যায়”।
(রাছায়েল মাছায়েল,১মখণ্ড, ২৪৭পৃষ্ঠা)
প্রসঙ্গঃসুন্নতে রাসূল
“হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত, আখলাককে সুন্নতবলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে সাংঘাতিকধরনের বিদয়াত ও মারাত্মক ধর্ম বিকৃতি।
(রাছায়েলমাছায়েল, ২৪৮ পৃষ্ঠা)
ইসলামবলে, হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত,আখলাক ও স্বভাব-চরিত্র আমাদের অনুকরণের জন্য উত্তম নমুনা বা সুন্নত। মহানরাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-তোমাদের জন্য নবীজীর মাঝেরেখেছি উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াতঃ ২১,সহীহবুখারী, হাদীস নং-১৫৪৪}
প্রসঙ্গঃদ্বীনের আসল উদ্দেশ্য
“দ্বীনেরআসল মকছুদ হলো ইসলামী হুকুমত। নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদিসমস্ত ইবাদত হলো উক্ত মকছুদ অর্জনের মাধ্যম”।
(আকাবেরেউম্মত কী নজরমে, ৬৪ পৃষ্ঠা)
* ইসলামবলে, দ্বীনেরআসল মকছুদ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি কায়েম করা। ইসলামীহুকমত উক্ত মকছুদ অর্জনে সহায়ক। (শরহুল আকায়েদ, ৩০৪ পৃষ্ঠা)
এতসব ভ্রান্ত আক্বিদা পোষণ করার পরও যদি কেউ তাকে আল্লাহ ওয়ালা বলে সম্বোধন করে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কী’বা বলার আছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মওদুদীফিতনা থেকে আমাদের দেশে সাধারণ মুসলমানদের হিফাযত করুন
সৃত্র: Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।