বিনা যুদ্ধে নাহি দিব ছাড়,সূচাগ্র মেদিনীর অধিকার.... । দিবা হইতেই তারস্বরে চ্যাঁচাইতেছে শকুনিমামা।
''ভ্রাতঃ ও ভহিনীগন! সুখবর সুখবর!শীঘ্রই হসিনিপুরে উন্নয়নের জোয়ার বহিয়া যাইবে! সুখবর সুখবর .....''
প্রজাগন মুখ চাওয়া চাওয়া করিতে লাগিলো,ধৃতরাষ্ট্র আবার নতুন কোনো স্বপ্ন দেখিলো নাকি?
শকুনিমামা চোঙায় মুখ লাগাইয়া বলিয়া চলিলো,''অদ্য দূর্যোধন ও সিন্ধুরাজার মাঝে অনুষ্ঠিত হইবে ঐতিহাসিক এক গদাযুদ্ধ! ধৃতরাষ্ট্র একদা স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন...... ''....এরই মাঝে কোথা হইতে এক পাটি পাদুকা শকুনিমামার দিকে উড়িয়া আসিলো। এরূপ অভিজ্ঞতা তাহার জন্য নতুন কিছুনা ,সুতরাং ঝট করিয়া মুখ সরাইয়া তাহার উপর শুন্যে ভাসমান বস্তুর পতন ঠেকাইলো।
তৎক্ষনাৎ পাইকপেয়াদারা হন্তদন্ত হইয়া খুঁজিতে লাগিলো,কোনো অবার্চীন পাদুকা ছুড়িয়া মারিয়াছে!বেশি বেগ পাইতে হইলো না,যুধিষ্ঠির এক পাটি ছুঁড়িয়া মারিয়া আরেকপাটি হাতে লইয়া নিশানা ঠিক করিতেছিলো।
হাতেনাতে প্রমান পাইয়া পাইকেরা যুধিষ্ঠির কে চ্যাংদোলা করিয়া লইয়া যাওয়ার উপক্রম করিলো।
ফালুরামের দেয়া চিকনিচামেলী লেহেঙ্গাখানা নাড়িয়া চাড়িয়া দেখিতেছিলো দ্রৌপদী। শয্যাসঙ্গীর এরুপ বেকায়দা অবস্থা দেখিয়া দ্রৌপদী আর স্থির থাকিতে পারিলোনা,হুংকার দিয়া উঠিলো,''এক পা-ও আগে বাড়িবি তো লুলা ল্যাংড়া করিয়া দিবো '' !!
শকটে বসিয়া থাকা দূর্যোধনের কানে খট করিয়া কথাটা বিধিঁলো। মাগী বনবাসে থাকিস,তবুও তো রসেবশে টইটুম্বুর !দূর্যোধনের পাইককে লুলা ল্যাংড়া ! তাও কিনা দ্রৌপদীর হাতে ?
হাঁক দিলো দূর্যোধন,''লুলা ল্যাংড়া করিবি,তোর রানে কি সেই জোড় আছে নাকি?''
বনবাসে থাকিয়া থাকিয়া এতদিনে দ্রৌপদীরও বেশ রান/জঙ্ঘা জ্ঞান হইয়াছে,সুতরাং সে পাল্টা জবাব দিলো,''কুরুক্ষেত্রে আমার পতি একবার তোর রান ভাঙ্গিয়া দিবার পরও অত বকবক করিস কোন মুরোদে?''
নিশ্চয়ই পাপিয়াকুমারীর কাছে এইসব ভাষা রপ্ত করিয়াছে হারামজাদী-বুঝিতে দুদন্ড সময় লাগিলোনা দূর্যোধনের। পাপিয়াকুমারী মুখ খারাপ করিতে ওস্তাদ।
উহাকে সময় ও সুযোগমত বাগে নিয়া সংবিধান সমুন্নত করিয়া দেখাইতে হইবে।
যুধিষ্ঠির বেচারা পাইক-বরকন্দাজদের মাঝে বসিয়া উসখুস করিতেছিলো। দ্রৌপদীর সামনে বীরত্ব দেখানোর সুবর্ন সুযোগটা সে নষ্ট করিতে চাহিলোনা। দূর্যোধনকে সে বলিলো,'' অনেককাল বনবাসে থাকিয়াছি,একবার মধ্যবর্তী গদাযুদ্ধ দিয়া দেখ,তোকে কিভাবে পরাস্ত করি। '' -বলিয়া দ্রৌপদীর দিকে একখানা চোখ মারিলো।
দ্রৌপদীও তাহার দিকে অভয়মুদ্রা দেখাইয়া দিলো।
প্রজাগনের সামনে গদাযুদ্ধের আহবান এড়াইবে,এমন ভীতু দূর্যোধন নহে। তাছাড়া হসিনিপুরে গদাযুদ্ধে দূর্যোধনের চেয়ে বড় কোনো বীর জন্মায় নাই। সুতরাং সেও আহবানে সাড়া দিয়া ময়দানে নামিয়া গেলো।
ময়দানে নামিতে না নামিতেই গন্ডাখানেক গদাঘাতে যুধিষ্ঠিরের মূমুর্ষ অবস্থা হইয়া গেলো,ভুপাতিত যুধিষ্ঠিরের উপর দূর্যোধনের গদা নামিয়া আসিতেছে !
সকলেই বুঝিলো,এইবার যুধিষ্ঠির গেলো !
দিপিকামীনি ভরতরাজার সাথে দূর্যোধনের শৌর্য্য-বীর্যের প্রশংসা ও তুলনা করিতে লাগিলো।
দুঃশহালা হসিনিপুরের আইনশৃংখলা রক্ষায় দূর্যোধনের গদার ভুমিকা বিষয়ক চিন্তাভাবনা শুরু করিয়া দিলো। শকুনিমামা আয়েশ করিয়া আরেকবার বনবাসের শর্তাবলী ফর্দে লিখিতে লাগিলেন। দুঃশাসন দ্রৌপদীর গায়ের চিকনিচামেলি লেহেঙ্গা দেখিয়া ভাবিতে লাগিলো,এই বেলা তাহার বস্ত্রহরন করিতে কোনো বেগও পাইতে হইবেনা। পোষাকখানা এবারে বড়ই খাটো।
হঠাৎ সবাই অবাক হইয়া দেখিলো,ভুপাতিত যুধিষ্ঠির সপাটে দূর্যোধনকে হাঁকাইয়া দিয়াছে!
দূর্যোধন-বধ !!
দূর্যোধনের কাছে গিয়া ডুকরিয়া উঠিলো দুঃশহালা,''মহারাজ!মূমুর্ষু যুধিষ্ঠির আপনাকে কিভাবে হারাইয়া দিলো !''
দূর্যোধন ততোধিক ডুকরিয়া উঠিলো,''জিতিয়াই তো গিয়াছিলাম.....দ্রৌপদী মাগীটা দুইরানের উপর হইতে কাপড়টা না সরাইলেই তো...... ''
_______________________________________________________________
এই পোস্টের মাধ্যমে দূর্যোধন নিক খানা ব্লগে তাহার দ্বিবর্ষ পূ্র্ন করিয়া ত্রিবর্ষে পদধুলি দিলো।
তাহার দ্বিবর্ষপু্র্তিমূলক বিশেষ পোস্ট পরবর্তীতে কোনো একসময় দেয়া হইবে।
______________________________________________________________
_
একই সাথে নিজস্ব ব্লগস্পটে প্রকাশিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।