হতাশা আর দু;খ ব্যাথা যাদের দেখে থমকে দাঁড়ায় আজকে তাদের খুব প্রয়োজন, বিশ্ব এসে দু হাত বাড়ায়। একজন সুস্থ মানুষ সাধারনত ভাবে না যে সে অসুস্থ্য হতে পারে কিম্বা একদিন মারা যাবে। কাছের আত্মীয় কিম্বা বন্ধুকে কবর দিয়ে এসেই আমরা চলে যাই ব্যাবসায়িক মিটিং-এ। আরো সম্পদ কামাই করবার চেষ্টায় রত থাকি। আরেকজনকে অসুস্থ হতে দেখি কিম্বা মারা যেতে দেখি, সাময়িক একটা দুঃখবোধ হয়ত হয় কিন্তু নিজকে ঐ জায়গায় বসিয়ে চিন্তা করবার মত সময় হয় না।
ব্যাবসা-মিটিং-কাস্টমার-টাকা আমাদের তা ভুলিয়ে রাখে।
তেমনি ক্ষমতা যে একবার পায় সেও ভাবতে পারেনা যে তার ক্ষমতা কোন দিন শেষ হবে। নমরুদ-ফেরাউন তো ক্ষমতার জোরে নিজকে খোদা বলে ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা অপদস্থ হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাদের রাজত্ব শেষ হয়ে গেছে। মোগল বাদশা হুমায়ন তারই নিযুক্ত বাংলার গভর্নর শের খানের কাছে পরাজিত হয়ে বছরের পর বছর পথে পথে ঘুরেছেন, সর্বদা শত্রুর তাড়ার মুখে মৃত্যুর ছায়া সাথে করে কখনো বনে-জংগলে কিম্বা বিরান ভুমিতে লুকিয়ে, কখনও কারো আশ্রয়ে আশ্রিতের মত লুকিয়ে দিন পার করেছেন (তিনি অবশ্য পরে রাজত্ব পুণরুদ্ধার করেছিলেন)।
বৃটিশরা দুনিয়াজোড়া রাজত্ব পেতেছিল, বলা হতো বৃটিশ সাম্রাজ্যে সুর্য অস্ত যায়না। সেই কলোনি গুটিয়ে তারা আবার প্যাভিলিওনে ফিরে গেছেন। ছলে বলে ক্ষমতা নিয়েও মীর জাফর তা ভোগ করতে পারেন নি বরং বিশ্বাসঘাতকার সমার্থক হয়ে ঘৃণার পাত্র হয়ে আজও বাংলার ঘরে ঘরে বেচে আছেন। সহস্র-অযুত মানুষের ওপর সীমাহীন অত্যাচার করেও কমুনিষ্টরা তাদের স্বপ্নের সোভিয়েত ইউনিয়নকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি।
উপরের সবগুলি ঘটনায় ইতিহাসের অংশ।
কিন্তু ক্ষমতার মোহ মানুষকে ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়। যিনি বিরোধী দলে থাকতে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেন তিনিই ক্ষমতায় এসে তা বাতিল করেন। যিনি নিজকে জনগনের নেত্রী মনে করেন, জনগন কে ক্ষমতার উতস বলে মুখের ফেনা তুলে ফেলেন তাকেই দেখি পুলিশ লেলিয়ে বিরোধী মত দমন করতে। যিনি ক্ষমতায় থাকলে বিরোধী দল কেন সংসদে আসেনা বলে অভিযোগ করেন তিনি বিরোধী দলে গেলে টানা সংসদ বর্জন করেন।
এই অসুস্থ রাজনীতি থেকে আমরা মুক্তি চাই।
বিভাজন নয়, ঐক্য চাই। গণতান্ত্রিকতার চর্চা চাই। পরিবারতন্ত্র থেকে বের হয়ে এসে জন কল্যাণমুখী নেতৃত্ব চাই। দারিদ্র থেকে মুক্তি চাই। সর্বোপরি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই।
সেটা সম্ভব যদি আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।