আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মীরাক্কেল ... কাকে বেক্কেল বানানোর ফন্দি? দাদাদের সাথে এত ঘষাঘষির কি দরকার?

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল (গতকাল হঠাৎ করে খেয়াল করলাম কমেন্ট ব্যান উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। পাঠকদের মতে যে পোস্টের কারণে এমন ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছিল, সেটা নিতান্তই যুক্তি তর্ক পরাজিত হয়ে গায়ের জোরে কন্ঠরোধ করার অপচেস্টা। এর পরেও লেখা চালিয়ে গিয়েছি। আমার সেই দিনগুলিতে যে সব সহব্লগার নিয়মিত উপস্থিত হয়ে প্রেরণা জুগিয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। নিচে তাদের তালিকা দেয়া হলো।

শ্রদ্ধেয় জুলভার্ন ভাই, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, নাহিয়ান বিন হোসেন, ভারসাম্য, বান_দর, সারথিমন, স্বাধীকার, কামরুল হাসান শাহি, লুকোচুরি, কলমবিডি, সুচিন্তিত মতবাদ, রামন, ক্ষুধিত পাষান, বাংলাদেশি পোলা, বনপলাশের পদাবলি, শায়মা এবং আরো অনেকে। ( অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো নাম বাদ পড়লে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ) বিশেষ করে আমার বাবার অসুস্থতা বিষয়ক পোস্টে যারা আমাকে সাহস জুগিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে আমি আমার বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি (শুধু এক মাল্টি নিকধারি বেজন্মেকে ছাড়া। ) অশ্রু জলে লেখা হবু এপিটাফ ব্লগে প্রায়ই দেখি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি টিভি অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ মাতামাতি। লোকের মুখেও শুনি বাংলাদেশের বোধবুদ্ধিহীন অনেক দর্শকের কাছেও নাকি অনুষ্ঠানটি বেশ জনপ্রিয়।

তাই একটি এপিসোড দেখেই ফেললাম, যেটাতে নাকি বাংলাদেশ থেকে কিছু প্রতিযোগি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবু হেনা রনির কৌতুকগুলি অন্তত সুস্থ রুচির নয়। শালি দুলাভাই কিংবা মহিলা ডাক্তারদের নিয়ে বলা কৌতুকগুলি রসময় গুপ্তের বইয়ের খানিকটা ভদ্র সংস্করণ মাত্র। আর সেই খাচ্চর খাচ্চর কথা শুনে উপস্থাপকসহ বাকিরা যেভাবে হেসে কুটি কুটি, তাতে কৃত্রিমতা প্রবল। শুনলাম রনি নাকি যুগ্মভাবে সেখানে চ্যাম্পিয়ানও হয়েছে।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ভাষা এক হলেও পঃ বঙ্গের সাথে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য , সামাজিক আচরন, মানসিকতা ইত্যাদি সম্পুর্ণ বিপরীত মেরুর। বিশেষ করে বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন ধারণ করে চলেছে, পঃ বঙ্গের মানুষের মধ্যে সেটা ছিটে ফোটা নেই। তা মুখে যত কথাই বলুক না কেন। পঃ বঙ্গে জমিদারি প্রসাদ বানিয়ে, এই তো ৪৭ সাল পর্যন্ত পুর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, শোষন করে, ঐ পারের মানুষ এক ধরণের উন্নাসিকতা লালন করতো। সেই মানসিকতা আজ পর্যন্ত বিদ্যমান, যা এতদিন তারা সাম্যবাদি অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশে ঢেকে রেখেছিল।

বামদের পতনের পর মমতার নেতৃত্বে সেই উন্নাসিকতা এখন দিনের আলোর মত প্রকাশিত হয়েছে। সেই সাম্প্রদায়িক পঃ বঙ্গিয় মানুষ, হঠাৎ করেই বাংলাদেশ দরদি হয়ে গেলো, এটা বোধবুদ্ধিহীনরা বিশ্বাস করলেও করতে পারে। অনেকে ১৯৭১ সালের কথা বলবেন। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শরণার্থি গ্রহনের সিদ্ধান্তটি ছিল ভারতের কেন্ত্রিয় সরকারের। ইন্দিরার মত লৌহ মানবির কথা অগ্রাহ্য করার মত শক্তি পঃ বঙ্গের মত অনগ্রসর একটি রাজ্যের ছিল না।

কেননা বেশি ট্যা ফো করলে সেখানে রাজ্য সরকারকে হঠিয়ে কেন্দ্রের শাসন চালু করার ঝুকি তেনারা নিতে চাননি। তাছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হলে আবার ৪৭ পুর্ববর্তি হিন্ডারল্যান্ডে পরিণত করার একটা আশা তো ছিলই। এজন্যই শুনি বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর কলিকাতার প্রভাবশালিরা আনন্দচিত্তে বলেছিলেন, যাক শেষ পর্যন্ত পাকিস্থান ভাঙ্গলো। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, একথাটি কেউ বলেননি। অর্থাৎ বাংলাদেশ স্বাধীন নয়, পাকিস্থান ভাঙ্গাই ছিল তাদের স্বপ্ন।

স্বাধীনতার পর কি হয়েছিল, সেটা উল্লেখ করলাম না। তবে ওই পারে জন্ম নেয়া কিছু রিফিউজি ৪৭ এ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সাংস্কৃতিক মহলে প্রবল প্রতাপে প্রতিষ্ঠিত হলেও, নাড়ির টান ভুলতে পারেনি। তাই কথা বার্তায় লেখায় এমন আবহের সৃস্টি করেছিল যে, মনে হতো দাদারা সুমহান আর আমরা চাষাভুষা। এ কারণেই ৯০ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তে বাম থেকে পল্টি খেয়ে ঘোর পুজিবাদি বনে যাওয়া অভিনেতা, বেফাসে বলে ফেলেছিল যে, আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা পুর্ব বঙ্গে জন্ম নিয়েছি। পুর্ব বঙ্গ? বাংলাদেশ নয়? অথচ বিভিন্ন বিশেষ মাসে এই সব সারমেয়দের গলাবাজিই বেশি চোখে পড়ে।

কথায় কথায় যে সব লোকেরা পুর্ব বঙ্গ পশ্চিম বং বলে, ওরা বাংলাদেশের কেউ না। বিনা ভিসায় বাংলাদেশে অবস্থানের কারণে ওদের দেশ থেকে বহিস্কার করা উচিত। বাংলাদেশের মানুষ খুব সহজ সরল। ওদিকে বিশ্ব ক্লিকবাজ বৃটিশদের চামচামি করে উন্নতি করে না পারুক, অন্তত ওদের কুট কৌশলগুলি কলিকাতার দাদারা ভালোই রপ্ত করেছে। এজন্যই তো দেখি প্রণব এক মুখে চাল রফতানির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলে যায়, আর পিনাক চকোত্তি আমরা না খেয়ে তো আপনাদের খাওয়াতে পারবো না বলে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ জায়েজ করে।

আর মমতার কথা কি বলবো? বাংলাদেশকে বাপের সম্পত্তি মনে করা হাসিনার দেয়া টন টন ইলিশ গিলে দিব্যি চোখ উলটে ফেললো। আমাদের দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সাংস্কৃতিক জগতের বুইড়া ধামড়াগুলি যতই দাদা দাদা করে গলে যাক, সাধারণ দেশপ্রেমিকদের উচিত হবে না , তাদের অনুকরণ করা। যারা নিজেদের বাঙালি পরিচয়ের আগে ভারতীয় পরিচয় দেয়, যারা ইচ্ছা করে বাংলা ভাষাকে বিজাতিয় হিন্দি দিয়ে প্রতিস্থাপনের মত জঘণ্য কাজ করতে পারে, যাদের ইতিহাস সাম্প্রদায়িকতায় দুস্ট, যারা বাংলাদেশিদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ৪৭ পুর্ববর্তি শোষনের স্বপ্ন দেখে, তাদের সাথে আমাদের কোন আলাদা সম্পর্ক থাকতে পারে না। তাই দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিদের উচিত হবে, ওদের অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়া। কারণ ওদের সাথে মাখামাখি করা মানে ওদের পাতা ফাদে পা দিয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা।

তবে হ্যা, কোনদিন যদি ওরা ভারত থেকে স্বাধীন হয়ে আসতে পারে, সাম্প্রদায়িক মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে পারে, এবং বাংলাদেশের প্রতি ঘৃণামুলক মানসিকতা ছাড়তে পারে, সেদিন হয়তো সম্পর্কের কথা ভেবে দেখা যেতে পারে। এর আগে নয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.