মুফতী রফীকুল ইসলাম আল-মাদানীঃ
মুসলমানদের বিরুদ্ধে লা-মায্হাবীদের আক্রমণের স্বরূপ
এক
মায্হাব্ ও মায্হাব্-অবলম্বীদের প্রতি লা-মায্হাবীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া
১।
মায্হাব মানা বা তাক্বলীদ করা এবং মায্হাব্-অবলম্বীদের প্রতি বিরাগ-বিদ্বেষ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়েই কথিত “ আহলে হাদীস ” মতবাদের আত্নপ্রকাশ। তাই, মায্হাব্ ও মায্হাব্পন্থীদের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে অসংগতিপূর্ণ, জঘণ্যতম ও ন্যাক্কারজনক কটুক্তিপূর্ণ বই-পুস্তক তারা বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে বিতরণ করে যাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ তাদের পুস্তকগুলো থেকে কয়েকটি উক্তি নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
২।
লা-মায্হাবীদের বহুল আলোচিত বই “ কাটহুজ্জাতীর জাওয়াব ” বইয়ের লিখক মাওঃ আবু তাহের বর্দ্ধমানী লিখেছেঃ
“ তাক্বলীদ হচ্ছে ঈমানদারদের জন্য শয়তানের সৃষ্ট বিভ্রান্তি।
”
( কাটহুজ্জাতীর জাওয়াবঃ পৃ - ৮৩)
৩।
অত্যন্ত বিতর্কিত বই “ তাওহীদী এটম বোম ” বইয়ের প্রণেতা মাওঃ আব্দুল মান্নান সিরাজনগরী (বগুড়া) লিখেনঃ
“ মুক্বাল্লিদগণকে মুসলমান মনে করা উচিত নয় । ”
( তাওহীদী এটম বোমঃ পৃ - ১৫)
৪।
রংপুর শোলবাড়ী নিবাসী মোঃ আব্দুল কাদের লিখেনঃ
“ মায্হাবীগণ ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত, তাদের মধ্যে ইসলামের কোন অংশ নেই। ”
( তান্বিহুল গাফেলীন, আব্দুল কাদির রচিতঃ পৃ – ৭ )
৫।
“ ই’তেছামুস সুন্নাহ ” গ্রন্থের রচয়িতা মাওঃ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদী লিখেঃ
“ চার ইমামের মুক্বাল্লেদ এবং চার তরিকার অনুসারীগণ মুশরিক ও কাফির। ”
( ইতেছামুস্ সুন্নাহ্: পৃঃ ৭-৮ )
এভাবে জফরুল মুবিন প্রণেতা মৌঃ মুহিউদ্দীন, তরজমানে ওহ্হাবিয়্যাহ প্রণেতা নবাব ছিদ্দীক হাসান খান এবং লা-মায্হাবীদের সর্বশ্রেষ্ঠ ফাতওয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে নাজিরিয়ার সংকলক মৌঃ নাজিমুদ্দীন প্রমুখ মায্হাব-অবলম্বীদেরকে কাফির, মুশরিক, বি’দআ’তী ও জাহান্নামী বলে ফতোয়া দিয়েছে।
( দ্রঃ জফরুল মুবিনঃ পৃঃ ১৮৯-২৩০-২২৩; তরজমানে ওহ্হাবিয়্যাহঃ পৃঃ ৩৫-৩৬; ফতোয়ায়ে নাযীরিয়াঃ পৃঃ ১/৬৯-৯৭)
পর্যালোচনা
১।
কথিত আছেঃ যে কাপড় খুলে রাস্তার পার্শ্বে মলত্যাগ করে তার তো কোন লজ্জানুভূতি নেই। কিন্তু যে প্রত্যক্ষ করছে সে লজ্জায় কাতর।
ঠিক অনুরূপভাবে যারা এ সমস্ত মাতলামী প্রলাপ ব্যক্ত করেছে তাদের কোন লজ্জানুভূতি না হলেও মূলতঃ এগুলোর আলোচনা-পর্যালোচনা করতে আমাদের লজ্জাবোধ হচ্ছে।
২।
শি’য়া সম্প্রদায় ও লা-মায্হাবীদের গুটিকয়েক ব্যতীত মুসলিম উম্মাহর পূর্ববতী ও পরবর্তী শরীয়ত বিশেষজ্ঞগণ, সমস্ত মুফাস্সির, মুহাদ্দিস, হাদীস সংকলক, ব্যাখ্যাকারক প্রায় সবাই কোন না কোন মায্হাবের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবু-দাউদ, তাহাবী, নাসাঈ, তিরমিযী, ইবনে-মুঈন, ইবনে তাইমিয়্যাহ, মোল্লা আলী ক্বারী, হাফেয যাহাবী, ইবনে-হাজার আসক্বালানী প্রমুখ সকলেই তো এ পথের পথিক।
তারা সবাই যদি কাফির-মুশরিকই হয়ে থাকে তাহলে, তাদের সংকলিত হাদীস ও মতামত তারা গ্রহণ করে কোন্ হাদীসের ভিত্তিতে? অনুরূপভাবে হাদীসের বর্ণনাকারীগণও তো কোন না কোন মায্হাবের মুক্বাল্লিদ ছিলেন।
এদের বর্ণনার উপর লা-মায্হাবীদের আস্থা ও বিশ্বাস হয় কোন্ দলীলের মাধ্যমে? দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে বি’দআ’তী, কাফির, মুশরিক ও জাহান্নামী আখ্যায়িত করতঃ শুধু তারা গুটি কয়েকজন বেহেশতে বসবাস করতে চায়। আল্লাহর বেহেশত কি তাদের সংকীর্ণ হৃদয়ের মত এতোই ছোট? বি’দআ’তী, কাফির, মুশরিক আর জাহান্নামী আখ্যায় আখ্যায়িত করেছে তারা দুনিয়ার সবাইকে, কিন্তু প্রশ্ন হল, তারা এ যাবৎ মুসলমান ও বেহেশতী বানিয়েছে কয়জনকে? তারা কি মানুষকে কাফির-মুশরিক বানানোর দায়িত্ব পেয়েছে না মুসলমান বানানোর?
তাদের এ অবস্থার প্রতি বিব্রতবোধ করেই মুজাদ্দেদে আলফে সানী (রহঃ) কতইনা সুন্দর কথা বলেছেনঃ
“ মায্হাব অমান্যকারীরা যদি এমন বিশ্বাস নিয়ে বসে থাকে, তাহলে তাদের এ ভ্রান্ত ধারণা অনুযায়ী মুসলমানদের সামান্য কয়জন বাদ দিয়ে, বৃহত্তর অংশই তো বিদ’আতী, মুশরিক, কাফির বা পথভ্রষ্ট হিসেবে বিবেচিত হতে বাধ্য। তাই এমন ধারণা তো শুধু এই মূর্খ বা আহ্মকই করতে পারে, যে স্বয়ং তার মূর্খতারই খবর রাখে না। অথবা সেই যিন্দীক্ব বা নাস্তিকের জন্যই এমন ধারণা-পোষণ শোভা পায়, যার উদ্দেশ্য বা আকাংখা হচ্ছে মুসলমানদের বৃহত্তর অংশের মধ্যে নিরাশা সৃষ্টি করতঃ খোদ দ্বীন ইসলামকেই আংশিক বা পুরোপুরি অচল করে দেয়া। উক্ত ধারণা পোষণকারী শ্রেণীর লোকজন গুটিকয়েক হাদীস মুখস্থ করতঃ শরীয়তের সমস্ত বিধি-বিধান শুধু এই কয়েকটি হাদীসের মধ্যেই সীমিত হবার বদ্ধমূল ধারণা নিয়ে বসে আছে।
নিজের অজানা সবকিছুকে তারা অস্বীকার করে চলেছে। ”
( মাক্তুবাতে ইমাম রাব্বানীঃ ২/১০৭-১০৮ মাক্তুব নং – ৫৫ (ফার্সী) )
কিছু কথাঃ
মায্হাব চতুষ্টয়ের তাক্বলীদের ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে 'ইজমা' সংঘটিত হয়েছে হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর পূর্বেই। এবং সাথে সাথে মুসলিম উম্মাহর প্রথিতযশা উলামায়ে কিরাম ও বিশেষজ্ঞ ফক্বীহগণ সর্বসম্মতভাবে একাধিক মায্হাবের অনুসরণের দ্বার রুদ্ধ করে কেবল একই মায্হাবের অনুসরণকে জরুরী ও ওয়াজিব বলে ফাত্ওয়া দেন।
নিচে মুহাদ্দিসগণের কিছু মতামত তুলে ধরছিঃ
১। মুসলিম শরীফের প্রসিদ্ধতম ও সর্বশ্রেণীতে গৃহীত ব্যাখ্যা ‘আল্ মিনহাজ’ প্রণেতা ইমাম নববী (রহঃ) (মৃঃ ৬৭৬ হিঃ) ‘রাওযাতুত তালেবীন’ নামক গ্রন্থে লিখেনঃ
“উলামাগণ বলেন, ইজতিহাদে মুতলাক ইমাম চতুষ্টয় পর্যন্ত খতম হয়ে গেছে।
তাই তাঁরা ইমাম চতুষ্টয়ের কোন একজনের ‘তাক্বলীদ’ মুসলিম উম্মাহর জন্য ওয়াজিব সাব্যস্ত করে দিয়েছেন। ইমামুল হারামাইন জুয়াইনী (মক্কা-মদীনা শরীফের ইমাম সাহেব – রহঃ, মৃঃ ৪৭৮ হিঃ) মায্হাব চতুষ্টয়ের তাক্বলীদ ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে ‘ইজ্মা’ উল্লেখ করেছেন। ”
( নুরুল হিদায়া হতে সংকলিত, পৃ – ১০; দেখুনঃ ফয়যুল কাদীরঃ পৃ – ১/২১০; শরহুল মুহায্যাব, নববীঃ পৃ – ১/৯১, আদাবুল মুস্তাফতী অধ্যায় )
অন্যত্র তিনি লিখেনঃ
“ যে কোন একটি মায্হাব বেছে নিয়ে একনিষ্ঠভাবে তা অনুসরণ করাই বর্তমানে অপরিহার্য। ”
( আল্-মাজমু’ শরহুল মুহায্যাব্, পৃ – ১/১৯ )
২। গাইরে মুক্বাল্লিদ্দের অন্যতম মান্যবর ইমাম, আরব বিশ্বের সর্বনন্দিত লিখক শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহঃ) (মৃঃ ৭২৮ হিঃ) লিখেছেনঃ
“ মুসলিম উম্মাহর ‘ইজ্মা’ উপেক্ষা করে মায্হাব চতুষ্টয়ের বিপরীতে কোন মায্হাব রচনা বা গ্রহণ বৈধ হবে না।
”
( ফাত্ওয়া-ইবনে তাইমিয়্যাঃ পৃ – ২/৪৪৬ )
ইচ্ছামত চার মায্হাবের যখন যেটি খুশি সেটি অনুসরণ করা সকল ইমামের ঐক্যমতে হারাম বা অবৈধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
(ফাত্ওয়া-ইবনে তাইমিয়্যাঃ পৃ – ২/২৪১ )
৩। প্রখ্যাত উসূলে হাদীস বিশারদ, ইবনি নুজাইম (রহঃ) (মৃঃ ৯৭০ হিঃ) লিখেনঃ
“ যে ব্যক্তি ইমাম চতুষ্টয়ের বিপরীত মতামত পোষণ করবে সে মুসলিম উম্মাহর ‘ইজমা’ তথা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত-বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হবে। ”
( আল্-আশ্বাহ্ ওয়ান নাযাইরঃ পৃ – ১৩১ )
৪। আল্লামা ইমাম ইবনে হাজার মক্কী (রহঃ) (মৃঃ ৯৭৩ হিঃ) তাঁর স্বীয় প্রসিদ্ধ কিতাব ‘ফাত্হুল মুবীন’ এ লিখেনঃ
“ আমাদের যুগের বিশেষজ্ঞদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবু হানীফা, শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ বিন হাম্বল – এ চার ইমাম ব্যতীত অন্য কারও তাক্বলীদ (অনুসরণ) জায়িয নয়।
”
( ফাত্হুল মুবীনঃ পৃ – ১৯৬ )
৫। আল্লামা শা’রানী (রহঃ) (মৃঃ ৯৭৩ হিঃ) তাঁর বিখ্যাত কিতাব আল্-মিযানে লিখেনঃ
“ নিজে পথভ্রষ্ট না হওয়া ও অপরকে পথভ্রষ্ট না করার জন্য নির্দিষ্ট মায্হাবের অনুসরণ জরুরী। ”
( ইনতেছারুল হক্ব হতে সংকলিতঃ পৃ – ১৫৩ )
৬। শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (রহঃ) (মৃঃ ১১৭৬ হিঃ), লা-মায্হাবীদের কাছেও যিনি গ্রহণযোগ্য, তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগায় লিখেনঃ
“ সু-বিন্যস্ত গ্রন্থবদ্ধ এ চার মায্হাবের উপর সকল ইমামগণের ‘ইজ্মা’ তথা ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ”
(হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাঃ পৃ – ১/১২৩ )
৭।
আহলে হাদীস নামক দলের অন্যতম আলিম মুফতী ছদরুদ্দীন বলেনঃ
“ চার মায্হাবের কোন নির্দিষ্ট মায্হাব নির্বাচন করা রসূল (সঃ) এর সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। ”
( তামবীহুদ্দাল্লীনঃ পৃ – ৪৫ )
একটি হাদীসে আল্লাহর রসূল (সঃ) ইরশাদ করেনঃ
“ নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার উম্মতকে কোন ধরণের ভ্রষ্টতায় ‘ইজমা’ বা ঐক্যবদ্ধ করবেন না। আল্লাহর কুদরতী হাত মুসলমানদের জামাআতের উপর। যারা মুসলমানদের পথের বিপরীত রাস্তা গ্রহণ করবে তারা বিচিত্রভাবে দোযখে যাবে। ”
( তিরমিযীঃ পৃ – ৪/৪০৫, হাঃ ২১৬৭; মুস্তাদরাকে হাকিমঃ পৃ – ১/১১৬, হাঃ ৩৯৭
বুখারী ও মুসলিম শরীফসহ অসংখ্য হাদীসগ্রন্থে হযরত আব্বাস (রঃ) সহ ১৭ জন সাহাবী (রঃ) থেকে সমার্থবোধক শব্দে বর্ণিত।
)
মুফাসসিরগণের মাযহাবঃ
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদ ইমাম ইবনে মঈন (রহঃ) এর মায্হাবঃ
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাদ, হাদীসের জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বজন স্বীকৃত ইমাম বিশেষত হাদীস যাচাই-বাছাই বা ইল্মুল্ জারহ্ অ-তা’দীলের অতুলনীয় ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্যাসাগর ইয়াহ্ইয়া ইবনে মঈন (রহঃ) অসীম জ্ঞানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি বল্গাহীন পথ পরিহার করে ইমাম আবু হানীফার তাক্বলীদ করে চলতেন।
এ সম্পর্কে তাঁর নিজের মত দেখুনঃ
“ আমার নিকট গ্রহণযোগ্য ক্বিরাআত হামযার ক্বিরাআত এবং গ্রহণযোগ্য ফিক্বহ ইমাম আবু হানিফার ফিক্বহ। সকল মানুষকেও আমি এর উপর ঐক্যবদ্ধ পেয়েছি। ”
( তারিখে বাগদাদঃ পৃ – ১৩/৩৪৭ )
ইমাম ইবনে মঈন (রহঃ) এর মায্হাব সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বর্ণনা করেনঃ
“ ইয়াহইয়া ইবনে মঈন জারহ অ-তা’দীলের ইমাম এবং শীর্ষস্থানীয় হানাফীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ”
( মা’রিফাতুল্ মুতাকাল্লাম ফীহিম…যাহাবীঃ পৃ – ৭, ছাপা, মিশর ১৩২৪ হিঃ )
ইবনে মঈনের প্রশংসা করতে গিয়ে ইমাম আহমদ (রহঃ) বলেনঃ
“ ইমাম ইবনে মঈন যে হাদীস সম্পর্কে জানেন না সেটি হাদীস নয়।
”
( তাহযীবুত্ তাহযীব, ইবনে মঈনের জীবনী পর্বঃ পৃ - ১১/২৯ )
বস্তুত ইমাম ইবনে মঈন হাদীসের বর্ণনাকারীর সত্যায়ন ও হাদীসের যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সত্যিই অতুলনীয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রতীয়মান হয় যে, অবশ্যই যাচাই-বাছাই করতঃ হাদীসের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ও বিশুদ্ধ মায্হাব হিসেবেই তিনি হানাফী মায্হাবকে মনোনীত করেছেন। অতএব, যারা বলে, হানাফী মায্হাব বিশুদ্ধ হাদীস পরিপন্থী, তাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা ও আল্লাহর ভয় নিয়ে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মুহাম্মদ ইব্নে আব্দুল ওহ্হাব নজদী (রহঃ) এর মায্হাবঃ
লা-মায্হাবীরা দাবী করে থাকে যে, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওহহাব নজদীও লা-মায্হাবী ছিলেন। কিন্তু তিনি একজন হাম্বলী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন এবং তিনি নিজেই স্বীয় মায্হাব সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন।
-দেখুনঃ আল-হাদিয়াতুস্ সুন্নাহঃ পৃ – ৯৯
সাথে সাথে চার মায্হাবের যে কোন একটির ত্বাকলীদ করা যাবে এবং এই চার মায্হাব ছাড়া অন্য কোন মায্হাবের অনুসরণ করা যাবে না বলেও তিনি মত প্রকাশ করেছেন।
-তারীখু নাজদ-আলূসীঃ পৃ – ৫৪-৫৬; ছিয়ানাতুল্ ইনসানঃ পৃ – ৪৭১১
লা মায্হাবীদের অন্যতম মান্যবর ইমাম, ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রহঃ) এর মায্হাবঃ
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা (রহঃ) (মৃঃ ৭২৮ হিঃ) একজন যুগশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, আল্লামা ও বিখ্যাত কলম সৈনিক ছিলেন। অসংখ্য রচনাবলী, ফাত্ওয়া ও সমকালীন জিজ্জাসার জবাব তাঁ মহাজ্ঞানের উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করে। আরব বিশ্বে তিনি আজও শাইখুল ইসলাম হিসেবে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর গুণগ্রাহী ভক্তবৃন্দদেরকে প্রতারণার মানসে তথাকথিত আহলে হাদীস বা গাইরে মুক্বাল্লিদ ও লা-মায্হাবীরা দাবি করে থাকে যে, ইবনে তাইমিয়্যা গাইরে মুক্বাল্লিদ ও লা-মায্হাবী ছিলেন।
আর সকল গাইরে মুক্বাল্লিদরা ইবনে তাইমিয়্যার ত্বাকলীদ করে এবং তাঁরই মায্হাব অনুসরণ করে থাকে।
তাদের এ দাবী যদি মানা হয়, তাহলে প্রমাণিত হয় যে, লা-মায্হাবীরা মায্হাব মানে না বা ত্বাকলীদ করে না বলে জনসাধারণকে কেবল ধোঁকাই দিয়ে যাচ্ছে। অথচ তারা নিজেরাই ইমাম ইবনে তাইমিয়্যার তাক্বলীদ করে এবং তাঁরই মায্হাব অনুসরণ করে চলেছে।
বস্তুত ইবনে তাইমিয়্যা গাইরে মুক্বাল্লিদ বা লা-মায্হাবী ছিলেন মর্মে কেউ কোন তত্ত্ব আদৌ পেশ করতে পারবে না। বরং এটা সর্বজন স্বীকৃত যে, ইবনে তাইমিয়্যা ও তাঁর একান্ত শিষ্য ইবনুল ক্বাইয়্যিম উভয়ই হাম্বলী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন।
তাঁর রচিত ৩৭ খন্ডে সমাপ্ত অমর গ্রন্থ ‘মাজমুয়াতুল ফাত্ওয়া’ এরই সাক্ষ্য বহন করে।
লা-মায্হাবীদের অন্যতম পুরোধা ছিদ্দীক হাসান খানও ইবনে তাইমিয়্যাকে হাম্বলী মায্হাবের বলেই উল্লেখ করেছেন।
-দেখুনঃ আল-জুন্নাহঃ পৃ – ৩৮
অন্যদিকে লা-মায্হাবীরা যতই বলুক তারা ইবনে তাইমিয়্যাকে অনুসরণ করে, প্রকৃতপক্ষে তাও ভুল। শুধু বিতর্কিত কয়েকটি বিষয় ব্যতীত অসংখ্য-অগণিত বিষয় এমন রয়েছে, যেগুলোতে ইবনে তাইমিয়্যার সঙ্গে গাইরে মুক্বাল্লিদদের কোন মিলে নেই।
উদাহরণস্বরূপ শুধু একটি বিষয় তুলে ধরছিঃ
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা (রহঃ) তারাবীহর নামায বিশ রাকআত সুন্নাত বলে উল্লেখ করেছেন।
-মাজমুয়ায়ে ফাত্ওয়াঃ খঃ ২৩, পৃ – ১১২
পক্ষান্তরে লা-মায্হাবী বা আহলে হাদীস নামধারী নতুন ফেরকাটি সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে আট রাক্আত তারাবীহর নতুন মতবাদ প্রতিষ্ঠার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
পবিত্র মক্কা-মদীনার ইমামগণের মাযহাবঃ
প্রায় এক হাজার বছর পর্যন্ত চার মায্হাবের অনুসারীগণ চার ইমামের পিছনে ভিন্ন-ভিন্নভাবে জামাআতে নামায আদায় করেছেন। হানাফী মায্হাবের অনুসারীগণ হানাফী মায্হাবের ইমামের পেছনে, মালেকী মায্হাবের অনুসারীগণ মালেকী মায্হাবের ইমামের পেছনে, এভাবে অপর দুটি মায্হাবের অনুসারীগণও তাঁদের স্ব-স্ব মায্হাবের ইমামের পেছনে নামায আদায় করতেন। এ ধারা হারাম শরীফে চলে আসছে প্রায় এক হাজার বছর নাগাদ। কিন্তু ১২১৮ হিজরীর ৮ই মুহাররম বাদশা সাউদ ইবনে আব্দুল আযীয তাঁর সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে উমরার উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফ প্রবেশ করেন।
তিনি তখন তথাকথিত সংস্কারের নামে যেসব কাজ করেন, তন্মধ্যে একটি হল, তিনি হারাম শরীফে সকল মুসল্লীকে একই ইমামের পিছনে একই সাথে জামাআতে নামায আদায়ের নির্দেশ জারী করেন।
( তারীখে মামলাকাঃ পৃ – ২৫ )
উল্লেখ্য যে, তদানীন্তনকালে সমগ্র বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানই হানাফী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন। তৎকালে সমগ্র বিশ্বের শত কোটি মুসলমানের জামাআতে প্রায় অধিকাংশ মুসলমানই হানাফী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন। তাই সমগ্র বিশ্ব থেকে হারাম শরীফে আগত এবং সেখানকার স্থানীয় মুসলমানগণের বিশাল জামাআত হানাফী ইমামের পেছনেই সমবেত হতেন। সে সুদীর্ঘকাল যাবৎ হানাফীদেরই রাজত্ব চলে আসছিল।
এমতাবস্থায় এ বিশাল জামাআতের অনুসারীগণ মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মায্হাবের সংখ্যালঘু অনুসারীদেরকে ভিন্ন-ভিন্ন জামাআতে নামায আদায় করার সুযোগ দিয়ে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু সংখ্যালঘুরা ক্ষমতায় এসে তাদের মায্হাবের ইমাম ব্যতীত অন্যদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারী করে সংকীর্ণমনার পরিচয় দিয়েছেন।
তবে আমরা অত্যন্ত গর্বের সাথে বলতে পারি যে, যখন চার ইমাম ছিল তখনও হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী ও হাম্বলী মায্হাবেরই ছিল। গাইরে মুক্বাল্লিদ বা লা-মায্হাবীদের কোন ইমাম ছিল না। আর যখন থেকে এক ইমামের ধারা চলছে তখনও কোন না কোন মায্হাবের অনুসারীই ইমাম হয়ে আসছেন।
আজ পর্যন্ত গাইরে মুক্বাল্লিদ বা লা-মায্হাবীদের কোন ইমাম পবিত্র মক্কা-মদীনায় নিয়োগ হতে পারে নি।
উল্লেখ্য যে, আব্বাসী যুগের প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত পবিত্র মক্কা-মদীনার সকল ইমাম ও বিচারক হানাফী ছিলেন। অতঃপর প্রায় দু’শ বছর খাওয়ারিয্মী ও সালজুক্বীদের অধীনে চলে, তারাও রক্ষণশীল হানাফী ছিলেন। অতঃপর উসমানী ও তুর্কী খেলাফত প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত চলে। তারাও সবাই হানাফী ছিলেন।
( আল-খাইরাতুল হিসান-ইবনে হাজার, মক্কী শাফেয়ীঃ পৃ – ৭২ )
মোটকথা, ইসলামী ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়ে বারশ বছর পর্যন্ত পবিত্র মক্কা-মদীনায় ইমাম ও খতীবের সুমহান দায়িত্ব হানাফী ইমামগণই আঞ্জাম দিয়ে এসেছেন এবং কাযী ও বিচারকের আসনেও তারাই ছিলেন।
( আল-খাইরাতুল হিসান-ইবনে হাজার মক্কী, শাফেয়ীঃ পৃ – ৭২; রদ্দুল মুহতারঃ পৃ – ১/৭৫ )
লা-মায্হাবীদের কোন ইমাম কখনো নিয়োগ হয়নি এবং বর্তমানেও সেখানের সকল ইমাম কোন না কোন মায্হাবের অনুসারী। আজও তারা পবিত্র রমজানে মাসে বিশ রাক্আত তারাবীহ আদায় করেন। গাইরে মুক্বাল্লিদদের নবাবিষ্কৃত ও মনগড়া মতবাদ আট রাক্আত তারাবীহ ও অন্যান্য ভ্রান্ত প্ররোচনা থেকে তাঁরা আজও সংরক্ষিত।
শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ (রহঃ) (মৃঃ ১১৭৬ হিঃ) এর মায্হাবঃ
ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস শাহ্ সাহেব হানাফী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন।
তাঁর নিজের লিখা কিতাবই এর সাক্ষ্য বহন করে।
শাহ সাহেব ও তাঁর গোটা বংশ যে হানাফী ছিলেন এ মর্মে অনেক গাইরে মুক্বাল্লিদ আলিমও স্বীকৃতি দিয়েছেন। যেমনঃ ছিদ্দীক হাসান খান এর মত দেখুনঃ
-ইতিহাফঃ পৃ – ২৯৭
-আল-হিত্তাঃ পৃ – ৭০
-তরজমানে ওহ্হাবিয়্যাহঃ পৃ – ১১
শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ) (মৃঃ ১২৩৯ হিঃ) এর মায্হাবঃ
তিনি ইংরেজবিরোধী ঐতিহাসিক আযাদী আন্দোলনের বিপ্লবী ঘোষক। শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্র জ্যেষ্ঠ পুত্র। পূর্বে তথ্য ও তত্ত্ব সহকারে উল্লেখ করেছি যে, শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ (রহঃ) এর গোটা পরিবারই হানাফী ছিলেন।
এছাড়া তিনি তার রচনাবলীতে তাক্বলীদ ও মায্হাবের প্রতি বিভিন্নভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন। যেমনঃ
-তাফ্সীরে আযীযীঃ সূরা মূলক আয়াত ১০ পৃ – ২৩
-ফাত্ওয়ায়ে আযীযিয়াঃ পৃ – ২/২৪
হযরত ইসমাঈল (রহঃ) (মৃঃ ১২৪৬ হিঃ) এবং সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহঃ) (মৃঃ ১২৪৬ হিঃ) এর মায্হাবঃ
বালাকোটের শহীদ হযরত ইসমাঈল (রহঃ) (মৃঃ ১২৪৬ হিঃ) এবং সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহঃ) (মৃঃ ১২৪৬ হিঃ) উভয়ই হানাফী মায্হাবের পাক্বা মুক্বাল্লিদ ছিলেন।
-ফাত্ওয়ায়ে রশীদিয়াঃ পৃ – ১/১২২-১২৪; তাযকিরাতুর রশীদঃ পৃ – ২/২৭৪
-কাশফুল হিযাবঃ পৃ – ২৪; খাইরুত তাম্কীদঃ পৃ – ৫৩; তাইফা মানসুরাঃ পৃ – ২৪
লা-মায্হাবী আলিম ছিদ্দীক হাসান খানও তাঁকে হানাফী বলে উল্লেখ করেন।
-আল-হিত্তাহ্ পৃ – ৭১
উল্লেখ্য যে, ইসমাঈল শহীদ (রহঃ) এক পর্যায়ে নামাযে হাত উত্তোলন (রাফায়িল ইয়াদাইন) করতেন। তখন এ বিষয়ে একটি কিতাবও রচনা করেছিলেন।
কিন্তু অগণিত বিশ্বস্ত তথ্যানুসারে, বিশেষ করে পাক-ভারতে আহ্লে হাদীসের প্রধান মুখপাত্র নযীর হুসাইনের উস্তাদ আব্দুল খালেকের বর্ণনামতে তিনি পরবর্তীতে হাত উঠানো প্রত্যাখান করেছেন।
-তান্বীহুদ দাল্লীনঃ পৃ – ৮৬-৮৭
আর সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহঃ) তো ঐ আপোষহীন মুজাহিদ যিনি পাক-ভারতে আহ্লে হাদীসের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল খালেককে ১২৪৬ হিজরীতে কথিত আহ্লে হাদীসের মন্ত্র পড়ার কারণেই মুজাহিদ বাহিনী থেকে বহিষ্কার করেন।
-তান্বীহুদ দাল্লীনঃ পৃ – ৩
খাজা নিযামুদ্দীন আউলিয়ার মায্হাবঃ
তিনি হানাফী মায্হাবের অনুসারী ছিলেন। তিনি তাঁর নিজের কিতাব ‘রাহাতুল কুলুব’ এ তা উল্লেখ করেছেন।
-হাদায়িক্বে-হানাফীয়্যাহঃ পৃ – ১০৪
ইমাম আব্দুল হাই লক্ষ্ণৌভী (রহঃ) (মৃঃ ১৩০৪ হিঃ) এর মায্হাবঃ
তিনি মুসলিম বিশ্বের অন্যতম মুহাদ্দিস ও হানাফী মায্হাবের বিশিষ্ট ইমাম ছিলেন।
হানাফী মায্হাব ও ইমাম আবু হানীফার উপর আরোপিত বিভিন্ন বিদ্বেষী অভিযোগের তিনি দাঁতভাঙ্গা উত্তর দিয়েছেন।
-দেখুনঃ আবু রাফউ অত্তাক্মীলঃ পৃ – ৭০ ও ৩৭৪
মুজাদ্দিদে আল্ফেসানী (রহঃ) এর মায্হাবঃ
হিজরী দ্বিতীয় সহস্রাব্দের প্রসিদ্ধ মুজাদ্দিদ, শাইখ আহমাদ আল্ফে-সানী (রহঃ)ও হানাফী মায্হাবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
-মাক্তুবাতে ইমাম রাব্বানী, ফার্সীঃ পৃ – ২/১০৭-১০৮, মাকতুব নং - ৫৫
আরও কিছু মুহাদ্দিসগণের মায্হাবঃ
তাফ্সীরঃ
১। তাফ্সীরে আহকামুল কুরআন প্রণেতা আবু বকর জাস্সাস্ (রহঃ) (মৃঃ ৩৭০ হিঃ)
২। তাফ্সীরে বাহরুল উলূম প্রণেতা নাছর বিন মুহাম্মাদ সামারকান্দী (রহঃ) (মৃঃ ৩৭৫ হিঃ)
৩।
তাফ্সীরে মাদারিকুত তান্যীল প্রণেতা আল্লামা আব্দুল্লাহ্ বিন আহমাদ নাসাফী (রহঃ) (মৃঃ ৭০১ হিঃ)
৪। তাফ্সীরে রুহুল মাআ’নী প্রণেতা আল্লামা আলূসী (রহঃ) (মৃঃ ১২৭০ হিঃ)
৫। সউদী আরবের রাবেতা কর্তৃক রাজকীয়ভাবে প্রকাশিত ছাফ্ওয়াতুত্ তাফ্সীর
৬। আহকামুল কুরআন প্রণেতা কুম্মী (রহঃ) (মৃঃ ৩০৫ হিঃ), উসমানী (রহঃ) (মৃঃ ১৩৯৪ হিঃ)
সহ বিভিন্ন তাফসীরগ্রন্থ যেমনঃ তাফ্সীরে আহমাদী, মায্হারী, ইরশাদুল আক্বলুস্ সালীম, তাজুত্ তারাজিম ইত্যাদির প্রণেতাগণও সবাই হানাফী মায্হাবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
৭।
আল্ অসীত প্রণেতা ইমাম ওয়াহিদী (রহঃ) (মৃঃ ৪৬৮ হিঃ)
৮। মাআলিমুত্ তান্যীল প্রণেতা ইমাম বগবী (রহঃ) (মৃঃ ৫১৬ হিঃ)
৯। মাফাতীহুল গাইব প্রণেতা ইমাম রাযী (রহঃ) (মৃঃ ৬০৪ হিঃ)
১০। তাফ্সীরে বায়যাবী প্রণেতা ক্বাযী বায়যাবী (রহঃ) (মৃঃ ৬৮৫ হিঃ)
১১। লুবাব প্রণেতা আল্লামা আলাউদ্দিন খাযেন (রহঃ) (মৃঃ ৭৪১ হিঃ)
১২।
আল্ বাহরুল মুহীত প্রণেতা ইবনে হাইয়ান (রহঃ) (মৃঃ ৭৪৫ হিঃ)
১৩। তাফ্সীরুল কুরআনুল আযীম প্রণেতা ইবনে কাসীর (রহঃ) (মৃঃ ৭৭৪ হিঃ)
১৪। দুররে মানসূর প্রণেতা ইমাম সুয়ূতী (রহঃ) (মৃঃ ৯১১ হিঃ)
প্রমুখ ইমামগণ শাফেয়ী মায্হাবের ছিলেন।
১৫। আহকামুল কুরআন প্রণেতা ইস্মাঈল বিন আয্দী (রহঃ) (মৃঃ ৩৫৩ হিঃ), ইবনে আরাবী (রহঃ) (মৃঃ ৫৪৩ হিঃ)
১৬।
আল্ মুহাররারুল ওয়াজীয প্রণেতা আবু মুহাম্মদ আন্দুলুসী (রহঃ) (মৃঃ ৫৪৬ হিঃ)
১৭। আল্ জামিউল আহ্কাম প্রণেতা ইমাম কুরতুবী (রহঃ) (মৃঃ ৬৭১ হিঃ)
প্রমুখ মালেকী মায্হাবের ছিলেন।
১৮। কিতাবুল জাওয়াহির প্রণেতা আবদুল ওয়াহিদ সিরাজী (রহঃ) (মৃঃ ৪৮৬ হিঃ)
১৯। যাদুল মাসীর প্রণেতা জামালুদ্দীন বাগদাদী (রহঃ) (মৃঃ ৫৯৭ হিঃ)
২০।
আল্ লুবাব প্রণেতা আবু হাফ্স উমর (রহঃ) (মৃঃ ৮৮০ হিঃ)
২১। আল্ ইসতিগনা বিল কুরআন প্রণেতা ইবনে রজব (রহঃ) (মৃঃ ৭৯৫ হিঃ)
প্রমুখ হাম্বলী মায্হাবের ছিলেন।
( দেখুনঃ এ সমস্ত কিতাবের প্রচ্ছদ; উপরন্তু বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় আত্তাফসীর ওয়াল মুফাসসিরীন লিহুসাইন যাহাবী, আত্ তাবক্বাতুল মুফাসসিরীন)
হাদীস সংকলকগণের মায্হাবঃ
১। ইমাম বুখারী (রহঃ) কে অনেকে মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যে গণ্য করেছেন।
পক্ষান্তরে
ক) শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী (রহঃ) “ আল-ইনসাফ ”, পৃষ্ঠা : ৬৭
খ) আল্লামা তাজউদ্দীন সুবকী, “তবক্বাতুশ্ শাফেয়ীয়ার”, পৃষ্ঠা : ২/২
গ) গাইরে মুক্বাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০
উনারা ইমাম বুখারী (রহঃ) কে শাফেয়ী মাযহাবের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেছেন।
২। ইমাম মুসলিম শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।
( গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আল হিত্তার”, পৃষ্ঠা : ১৮৬ )
৩। আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী (রহ) “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় ইবনে তাইমিয়্যার উদ্বৃত্তি দিয়ে ইমাম নাসাঈ এবং আবু দাউদকে (রহঃ) হাম্বলী মাযহাব অবলম্বী বলেছেন।
অনুরূপভাবে গাইরে মুকাল্লিদ আলেম নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান, “আবজাদুল উলুম”, পৃষ্ঠা : ৮১০ পৃষ্ঠায় উভয়কে হাম্বলী বলে উল্লেখ করেছেন।
ইবনুল ক্বায়্যিম (রহঃ) (মৃঃ ৭৫১ হিঃ) সুদৃঢ়ভাবে ইমাম আবু দাউদকে হাম্বলী বলেছেন।
( ই’লামুল মুয়াক্কিয়ীনঃ পৃঃ ১/২৩৬ )
৪। ইমাম তিরমিযী সম্বন্ধে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দেহে দেহলভী “আল-ইনসাফের” ৭৯ পৃষ্ঠায় মুজতাহিদ তবে হাম্বলী মাযহাবের প্রতি আকৃষ্ট এবং এক পর্যায়ে হানাফী বলেও উল্লেখ করেছেন।
৫। ইমাম ইবনে মাজাহ্কে আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী “ফয়জুল বারী”-এর ১/৫৮ পৃষ্ঠায় শাফেয়ী বলে উল্লেখ করেছেন।
৬। ইমাম ত্বাহাবী (রহঃ) (মৃঃ ৩২১ হিঃ) তো হানাফী মায্হাবের ‘ ব্যারিস্টার ’ হিসেবেই প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।
৭। ইমাম ইসহাক বিন রাহ্ওয়াইকে ইমাম সুবকী (রহঃ) হাম্বলী আর ইমাম কাশ্মীরী (রহঃ) হানাফী বলেছেন।
( তাব্কাতঃ পৃঃ ১/২৩২; ফয়যুল বারীঃ পৃঃ ৫৮ )
হাদীস ব্যাখ্যাকারগণের মায্হাবঃ
১।
অনুরূপ ভাবে বুখারী শরীফের বিশেষ-বিশেষ ব্যাখ্যাগ্রন্থের প্রণেতা, যেমনঃ
ক) “ ফাত্হুল বারী ” প্রণেতা ইবনে হাজার আসক্বালানী - শাফেয়ী
খ) উমদাতুল ক্বারী প্রণেতা বদরুদ্দীন আইনী - হানাফী
গ) ইরশাদুস্ সারী প্রণেতা শিহাবুদ্দীন ক্বাসতালানী - শাফেয়ী
ঘ) ফয়জুল বারী প্রণেতা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী - হানাফী
ঙ) লামিউদ দারারী প্রণেতা রশীদ আহমদ গাংগুহী - হানাফী । (রাহীমাহুমুল্লাহু তাআ’লা)
২। অনুরূপ ভাবে মুসলিম শরীফের বিশেষ-বিশেষ ব্যাখ্যা গ্রন্থ প্রণেতা, যেমনঃ
ক) “ আল-মুফহিম ” প্রণেতা আব্দুল গাফের ফারেসী
খ) “ আল মু’লিম ” প্রণেতা আবু আব্দুল্লাহ আল-মাযরী
গ) ইকমালুল মু’লিম প্রণেতা ক্বাজী আয়ায
ঘ) আল মিনহাজ প্রণেতা ইমাম নববী
ঙ) ফাতহুল মুল্হিম প্রণেতা শিব্বির আহমাদ উসমানী
প্রমুখ এবং নাসাঈ, আবু দাউদ, ত্বাহাবী, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থের প্রবীণ ব্যাখ্যাকারগণ সবাই কোন না কোন মায্হাবের মুক্বাল্লিদ ছিলেন। যা সর্বজন স্বীকৃত ও তাদের জীবনী গ্রন্থ সমূহে এবং অধিকাংশ কিতাবের প্রচ্ছদেই উল্লেখ রয়েছে।
৩।
এছাড়া হাদীসের বর্ণনাকারীদের জীবনী সম্বলিত বিশেষ বিশেষ গ্রন্থ প্রণেতা, যেমনঃ
ক) “ আল-কামাল ফী আসমাইর রিজাল ” প্রণেতা হাফেয আব্দুল গনী আল-মাক্বদাসী
খ) এবং ৩৫ ভলিয়মে মুদ্রিত “ তাহযীবুল কামাল ” প্রণেতা হাফেয আবুল হাজ্জাজ আল মিযযী
গ) ১২ ভলিয়মে মুদ্রিত “ ইকমালু তাহযীবিল কামাল ” প্রণেতা হাফেয আলাউদ্দীন মুগলতাঈ আল হানাফী
ঘ) ২৫ ভলিউমে মুদ্রিত “ ছিয়ারু আলা’মিন নুবালা ” প্রণেতা হাফেয শামছুদ্দীন যাহাবী
ঙ) ১২ ভলিউমে মুদ্রিত তারিখে বাগদাদ প্রণেতা খতীবে বাগদাদী
চ) ৭০ ভলিউমে মুদ্রিত তারিখে দামেশক্ব প্রণেতা হাফেয ইবনে আসাকিরসহ তারাজীমের প্রায় পাঁচ শতেরও অধিক সমস্ত কিতাবেরই সংকলকগণ কোন না কোন মায্হাবের মুক্বাল্লিদ বা অনুসারী ছিলেন।
মাযহাব মানা বা তাক্বলীদ করা এবং ইজমা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
১। সূরা আল্-আম্বিয়া – ৭, সূরা আন নাহল – ৪৩
ফাতহুল গাইব (তাফসীরে কাবীর) পৃ – ১৯/১৯; রূহুল মায়ানীঃ পৃ – ১৪/১৪৮; তাফসীরে মাযহারীঃ পৃ - ৫/৩৪২; লুবাবঃ পৃ – ১২/৬১; বায়যাবীঃ পৃ – ১/৫৪৫; কুরতবীঃ পৃ – ১০/৭২
আল্লামা খতীবে বাগদাদী (রহঃ) – আল্-ফক্বীহ ওয়াল মুতাফাক্বিহ – ৩০৬ আয়াত সূরা আল্-আম্বিয়া – ৭, সূরা আন নাহল – ৪৩
২। সূরা আন্ নিসা – ৫৯
ইবনে কাসীরঃ পৃ – ১/৫৩০; যাদুল মাসীরঃ পৃ – ২/১৪৪; আহকামুল কুরআন থানবীঃ পৃ – ২/৩০০; মারাগীঃ পৃ – ২/১৬৬; আবু সাউদঃ ২/১৫৫
আদিল্লায়ে কামেলাঃ পৃ – ৮০
ভারতবর্ষে লা-মায্হাবীদের অন্যতম পুরোধা নবাব ছিদ্দীক হাসান খানের প্রসিদ্ধ তাফসীরঃ ফাতহুল বায়ানঃ পৃ – ২/৩০৮; আহকামুল কুরআন জাস্সাসঃ পৃ – ২/২৫৭
৩। সূরা আন্ নিসা – ৮৩
তাফসীরে দুররে মানছুরঃ পৃ – ২/১৮৬; ইবনে জারীর তাবারীঃ পৃ – ৫/১০৭; তাফসীরে কাবীরঃ পৃ – ৫/২০৫-২০৬
আহকামুল কুরআন জাস্সাসঃ পৃ – ২/২১৫; মিযান-শারানীঃ পৃ – ২৮; তাফসীরে খাযেনঃ পৃ – ১/৪৭১; ফাতহুল বায়ানঃ পৃ – ২/১৮৪; আল্-লুবাবঃ পৃ – ৬/৫২৬-৫২৭
৪।
সূরা লুকমান – ১৫
কুরতুবীঃ পৃ – ১৪/৬৬; বগবী (মায়ালিমুত তানযীল) পৃ – ৩/৪৯২; যাদুল মাসীরঃ পৃ – ৬/১৬২-১৬৩; আল কাশশাফঃ পৃ – ৩/৪৭৯
৫। সূরা আল্ ফাতিহা – ৬-৭
সূরা আন্-নিসা – ৬৯
তাফ্সীরে মাযহারীঃ পৃ – ১/৯; তাবারীঃ পৃ – ১/১০৬; খাযেনঃ পৃ – ১/১৩; বগবীঃ পৃ – ১/৪১; জাওয়াহেরঃ পৃ – ১/১৮
৬। সূরা আত্-তাওবাহ – ১২২
আহকামুল কুরআনঃ পৃ – ৩/২০৬-২০৭; মায়ালিম, বাগবীঃ পৃ – ২/৩৪০; হামিশু খাযিন, বাগবীঃ পৃ – ২/১৬৯; আল্-লুবাবঃ পৃ – ১০/২৪২; মাযহারীঃ পৃ – ৪/৩২৩
৭। সূরা-আন্ নিসা – ১১৫
তাফ্সীরে মায্হারীঃ পৃ – ৩/২৩৭; তাফ্সীরে আহমাদীঃ পৃ – ৩১৬; তাফ্সীরে কাবীরঃ পৃ – ৩/৩২২; খাযেনঃ পৃ – ১/৪৯৭; তাফসীরে নায়সাপুরীঃ পৃ – ৫/১৭৫
৮। সূরা বাক্বারা – ২৪৩
৯।
সূরা আল্ ইমরান – ১১০
১০। সূরা আল্ ইমরান - ১০৩
১১। সূরা আল্-হাশর - ৫
১২। তিরমিযী শরীফঃ খঃ ৫, পৃ – ৪৩, হাঃ ২৬৭৬, ইল্ম অধ্যায়, হাদীস সম্পর্কে তিনি বলেন
‘ صحيح حسن ’; আবু দাউদঃ পৃ – ৫/১৩, হাঃ ৪৬০৭, সুন্নাহ অধ্যায়; ইবনে মাজাহঃ পৃ – ১/৩২, হাঃ ৪৩, সুন্নাহ অধ্যায়; মুসনাদে আহমদঃ পৃ – ৪/১২৬-১২৭, হাদীস বিশুদ্ধ
১৩। তিরমিযী শরীফঃ খঃ ৫, পৃ – ৫৭০, হাঃ ৩৬৬৩, মানাক্বিবে আবু বকর ও উমর।
হাদীসটিকে তিনি ‘ حسن – হাসান ’ (শুদ্ধ) বলেছেন।
১৪। “ মুত্তাফাকুন আলাইহ ”, বুখারীঃ খঃ ১, পৃ – ৪১, হাঃ ১০০, ইল্ম অধ্যায়; মুসলিমঃ খঃ ৪, পৃ – ২০৫৮, হাঃ ২৬৭৩, ইল্ম অধ্যায়।
১৫। বায়হাক্বীঃ আসসুনান, পৃ – ১০/২০৯, হাদীসঃ ২০৯১১ (মুরসাল)
( হাদীসটিতে দুর্বলতা থাকায় তা এককভাবে প্রমাণযোগ্য না হলেও সমার্থবোধক দলীলের বলে প্রমাণযোগ্য বিবেচিত হবে।
)
১৬। আবু দাউদঃ পৃ – ১/২৪০, হাঃ ৩৩৬; ইবনে মাজাহঃ পৃ – ১/৩২১, হাঃ ৫৭২; বায়হাক্বী আসসুনানুল কুবরাঃ পৃ – ১/২২৮, হাঃ ১০৭৭; দারা কুতনীঃ পৃ – ১/১৪৭, হাঃ ৭১৯
( এ হাদীসের জনৈক বর্ণনাকারী ‘ خريق بن زبير ’ কে কেউ কেউ ‘ بالقوى ليس ’ (পরিপূর্ণ নির্ভরযোগ্য না) বলেছেন। তবে হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত বলে হাসান বা শুদ্ধ হাদীসে গণ্য হবে। ইবনে সাকান হাদীসটিকে ‘ صحيح ’ বিশুদ্ধও বলেছেন। - ইরওয়াউল গালীল, আল বাণী, ১/১৪৩ )
১৭।
মুসলিম, মুক্বাদ্দামাঃ পৃ – ১৪
১৮। আবু দাউদঃ পৃ – ৪/৬৬, হাঃ ৩৬৫৭; ইবনু মাজাহঃ পৃ – ১/৪০, হাঃ ৫৩
( আলবানী লিখেন “ حسن سنده ” হাদীসের সনদ হাসান বা শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য। মিশকাত (আলবানী) পৃ – ১/৮১, হাঃ ২৪২)
১৯। বুখারী শরীফঃ পৃ – ৮/৩১৫, হাঃ ৬৭৩৪
২০। মুসলিম শরীফঃ পৃ – ৩/১৪৮০ (১৮৫৩)
২১।
মুসলিম শরীফঃ পৃ – ৩/১৪৮০ (১৮৫২)
শরহে মুসলিম, নববীঃ পৃ – ১২/২৩১ ও ২৪১
২২। আহমাদঃ পৃ – ৩/৪৩৯; তাবরানীঃ পৃ - ২০/১৯৬, হাঃ ৪৪১; মুসতাদরাকে হাকিমঃ পৃ – ২/৭৩, হাঃ ২৩৯৭
(হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন সনদ যেমন দুর্বল রয়েছে, বিশুদ্ধ সনদেও হাদীসটি বর্ণিত আছে। ইমাম হাকিম মুসতাদরাকে বর্ণনা করতঃ বলেছেন ‘ সনদটি বিশুদ্ধ ’, ইমাম যাহাবীও এতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। দ্রঃ মুসতাদরাকঃ পৃ – ২/৭৩, হাঃ ২৩৯৭)
২৩।
মুসতাদরাকঃ পৃ – ৩/৩১৯, হাঃ ৫৩৯৪
(ইমাম হাকিম ও যাহাবী হাদীসটিকে ‘ صحيح ’ বিশুদ্ধ বলে উল্লেখ করেন। )
২৪। বুখারীঃ পৃ – ৮/৩১৫ (৬৭৩৬); মুসনাদে আহমাদঃ পৃ – ১/৪৬৪, হাঃ ৪৪১৯
২৫। বুখারীঃ পৃ – ২/৫৪১ (১৭৫৮-১৭৫৯); আবু দাউদ – তায়ালিসীঃ পৃ – ২২৯; মুসলিমঃ পৃ – ২/৯৬৩ (১২১০); ফাত্হুল বারীঃ পৃ – ৩/৪৬৮-৪৬৯
২৬। আবু দাউদঃ পৃ – ৪/১৮, হাঃ নং ৩৫৯২,৩৫৯৩; তিরমিযীঃ পৃ – ৩/৬১৬, হাঃ নং ১৩২৭/১৩২৮
( অসংখ্য উলামাগণ এ হাদীসটি বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন, তন্মধ্যে আবু বকর রাযী, ইবনে আরাবী, খতীবে বাগদাদী ও ইবনুল কায়্যিম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
খতীবে বাগদাদী লিখেনঃ উলামাগণ এ হাদীসটি গ্রহণ করেছেন এবং প্রমাণ হিসেবে আলোচ্য হাদীসটি পেশ করে থাকেন। বিঃদ্রঃ আল্ফাক্বীহ ওয়াল মুতাফাক্বীহঃ পৃ – ১/১৮৯; ইবনুল কায়্যিম বলেনঃ এতে যদিও দুজন বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ নাই, তবে তারা মুয়া’য (রঃ) এর অন্যতম শিষ্য বিধায় অসুবিধা হবে না। দ্রঃ ই’লামঃ পৃ – ১/।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।