আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিবাহ- তালাক - এবং শরীয়তের হিল্লা বিয়েঃ একটি চমৎকার যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্হা ।

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল । অনেকেই ইসলামী আইন কানুন গভীরভাবে অনুধাবণ না করে এর সমালোচনা করেন । কিন্তু যারা ইসলামী শরীয়তের বিষয়গুলো গভীর ভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে এর যৈাক্তিকতা উপলব্ধি করেন - তারা এর প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন এবং ইসলামী আইন যে কত আধুনিক বুঝতে পারেন । তবে এটা বুঝার জন্য স্রষ্টাকে ইসলামী শরীয়তের আইনের সৃষ্টিকর্তা এবং ইসলামী আইনের উদ্দেশ্য দুনিয়া এবং আখেরাতে শান্তি এভাবে চিন্তা করলে তবেই বুঝতে সহজ হয়ে যায় ।

আমার এক বন্ধুসম ছোট ভাইয়ের সাম্প্রতিক কালে তালাক হয়ে গেল । বিষয়টা খুবই হৃদয় বিদারক । হাদীস অনুসারে - তালাক হলো এমন একটি বিষয় যা বৈধ কিন্তু আল্লাহর নিকট সব থেকে অপছন্দনীয় বিষয় । অর্থাৎ মানুষকে তালাকের অনুমতি দেওয়া আছে - তবে এটা যে সবচেয়ে নিন্দনীয় বিষয় সেটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে । এটাকে মোটেই উৎসাহ দেওয়া হয় নি বরং অনুৎসাহিত করা হয়েছে ।

বিবাহ প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার । বিবাহের মাধ্যমে একটি নতুন পরিবারের সূচনা হয় এবং পরিবার হলো একটি সমাজের প্রধান কাঠামো । সমাজের কাঠামো দুর্বল হলে সমাজ ব্যবস্হা ভেঙে পড়ে । তাই এর গঠন শক্তিশালী হওয়া খুবই প্রয়োজন । এজন্য এক দিকে বিবাহকে করা হয়েছে সহজ আবার এর ভাঙন ঠেকানোর জন্য কঠিন আইন করা হয়েছে ।

কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখি- এটাকে উল্টে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে । যৈাতুকের আবর্তে, বিশাল ব্যয়, সামাজিক স্তরভেদের দোহাই ইত্যাদি কারণে বিবাহ হচ্ছে কঠিন আর তালাকের পরিমাণ সমাজে বেড়েই চলছে । ইসলামে প্রকৃত পক্ষে হিল্লা বিয়ে বলতে কিছু নাই । বলা হয়েছে - সম্পূর্ণ তালাকের পরে যখন স্বামী স্ত্রী পৃথক বসবাস করা শুরু করল , তখন তারা আবার ইচ্ছে করলেই বিয়ে বসতে পারবেনা । তাদের উপর একটা নিষেধাজ্ঞা জারী আছে ।

তারা আবার একত্রিত হতে পারবে যদি মেয়েটির অন্য কোথাও আবার বিয়ে হয় এবং কোন কারণে যদি সেখান থেকেও আলাদা হয়ে যায় - তারপর । এর আগে নয় । এখন এই পরের বিয়েটা এটা কিন্তু স্ত্রীকে জোর করে দেয়া যাবেনা । কোন বিয়েই জোর করে দেয়া যাবেনা বা মতের বিরুদ্ধে কোন বিয়েই হবেনা । এটা অনেকেই বুঝেনা - মনে করে এটা মেয়েদের উপর একটা জুলুম বা অন্যায় ।

অথচ এটা করা হয়েছে মেয়েদের বিয়ে - তালাক - আবার বিয়ে এরকম খেলার যেন হাতের পুতুল না হয়ে তা থেকে রক্ষ করার জন্য । এই আইন না থাকলে বিয়ে আর তালাক একটা হস্যকর পন্হায় পরিণত হতে পারত । মনে চাইলাম বিয়ে করলাম আবার ইচ্ছে হলো তালাক দিলাম । আবার মনে হলো দূর ভূল করছি - আবার বিয়ে করলাম । না তেমন হবেনা ।

তালাক দেয়ার সময় চিন্তুা করতে হবে যে - এর পরিণাম হবে মারাত্নক । বিয়ের সময়-ই আসলে যুগলের এই সব আইন ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত এবং সে ভাবেই সতর্ক ভাবে সম্পর্ক রক্ষা করা উচিত । বিয়ের চুক্তিতে কিন্তু উল্লেখ করতে হয়ে - তালাক হয়ে গেলে স্ত্রীকে কত দিন ভরণ পোষণ দিতে হবে এবং কত করে । মেয়ে পক্ষের উচিত এই দিকটা খেয়াল রাখা এবং যথা সম্ভব একটা উপযুক্ত দাবী আদায় করা । যাতে বরপক্ষের নিকট বিয়েটা একটা ছেলে খেলা না হয় ।

আরেকটা বিষয় হলো - অনেকে বলেন এই নিয়মের কারণে সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্হ হয় মেয়েরা । কারণ তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে কেউ বিয়ে করতে চায়না আর পুরুষরা সহজেই বিয়ে করতে পারে । এটা ঠিক । কিন্তু এই আইন না থাকলেতো পুরুষরা তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার চিন্তুাও করতনা । তারা কথায় কথায় তালাক দিয়ে দিতো ।

এরপর নতুন স্ত্রীর সুযোগ সন্ধানী হতো । এই আইনের ফলে - তালাক দেওয়ার প্রবণতা কমানো হয়েছে । যা কিন্তু মেয়েদের জন্য একটা রক্ষা কবচ । আবার মেয়ে যদি কোয়ালিটি সম্পন্ন হয় - সে কিন্তু চাইবেনা তার আগের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে যে তাকে অপদস্হ করে তালাক দিয়ে হেনস্হা করলো । তালাকের পর এখন ছেলে পক্ষের আর কোন সুযোগ নেই - যদিনা মেয়ের কপাল খারাপ হয় যে সে আরেক জনকে জেনে শুনে বিয়ে করল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশঃত সেটাও টিকল না ।

তখন হয়তো সে চাইলে এবং তার পূর্বের স্বামী রাজী থাকলে তারা আবার এক হতে পারবে । সব আইনেরই ভালো মন্দ আছে । যেমন - ছুরি দিয়ে ফলও কাটা যায় আবার মানুষও হত্যা করা যায় । এখন এর জন্য ছুরি দায়ী না বা তার সৃষ্টিকর্তাও দায়ী না । দায়ী হলো যে এর অপব্যবহার করল ।

সুতরাং আল্লাহর আইন মানুষের মঙ্গলের জন্যই কিন্তু মানুষ এর অপব্যবহার করে বা না জেনে এর সমালোচনা করে । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।