চট্টগ্রামের নন্দির হাটের পর এবার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ। তথাকথিত বাংলাদেশি ধর্মীয় সম্প্রীতির মধ্যে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন একেবারে বেমানান। দুটি ঘটনায় মিল একটি। নীরব দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ। এমন টা কেনো হচ্ছে? যেদেশের সরকার হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন সেকুলার।
প্রশাসনে যেখানে নিয়োগ পেয়েছে লীগ পন্থি দলবাজরা। সেখানে এ ধরনের ঘটনার সুযোগ কোথায়। তারপরও ঘটছে। এবং সেটা নির্দিষ্ট বিরতিতে ঘটছে। আগামীতে কোন এলাকায় ঘটে তার অপেক্ষায় রইলাম।
চট্টগ্রামে মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনা ইতিমধ্যে পুলিশ সবার সম্মুখে উন্মোচিত করেছে। মুসলমানরা রাতের আধারে শাবল দিয়ে মসজিদ ভেঙ্গে যে উসকানি চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলো। তা ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দি দিয়েছে ধৃত ব্যক্তি। কিন্তু ঘটনা এতদূর পর্যন্ত যারা ঘটতে দিয়েছে। তাদের কি শাস্তি হলো? চট্টগ্রামের ঘটনার বিস্তার যেভাবে ঘটেছে সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা কি ছিলো?
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মিছিলে বাধাদানকারী ব্যক্তিরা কারা ছিলো? ঘটনার পর যারা ডিসির নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজী ছিলো সেখানে ডিসি সাহেব যেতে কেনো এত দেরি করলেন? দাঙ্গা লাগার পর পুলিশ কেনো দাঙ্গা-কারীদের প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি? একই ঘটনা দেখা গেলো সাতক্ষীরায়।
সেখানেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রাপ্ত খবরে জানা যায়,গত ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় কালীগঞ্জের ফতেপুর হাইস্কুল স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রথিতযশা লেখক আবুল মুনছুরের লেখা হুজুরে কেবলা নামের একটি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। ওই নাটকে মহানবী (স সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে স্থানীয় দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় যথাযথ তদন্ত না করেই কালিগঞ্জ থানা পুলিশ গত ৩০ মার্চ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে থানায় একটি মামলা রেকর্ড করে এবং ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজোয়ান হারুন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মিতা রানী হাজরা কে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনার পরদিন দুপুরে ফতেপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী কয়েক হাজার লোক ওই গ্রামে হামলা চালায় এবং প্রথম দফায় দুই স্কুল শিক্ষকের বাড়ীসহ ৮টি বশত বাড়ীতে হামলা,ভাংচুর,লুটপাট করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
এর আরও একদিন পর রোববার রাতে ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে কালীগঞ্জের মথুরেশপুর ইউনিয়নের চাকদহ গ্রামের হিন্দু সম্পদয়ের আরও ৭ টি বাড়ীতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয় এবং লুটপাট করা হয়। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান খান ও কালীগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ফরিদ উদ্দিনকে ষ্টান্ড রিলিজ করা হয়। সাতক্ষীরা কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম পৃথক তিনটি মামলা দায়েরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আসামী দৃষ্টিপাত পত্রিকার সাংবাদিক মিজানসহ অন্যদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।
নাটকের একজন অভিনেতা ওই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে থানা হাজতে ওই ছাত্র চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছে, ওই নাটকে মহানবী (স.) সম্পর্কে কোন বক্তব্যই ছিল না। এমনকি সে আরও বলে, অভিনয় করা নাটকটির ভিডিও দেখলেই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
রাষ্ট্রের একজন সচেতন ব্যক্তি হিসেবে আমাদের দাবি। এসব ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের উচিত শাস্তি দেয়া হোক। আমরা চাইনা মহল বিশেষ এ নিয়ে রাজনীতি করুক।
খবরের লিংক এই খানে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।