একটা গাড়ী খুজছি , ব্যাক টু দ্য ফিউচারে যাওয়ার গাড়ীটা খুজছি / তথ্যের অংক , যুক্তির জ্যামিতি
শুরুতেই বলে নেই - নাদিয়া শারমিনের জায়গায় আমার নিজের বোনও থাকতে পারতো।
সেটা মাথায় রেখেই বলছি - নাদিয়া শারমিনের মার খাওয়াটা বেশ খারাপ একটা ব্যাপার হইসে।
কিন্তু কাজের কথাটা বলতে গেলে বলতে হবে -
আমাদের ভেতরে নানা ধরনের ইন্সটিংক্ট কাজ করে.....
যেমন আমাদের ছেলেদের ভেতরে কাজ করে জেমস বন্ড ইন্সটিংক্ট......
আমাদের নায়ক অনন্ত জলিল সাহেবের কাজ কারবার দেখেন.....
ঝুঁকিপূর্ণ ৩ তলা - ৪ তলা থেকে ঝাপ দেয়ার দৃশ্যগুলো উনি নিজে করেন স্টান্ট ম্যান ভাড়া না করে....
ব্যাপারটা আর কিছুই না - স্রেফ জেমস বন্ড ইন্সটিংক্ট।
এরকম ইন্সটিংক্ট থেকে ইয়াং বয়সে অনেক ছেলে অনেক কিছু করে।
কেউ কেউ হেভী মেটাল রক স্টার হয় , ড্রাম ড্রুম বাজিয়ে , চিল্লা ফাল্লা করে দুনিয়া খবর করে ফেলবে !
কেউ কেউ রাজনীতিও করে , লিডার হয়।
কেউ কেউ আবার সাহসি পেশা গুলোতে যায় এই ইন্সটিংক্ট থেকেই।
যেমন পুলিশ , আর্মি , নেভি , এয়ারফোর্স এসব।
ছেলেদের বেলায় যেমন জেমস বন্ড ইন্সটিংক্ট কাজ করে , তেমনি একটা মেয়ের বেলায়ও টম্ব রাইডার লারা ক্রফট ইন্সটিংক্ট কাজ করতে পারে......
যদি কোন মেয়ের ভেতরে এই লারা ক্রফট ইন্সটিংক্ট কাজ করেই - তাহলে তাকে বলবো - সঠিক পেশা বেছে নিতে......
আর্মি , নেভি , এয়ারফোর্স , পুলিশ - ডোর ইজ ওপেন এভ্রিহয়্যার ফর দা গার্লস !
এমন কি প্রথম যে আর্মড সার্ভিস কোন পেশায় বাংলাদেশের মেয়েরা সুযোগ পেয়েছিলো সেটা ছিলো ১৯৭৬ সালের ৮ ই মার্চ ।
অনেকেই জেনে বোধহয় চমৎকৃত হবেন বাংলাদেশ মহিলা পুলিশ জিয়াউর রহমানই প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৬ সালের ৮ ই মার্চ ।
সুতরাং নাদিয়া শারমিনের ভেতরে যদি অতি সম্ভব কোন লারা ক্রফট ইন্সটিংক্ট কাজ করে থাকে তাহলে তার পেশা নির্বাচনে ভুল হয়েছে।
কারন সাংবাদিকতা পেশার জন্য লারা ক্রফট ইন্সটিংক্ট না , সাংবাদিকতার জন্য দরকার আগাথা ক্রিস্টির 'মিস মার্পল' ইন্সটিংক্ট !
মিস মার্পলের মত বুদ্ধিমতি এবং সতর্ক দৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া......
যদি আমার সাজেশন নাদিয়া শারমিনের মেজাজ আরও খারাপ করে দেয় তাহলে স্রেফ এটাই বলবো -
আপনি কি ক্রিশ্চিয়ান আমানপৌর কে চেনেন ?
যদি না চিনে থাকেন নিজে একজন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক হয়ে তাহলে মাথায় বাজ পড়ার মত অবাক হবো।
যাইহোক - আমার এই স্ট্যাটাস যারা যারা পড়ছেন তাদের অনেকেই হয়তো ক্রিশ্চিয়ান আমানপৌর কে না চিনে থাকতে পারেন।
ক্রিশ্চিয়ান আমানপৌর হলেন সিএনএন'র চিফ ইন্টারন্যাশনাল করেসপনডেন্ট....
প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধ.....
একই সংগে এবিসি নিউজের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাংকর....
ব্রিটিশ রানির কাছ থেকে সিবিই খেতাব পাওয়া
তার হোল্ড করা এই পজিশনটার ওজন বুঝতে পারেন ?
এবং এই পজিশনটার কতটুকু ক্ষমতা সেটা টের পেতে পারেন ?
হুম - এই নামকাঅয়াস্তে নয় , কামকাওয়াস্তে প্রভাবশালি এই জাঁদরেল সাংবাদিক যখন ইরানে গিয়েছিলেন তখন মাথায় ছিলো হেড স্কার্ফ !
ছিলোনা কোন দম্ভ কিংবা হু কেয়ারস ভাব।
বরং ছিলো যশ্মিন দেশে যদাচারের বুদ্ধিমত্তা।
নীচে আপলোড করা প্রথম ছবিটি সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে।
ইরান গিয়ে মাথায় হেড স্কার্ফ দেয়ায় তার সাংবাদিকতার জাত যায়নি....
ডেইলী মোশনে ক্রিশ্চিয়ান আমানপৌরের ইরান সফর
ভিডিওটা দেখুন , ইরানি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এই মহিলা হাসছিলেন , মাথার হেড স্কার্ফ ঠিক করছিলেন।
ছিলোনা কোন জড়তা কিংবা অস্বস্তি , বিরক্তি।
অথচ হেড স্কার্ফ তার মোটেই কোন নিয়মিত পরিধার্য কিছু নয়।
বাংলাদেশের স্থানীয় একটা চ্যানেলের নারী সাংবাদিক হিসাবে আপনার কাছে ক্রিশ্চিয়ান আমানপৌর নমস্য হওয়া উচিত।
স্বপ্নের আদর্শ হওয়া উচিত !
যদি তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে থাকেন , এবং আমাকে গালাগাল করতে চান আমার এই স্ট্যাটাসটা পড়ে তাহলে বলবো নীচের ছবিগুলো দেখুন।
চিনতে পারছেন কে ?
দুই গোলার্ধময় বিস্তৃত যার সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেতো না সেই মহারানী ভিক্টোরিয়ার নাতনি কুইন এলিজাবেথ।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোহতারামা শেখ হাসিনা মাত্রই ৬ তারিখে কুইন এলিজাবেথের মেমোরিয়াল ভাস্কর্য উন্মোচন করলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনে , পাশে দাড়িয়ে হাততালি দিয়েছেন দিপুমনি।
সেই কুইন এলিজাবেথের তুরস্ক এবং আরব আমিরাত সফরের ছবি এগুলো।
কি দেখছেন ?
রানির মাথায় হেড স্কার্ফ।
তাই না ?
যশ্মিন দেশে যদাচার !
আরব আমিরাতে শেখ জায়েদ মসজিদ পরিদর্শনের সময় হেড স্কার্ফ পরিহিত ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথ
তুরস্কে একটি মসজিদে হেড স্কার্ফ পরিহিত ব্রিটিশ রানীকে কোরান শরীফ উপহার হচ্ছে
আপনি যদি সফল সাংবাদিক হতে চান তো আপনাকেও মিস মার্পলের মত সতর্ক , অনুসন্ধানি এবং বুদ্ধিমতি হতে হবে।
মেনে চলতে হবে যশ্মিন দেশে যদাচারের সুত্রটা।
ছাত্রদলের মিটিং কাভার করতে গেলে জিয়াকে নিয়ে সাবধানে কথা বলবেন
ছাত্রলীগের মিটিং কাভার করতে গেলে শেখ মুজিব নিয়ে সাবধানে কথা বলবেন
হেফাজতের মিটিং এ গেলে তাদের সাথেও তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে সাবধানে কথা বলবেন।
যদি মনে করেন এটা সম্ভব না আপনার পক্ষে তাহলে আপনি পেশা চেঞ্জ করুন।
টম্ব রাইডার লারা ক্রফট ইন্সটিংক্ট থাকলে আর কিছু হোক বা না হোক - চাইলে এভারেস্ট রাইডার নিশাত মজুমদার কিংবা ওয়াসফিয়া নাজরিন হয়ে যেতে পারেন।
বেটার লাক নেক্সট টাইম , সুস্থ হয়ে উঠুন.....
কমেন্ট সেকশনে আমার পক্ষে এবং বিপক্ষে যারা বলছেন - ২ পক্ষেই আমার পোস্টের মূল বিষয় নিয়ে মিস আন্ডারস্ট্যানডিং হচ্ছে।
নীচের অংশটুকু দেখুনঃ
হিজাব , বোরখা , স্কার্ফ এগুলা এই পোস্টের ইস্যু না
কোথাও সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে সেখানে তারা সাংবাদিককে ওদের কায়দা কেতায় কুর্নিশ না করলে আক্রমণ করবে তাহলে সেভাবেই কুর্নিশ করতে হবে।
যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে ওরা ৩০ মিনিটের বেশী কথা বলবেনা , এর বেশিক্ষন ঐ সাংবাদিককে সেখানে থাকতে দেবেনা , তাহলে ৩০ মিনিটের ভেতরে ইন্টারভিঊ বা রিপোর্ট শেষ করতে হবে - তাহলে ৩০ মিনিটের ভেতরেই করতে হবে।
যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে ওরা শর্ত দেবে কোন কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা যাবেনা , তাহলে সেই সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা যাবেনা - সেটা মেনেই সাংবাদিককে কাজ করতে হবে।
যদি ওরা শর্ত দেয় যে আমাদের এখানে রিপোর্টিং করতে আসলে মাথায় হিজাব দিয়ে আসতে হবে তাহলে হিজাব দিয়ে আসতে হবে।
যদি ওরা শর্ত দেয় যে আমাদের এখানে এই এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করা যাবেনা , কোন তর্ক বিতর্ক করা যাবেনা তাহলে যাবেনা - এটা মেনেই রিপোর্ট শেষ করতে হবে।
যশিমন দেশে যদাচার বলতে আমি এটাই বুঝাইসি।
এটা পোশাক কিংবা মাথায় হেড স্কার্ফ বিষয়ক কিছু না।
ক্রিশিয়ান আমানপৌর কিংবা রানি এলিজাবেথের মাথায় হেড স্কার্ফ পড়াটা এই যশিমন দেশে যদাচারের একটা একজ্যাম্পল মাত্র।
সেটা আরো নানাভাবে হতে যেটা উপরে বললাম।
আর , হ্যা একই সুত্র "যশ্মিন দেশে যদাচার" - এটা পুরুষ সাংবাদিকদের জন্যও প্রযোজ্য ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।