আমরা বীজ সম্পর্কে জানি না এমজন হয়তো শহুরে হাওয়ায় শিশু। এই বীজ নিয়ে কথা বলেন না এমন লোকও কম। আর ভাল বীজে ভাল ফসল সে তো সার্বজীন স্বীকৃত। তো আসা যাক বীজ নিয়ে।
বীজের সঙ্গাঃ নিষেকোত্তর রূপান্তরিত ও পরিস্ফুটিত ডিম্বকই বীজ।
কিছু কিছু উদ্ভিদে একে কার্নেল বলা হয়। বীজ বীজ আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে এবং সাধারণত এতে পরিস্ফূটনরত ভ্রূণের জন্যে সঞ্চিত খাদ্য থাকে। বীজ আবৃতবীজী ও নগ্নবীজী উদ্ভিদে পরিপক্ব ডিম্বকের সফল নিষেক ও মাতৃগাছের অভ্যন্তরে কিছু পরিবর্ধনের ফসল। বীজ তৈরির মাধ্যমে বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার হওয়া উদ্ভিদের প্রজনন সম্পন্ন হয় (যা ফুল সৃষ্টি ও পরাগায়নের মাধ্যমে শুরু হয়), যেখানে জাইগোট থেকে ভ্রূনের সৃষ্টি হয় এবং ডিম্বাণুর বহিরাবরণ থেকে বীজত্বক সৃষ্টি হয়।
বীজ সপুষ্পক উদ্ভিদের সংখ্যাবৃদ্ধি ও বিস্তারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে আদিমতর মস ও ফার্ণের সাপেক্ষে, যারা বীজের মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধি করে না।
এ ব্যাপারটিকেই সবীজ উদ্ভিদের (আবৃতবীজী ও নগ্নবীজী উভয়ই) উষ্ণ ও শীতল - দু ধরণের আবহাওয়াতেই বনভূমি থেকে শুরু করে তৃণভূমি পর্যন্ত সর্বত্রই প্রাধান্য বিস্তার করার কারণ মনে করা হয়।
ভাল ফসলের জন্য ভালো বীজের কোন তুলনা হয় না যা আমরা ছোট বেলাতেই শিখে থাকি বা শুনে থাকি বিভিন্ন টিভি রেডিও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে; আর যারা গ্রামে বাস করে তাদের তো জন্মই বীজ শব্দটি শুনতে শুনতে আর চিনেও যান অল্প বয়সেই। ভাল বীজে ভাল ফসল কথাটি প্রচলিত থাকলেও মাটির গুনা গুনও থাকা চায়। শুধু ভাল বীজ হলেই চলবে না থাকতে হবে মাটির গুনও। যেমন রাজশাহী অঞ্চলের আম ও লিচু অত্যন্ত সু-স্বাদু ও মিষ্টি কিন্তু ঐ বীজই যদি দেশের অন্যান্য অঞ্চলে রোপিত হয় তা হলে আর সেই স্বাদ ঠিক থাকে না।
আধুনিক পদ্ধতি বাডিং বা কলমের মাধ্যমেও অন্যান্য অঞ্চলে রোপিত হয়েছে ঐ সকল লিচু ও আম গাছ কিন্তু স্বাদ গন্ধ পরিবর্তন হয়ে গেছে মাটির গুনাগুনের কারনে। তাই ভাল ফল বা ফলনের জন্য যেমটি চাই বীজের গুনগত মান অন্যদিকে চাই মাটির উর্বরতা শক্তি ও গুনগত মান।
মাটির গুনাবলির উপর নির্ভর শীল অনেক কিছু; যেমন কোন কোন অঞ্চলের গাছের পাতা অত্যন্ত সবুজ ও কান্ড বর্ধণশীল হলে ফল ধরে না; অবার অনেক অঞ্চলে ফল ধরলেও তার স্বাদ গন্ধ ঠিক থাকে না। যেমন নোয়াখালী অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলন হলেও আবহাওয়ার কারনে পাকার আগেই পোকা ধরে যায়। গাজীপুর অঞ্চলে কাঠালের ভাল ফলন দেখা যায়; কুষ্টিয়া অঞ্চলে আমের ফলন ব্যপক হলেও স্বাদে গন্ধে প্রায় তেতুলের কাছা কাছি।
আবার যে সকল গাছে ফল কম ধরে সে সকল গাছের কান্ড সব সময়ই বড় দেখা যায়, পাতায় পরিপূর্ণ থাকে। যেমন ক্ষেতে আগাছার বাড় একটু বেশীই পরিলক্ষিত।
আসা যাক বীজ শব্দটির অন্যান্য বাবহার নিয়ে। আমরা ইদানিং প্রায়ই এক দল আরেক দলের প্রতি এই বীজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাতি; কেও বলছে পাকিস্থানী বীজ আবার কেও বলছে ভারতীয়। ভারতবর্ষের ইতিহাস যারা পড়েছেন তারা সবাই জানেন যে, ভারত বর্ষ সেই আদিকাল থেকেই উর্বর ও সুফলা এবং এর মানুষ ও সহজ সরল প্রকৃতির।
তাই সেই আদি কাল থেকেই এদেশে এসেছে বনিকেরা; গড়ে তুলেছেন ব্যবসায় বানিজ্য। কেও আবার বসতীও গড়ে তুলেছেন। থেকে গেছেন স্থায়ী ভাবে।
এই উপমহাদেশ মূলত হিন্দু ধর্মালম্বী আরজু জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল মর্মেই ইতিহাস বীদরা দাবি করে থাকে। ইসলাম ধর্মের গোরা পত্তনের পর ধর্ম প্রচার সহ ব্যবসায় বানিজ্যে এসেছেন অনেকেই, গড়ে তুলেছেন বসতী; বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এই দেশে।
এসেছেন ভাসকোদাগামা; এসছেন ফরাসীরা, এসেছেন পর্তুগীজরা, শাষণ করেছেন ইংরেজরাও। তারা শুধু এসেই ফিরে যাননি বসতী গড়েছেন অনেকেই; এসে বিবাহও করেছেন অনেকে থেকে গেছেন স্থায়ী ভাবে অথবা রেখে গেছেন বংশধরদের। সুযোগ সন্ধানে ধর্ষণও করেছেন; বাচ্চাও রেখেগেছেন। আর আজকের মত প্রগতিশীলরাও যে ছিল না তা নয়; তারাও মিলে মিশে তৈরী করেছেন অনেক শংকর প্রজাতিই।
প্রসঙ্গত আলেকজান্ডারের ইতিহাস যারা পড়েছেন তারা জেনে থাকবেন যে তার আহত সৈন্যদের ছেড়ে যান বর্তমান পাকিন্তান আফগান সীমান্তবর্তী এলাকাতে।
সেখানে যারা ছিলেন তারাও স্থানীয়দের সাথে গড়ে তুলেছেন সংসার; মেতেছেন জীবন জয়ে।
আমাদের এই উপমহাদেশের বীজ নিয়ে ঘাটা ঘাটি করাটা যে সমিচীন নহে তা যারা চীন- কোরিয়া; মীশরের মত দেশ ভ্রমন করেছেন তারা হয়তো বুঝবেন। কারন ঐ সকল দেশে একটি এলাকায় একই বর্নের লোকই দৃশ্যমান। কারণ বংশানুক্রমে শত শত বছর ধরে তারাই বসবাস করে আসছে। কিন্তু এই ভারত বর্ষে দেখেন- কত রংয়ের কত চেহারার মানুষ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।