আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতা আজ তোমার বড় পরাজয়...............

...............................................................................................................................................................। হাটি হাটি পা পা করে অনেক গুলো বছর পার করে এসেছি আমরা। সময়ের পরিবর্তনে আজ আমরা একচল্লিশের ঘরে পৌছে গেছি। এটি মোটেও কম সময় নয়। এই একচল্লিশ বছরের পথ পরিক্রমায় এতদিনে আমাদের চুল দাড়ি গজিয়ে পাক ধরার কথা।

পায়ের নিচের মাটিকে আকড়ে ধরে একটি শক্ত ভিত দাড় করার কথা। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য খুটির গোড়া মজবুত করার কাজে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু আমরা এখনও অনেক পিছনে পড়ে আছি। বয়স বেড়েছে ঠিকই,বাড়েনি বিবেক খানা। বুঝতে শিখেছি-‘আপনি বাচলে বাপের নাম’,বুঝিনি শুধু-‘সকলের তরে সকলে আমরা,প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’,যখন ছিলাম ছন্নছাড়া তখন সবাই বুঝেছে দেশ ছাড়া অসহায় আমরা।

সব ভুলে দেশ জয় করে যখন আত্নহারা সবাই,তখন বুঝতে পেরেছি আমারটা চাই,আরো চাই,আমার চাই। কে দিবে বাধা?আমি মুক্ত বিহংগ,আমার এখন মাথার উপর সাত রঙের ছড়াছড়ি,পায়ের নিচে সোনা ফলা মাটি,বহুদিন পর শান্ত সুবুজের দেখা,সমীরনের গোল্লাছুট,আহ!এ দেশ ছেড়ে কি কোথাও যাওয়া আমার সাজে?পৃথিবীর আর কোন ভুখন্ডে কী এমন টা হয়?সুযোগের শতভাগই এখানে মানুষ কাজে লাগায়,লাগাতে পেরেছে। সুযোগে সবাই সোনা ফলা মাটিকে কুড়ে কুড়ে নিজেদের পাহাড়ে উঠানোর চেষ্টায় মত্ত। ঠিকই, পৃথিবীর আর কোন ভুখন্ডে নিজের পায়ের নিচের মাটিকে এভাবে কেউ কামড়ে খায় না। বাঙ্গালী জাতি নাকি সংস্কৃতমনা,সংস্কৃতি আকড়ে ধরে রাখার অদম্য ধৈর্য নাকি আমাদের অনেক বেশি।

আমাদের পুর্বপুরুষদের ধারাবাহিকতায় ভুখন্ড কামড়ে খাওয়ার যে রীতি ,সংস্কৃতি চালু হয়েছে,তা যদি সংস্কৃতি প্রেম থেকে ধরে রাখা যায় তাহলে বোধহয় এই বাংলা টিকে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীন। ক্ষীন বললে আশা টিকে থাকে,বলা চলে ধ্বংস অনিবার্য। অবশ্য কার কি আসে যায় তাতে?সুযোগ বঞ্চিত দু,চারজন অনাহারী গড়িয়ে মরলে কার কী,আর সুযোগের ধার ধারেনা এমন দু চারজন বিবেকবান মানুষদের মিথ্যে আর্তনাদ কে শুনবে?.........,টিকে থাকার জন্য যখন এক প্রান্তে একদল পাগলের মত ছুটাছুটি করছে,মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে,আর বিলাসিতায় চুড়ায় উঠার লক্ষ্যে অন্যপ্রান্তে বাকিরা লুটের খেলা খেলছে…,একদল নামি দামি ব্র্যান্ডের গাড়িতে করে গন্তব্যে যাচ্ছে। আর একদল ঝুলে আছে লোকাল বাসে। বাহারি সোফায় কারো স্বর্গীয় ঘুম,কারো শীতল পাটি-ই অবলম্বন।

গরমের যন্ত্রনায় কেউ এসির নিচে,কেউ ফ্যানের নিচে বসে আরাম করছে কী শান্তির জীবন আমার!আর অধিকাংশই বলছে হাত পাখাই ভরসা আমার। ……হাজারো সমস্যা তবুও যেন ভাতৃত্বের এক সুবিশাল মেল বন্ধন। শিরায় দুর্নীতির প্রবাহমান রক্ত। সফলতা আঁধার আমার। তবুও থেমে থেমে জ্বলে উঠে আশার প্রদীপ।

এভারেস্টে বাংলাদেশ,অস্কারে বাঙ্গালী,নোবেল বুকেও বাংলাদেশ,ক্রিকেটে বাংলাদেশ,ম্যাগাসেস পুরস্কারে বাঙ্গালী…,ইত্যাদি…অনেক সফলতা চোখে ধরা পড়ে……,কিন্তু বড় সফলতাই আধার হয়ে এখনো। যে নিষ্পাপ দেশ হাতে তুলে দিয়ে গেছে বীর সেনারা,তার সম্মান আমরা রাখতে পারিনি। ব্যক্তি ক্ষেত্রে কিছু সাফল্য আছে বৈকি,কিন্তু দলীয় ক্ষেত্রে তা শুধুই শুন্য। ভোর না হতেই স্বাধীনতা উতসবে মেতে উঠবে সবাই। প্রতিবারের মত আজও শহীদদের সম্মান জানানোর পরপরই শহীদদের সামনেই শুরু হয়ে যাবে কাদা ছোড়াছুড়ি এতক্ষনে হয়ত স্মৃতিসৌধের সামনে কাদাছোড়া ছুড়ি শুরু হয়েও গেছে।

এতে কি প্রকৃতপক্ষে তাদের সম্মান জানানো হয়?নাকি তাদের আরো খাটো করা হয়,সম্মান হানি করা হয়?একদল আসবে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানাবে আর বেরিয়ে এসে সামনে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মাইক্রোফোনের সামনে পীরের মত আনুগত্য প্রকাশ করবে নিজেদের দলনেতার নানা বিশেষনে বিশেষায়িত করার মধ্য দিয়ে,আর কাদা ছুড়াছুড়ি তো থাকবেই,একটু কাদা না ছুড়তে পাড়লে যে আমাদের হৃদয় শান্ত হবে না। তারপর আরেক দল আসবে তারাও একই পথ অনুসরন করবে, পীরের মত নিজেদের দলনেতার আনুগত্য প্রকাশ করবে,বিশেষায়িত করবে নানা বিশেষনে,আর কাদাছুড়াছুড়ি তো আছেই। কোন কোন বিশেষন শুনে হয়ত শহীদেরা চিতকার দিয়ে উঠবে,বিশেষনের মিল না পেয়ে। কেপে উঠবে শহীদদের স্মৃতির মিনার। যা থেকে যাবে আমাদের শ্রবন শক্তির বাইরে।

কতটা চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে আমাদের ইতিহাস বিকৃতি!!কতটা উশৃংখল আমাদের গনতন্ত্রের মাঠ!!কতটা হিংসা আর ক্ষমতার লোভ আমাদের মনে!! যে দেশে এখনো যুদ্ধাপরাধীরা বীরদর্পে ঘুড়ে বেড়ায়, যে দেশের শক্ত ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও সে ইতিহাস নিয়ে টানাটানি। দুর্নীতি যাদের পরম বন্ধু। সে দেশ কিভাবে স্বাধীনতার উৎসবে মেতে উঠে?স্বাধীনতা আজ তোমার বড় পরাজয়…প্রভু, চল্লিশ বছরের কাদামাটির নিচ থেকে এবার আমাদের উদ্ধার কর। । এখন যে পিছিয়ে পড়ে থাকার সময় নয়,এই বোধটুকু বুঝতে শেখাও।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.