আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ : এইডস

ভালো। এইচআইভি/এইডস প্রথম শনাক্ত হয় ১৯৮১ সালে। পৃথিবীতে দ্বিতীয় প্রধান মৃত্যুর কারণ এইচআইভি/এইডস। আফ্রিকায় মৃত্যুর ২০ ভাগ এইডসের রোগী। ভারতে প্রায় ৫.১ মিলিয়ন এইডসের রোগী আছে।

বাংলাদেশে ধরা হয় ১২০০০ এইচআইভির রোগী আছে যদিও রিপোর্টেড রোগীর সংখ্যা ২৫৩৩, মৃতের সংখ্যা ৩২৫। (ডিসেম্বর ১২০১১ পর্যন্ত)। কিভাবে ছড়ায় : অরক্ষিত যৌন মিলনই পৃথিবীতে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের প্রধান কারণ। ব্লাড ও ব্লাডজাত জিনিস ট্রানসফিউশনে সংক্রমণের চান্স ৯০ ভাগ। মা থেকে সন্তান, ড্রাগ অ্যাডিক্ট, অ্যাক্সিডেন্টাল নিডল এক্সপোজার ইত্যাদি বহুবিধ কারণে এইচআইভি/এইডস ছড়ায়।

কীভাবে শনাক্ত হয় : ওজন কমা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আসল সমস্যা। ২-৩ মাসের ডায়রিয়া নিয়েও এর আগে একজন ভর্তি হয়েছিল। শ্বাসনালীর সমস্যা নিয়ে এলে টিবি খুঁজতে গিয়ে এইচআইভি/এইডস রোগী ডায়াগনস্ড হয়েছে। লক্ষণ : এইচআইভি/এইডস (এ=একোয়ার্ড-অর্জিত, আইভি-ইমিউনোডেফিসিইয়েন্সি-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারান, স-সিন্ড্রম-রোগের সমাহার) আসলে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এইডস হয়। এইডস হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাÍকভাবে হ্রাস পায়।

ফলে নানা ধরনের ইনফেকশন, ক্যানসার হয়। ইনফেকশনগুলো অধিকাংশই গতানুগতিক নয়, চিকিৎসার অনুপযোগী/ব্যয়বহুল। প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা বিধানও নেই অনেক ক্ষেত্রে। উন্নত বিশ্বে টিবি প্রায় ছিল না। এইডসের কারণে সেসব দেশে এখন টিবি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

এ টিবি আবার অ্যাটিপিকাল এবং চিকিৎসা ও প্রতিকারও খুব জটিল। যে অসুখগুলো থাকলে এইডস আছে বলা হয় (এইডস ডিফাইনিং ডিজিসেস)। কিছু ইনফেকশন ও কিছু ক্যানসার আছে যেগুলো থাকলে এইচআইভি/এইডস যে নেই তা প্রমাণ করতে হয়। যেমন অন্ননালীর ফান্গাস (ক্যন্ডিডিয়াসিসি), ফান্গাল ডায়রিয়া, জরায়ু মুখের ক্যান্সার, ফুসফুস ও ফুসফুস বহির্ভূত টিবি বিশেষ করে যারা রেসপন্ড করছে না। নিউমসিস্টিস ক্যারিনি নিউমনিয়া, সেরেব্রাল টক্সপাসমসিস, হিস্টপাসমসিস, ক্যাপসিস সার্কমা, নন হজকিনসলিম্ফমা, এইচআইভির জন্য ওজন কমা, এইচআইভির জন্য ডিমেন্সিয়া (সনভোলা রোগ)।

সম্প্র্রতি পাওয়া আমাদের রোগীটার হিস্টোপাসমোসিস সর্বশরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। কী কী পরীক্ষা করতে হবে ডায়াগনোসিসের জন্য ডাক্তার বা পরিচর্যাকারীর হিসাবের মধ্যে এইচআইভি/এইডস থাকতে হবে। উপসর্গগুলো মিলাতে হবে। ওপরে বর্ণিত অসুখ/উপসর্গগুলো খুঁজতে হবে। ইনজেকশন ড্রাগ আসক্তি, শরীরে রক্ত ভরা হয়েছে কিনা, বিদেশে অবস্থান, অরক্ষিত যৌনাচার ইত্যাদির ইতিহাস নিতে হবে।

পুরাপুরি এইডসের উপসর্গগুলো আসতে অনেক সময় দশ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। অন্যান্য রুটিন পরীক্ষার সঙ্গে এইডসের ডায়াগনোসিসের জন্য প্রথমে স্ক্রিনিং টেস্ট করে পরে কনফার্ম করতে হয়। এইডসের চিকিৎসা দেয়ার জন্য কিছু আনুষঙ্গিক টেস্ট করতে হয়। যার মধ্যে সিডি ফোর কাউন্ট উল্লেখযোগ্য। চিকিৎসা : এইডসের চিকিৎসা সবক্ষেত্রেই কঠিন।

অধিকাংশ রোগীই খুব খারাপ অবস্থায় আসে। সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। চিকিৎসাযোগ্য হলেও দুরারোগ্য সব ইনফেকশন হয়, ক্যান্সার হলে তো আরও সমস্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ও আক্রান্ত ইনফেকশনের ওষুধ দিতে হয়। তবে কেউ কেউ যে ভালো থাকে না তাও নয়।

প্রতিরোধ : যৌন অনাচার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। অরক্ষিত যৌনাচার যে কোন লেভেলেই হতে পারে। এই জায়গায় বোধ হয় কেউই ইমিউন নয়। সব ধর্মের বইতে তাই এ ব্যাপারে চ্যাপ্টারের পর চ্যাপ্টার লেখা আছে। ধর্মীয় অনুশাসন তাই মানতে পারা উচিত।

ইদানীং নিরাপদ বাড ট্রান্সফিউশন একটা সময়োপযোগী পদক্ষেপ। গর্ভবতী মা হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি রোগী, ড্রাগ অ্যাডিক্টদের রুটিন এইচআইভি স্ক্রিনিং টেস্ট করা উচিত। অ্যাক্সিডেন্টাল নিডল পাংচার হলে রোগীর ইতিহাস নিতে হবে, দরকারে পরীক্ষা করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে পারসনাল প্রটেক্শনের বিকল্প নেই।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।