আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতি বছর এডিপি বড় হলেও বাস্তবায়নে সাফল্য নেই

ভালবাসি প্রতি বছরই সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় করছে। কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো সাফল্য দেখাতে পারছে না। ফলে অর্থবছরের একটা সময় এসে তা কাঁটছাট করতে হচ্ছে। আর অর্থবছর শেষে বড় একটা অংশ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরও এর বাইরে নেই।

এরইমধ্যে সরকার চলতি অর্থবছরের এডিপি কাঁটছাট করে পাঁচ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৪১ হাজার কোটি টাকা করেছে। এ বছর মূল এডিপি ছিল ৪৬ হাজার কোটি টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২০১২-১৩ অর্থবছরে এডিপি আকার হবে ৫৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় সম্পদের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা (৬০ শতাংশ)। আর প্রকল্প সাহায্য (বিদেশি সাহায্য) ২০ হাজার কোটি টাকা।

তবে বাজেট পেশের আগে এনইসির বৈঠকে নতুন এডিপি অনুমোদন দেয়া হবে। আর অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো সময় এর আকার পরিবর্তন হতে পারে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩৮ শতাংশ। সে হিসেবে অর্থ ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এখন অর্থবছরের বাকি ৪ মাসে বাস্তবায়ন করতে হবে ৬২ শতাংশ।

এ সময়ের মধ্যে সরকারকে খরচ করতে হবে ২৫ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। জানা গেছে, আর্থিক সঙ্কট আর ব্যয় হ্রাসের কারণেই সরকারকে এডিপির আকার ছোট করতে হয়েছে। অপর দিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়াও থেমে আছে। বাজেটের ওপর চাপ কমাতে নতুন জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ধীরে চলনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে যেসব প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দিয়েছে, অর্থ সঙ্কটের কারণে সেসব প্রকল্পগুলোতে চাহিদা মতো অর্থ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে এডিপির আকার ছোট করায় অনেক প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখবে না বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন। তাদের মতে অনেক প্রকল্পেই নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দেয়া হবে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অর্থ সঙ্কটের কারণে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে টানাপোড়েন চলতে থাকে। তাই এবার আরএডিপিতে বড় ধরনের কাঁটছাট করা হয়। চলতি অর্থবছরের ৪৬ হাজার কোটি টাকার এডিপি প্রণয়ন করা হয়।

এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদের পরিমাণ ২৫ হাজার ১৮০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সম্পদের পরিমাণ ২০ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। এবারের সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি সহায়তা কমিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, গত ২০১০-১২ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৯২ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছিল ৯০ শতাংশ।

আর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৮৬ শতাংশ। গত কয়েক বছরের এডিপি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মূল এডিপির আকার ছিল ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এডিপি কাঁটছাট করে নামিয়ে আনা হয় ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। ২০১০-১১ অর্থবছরে মূল এডিপি ছিল ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

যা কমিয়ে আনা হয় ৩৫ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায়। এ ব্যাপারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার ব্যয় হ্রাসের যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে এডিপির আকাড় ছোট করা ছাড়া বিকল্প ছিল না। এখন এ টাকায় এডিপির গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ছাড় অব্যাহত রেখে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অর্থ কমিয়ে দেয়া যেতে পারে। এতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে। তারপরও সরকারকে সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.