........
বাংলাদেশের নিরপেক্ষ পুলাপানের একটা স্বতন্ত্র স্টাইল আছে । এরা সবসময় সবকিছু নিয়া কথা বলে না । তারা সেসব বিষয় নিয়েই স্ট্যাটাস বিবৃতি দেয় যেসব বিষয় নিয়ে প্রভাবশালী মিডিয়ায় আলোচিত হয় । স্বাভাবিকভাবেই এদের মতামত আর নিরপেক্ষতার পর্যায়ে থাকে না । মিডিয়া তাদের মতামত তৈরি করে দেয় বলতে গেলে ।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আল্লামা শফির বক্তব্য নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা । ভিডিওটিতে শফি সাহেব যে ভাষায় কথা বলেছেন তা শুধু নারীদের শুনতে খারাপ লাগবে তা নয়, বরং এই ভিডিও শুনলে মনে হতে পারে পুরুষ মাত্রই লুল, সেই দিক বিবেচনায় এটা পুরুষদের জন্য স্বস্তিকর কিছু একটা নয় । কওমি মাদ্রাসার লোকজন যে মাত্রার ইসলাম পালন করেন সেটা আমাদের বেশিরভাগের পক্ষে পালন করা সম্ভব হয় না । ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই ইসলামের অনেক কঠিন নিয়ম কানুন আছে । ছেলেদের দাড়ি রাখতে হবে, মসজিদে জামাতে নামাজ পড়তে হবে, এটা করতে হবে, ঐটা করা যাবে না সহ নানা ধরণের নিয়ম-কানুন ।
অন্যদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রেও পর্দা করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি । কওমি ঘরানার লোকজন এই কঠিন ইসলামই পালন করেন । আমার কিছু এমন আত্মীয় আছেন, যারা মনে করেন মেয়েলোকের ইনকামে বরকত নাই । আমার মা যেহেতু চাকরি করেন, আমার কিছু পর্দানশীন চাচি আমার মাকে শুনিয়ে শুনিয়ে এসব কথা বলেন । এই যে তারা মেয়েদের বেশি পড়তে দিতে চান না, তাহলে নিজেদের নানা দরকারে মহিলা ডাক্তার পাবেন কোথায়??? তারা যেভাবে চলেন, সেভাবে চলেও কিন্তু অনেকে পড়াশোনা করে ।
এমন দৃষ্টান্ত অবশ্যই আছে ।
যাহোক যা বলছিলাম, কথা হল যে এই আমরা ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে বেশিরভাগ ইসলামের সব নিয়ম মেনে চলতে পারছি না, অনেকে হয়ত চেষ্টা করছি বেশি বেশি মানার অভ্যাস তৈরি করতে । হুজুরদের সাথে বেশ কিছু ব্যাপারে আপনি আপনার মতপার্থক্য খুঁজে পাবেন । কিন্তু একদিকে আপনি ধর্ম-কর্মও কম করবেন/ করবেন না, আবার হুজুরদের একাধারে দোষারোপ করবেন তা তো ঠিক না । শরীয়তের অনেক কঠিন নিয়ম কানুন আছে, আপনি সেগুলো পালন করেন আর না করেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার ।
করলে আপনার লাভ, না করলে আপনারই ক্ষতি । কিন্তু যারা পালন করতে বলে(হতে পারে তাদের উপস্থাপন রুচিশীল না), তাদেরকে যদি উলটা গালাগালি দেন তাহলে তো আপনার ডাবল ক্ষতি হয়ে গেল না?
হেফাজতের ও কিছু দোষ আছে । তারা নাস্তিকদের শাস্তি চান খুবই ভালো কথা, কারণ ব্লগের পরিবেশ যে এককালে কি বিষাক্ত ছিল সেটা তো জানিই । কিন্তু তারা যদি মাজারপূজা, ভণ্ড পীরদের বিপক্ষে আন্দোলন করতেন তাহলে খুবই ভালো হত । দেশের মানুষের একটা বিশাল অংশ যে এই ভণ্ডদের পাল্লায় পড়লে প্রকৃত ইসলাম ভুলতে বসেছে, আল্লাহ্র সাথে প্রতিনিয়ত বেয়াদবি করছে সেটা নিয়ে আলেমরা মানুষদের সঠিকভাবে নসিহত করতে পারেননি ।
মূল ধারার আলেমদের সংগঠন হিসেবে এটা হেফাজতে ইসলামের একটা ব্যার্থতা বলেই মনে করি ।
তো নিরপেক্ষতার কথা বলছিলাম । মে মাসের প্রথমদিকে হেফাজত নিয়ে এই নিরপেক্ষ পোলাপানেরা খুবই বিরক্ত ছিল । অন্যদিকে বায়তুল মোকাররমের সামনে কোরান পুড়ানোর ঘটনায় আসলে কারা জড়িত এটা নিয়ে নানা কথা হইছে । শোনা গেছে মতিঝিলের দিকের যুবলীগের লোকজন নাকি হেফাজতের বিপক্ষে সক্রিয় ছিল ।
গত আধা সপ্তাহের দুইটা খুনের ঘটনার আলোকে বলতেছি, যদি পাঞ্জাবী কিলার তারেক শনাক্ত না হত, তবে এই সোনার চান নিরপেক্ষ পুলাপানরা মিল্কিরে ৫ইমের বীর বানায়া হেফাজত হেফাজত করে ডাক পারত, কিংবা আল্টারনেটীভ হিসেবে জামাত-শিবির তো আছেই । প্লিজ কেউ আবার বলবেন না যে তাদের পক্ষে এটা সম্ভব না । ত্বকি হত্যার ঘটনা ভুলে গেছেন নাকি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।