এসো নীপবনে
এই শহরের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত ছিলো দুই নরনারী। তারা কেউ কারো দিকে সরাসরি তাকাতো না। আড়চোখে তাকাতো। সরাসরি কথা বলতো না যেন কথা প্রসঙ্গে কথা বলতো, সম্বধোনহীন। ফেসবুক তাদের একদিন কাছাকাছি নিয়ে এলো।
তারা একে অপরের বন্ধু হলো। এরপর গুটুর গুটুর করে চলতে লাগলো তাদের কথামালা। সহকর্মী হিসেবে দু’জনের মনের লেনদেনের কিছু টুকিটাকি জানতে পেরেছিলাম সময়ে সময়ে। সেই সব নিয়ে এই ফেসবুক কথামালা। অপূর্ব আর মৃদুলা।
তাদের ভেতরের সম্পর্কগুলো আজও আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। তাদের হৃদয়ের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা মাপার নিক্তি আজো পাইনি আমি। তবে সেই সব কথামালাগুলো হারিয়ে যেতে দিতেও ইচ্ছে হলো না। এর জন্য যদি কোনো শাস্তি পেতে হয়, মাথা পেতে নেবো।
কথামালা- ১
-আজ এতো দেরী করে এলেন যে (অফিসে)?
-রাস্তায় জ্যাম ছিলো।
-আর?
-গত রাতের বৃষ্টিতে কাঁদা পানি।
-ও পাশের রাস্তায় পানি আটকায় বুঝি?
-চুল খুলে বৃষ্টি এলে এখানে অনেক কিছুই আটকায়।
রাস্তায় পানি, পানিতে ময়লা আর রাত হলে আঁধার।
-কী যে বলেন আপনি
-সত্যি বলছি, শহরের এপাশটা আজও সভ্য হয়নি।
দিনে বার দশেক কারেন্ট যায়।
গরমে যায়, বৃষ্টিতে যায়, একটু জোরে বাতাস বইলেও যায়
এমনকি বজ্রপাতে ভয়ে চমকেও যায়।
সারি সারি বাড়ির সমস্ত ময়লা এসে পড়ে নর্দমায়
নর্দমা ভরে উঠে আসে রাস্তায়
একসময় রাস্তা উপচে ঢুকে পড়ে বাড়ির ভেতর
লোকজন তবু ডাস্টবিন ব্যবহার করে না, জানেন?
-কি জঘন্য!
-তবে থাক, আজ আর না বলি।
-এমন নরক পল্লীতে কেউ থাকে?
-এই শহরের পুরোটাতো আর ধানমন্ডি নয়
গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরাও নয়।
এখানে চাইলেই জোরে সাউন্ড দিয়ে গান বাজানো যায়
সারাদিন- সারারাত।
চাইলেই রাস্তায় রাস্তায় মাইক বসিয়ে
সাত দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিল করা যায়
চাইলেই রিক্সা থামিয়ে
মৃত ব্যক্তির সৎকারের জন্য টাকা তোলা যায়
চাইলেই
-একটু থামেন
এরপর নিশ্চয়ই বলবেন-
চাইলেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের লক্ষ্য করে সিটি মারা যায়।
-যায় ই তো।
-তো ক’জনকে মেরেছেন?
-সত্যি বলবো?
-হু, মিথ্যে বলে লাভ কী?
-সত্যি হলো, সিটি মারাটা
আজ অবধি শিখতে পারিনি, জানেন
তবে একজন আমার ভেতর সিটি মারছে
না না হুইসেল।
-হুইসেল! তো কে সে?
-আজ থাক, অন্য একদিন বলবো
-ঠিক আছে, গুড নাইট।
-গুড নাইট এন্ড বাই।
-বাই
-টাটা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।