আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লা্মের উপর আরোপিত মিথ্যা অভিযোগের জবাব

নয়া যামানার নয়া পথিক,পথ হারিয়ে ছুটনা দিক্বিদিক নাস্তিক এবং ইসলাম বিদ্বেষী লোকেরা মহানবী (সা) সম্পর্কে নানারকম অভিযোগ করে থাকে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর পারিবারিক ও যৌন জীবন। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লামকে নারী লোভী বানানোর জন্য হাদিসের বিকৃত ব্যাখ্যা করছে এবং নানা জাল রেওয়াত উল্লেখ করে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম যদি নারীলোভী হতেনই তাহলে উনি উনার পুরো যৌবনকাল একজন বৃদ্ধা বিধবার সাথে কিভাবে পার করে দিলেন? হযরত খাদীজা (রা) এর জীবদ্দশায় তিনি কোন মহিলাকে বিবাহ করেন নি। আর নবুয়াত প্রাপ্তির পর যখন কাফেররা নানা লোভ দেখিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লামকে ইসলাম প্রচার করা থেকে বিরত রাখতে চেয়েছিলেন,তখন তারা আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের লোভও দেখিয়েছিল, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সে প্রস্তাব গ্রহণ করেননি, উনি যদি নারীলোভী হতেন তাহলে কি এই সুবর্ণ সুযোগ ছেড়ে দিতেন? হযরত খাদীজা(রা) এর মৃত্যুর পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম যাদের বিবাহ করেছিলেন তাদের মধ্যে হযরত আয়েশা(রা) ছাড়া কেউ কুমারী ছিল না, উনি যদি নারীলোভী হতেন তাহলে বৃদ্ধা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীদের বদলে কুমারী নারীদের বিবাহ করতেন, আর উনি যদি তা চাইতেন তাহলে তা খুব একটা কষ্টের কিছু ছিল না।

উনার বহুবিবাহের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলাম প্রচার ও প্রসার। উনার ইন্তেকালের পর এটার বাস্তবতা বুঝা যায়। যারা ইসলাম সম্পর্কে মুটামোটি ধারণা আছে, তারা ভাল করেই জানেন যে, নারীদের মাসলা-মাসায়েলের সংখ্যা পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশী। এখন যদি পর্যাপ্ত মুয়াল্লিম বা শিক্ষক না থাকত, তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর ইন্তেকালের পর মহিলাদের জন্য অনেক কিছু জানা সম্ভব হতো না, কারণ মহিলাদের কিছু ব্যাপার আছে যা সরাসরি পুরুষদের জিজ্ঞাসা করা অনেকটা অসম্ভব। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর স্ত্রীদের দ্বারা ইলমের কত খিদমত হয়েছে তা হাদিসের কিতাবে তাঁদের দ্বারা বর্ণিত হাদিসের সংখ্যাধিক্য দ্বারাই বোঝা যায়।

কিন্তু আমাদের নাস্তিক আর ইসলাম বিরোধী ভাইদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বিবাহ করে খুব খারাপ কাজ করে ফেলেছেন। তাই স্ত্রীদের সাথে মিলন হলেও তা তাদের দৃষ্টিতে ভাল লাগে না। মনে রাখা প্রয়োজন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম প্রেরিত হয়েছেন সারা পৃথিবীর মানুষদের জন্য শিক্ষক হিসেবে। এখন যদি মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মানে যৌনতা সম্পর্কে উনার শিক্ষা না থাকে তাহলে উনাকে পাঠানোর মিশন কি সফল হতো। ইসলাম বিদ্বেষীরা একটা ঘটনা খুব প্রচার করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম একবার এক মহিলাকে দেখে উত্তেজিত হয়ে বাড়িতে গিয়ে হযরত যায়নাব (রা) এর সাথে মিলিত হন, তখন যায়নার (রা) চামড়া পাকাচ্ছিলেন।

এখানে তারা খারাপ কি দেখল তা আমার বুঝে আসে না, নিজ স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়াও কি খারাপ?? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তো রাস্তার ঐ মহিলার সাথে মিলিত হন নি, উনি মিলিত হয়েছেন নিজ স্ত্রীর সাথে, আর এও বলে গেছেন যে, কেউ অন্য নারীকে দেখে আসক্ত হলে যেন নিজ স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়, যাতে তার কুপ্রবৃত্তি তাকে পাপ কাজে লিপ্ত না করে। এখন উনারা কি চান যাকে দেখে আকৃষ্ট হন তার সাথেই কাজ সেরে ফেলতে, কিন্তু স্ত্রীর সাথে কাজ করতে গেলে উনাদের সমস্যা। আজিব। আর উনারা এমনভাবে ঘটনাটা তুলে ধরে যে, হযরত যায়নাব(রা) তখন মিলিত হতে সম্মত ছিল না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম জোর করে তার সাথে মিলিত হয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)। যার সাথে মিলিত হলেন তার সমস্যা নাই, কিন্তু উনাদের দরদের শেষ নেই।

এ যেন- "যার বিয়ে তার খবর নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই" আর হযরত আয়েশা (রা) এর বেলায় যেন তাদের দরদের অভাব নেই। কত গবেষণা যে তারা করল হযরত আয়েশার (রা) কষ্টের সমবেদনা জানাতে। তবে তাদের জন্য দুঃখের ব্যাপার হলো তারা এত দুঃখের খোঁজ করলেও হযরত আয়েশা কখনো নিজেকে দুঃখী বলে দাবি করেন নি, কিংবা কোন অভিযোগ জানান নি। বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর জন্য তার মহব্বত অন্যদের চেয়ে বেশীই ছিল। এখন ইসলাম বিদ্বেষী ভাইদের ক্ষেত্রে এই প্রবাদটা প্রয়োগ করা অনুচিত হবে না- " মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশী।

" যাক এবার তাদের হাইটলাইট করা কয়েকটি হাদিস দেখি- Bukhari, Book 008, Number 3450: Anas (Allah be pleased with him) reported that Allah's Apostle (may peace be upon him) had nine wives. They (all the wives) used to gather every night in the house of one where he had to come (and stay that night). তারা বুঝাতে চেয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম একসাথে সকল স্ত্রীর সাথে মিলিত হতেন। (নাউযুবিল্লাহ) মজার ব্যাপার হলো তারা যে সাইট থেকে এটি কপি করে, সেই সাইটি রেফারেন্স দিতে যে ভুল করেছে তা মনে হয় তারা যাচাই করে দেখেনি। এটি মুসলিম শরীফের একটি হাদিসের অংশ,মূল হাদিসটি দিলাম- Anas (Allah be pleased with him) reported that Allah's Apostle (may peace be upon him) had ninewives. So when he divided (his stay) with them, the turn of the first wife did not come but on the ninth (day). They (all the wives) used to gather every night in the house of one where he had to come (and stay that night). It was (the night when he had to stay) in the house of 'A'isha (Allah be pleased with her), when Zainab came there. He (the Holy Prophet) stretched his hand towards her (Zainab), whereupon she ('A'isha) said: It is Zainab. Allah's Apostle (may peace be upon him) withdrew his hand. There was an altercation between the two until their voices became loud (and it was at that time) when Iqama was pronounced for prayer. There happened to come Abu Bakr and he heard their voices and said: Messenger of Allah, (kindly) come for prayer, and throw dust in their moths. So the Prophet (may peace be upon him) went out. 'A'isha said: When Allah's Apostle (may peace be upon him) would finish his prayer there would also come Abu Bakr and he would do as he does (on such occasions, i. e. reprimanding). When Allah's Apostle (may peace be upon him) had finished his prayer, there came to her Abu Bakr. and spoke to her ('A'isha) in stern words and said: Do you behave like this? (Muslim,Book 008, Number 3450) এ হাদিসে বুঝা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম কোন এক স্ত্রীর ঘরে নবম দিন সকল স্ত্রী একত্রিত হতেন, এবং আলাপ-আলোচনা করতেন। যেখানে এক ঘরে একাধিক স্ত্রীর সাথে একত্রে মিলিত হওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ, সেখানে কিভাবে আশা করা যায় ইসলামের প্রচারক তা নিজে করবেন। বিবিরা একত্রে মিলিত হয়ে কি করতেন তা নিচের বর্ণনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, " যার যে ঘরে অবস্থানের পালা আসত, সে ঘরেই চলে যেতেন এবং অন্যন্য বিবিগণ সে ঘরে এসেই সমবেত হতেন এবং নানা আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় কাটাতেন।

রাত্রী গভীর হলে সবাই যার যার ঘরে চলে যেতেন। " {সীরাতুন নবী( সাঃ ), ১ম খণ্ড, ৭৩৯ পৃঃ, আল্লামা শিবলী নোমানী(রহ)} মুসলিমের বর্ণনার বাংলা অনুবাদের স্ক্রীণশট এখানে দিলাম- আর মুসলিমের বর্ণনা থেকেও তা বুঝা যায়, কারণ একত্রে মিলিত হলে হযরত আয়েশা (রা) এর সাথে হযরত যায়নাব(রা) এর কথাকাটাকাটি হওয়ার কোন কারণ ছিল না। এবার আসা যাক তাদের সবচেয়ে পছন্দের বর্ণনাতে। যা ইসলাম বিদ্বেষী ঐতিহাসিকেরা বেশ রং চং লাগিয়ে বর্ণনা করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সমালোচনা করেন। বর্ণনাটা হলো- "One day Muhammad went out looking for Zaid. Now there was a covering of hair cloth over the doorway, but the wind had lifted the covering so that the doorway was uncovered. Zaynab was in her chamber, undressed, and admiration for her entered the heart of the Prophet". The admiration aroused him instantly, which Zainab also noticed and mentioned it to her husband Zaid later. He rushed to his father’s house and offered Zainab to him. Mohammed worried about possible bad press and refused to accept it. But Allah will not take no for an answer and insisted on their union.(Tabari) কিন্তু প্রকৃত ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম যায়েদ (রা) কে ছোটবেলা থেকে লালন পালন করেছিলেন। যায়েদ (রা) যুবক হওয়ার পর তিনি তাঁর ফুফাত বোন যায়নাব(রা) এর সাথে যায়েদ(রা) বিয়ে দেন। কিন্তু যায়নাব(রা) যায়েদ (রা)কে খুব একটা পছন্দ করতেন না। তাই তাদের মধ্যে অধিকাংশ সময় মনমালিন্য বিরাজ করত। অবশেষে যায়েদ (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর দরবারে এসে যায়নাব (রা) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং তাঁকে তালাক দিতে মনস্থ করেন।

কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাকে তালাক দিতে বারণ করেন। এমনকি এ সম্পর্কে আয়াত নাযিল হয়। (আহযাব-৫) কিন্তু কোন ক্রমেই সমঝোতা না হওয়ায় যায়েদ (রা) যায়নাব (রা) কে তালাক দিয়ে দেন। তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম যায়নাব (রা) কে বিবাহ করেন এবং এ বিবাহের আরেকটি কারণ ছিল আরবের একটি ভুল প্রথাকে দূর করা। তখন আরবে পালকপুত্রকে ঔরসজাত পুত্র মনে করত।

এ বিয়ের মাধ্যমে সে নিয়মকে চিরতরে বাতিল করা হয়। { বিস্তারিত ফতহুল বারী,তাফসীরে সূরা আহযাব, বুখারী- সাহাবা অধ্যায়,তাসফীর অধ্যায়; মুসলিমঃ নিকাহ অধ্যায়,তাফসীর অধ্যায়, সাহাবা অধ্যায়; সিরাতুন নবী (সা)-১ম খণ্ড, ২৭১ পৃঃ} কিন্তু উনারা যে তাবারীর বর্ণনাটা দেন তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা এই নাদানদের জানা নেই। তাবারী এ ঘটনা ওয়াকেদী থেকে বর্ণনা করেছেন, যিনি বর্ণনার ব্যাপারে অত্যন্ত অসাবধান ছিলেন এবং অনেক মিথ্যা বর্ণনার মূল সূত্র। এ ধরনের মিথ্যা কল্পকাহিনী রচনা করার পেছনে বিলাসী আব্বাসী সুলতানদের বিলাসব্যসনের সপক্ষে সনদ সরবরাহ করাই হয়তো তার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হয়ে থাকবে। ফতহুল বারীর লেখক এ ঘটনা উল্লেখ করে সবশেষে বলেছেন-" আমরা তার আলোচনাও পরিত্যাগ করেছি।

" আর এটা সে সময়ের ঘটনা যখন হযরত আয়েশার বিরুদ্ধে মুনাফিকরা অপবাদ রটিয়েছিল। এ ঘটনাও যে মুনাফিকরা দক্ষতার সাথে প্রচার করেনি তাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে সহীহ হাদিসের কিতাবগুলোতে এ বর্ণনার কোন নামগন্ধও পাওয়া যায় না। আরেকটি ঘটনা যা ইসলাম বিদ্বেষীরা খুব ফলাও করে প্রচার করে তা হলো- বনু কুরাইযার বন্দীদের মধ্যে রায়হানা নাম্নী নামের এক ইহুদী মহিলাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম আলাদা করে রাখার নির্দেশ দেন এবং কয়েকদিন পরে তাকে অন্তঃপুরে নিয়ে যান। তাদের মতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এসব যুদ্ধবন্ধী দাসিদের সাথে সহবাস করতেন।

কোন কোন খৃস্টান ঐতিহাসিক এ ঘটনা অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় বর্ণনা করেছেন। জৈনিক ঐতিহাসিক অকথ্য ভাষায় লিখেছেন যে, ইসলামের প্রবর্তক শত শত ইহুদী লাশের মৃত্যুর দৃশ্য দেখলেন, তখন ঘরে ফিরে মন-তুষ্টির জন্য.........। কিন্তু ঘটনাটি আগাগোড়াই মিথ্যা, উর্বর-মস্তিস্ক বিদ্বেষ্পরায়ণদের সাজানো কাহিনী মাত্র। রায়হানার অন্দরে প্রবেশের যে সব বর্ণনা পাওয়া যায়, তার সব কয়টিই ওয়াকেদী অথবা ইবনে ইসহাক থেকে গৃহীত। ওয়াকেদী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম রায়হানাকে বিবাহ করেছিলেন এবং স্বয়ং রায়হানার বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে- " হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম আমাকে মুক্ত করে দেন এবং পরে বিয়ে করেন।

" হাফেয ইবনে হাজার 'ইসাবা' গ্রন্থে মুহাম্মাদ ইবনে হাসান রচিত মদিনার ইতিহাসে যে বর্ণনা রয়েছে তা থেকে বাক্যটি তুলে ধরেছেন- "কোরাইযা বংশীয় রায়হানা যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর পত্নী ছিলেন, তিনি এ ঘরে অবস্থান করতেন। " (ইসাবাঃ৪/৩০৯) "রায়হানাকে বন্দী করা হয় এবং পরে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি তাঁর গোত্রে ফিরে যান এবং সেখানে মর্যাদার সাথে জীবনযাপন করতে থাকেন। " হাফেয ইবনে মানদার বর্ণনায় স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাকে মুক্ত করে দেন এবং তিনি নিজ পরিবারে ফিরে গিয়ে পরিপূর্ণ মর্যাদার সাথে জীবন অতিবাহিত করেন। আমাদের নিকট সত্য ঘটনা হলো, যদি একথা স্বীকার করেও নেয়া হয় যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর অন্তঃপুরে আগমন করেছিলেন তাহলে তিনি নিশ্চিতভাবে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েই এসে থাকবেন, দাসী হিসাবে নয়।

[রাইহানা সম্পর্কে মোট তিন প্রকার বর্ণনা আছে-১)রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাকে মুক্ত করে দেন এবং তিনি নিজ পরিবারে ফিরে যান। ২) তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর খেদমতে থাকতে চাইলেন ৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাকে মুক্তি দিয়ে পরে বিয়ে করেছিলেন। ] { সিরাতুন নবী (সা), ১ম খণ্ড, পৃঃ২৭১} আরেকটি বর্ণনা যা তাদের কাছে খুব পছন্দের তা উল্লেখ করা হলো- Once he entered his wife Hafsa’s room for some reason. Hafsa was not there but he found her lovely young maid Maria instead. He grabbed her and jumped into the bed with her for a quickie. But the quickie was not quick enough and Hafsa walked in and started yelling. To quieten her down and to please her he promised never to touch her maid again. However Allah did not approve of this sacrifice and revealed the following ayas: Q66.1 SHAKIR: O Prophet! why do you forbid (yourself) that which Allah has made lawful for you (slave girl Maria); you seek to please your wife(Hafsa) 66.2 Allah has sanctioned for you to break your promise (go sleep with Hafsa’s maid) এ ঘটনার বর্ণনাকারীও ওয়াকেদী । যা সরাসরি মিথ্যা ও অপবাদ।

আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী, তার সহীহ বোখারীর ব্যাখাগ্রন্থের নবম খণ্ডের ৫৪৮ পৃষ্ঠায় লেখেন-" এবং আয়াত আবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে সহীহ বর্ণনা এই যে, সেটি মধু সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, মারিয়া সম্পর্কীত ব্যাপারে নয়, যা সর্বশ্রেষ্ঠ সহীহ হাদিস গ্রন্থদ্বয়,সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়নি। সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাতা আল্লামা নববী (র) বলেন, মারিয়া সম্পর্কিত কাহিনী কোন সহীহ সনদে বর্ণিত হয়নি। " এখথা সর্ববাদীসম্মত যে, মারিয়া (রা) সম্পর্কিত রেওয়াত সিহাহ সিত্তার কোন কিতাবেই নেই। { সিরাতুন নবী (সা), ১ম খণ্ড, পৃঃ৩৫৪} এভাবে যতগুলো বর্ণনা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লা্মের চরিত্রকে কুলষিত করতে ব্যবহার করা হয় তার বেশীরভাগই দুর্বল এবং জাল। তারা যতই চেষ্টা করুক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লামকে খারাপভাবে উপস্থাপন করতে , আল্লাহ্‌ তা'আলা তাঁর রাসূলের মর্যাদা বৃদ্ধি করছেন এবং পৃথিবীতে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আল্লাহ্‌ তা'আলা তাদেরকে হেদায়েত দান করুন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.