ক্যান্সার চিকিত্সায় কার্যকর প্রতিষেধকের সন্ধান পেয়েছেন ইসরাইলের গবেষকরা। তারা এমন একটি উপাদানের সন্ধান পান, যা দিয়ে সুস্থ দেহকোষের ক্ষতির আশঙ্কা না করে আরও কার্যকরভাবে ক্যান্সারের চিকিত্সা করা যাবে। ইসরাইলের তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয় ও সেবা মেডিকেল সেন্টারের বিজ্ঞানীদের এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন চিকিত্সা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ব্রেস্ট ক্যান্সার রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেয়া তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মালকা কহেন-আরমন বলেন, আমরা ক্যান্সার কোষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছি। সুস্থ কোষের ক্ষতি না করে
ক্যান্সার কোষ মারতে পারার ওষুধ তৈরি করে রোগীর কষ্ট অনেক কমানো যাবে।
এমনকি আমরা সুস্থ কোষের ক্ষতির আশঙ্কা না করে আরও কার্যকরভাবে চিকিত্সা চালাতে পারব।
গবেষকরা তাদের গবেষণায় যে উপাদান চিহ্নিত করেছেন তা এক দশক আগে স্নায়ু কোষকে স্ট্রোকের পর রক্ষায় বের করা একটি ওষুধ থেকে নেয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, উপাদানটি সুস্থ ও ক্যান্সার আক্রান্ত কোষের নতুন কোষ তৈরির প্রক্রিয়া প্রাথমিকভাবে বাধাগ্রস্ত করে। উপাদানটির কারণে ক্যান্সার কোষগুলো দ্রুত মারা গেলেও সুস্থ কোষগুলো এক ঘণ্টার মধ্যেই উপাদানটির প্রভাব কাটিয়ে উঠে আবার নতুন করে কোষ উত্পাদন শুরু করে।
কোহেন-আরমন জানান, উপাদানটির ক্যান্সার চিকিত্সায় কার্যকারিতা খুঁজে পাওয়া গেছে অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই।
আমি এমনকি ক্যান্সার গবেষকও নই। দুই বছর আগে একটি গবেষণা প্রতিবেদন পড়ে আমি ক্যান্সার কোষের ওপর আগ্রহী হয়ে উঠি। আমরা এখনও পুরোপুরি বুঝতে পারছি না এমনটা কেন হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, এ উপাদানের প্রভাবে ক্যান্সার কোষ মারা গেলেও সুস্থ কোষ ওষুধের প্রভাব কাটিয়ে উঠছে। সুস্থ কোষগুলো কোনোভাবে ওই উপাদানের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার উপায় খুঁজে পেয়েছে।
গবেষণাটি চালানো হয় স্ত্রী ইঁদুরের ওপর। কোহেন-আরমন জানান, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ওপর উপাদানটির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তবে কেবল স্তন ক্যান্সারের ওপর গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। উপাদানটি দিয়ে সব ধরনের ক্যান্সারের চিকিত্সায় ওষুধ উত্পাদনের সবচেয়ে বড় বাধা হলো, মূল ওষুধটি একটি মার্কিন ওষুধ কোম্পানির পেটেম্লট করা। তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ট্রান্সফার কোম্পানি র্যামোট কেবল স্তন ক্যান্সারের চিকিত্সায় ওষুধ উন্নয়নের পেটেম্লট পেয়েছে।
এখন ভবিষ্যতে ক্যান্সারের চিকিত্সায় ওষুধটি বাজারে আসবে কিনা তা নির্ভর করছে মার্কিন কোম্পানিটির সদিচ্ছার ওপর। অথবা অন্য কোনো কোম্পানি যদি একই রকম উপাদান বানাতে পারে তবে ওষুধটি উত্পাদন সম্ভব হবে।
কোহেন-আরমন বলেন, আমরা এই ওষুধটি উত্পাদন করতে চাই। কিন্তু এতে বিজ্ঞানের বাইরেও কিছু জটিলতা রয়ে গেছে। তবে আশা করছি, এ কারণে গবেষণার ফল হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে না।
সূত্র : বিবিসি ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।